শিক্ষায়ই আলো
আরও একটু এগিয়ে গেলে বলতে হয় - আমরা আজ বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালী জাতিসত্বা ভুলে গিয়ে ইংরেজী জাতিসত্বায় রক্তের ন্যায় মিশে গেছি !
অথচ একদিন আমরা বাঙ্গালী জাতি একতাবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় ভাষা উর্দুকে ত্যাগ করে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা বাংলা ভাষাকে সর্বত্র প্রচলন করতে প্রাণ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম ! ফলে বিজাতীয় ভাষা উর্দূকে অপসারন করে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলা ভাষাকে ধারন করেছিলাম । যখন আমরা বাংলার সর্বত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা শুরু করেছিলাম , তখন কিন্তু বিশ্বায়নের যুগটা অনুপস্থিত ছিল তা নয় , বিশ্বায়নের যুগটা তখনও ছিল বিধায় আমরা ইংরেজী শিক্ষায় তখনও বাধ্য ছিলাম । অর্থাৎ যে জন্যে আজ আমরা ইংরেজী শিখছি সেইজন্যে তখনও ইংরেজী শিক্ষার প্রচলন ছিল । ছিল ইংরেজী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও । তাই বলে সে সময় বর্তমান সময়ের মত মাতৃভাষা বাংলাকে অবমাননা করা হয়নি । মানুষ সে সময় বাংলায়ই কথা বলেছিল । শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই সে সময় ইংরেজী ব্যাবহার করেছিল বাঙ্গালী জাতি ।
প্রয়োজন ভিন্ন যখন-তখন যেখানে-সেখানে ইংরেজী ভাষার প্রচলন তখন ছিল মাতৃভাষার অবমাননা । তাই , ইংরেজী ভাষার ব্যবহার তখন বড় বড় ডক্টরেট ডিগ্রীধারী ব্যক্তিগন ও প্রয়োজন ব্যতিরেকে করতেন না ।
অথচ বর্তমানে এমন একটা পর্যায়ে আমরা পৌঁছে গেছি যে , মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে আমাদেরকে লজ্জিত হতে হয় ! এমন ও দেখা যায় বাংলা মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া, বাংলাদেশেই বেড়ে উঠা , বাংলাদেশেই বসবাসকারী কেউ কেউ মাতৃভাষা বলতে হিমসিম খচ্ছেন , কিন্তু ইংরেজী শব্দ অনর্গল বের হচ্ছে তার মুখ দিয়ে !
আবার এমনও দেখা যায় , একজন অশিক্ষিত ব্যক্তি যে ইংরেজীর “ E “ বর্ণটিও চিনেনা , ইংরেজীতে “ Please , thank you , ok ’’ইত্যাদি না বললে তার “ Prestige Puncture ’’ হয়ে যায় !
জানিনা কি লাভ হলো সেদিন বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের বাংলা ভাষার জন্য রক্তদানে । মাতৃভাষার অবমাননা সে সময় যেটুকু না হয়েছিল তার চেয়ে বেশী হচ্ছে আজ বর্তমানে । সেদিন বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা মাতৃভাষার অবমাননা সহ্য করতে না পেরে নিজেদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রাজপথে , করেছিল শাহাদাত বরণ ।
আর আজ শুধু অবমাননাই নয় , রক্তের সাগর পেরিয়ে আনা সেই মাতৃভাষাকে বিলুপ্ত করতেই যেন আজকের বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা বেশী উৎফুল্ল বোধ করছে ! এমন ও হতে পারে কিছুদিন পর ইংরেজী ভাষার প্রচলনে বাংলার জমিনে তারা বুকের রক্ত ঢেলে দিতে কার্পন্য করবেনা !
