রাষ্ট্রপতি ও বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম এর মৃত্যু ঃ ১৯৯৭ সালের এইদিনে - বাংলাদেশের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ঢাকায় মৃত্যু বরণ করেন। ১৯১৬ সালে তিনি রংপুর জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি রংপুর জেলা স্কুলে পড়া লেখা করেন এবং পরবর্তিতে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। এরপর তিনি কলকাতা প্রসিডেন্সি কলেযে পড়ালেখা করেন ও ইউনিভার্সিটি ল' কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন। কলকাতা কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পর ১৯৪৭ সালে সায়েম ঢাকা চলে আসেন। ঢাকায় এসে তিনি ঢাকা হাইকোর্টে প্রাকটিস শুরু করেন। বাঙ্গালি রাজনীতিবিদ এ.কে. ফজলুল হকের সাথেও তিনি কাজ করেন। একসময় তিনি ঢাকা হাই কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচিত মহাসচিব ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৬২ সালের ৩ জুলাই তিনি বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তাঁকে ১২ জানুয়ারি , ১৯৭২ এ দেশের প্রথম প্রধান বিচারপতির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি। তিনি ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ থেকে ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
অবিসংবাদী জননেতা, কমরেড জ্যোতি কিরণ বসুর জন্ম ঃ ১৯১৪ সালের এইদিনে - বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কমিউনিস্ট নেতা, পশ্চিমবঙ্গের নবম মুখ্যমন্ত্রী, ভারতীয় উপমহাদেশের বরেন্য বামপন্থী রাজনীতিবিদ, অবিসংবাদী জননেতা, কমরেড জ্যোতি কিরণ বসু (যিনি জ্যোতি বসু নামেই বিখ্যাত) কলকাতার ৪৩/১ হ্যারিসন রোডস্থ (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) বাসভবনের এক সম্ভ্রান্ত বাঙ্গালী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল জ্যোতিরিন্দ্র বসু; ডাকনাম ছিল গনা। জ্যোতি বসুর পিতা নিশিকান্ত ছিলেন এক প্রথিতযশা ডাক্তার এবং মা হেমলতা ছিলেন এক গৃহবধূ। তিনি বাবা-মার তৃতীয় সন্তান। তাঁর সাথে বাংলাদেশের নাড়ির টান রয়েছে। কারন বসু পরিবারের আদিনিবাসও ছিল ব্রিটিশ বাংলা প্রদেশের ঢাকা জেলার (অধুনা বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার) বারদী গ্রামে। একসময় ছেলেবেলাও কেটেছে তার বারদিতে।
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পিতামাতা ওল্ড হিন্দুস্তান বিল্ডিং-এর (বর্তমান ফুটনানি চেম্বার) একটি ভাড়াবাড়িতে উঠে আসেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতারই ৫৫ এ হিন্দুস্তান রোডস্থ নিজস্ব বাসভবনে উঠে আসেন তাঁরা। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় কলকাতার ধর্মতলার লরেটো স্কুলে ১৯২০ সালে, ছয় বছর বয়সে। স্কুলে ভর্তির সময়ই নিশিকান্ত বসু ছেলের নাম ছোট করে জ্যোতি বসু রাখেন। জ্যোতি বসু ১৯২০ সালে কলকাতার ধর্মতলার মেয়েদের স্কুল লোরেটোতে প্রথম ভর্তি হয়েছিলেন। লরেটো স্কুলে পাঁচ বছর পড়ার পর তিনি ১৯২৫ সালে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়া শুরু করেন। এরপর ১৯২৫ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে সিনিয়র কেমব্রিজ বা নবম শ্রেণি পাস করেন। ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। পরে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স সম্পন্ন করেন।
গ্র্যাজুয়েশন সম্পূর্ণ করার পর ১৯৩৫ সালে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার্থে তিনি বিলেত চলে যান। সেখান থেকে ব্যারিস্টারি পাস করেন। সেখানে পড়াশোনা করতে গিয়ে তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় ব্রিটেনে যেসব ভারতীয় ছাত্র পড়াশোনা করত তাদের অধিকাংশই ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা মূলত ইন্ডিয়া লীগ ও লন্ডন মজলিস নামে দুটি প্লাটফর্মে কাজ করত। জ্যোতি বসু এই দুটি সংগঠনেই সক্রিয়ভাবে কাজ করা শুরু করেন। ১৯৩৭ সালেই তিনি ইন্ডিয়া লীগের সদস্য হন। ১৯৩৮ সালে জ্যোতি বসু ও তাঁর সহকর্মীদের উদ্যোগে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর ব্রিটেন সফরের সময় সভার আয়োজন করা হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের লন্ডন সফরকালেও একই ধরনের উদ্যোগ নেন জ্যোতি বসু।