যা হোক , এই যখন বাংলাভাষীদের বর্তমান অবস্থা , যখন লজ্জার কারনে ছাত্র-ছাত্রীকে বাংলায় “ শিক্ষার্থী ” না বলে যত্রতত্র “ Student ” বলে বাঙ্গালীরা সুখ পান , না বললে “ Prestige Puncture ’’হবে বলে মনে করেন , তবে ছাত্র-ছাত্রীদের মৌলিক চরিত্র জানতে ইংরেজী “ Student ” শব্দটিকে বিশ্লেষণ করে দেখাব মূলতঃ “ Student ” কে ? তার গুণ কি ? তার বৈশিষ্ঠ্য কি ? তাকে কেমন হওয়া উচিত ? ইত্যাদি ।
আমরা জানি বাংলা “ শিক্ষার্থী ” শব্দটি ইংরেজীতে “ Student ” হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে আদিকাল থেকেই । এখানে “ শিক্ষার্থী ” বলতে পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গ ( উভয় লিঙ্গ)-এর অধ্যায়নরত মানুষদের বুঝানো হয়েছে । আর ইংরেজী “ Student ” শব্দটিও উভয় লিঙ্গের উপরই ব্যবহৃত । যদিও আমরা “ Student ” শব্দটির বাংলা অর্থ করি “ ছাত্র ” হিসাবে । কিন্তু তা ঠিক নয় বলে মনে করি ।
কেননা , এভাবে যদি “ Student ” শব্দটির পুংলিঙ্গের অর্থ করি তবে স্ত্রীলিঙ্গের বেলায় উক্ত শব্দটির পূর্বে আরও একটি শব্দ যোগ করতে হয় , আর তা হলো - “ Girl ” . অর্থাৎ , পুরো শব্দটি স্ত্রীলিঙ্গের বেলায় লিখতে হবে - “ Girl Student ”. যেহেতু , পুংলিঙ্গের বেলায় “ Boy Student ”লেখা হয়না । সেহেতু , স্ত্রীলিঙ্গের বেলায় সেখানে “ Girl Student ” লেখার যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করি । তাই , “ Student ” এর অর্থ “ ছাত্র ” হিসাবে না দেখিয়ে “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে দেখানোই যৌক্তিক মনে করছি । কেননা , “ Student ” শব্দটিকে বাংলা অর্থে “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে দেখালেই উভয় লিঙ্গ সম্বন্ধযুক্ত হয় বা সম্বন্ধযুক্ত হিসাবেই বুঝানো হয় । অতএব , “ Student ” শব্দটির বাংলা অর্থ হোক “ শিক্ষার্থী ” বা শিক্ষাগ্রহণরত ছাত্র-ছাত্রী ।
এতক্ষন আমরা “ Student ” শব্দটির বাংলা অর্থ সম্পর্কে আলোচনা করে জানলাম তার বাংলা শব্দার্থ ।এখন আমরা “ Student ” শব্দটির রাসায়নিক বিশ্লষণে যাব । অর্থাৎ , আমরা জানব “Student ” শব্দটি কি কি এবং কতটি উপাদান দ্বারা গঠিত বা একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রী কি কি উপাদান দ্বারা গঠিত হতে পারে বা একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রীর বৈশিষ্ঠ্য কি কিংবা একজন ছাত্র অথবা ছাত্রীর কি কি গুণ থাকা প্রয়োজন বা আবশ্যকীয় ।
আমরা “ Student ” শব্দটির দিকে তাকালে দেখতে পাব , শব্দটি মোট সাতটি Letter বা বর্ণ দ্বারা গঠিত । অর্থাৎ “ Student ” শব্দটি মূলতঃ সাতটি বিশেষ উপাদান বা মূল গুণাবলী দ্বারা গঠিত । আবার উক্ত সাতটি Letter বা বর্ণের বা উপাদানের প্রত্যেকটি ভিন্ন ভিন্ন কতক বৈশিষ্ঠ্যপূর্ণ শব্দ-উপাদান বা গুনাবলীসমুহ দ্বারা গঠিত । সেই উপাদানগুলোর সমষ্ঠিগত অর্জিত গুণাবলীর অধিকারীদেরকেই মূলতঃ “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রী হিসাবে বিবেচিত করা হয় ।
“ Student ” শব্দটি যেহেতু সাতটি পৃথক পৃথক বিশেষ উপাদান দ্বারা গঠিত । সেহেতু , শব্দটির রাসায়নিক বিশ্লেষণ করতে আমরা তার প্রতিটি বর্ণকে পৃথকভাবেই বিশ্লেষণ করবো । তাই , আমরা প্রথমেই শুরু করি -
আবার উক্ত চারটি উপাদানকে আমরা যদি বাংলায় অর্থ করি , তবে আমরা পাই সাতটি উপাদান । যেমন -
(2) Self Confidence: এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই দু’টি উপাদান ।যথা - (ক) আত্মপ্রত্যয় এবং (খ) নিজ বিচার - বুদ্ধি - ক্ষমতা ইত্যাদির উপর বিশ্বাস ।
(3) Sample : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই দু’টি উপাদান । যথা - (ক) আদর্শ এবং (খ) নমুনা ।
(4) Sagacious : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই দু’টি উপাদান । যথা - (ক) বিজ্ঞ এবং বিচক্ষণ ।
অর্থাৎ , একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রীকে বিজ্ঞ বা চতুর , জ্ঞানী, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং বিচক্ষণ বা নিপুন ও পটু হতে হবে ।
আবার উক্ত দু’টি উপাদানকে আমরা যদি বাংলায় অর্থ করি , তবে আমরা পাই তিনটি উপাদান ।যেমন -
(2) Target : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই একটি উপাদান । যথা -লক্ষ্যবস্তু ।
সুতরাং , উপরোক্ত “ T ” Letter বা বর্ণের ইংরেজী শব্দে প্রাপ্ত চারটি উপাদান বিশ্লেষণ করলে আমরা বাংলায় একজন শিক্ষার্থীকে নির্ণয় করতে পারি এভাবে -
(1) Unflinching : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই তিনটি উপাদান । যথা - (ক) অবিচলিত (খ) পশ্চাদপদ হয়না এমন এবং (গ) সংকোচিত হয়না এমন ।
(2) Unassuming : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই তিনটি উপাদান । যথা -(ক) বিনীত (খ) নম্র এবং (গ) নিরহঙ্কার ।
সুতরাং , উপরোক্ত “ U ” Letter বা বর্ণের ইংরেজী শব্দে প্রাপ্ত চারটি উপাদান বিশ্লেষণ করলে আমরা বাংলায় একজন শিক্ষার্থীকে নির্ণয় করতে পারি এভাবে -
আবার উক্ত পাঁচটি উপাদানকে আমরা যদি বাংলায় অর্থ করি , তবে আমরা পাই এগারোটিউপাদান । যেমন -
(2) Decency : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই দু’টি উপাদান । যথা - (ক) শিষ্ঠতা এবং (খ) শালীনতা ।
(3) Dauntless : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই একটি উপাদান । যথা - নির্ভীক ।
(4) Debonair : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই তিনটি উপাদান । যথা - (ক) শিষ্ঠাচারী (খ) প্রফুল্ল এবং (গ) স্ফূর্তিবাজ ।
(5) Diciple : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই তিনটি উপাদান । যথা - (ক) শিষ্য (খ) ছাত্র এবং (গ) অনুগামী ।
সুতরাং , উপরোক্ত “ D ” Letter বা বর্ণের ইংরেজী শব্দে প্রাপ্ত পাঁচটি উপাদান বিশ্লেষণ করলে আমরা বাংলায় একজন শিক্ষার্থীকে নির্ণয় করতে পারি এভাবে -
আবার উক্ত চারটি উপাদানকে আমরা যদি বাংলায় অর্থ করি , তবে আমরা পাই নয়টি উপাদান ।যেমন -
(2) Etiquette : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই তিনটি উপাদান । যথা - (ক) শিষ্ঠাচার (খ) ভদ্র এবং (গ) আদব-কায়দা ।
(3) Educationist : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই একটি উপাদান । যথা - শিক্ষাব্রতী ।
(4) Energetic : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই দু’টি উপাদান । যথা - (ক) উদ্যামশীল এবং (খ) বলবান ।
সুতরাং , উপরোক্ত “ E ” Letter বা বর্ণের ইংরেজী শব্দে প্রাপ্ত চারটি উপাদান বিশ্লেষণ করলে আমরা বাংলায় একজন শিক্ষার্থীকে নির্ণয় করতে পারি এভাবে -
(1) Neighbourly : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই একটি উপাদান । যথা - বন্ধুভাবাপন্ন ।
(2) Novice : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই দু’টি উপাদান । যথা - (ক) শিক্ষার্থী এবং (খ) শিক্ষানবিস ।
সুতরাং , উপরোক্ত “ N ” Letter বা বর্ণের ইংরেজী শব্দে প্রাপ্ত দু’টি উপাদান বিশ্লেষণ করলে আমরা বাংলায় একজন শিক্ষার্থীকে নির্ণয় করতে পারি এভাবে -
(1) Thoughtful : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই একটি উপাদান । যথা - চিন্তাশীল ।