লন্ডনে থাকাকালীন সেখানকার ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে গড়ে ওঠা লন্ডন মজলিশের তিনি ছিলেন প্রথম সম্পাদক। ইংল্যান্ডে গ্রেট ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির সাথে তার সখ্যতা বাড়ে। বিশিষ্ট কমিউনিস্ট দার্শনিক ও লেখক রজনী পাম দত্ত কর্তৃক কমিউনিস্ট মতাদর্শে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন জ্যোতি বসু। লন্ডনে আইন পড়তে গিয়েই রাজনীতিতে তাঁর দীক্ষা হয়। ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনে আইন পড়তে পড়তেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, আইন ব্যবসা নয়, কমিউনিস্ট রাজনীতিই হবে তার জীবনের ব্রত।
তখন বিশ্বে ফ্যাসীবাদী অভ্যূত্থান শুরু হয়েছে। লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সে হ্যারল্ড লাস্কির বক্তৃতা শুনতে শুনতে তিনি উদ্দীপ্ত হয়ে পড়লেন। কার্ল মার্কসের দাস ক্যাপিটাল এবং এঙ্গেলসের কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো পড়ে মেতে উঠলেন রাজনীতিতে। সে সব সভায় ব্রিটেনের লেবার ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকতেন। ব্রিটেনে অধ্যয়নকালেই তিনি প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যারল্ড লাক্সির বক্তৃতা শোনার জন্য লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সে যেতেন। এ সময় তিনি প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা রজনীপাম দত্তের সংস্পর্শে আসেন। মূলত তাঁর অনুপ্রেরণাতেই তিনি মার্কসীয় দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। একসময় বন্ধু ভূপেশ গুপ্তের অনুপ্রেরণায় গ্রেট ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পরিচিত হন। স্নেহাংশু আচার্য, হীরেন মুখার্জি, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, এন কে কৃষাণ প্রমুখ বহু তরুণ ভারতীয় সে সময় বিলেতে বিদ্যার্থী থাকাকালে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। সে সময় কমিউনিস্ট জুজুতে সারা ইউরোপ কাঁপছে। এই অবস্থাতেই তিনি ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির পরামর্শে পূর্ব লন্ডনে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। মূলত এর মধ্য দিয়েই তিনি সরাসরি শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে কাজ করা শুরু করেন। এক পর্যায়ে ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হ্যারি পোলিত তাঁকে এতে নিরুৎসাহিত করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ। তাই তিনি যদি এই পার্টির সদস্য হন তাহলে ভারতে ফিরে যাওয়া তাঁর পক্ষে কঠিন হবে। জ্যোতি বসু সিদ্ধান্ত নেন, ভারতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। লন্ডনের মিডল টার্ম থেকে তিনি ১৯৪০ সালে ব্যারিস্টারি সম্পন্ন করেন।
সেই বছরই তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে এসেই 'কাকাবাবু' কমরেড মোজাফ্ফর আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং নিষিদ্ধঘোষিত গোপনে কর্মরত কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। প্রথমে কিছুদিন বোম্বে থাকার পরে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। আর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন রেল শ্রমিকদের নেতা হিসাবে। স্বাধীনতার পূর্বে দেশের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, তেভাগা আন্দোলন ও বঙ্গবিভাগ নিয়ে আইনসভায় বিভিন্ন আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীনোত্তর পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য আন্দোলন, শিক্ষক আন্দোলন, বন্দীমুক্তি, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত আন্দোলনের পুরোভাগে থাকেন জ্যোতি বসু। এই সময় একাধিকবার বিভিন্ন কারণে কারারুদ্ধও হতে হয় বসু সহ তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় কমিউনিস্ট নেতাদের। রাজ্যের ক্ষমতায় এসে জ্যোতি বসু পাটশিল্প, কয়লাশিল্প ইত্যাদির রাষ্ট্রায়াত্ত্বকরণ এবং জমিদারি প্রথার উচ্ছেদের ঘোষনা করেন। জমিদারি প্রথার উচ্ছেদের পাশাপাশি ভূমিহীনদের মধ্যে জমিবণ্টন নিয়ে তার উদ্যোগ ভারতের ইতিহাসে চিরদিন লেখা থাকবে। তার সরকারের ৩৬ দফা কর্মসূচীর অবদান পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে চিরঋনী করে রেখেছে।
মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে দেশ শাসনের দর্শন ব্যক্ত করে তিনি বলেছিলেন, “আমরা রাইটার্স বিল্ডিং থেকে ক্ষমতা প্রয়োগ করব না, আমরা আমাদের কর্মসূচী রূপায়ণ করব মাঠ আর কারখানা থেকে, জণগণের সহায়তা নিয়ে, কারণ এরাই আমাদের ক্ষমতার উৎস।” সারা পৃথিবীতে কোন একটি নির্বাচিত সরকারে একনাগাড়ে বহু বছর শাসন করার কৃতিত্ত্ব আর কোন রাজনীতিকের নেই। এমন এই মানুষটি ছিলেন বাঙ্গালী। দেশে বিদেশে এমন কোন বাঙ্গালী নেই যিনি জ্যোতি বসুর নাম শোনেননি। ছাত্রাবস্থায় উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে গিয়ে তিনি কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।
১৯৪০ সালে ভারতে ফিরে এসে প্রথমে আইন ব্যবসাতে যুক্ত হলেও অচিরেই সেই পেশা ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে। সেই সময় ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের জনক ছিলেন প্রবাদপতিম নেতা মুজফফর আহমেদ। তার সাথে যুক্ত হয়ে তিনি বামপন্থী আন্দোলনকে নিয়ে গেলেন একটি বিশেষ জায়গায়। ১৯৪৩ সালে সালে সিপিআই'র প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেই কংগ্রেস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত পার্টির বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে তিনি প্রদেশ কমিটির সংগঠক নির্বাচিত হন। তখন থেকেই তিনি পার্টিনির্দেশে সার্বক্ষণিকভাবে বেঙ্গল-আসাম রেলওয়েতে ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। একই সঙ্গে তিনি বন্দর ও ডক শ্রমিকদেরও সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। দীর্ঘ ৬৭ বছর তিনি একটানা সেই পার্টি-সার্বক্ষণিকের জীবনযাপন করে গেছেন।
১৯৪৬ সালে তিনি অবিভক্ত বঙ্গপ্রদেশের আইনসভায় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হন। অসংখ্যবার ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের দায়ে তিনি গ্রেফতার বরন ও আত্মগোপনে বাধ্য হন। এরপরে দেশভাগের পরেও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। ড. বিধানচন্দ্র রায়ের মুখ্যমন্ত্রীত্বের সময় তিনি হন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম বিরোধী দলনেতা। এই সময় ভারত সরকার তার দলকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করলে তিনি আবারো গ্রেফতার হন। এ সময় পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ডা. বিধানচন্দ্র রায়। জ্যোতি বসু তখন বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন করেন। বিধানসভার একজন তরুণ সদস্য হিসেবে তিনি সে- সময়ের কংগ্রেস-নীতির ব্যাপক গঠনমূলক সমালোচনা করেন। শুধু সংসদেই আলোচনা-সমালোচনা নয়, একই সঙ্গে তিনি রাজপথে কংগ্রেসের জনবিরোধী নীতির বিপক্ষে লাগাতার আন্দোলন গড়ে তোলেন। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা হিসেবে রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারী এবং শ্রমিক-মজুরদের মধ্যে তিনি জনপ্রিয় তো ছিলেনই, পাশাপাশি ছাত্র ও তরুণদের মধ্যে তিনি পার্টিকে বিস্তৃত করতে সক্ষম হন। সে সময় জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতেও ঐতিহাসিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এ সময় তিনি ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলনেরও নেতৃত্ব দেন।