(2) Teacher : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই একটি উপাদান । যথা - শিক্ষক ।
(3) Training : এই শব্দটিকে বাংলায় অর্থ করলে Student বা শিক্ষার্থী সম্পর্কিত আমরা পাই একটি উপাদান । যথা - হাতে কলমে শিক্ষা ।
সুতরাং , উপরোক্ত “ ( দ্বিতীয় ) T ” Letter বা বর্ণের ইংরেজী শব্দে প্রাপ্ত তিনটি উপাদান বিশ্লেষণ করলে আমরা বাংলায় একজন শিক্ষার্থীকে নির্ণয় করতে পারি এভাবে -
এভাবে কোন মানুষ STUDENT - এর উপরোক্ত সাতটি মূল গুণাবলী অর্জন বা অধিকার করতে পারলেই তাকে STUDENT হিসাবে গণ্য করা যাবে এবং সে পূর্ণাঙ্গ একজন “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে স্বীকৃতি পাবার যোগ্য হবে বলেই আমি মনে করি ।
এখন আমরা STUDENT শব্দটির প্রতিটি Letter বা বর্ণ বিশ্লেষণ করে যে উপাদানগুলো পেলাম , সেগুলো একত্র করে সাজিয়ে দেখি মোট কতটি উপাদান দ্বারা “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” শব্দটি গঠিত ।
আমরা STUDENT শব্দটির প্রতিটি Letter বিশ্লেষণ করে ইংরেজী শব্দে মোট উপাদান পেলাম ২২টি । অর্থাৎ , ইংরেজী ২২টি শব্দ উপাদান দ্বারা STUDENT শব্দটি গঠিত । আবার STUDENT শব্দটির প্রতিটি Letter এর প্রতিটি উপাদান বাংলায় বিশ্লেষণ করে আমরা বাংলায় মোট উপাদান পেলাম ৪২টি । অর্থাৎ , STUDENT শব্দটির বাংলা অর্থ শিক্ষার্থী শব্দটি ৪২টি শব্দ উপাদান দ্বারা গঠিত ।
যেহেত, আমরা বাঙ্গালী তথা বাংলাদেশী , আমাদের সঠিক বুঝশক্তি আসে বাংলায় বুঝানোর মাধ্যমে । সেহেতু , STUDENT শব্দটির অর্থ বুঝার জন্য বাংলাতেই আমাদেরকে বুঝদান করতে হবে । তাই , ইংরেজী শব্দ উপাদানগুলো থেকে আমরা যে বাংলা শব্দ উপাদানগুলো পেলাম সেগুলো একত্রে সাজিয়ে আমরা “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” এর গুণাবলী সমূহ জেনে নিব ।
আমরা STUDENT শব্দটির প্রতিটি Letter রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে বাংলায় একজন শিক্ষার্থীর গুণাবলী সমূহ নিম্নরূপে পেয়েছি । সুতরাং , একজন “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” কে আবশ্যকীয়ভাবে নিম্নের গুণাবলীসমূহের ধারক হতে হবে । ফলে একজন “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” এর স্বরূপ বা পরিচয় কি তা জানতে হলে ঐ “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” এর সমগ্র শিক্ষাজীবন নিম্নোক্ত গুণাবলীর আলোকে যাপিত হয় কিনা তা তীক্ষ্নদৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে হবে । তবেই তাকে একজন “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে গণ্য করা যাবে । নয়তো , এইসব গুণাবলী সমূহের আলোকে সে প্রকৃতভাবে “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” নয় বলেই আমি মনে করি ।
০১) তাকে হতে হবে অধ্যায়নশীল ।
STUDENT শব্দটির রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে আমরা জানতে পারলাম , একজন “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে গমনাগমন ও শ্রেনীকক্ষ বা শিক্ষাকেন্দ্রে হাজিরা দিতে থাকলেই সে উপযুক্ত “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে বিবেচিত হবেনা । তাকে প্রকৃত “Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হতে হলে বেশ কিছু বৈশিষ্ঠাবলী বা গুণাবলীর ধারক হতে হবে । যতক্ষন পর্যন্ত উক্ত গুণাবলী সমূহের ধারক না হবে ততক্ষন পর্যন্ত কোন ব্যক্তি প্রকৃত “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে নিজেকে দাবী করত পারবেননা । তাই , শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া প্রত্যেককেই প্রকৃত “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে নিজেকে দাবী করার জন্য উপরোক্ত গুণাবলী সমূহের অবশ্যই ধারক হতে হবে ।