১৯৪৬ সালে যখন সারা ভারতে দাঙ্গা ছড়িয়ে পরে তখন মহাত্মা গান্ধী কলকাতার বেলেঘাটায় আসেন। জ্যোতি বসু তাঁর সঙ্গে সেখানে দেখা করেন এবং সর্বদলীয় শান্তি রক্ষা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন। ১৯৪৬ সালে জ্যোতি বসু প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। বেঙ্গল-আসাম রেলওয়ে নিয়ে গঠিত আসন বা কনস্টিটুয়েন্সি থেকে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে তিনি দলীয় মুখপত্র 'স্বাধীনতা' পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন। ১৯৫৩ সালে তিনি সিপিআই'র পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে জ্যোতি বসু সিপিআই'র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৬৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। সেখান থেকে অনেকেই বেরিয়ে এসে নতুন করে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআই-এম বা সিপিএম) নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। জ্যোতি বসু তখন সিপিএম-এর পলিটব্যুরোর সদস্য নির্বাচিত হন। তবে দল ভাগ হলেও সমস্ত বামপন্থী দলকে নিয়ে তিনি একসাথে লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যান। ১৯৬৭ সালেই পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস সরকারের পতন হলে জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গের যুক্তফ্রন্ট সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬৭-৬৯ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। তখন যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বাংলা কংগ্রেসের নেতা অজয় মুখার্জি। এ সরকারকে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়া হয়নি। ষড়যন্ত্র করে তাঁকে অপসারণ করা হয়।
১৯৭২ সালে কংগ্রেস ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে পুনরায় ক্ষমতায় আসে। সিদ্ধার্থ শংকর রায় তখন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। সিপিএম নির্বাচন বয়কট করে। ১৯৭৭ সালেই সিপিএম-এর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার প্রথমবারের মতো পশ্চিমবঙ্গে এককভাবে ক্ষমতায় আসে। জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৭ সালের ২১ জুন শপথ নেন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। ১৯৯৬ সালে ভারতে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হলে জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সব দল মিলে। কিন্তু সিপিএম-এর পলিটব্যুরো সেই প্রস্তাব গ্রহণ না করায় জ্যোতি বসু ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ ছেড়ে দেন।
২০০০ সালের ২৮ জুলাই সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চলাকালীন হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন জ্যোতি বসু। চিকিৎসার পর সুস্থ্য হয়ে উঠে ১৫ আগস্ট নিজেই জানান ১৫ সেপ্টেম্বরের পর অবসর নিতে চলেছেন তিনি। তবে পার্টির চাপে অবসরের তারিখ নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পিছিয়ে যায়। ৩ নভেম্বর শেষ বারের মতো পশ্চিমবঙ্গ এর রাজ্য সচিবালয় মহাকরণে আসেন বসু। ৫ নভেম্বর রাজারহাট নিউটাউনে একটি আবাসিক ভবনের অনুষ্ঠানে যান। সেটিই ছিল তাঁর জীবনের শেষ সরকারি অনুষ্ঠান। একটানা ৮৫৪০ দিন (২৩ বছর) মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিদায় সংবর্ধনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেন জ্যোতি বসু। এটাই কোনো ভারতীয় মুখ্যমন্ত্রীর সর্বোচ্চ কার্যকাল। শুধু ভারতে নয়, গোটা বিশ্বেই অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে ছয়-ছয়বার একটানা নির্বাচিত হয়ে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ঘটনা আর নেই বললেই চলে। বিরল এই ঘটনা তাঁর ও তাঁর পার্টির অসাধারণ জনপ্রিয়তা ও নানা বৈরী শক্তির ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূলতার মুখেই তা বজায় রাখতে পারার কৃতিত্বের প্রমাণ বহন করে। পার্টির শৃঙ্খলা ও যৌথ সিদ্ধান্তের প্রতি তাঁর আনুগত্য ছিল নিটোল। একজন ভালো কমিউনিস্টের জন্য যা থাকা একান্ত আবশ্যক।
মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অবসর নেয়ার পরও জ্যোতি বসু দলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন দীর্ঘদিন। ২০০৫ সালে দলের ১৮তম কংগ্রেসে তিনি পুনরায় পলিটব্যুরোর সদস্য হন। কিন্তু ২০০৬ সালের মাঝামাঝি শারীরিক কারণে দলের রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চাইলে দলের অনুরোধে ১৯তম কংগ্রেস পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেন। সেই বছর ২৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন প্রদান করতে চাইলে তিনি তা গ্রহণে অসম্মত হন। এরপরে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জ্যোতি বসুকে সাম্মানিক ডি. লিট. সম্মান প্রদান করে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি বসু বিধাননগরের অ্যাডভান্সড মেডিকেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (আমরি হসপিটাল) ভর্তি হন। । সতের দিনের দীর্ঘ অসুস্থতার পর ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ১১ টা ৪৭ মিনিটে জ্যোতি বসুর জীবনাবসান হয়। তাঁর দেহের সৎকার হয় নি - তিনি তাঁর চোখ দান করে গেছেন ; তাঁর মরদেহ ব্যবহৃত হবে মেডিক্যাল কলেজের গবেষণায়। তাঁর মৃত্যু উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে ১৮ জানুযারী ২০১০ সোমবার সরকারী ছুটি পালিত হয়। ২০ জানুযারী তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। তার শেষযাত্রায় ভারতের সব দল তো বটেই, পৃথিবীর নানা দেশের রাষ্ট্রনেতারা উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, জ্যোতি বসুর কোন বিকল্প হয়না। তিনি কমিউনিস্ট নেতা, জননেতা, রাষ্ট্রনেতাও বটে।
জ্যোতি বসু ভারতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন সন্দেহ নেই। তার জন্যেই ভারত-বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জলচুক্তি হয়েছিল। বাংলাদেশের যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষকে আশ্রয় দেবার ক্ষেত্রেও তার অবদান চিরস্মরনীয় থাকবে। অতি সম্প্রতি তার দল কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা থেকে সরে গেলেও এখনো একক দল হিসাবে সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়েছে তারা। এখনো ত্রিপুরা রাজ্যের ক্ষমতায় আছে তার দল। আর এই কৃতিত্তের জন্যে দলের যে মানুষটির অবদান সবচেয়ে বেশী, তার নাম অবশ্যই জ্যোতি বসু।
জ্যোতি বসু তাঁর সারা জীবনের উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন যে, তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ ভালো কমিউনিস্ট এবং সেজন্য তিনি মানুষ হিসেবেও হয়ে উঠতে পেরেছিলেন অনন্যসাধারণ মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিবাদী মানুষ। তাঁর দরদ ছিল অপরিসীম। এসব গুণের জন্যই তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হতে পেরেছিল। কমরেড জ্যোতি বসু প্রয়াত, কিন্তু তিনি চিরঞ্জীব। শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি সংগ্রামের অব্যাহত কাফেলার ধারায় জীবন্ত হয়ে থাকবেন জ্যোতি বসু অগণিত কাল ধরে। তিনি ইতিহাসের মহানায়ক। মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ রচনার দ্বারা সভ্যতার নতুন দিগন্ত অবারিত করার বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের তিনি ছিলেন এক মহান স্থপতি। তিনি বিশ্ব সভ্যতার এক অনন্য সম্পদ। ভারতবর্ষ ও বিশ্ব সভ্যতা তাঁকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।
বেগম খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার সেলফোনে কথা বলা ঃ ২০০৭ সালের এইদিনে - দীর্ঘ দিন পর অভিন্ন সঙ্কটে প্রধান দুই দলের অস্তিত্ব আরো বিপন্ন হতে পারে এই আশঙ্কায় বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সেলফোনে কথা বলেন। এরই মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ দুই নেত্রীর মধ্যকার ব্যবধান কমে আসতে থাকে। পরিবর্তিত পরিস্খিতিতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং রাজনৈতিক ইনস্টিটিউশনকে ‘ধ্বংসের হাত থেকে’ বাঁচাতে তারা নিজেরাই উদ্যোগী হন। এদিন দুপুরে শেখ হাসিনার সাথে একটেলের একটি পার্টনার ফোনে দুই নেত্রী কথা বলেন। সে সময় বেগম খালেদা জিয়ার পাশে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব গয়েশ্বর চন্দ্ররায় এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে বেগম মতিয়া চৌধুরী উপস্খিত ছিলেন। সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে এই দুই নেত্রী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এক হয়েছিলেন। এর দু’দিন আগেও দু’নেত্রীর মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় দুই নেত্রী রাজনৈতিক ইনস্টিটিউশন রক্ষায় একযোগে কথা বলতে একমত হন।
ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌ দুর্ঘটনায় ‘এমভি নাসরিন’ এর সলিল সমাধি ঃ ২০০৩ সালের এইদিনে - ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌ দুর্ঘটনা ‘এমভি নাসরিন’ ডুবে ৬৪১ জনের মৃত্যু ঘটে। এদিন ঢাকা থেকে লালমোহনগামী ‘এমভি নাসরিন-১’ চাঁদপুরের ডাকাতিয়া এলাকায় অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল বোঝাইয়ের কারণে পানির তোড়ে তলা ফেঁটে গেলে প্রায় ২ হাজারের বেশি যাত্রীসহ এটি ডুবে যায় মেঘনা নদীতে। এ দুর্ঘটনায় ১২৮ পরিবারের প্রধানসহ সরকারিভাবে ৬৪১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে লাশ উদ্ধার করা হয় প্রায় ৮০০। দুর্ঘটনার দুইদিন পর ভোলার মেঘনা পরিণত হয়েছিল লাশের নদীতে।
যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান টটাম ও’নিল জাডেনের জন্ম ঃ ১৯৯৮ সালের এইদিনে - বিস্ময় বালক হলিউডের অভিনেতা, র্যাপার, গীতিকার, ড্যান্সার ও যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান টটাম ও’নিল জাডেন জন্মগ্রহণ করে। জাডেন পিতা উইল স্মিথ-এর সঙ্গে পারসুইট অব হ্যাপিনেস ছবিতে অভিনয় করে। এটাই ছিল জাডেনের অভিনয়ে হাতেখড়ি। প্রথম ছবিতেই তার তাক লাগানো অভিনয় তাকে একাধিক পুরস্কার এনে দেয়।
২০০৮ সালে মুক্তি পায় তার দ্য ডে দ্য আর্থ স্টুড স্টিল ছবিটি। এ বছরেই মুক্তি পায় জ্যাকি চ্যানের সঙ্গে দ্য কারাতে কিড। অল্প কিছু ছবিতে অভিনয় করেই জাডেন প্রমাণ করেছে হলিউডে এখনো অনেক চমক দেখানো বাকি তার। রয়েছে আরো অনেকে শার্লি টেম্পল (দ্য লিটিল প্রিন্সেস), জুডি ফস্টার (ট্যাক্সি ড্রাইভার), নাটালি পোর্টম্যান (দ্য প্রফেশনাল), এনজো স্টেইয়োলা (দ্য বাইসাইকেল থিফ), আবিগালি ব্রেসলিন (লিটিল মিস সানসাইন) লিন্ডা ব্লেয়ার (দ্য এক্সোরসিস্ট)।
মাত্র ১০ বছর বয়সে অস্কারের আলো ঝলমলে বিশাল মঞ্চে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেয় টটাম ও’নিল। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় তার পেপার মুন ছবিটি। এ ছবিতে তার অনবদ্য অভিনয় তাকে একাডেমি এ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন গ্লোবসহ আরো অনেক পুরস্কার ভূষিত করে। সবচেয়ে কমবয়েসী হিসেবে তার অস্কার জয় শিশুদের অভিনয় ইতিহাসে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ছবির সহঅভিনেতা ছিল বাবা রায়ান ও’নিল। শিশু বয়সের সফল ক্যারিয়ারে টটাম অভিনয় করেছে দ্য ব্যাড নিউজ রেয়াবস, লিটল ডার্লিং, ইন্টারন্যাশনাল ভেলভেট এর মতো সাড়া জাগানো ছবিতে।
চাঁদের বুকে নামা তৃতীয় মানুষ Charles “Pete” Conrad এর মৃত্যু ঃ ১৯৯৯ সালের এইদিনে - চাঁদের বুকে নামা তৃতীয় মানুষ Charles “Pete” Conrad মৃত্যুবরণ করেন। Apollo 12 মিশনের মাধ্যমে চাঁদে অবতরণ করেন Charles “Pete” Conrad। তিনি ২ জুন, ১৯৩০ আমেরিকার পিনসেলভেনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। অভিযানে অংশ নেয়ার সময় তার বয়স ছিল ৩৯ বছর ৫ মাস ১৭ দিন। Charles “Pete” Conrad এর মিশন উৎক্ষেপণ: ১৪ নভেম্বর, ১৯৬৯ এবং চাঁদে পৌঁছে: ১৯ নভেম্বর, ১৯৬৯ আর পৃথিবীতে ফিরে আসে: ১৪ নভেম্বর, ১৯৬৯।
নাসার মহাকাশমুখী সর্বশেষ খেয়াযান আটলান্টিস উৎক্ষেপণ ঃ ২০১১ সালের এইদিনে - মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা খেয়াযান আটলান্টিস উৎক্ষেপণ করে। আর এর মধ্যদিয়ে মার্কিন শাটল কর্মসূচি এসটিএস-১৩৫র পরিসমাপ্তি ঘটে। আটলান্টিসের ক্রুদের মধ্যে ছিলেন মিশন কমান্ডার ক্রিস ফারগুন, পাইলট ডগ হারলে, মিশন বিশেষজ্ঞ স্যান্ডি মাগনাস ও রেক্স ওয়ালহেইম। এই মিশন ১২ দিনের। গন্তব্য আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। উৎক্ষেপণের সময় আটিলান্টিসের শরীরের ভার ছিল ৩.৫ টন। এর এক-তৃতীয়াংশই ভবিষ্যতের মহাকাশ পর্যটকদের জন্য খাদ্য !