এখন আমরা আসি বর্তমান প্রেক্ষাপটে “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” বাচাই করনে । এক্ষনে আমরা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী (?) এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষা দাতাদের একই কাতারে দাঁড় করাব । কারণ , প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে যেমন ( উপাদানমূলে ) এক একজন শিক্ষক-শিক্ষিকা হতে হবে , তেমনি প্রতিটি শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাদাতাদেরও এক একজন ছাত্র-ছাত্রী হতে হবে ।
কেননা , কোন যথোপযুক্ত বা উত্তম গুণাবলীর শিক্ষক-শিক্ষিকা মূলতঃ পূর্বপাঠ ছাড়া বা STUDENT শব্দটির পূর্ণাঙ্গ গুণাবলী নিজের উপর বিদ্যমান রাখা ছাড়া তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের যথোপযুক্ত শিক্ষাদান করতে পারেননা ।
কারণ , শিক্ষাদাতাই যদি শিক্ষায় অপূর্ণাঙ্গ থাকেন তবে শিক্ষা গ্রহনকারীরা তাঁর কাছ থেকে কিভাবে পূর্ণাঙ্গ বা যথোপযুক্ত শিক্ষালাভ করবে ? তাই,শিক্ষক-শিক্ষিকা অন্যকে শিক্ষাদানের পূর্বে তাঁকে অবশ্যই STUDENT শব্দটির গুণাবলী সমূহের ধারক হতে হবে । আর তাই , শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্র-ছাত্রী সবাই এখানে “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবেই বিবেচ্য ।
যা হোক , বর্তমানে আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাঁরা পড়া-লেখা করছেন এবং যাঁরা শিক্ষাদান করছেন , তাঁরা উভয়েই কতটুকু “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” এর উপযুক্ত বা তাঁরা কতটুকু “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হবার দাবী রাখেন , আমরা তাঁদের উপর উক্ত ৪২টি উপাদান বা গুণাবলীর উপস্থিতি-অনুপস্থিতির নিরিখেই জেনে নিতে পারব ।
আমরা যদি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে দৃষ্টি দেই , তবে দেখতে পাব বেশীরভাগ ছাত্র-ছাত্রীরই “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে দাবী রাখার যথাযোগ্য উপযুক্ততা নেই । যদি প্রকৃতই তারা “Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হিসাবে দাবী রাখার উপযুক্ততার অধিকারী হতো , তবে কখনোই কোন ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পীছ দিতে পারতোনা , অবমাননা করতে পারতোনা । কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাদাতাদের সাথে বেয়াদবি , অবাধ্যতা অমান্যতা সহ কোন প্রকার গর্হিত কর্মে লিপ্ত হতে পারতোনা । কোন প্রকার অন্যায়-অপকর্মে কোন ছাত্র-ছাত্রী জড়িত হতে পারতোনা । কোন প্রকার বেহায়াপনা , নোংরামী , ইতরামী , লুচ্ছামী , বদমাসী সহ অনিষ্টকর কোন কর্মে কোন ছাত্র-ছাত্রী লিপ্ত হতোনা । শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করে মানবতার শান্তি নষ্ট করতে পারতোনা কোন ছাত্র-ছাত্রী । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যান্তরে নারী ধর্ষণের সেঞ্চুরী উৎসব পালন করতোনা । শিক্ষাঙ্গনের মুক্ত আঙ্গিনায় শিষ্ঠাচার পরিপন্থি প্রেম নামক বেহায়াপনার উপস্থাপনে মত্ত্ব থাকতে পারতোনা কোন ছাত্র-ছাত্রী ।
যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকৃত কোন “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” থাকতো , তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হতো এক একটা শান্তির পারিজাত । শিক্ষার্থীরা মান্য করতো শিক্ষাদাতাদের । রক্তের হোলিখেলা বন্ধ হয়ে বের হতো শিক্ষাঙ্গন থেকে মেধার উদ্ভাবনে আনন্দমিছিল । উন্মুক্ত রাজপথে নারীবক্ষের নগ্নপ্রদর্শনী বন্ধ হয়ে প্রদর্শিত হতো আদর্শ সমাজের বাস্তব রূপ ।
কিন্তু , বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনৈতিক সব অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় , বর্তমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকৃত “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” বলতে কেউ আছে এমন মনে হয়না । মনে হয় তাতে ভরে আছে “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” নাম দিয়ে স্বার্থসিদ্ধি লাভে উন্মুখ সব অছাত্র-অছাত্রী , যারা আদৌ কোন “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” নয় । স্বার্থসিদ্ধির প্রয়োজনেই তারা ছাত্র-ছাত্রী সেজে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে গমনাগমন করছে ।
তারপরও মন থেকে বলতে হয় - প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ধারক , নয়তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো টিকতোনা । আমরা এমন একটা যুক্তি দাঁড় করাতে পারি যে - পৃথিবীতে যতদিন পর্যন্ত আল্লাহকে ডাকার একজন লোকও জীবিত থাকবে সেদিন পর্যন্ত কিয়ামত বা মহাপ্রলয় সংঘটিত হবেনা । অর্থাৎ , পৃথিবী থেকে যেদিন ভালো মানুষরা বিদায় হয়ে যাবে , সেদিনই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে । তেমনই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যেদিন প্রকৃত ভালো শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাবে সেদিনই উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে ।
তাই , পৃথিবীর পরিবেশ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ এখন যতই খারাপ দেখাকনা কেন , তার মধ্যে একজন না একজন কিছু না কিছু ভালো মানুষ বা প্রকৃত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেই । যদি না থাকতো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতো , ধ্বংস হয়ে যেতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও । থাকতোনা শিক্ষাগ্রহনের জন্য কোন শিক্ষার্থী ।
তাই , শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদিও “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” দাবী করার মতো যথাযোগ্য একজন ছাত্র-ছাত্রীও দেখা না যায় বা ভরে থাকে তাতে সব নামধারী ছাত্র-ছাত্রী । তথাপিও সেখানে কিছু না কিছু ( যেমন জ্বীনজাতির ছাত্র-ছাত্রী ) এমন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন যাঁরা প্রকৃত “ Student ” বা “ শিক্ষার্থী ” হবার যোগ্যতা রাখেন , যাঁরা খুবই নগণ্য । অর্থাৎ , যাঁদেরকে আমরা চর্মচক্ষে দেখছিনা ঠিকই , কিন্তু তাঁদের জন্যই টিকে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ।
পরিশেষে , মহান আল্লাহ পাক পরওয়ারদিগার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী নামধারী শিক্ষার্থী - শিক্ষাদাতাদের উপযুক্ত শিক্ষার্থী - শিক্ষাদাতা হিসাবে গড়ে উঠতে সহায়তা করুন । সেই সাথে তাদেরকে উত্তম জ্ঞান দান করে প্রকৃত আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ে তুলুন । “ আমীন ’’ ।
bhalo likhechen bhai.
উত্তরমুছুনRegards,
Abdullah Ibneyy Shahid
জনাব
উত্তরমুছুনAbdullah Ibneyy Shahid !
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।