মহাকাশফেরির বিকল্প বাহন শাটল কর্মসূচি বন্ধ করা হলেও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) যাতায়াত ও রসদ আনা-নেওয়ার জন্য রাশিয়ান মহাকাশযান সয়ুজকে ব্যবহার করবে নাসা। স্পেস শাটলের বিকল্প হিসেবে নাসা তৈরি করছে মহাকাশযান ওরিয়ন। তাছাড়া নাসার কিছু মহাকাশযান নির্মাণাধীন আছে যেমন-ক্রু এক্সপ্লোরেশন ভেহিকল (সিইভি), এরেস ১ ও ৫। বিকল্প বাহন হিসেবে ব্যবহূত হতে পারে স্পেস-এক্সের ফ্যালকন-৯ ও ড্রাগন মহাকাশযান এবং অরবিটাল সায়েন্স করপোরেশনের টরাস-২ ও সিগনাস মহাকাশযান।
১৯৭২ সালের তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন আনুষ্ঠানিকভাবে নাসার স্পেস শাটল কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ১৯৮১ সালের ১২ এপ্রিল প্রথম স্পেস শাটল কলাম্বিয়া উৎক্ষেপণ করে আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স ও স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)। পৃথিবীর চতুর্দিকে ৩৬ বার প্রদক্ষিণ করার পর এটি দুদিন পর ১৪ এপ্রিল পৃথিবীতে ফিরে আসে। এরপর চ্যালেঞ্জার, এন্ডেভার, ডিসকভারি আর আটলান্টিস এই ৫টি নভোযান ৩০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মানুষ ও রসদ আনা নেওয়া করেছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এসে মহাশূন্যে স্পেস শাটলের অভিযান কেবল আর বিজ্ঞানী এবং মহাকাশ গবেষকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকল না। নাসার কল্যাণে মহাশূন্য অভিযান পরিণত হয়েছিল আকর্ষণীয় ভ্রমণের বিষয়ে। এর আগের অভিযানে আটলান্টিসের প্রথম মিশন সম্পন্ন হয়েছিল ১৯৮৫ সালের ৩ অক্টোবর।
অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ঃ ১৯৭২ সালের এইদিনে - বিশিষ্ট ভারতীয় ক্রিকেটার তথা ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (দাদা, মহারাজ, প্রিন্স অফ কলকাতা) বেহালা, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম চন্ডিদাস গঙ্গোপাধ্যায় ও মাতার নাম নিরুপা গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভ মূলত তাঁর দাদার সাহায্যে ক্রিকেট জীবনে প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি প্রথম জীবনে স্কুল ও রাজ্যের হয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন ক্রিকেট জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে থাকেন তিনি।
তিনি তাঁর জীবনের প্রথম একদিনের আন্তজার্তিক ম্যাচ খেলেন ১১ই জানুয়ারী, ১৯৯২ সালে। কিন্তু তিনি সেই অভিষেক ম্যাচে মাত্র তিন(৩) রান করেন, যার ফলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে দল থেকে বাদ পড়েন। তার পর ১৯৯৩-১৯৯৪ এবং ১৯৯৪-১৯৯৫ সালের রঞ্জি ট্রফিতে চমৎকার সাফল্য লাভ করেন যার ফলে তিনি আবার ১৯৯৬-এর ইংল্যান্ড সফরের জন্য খেলার সুযোগ পান। এরপরে সেই সফ- রেই তিনি তাঁর জীবনের প্রথম টেষ্ট খেলেন ২০ই জুন, ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তিনি সেই সফরে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছিলেন। তিনি তাঁর ক্রিকেট জীবনে সর্বমোট ৩১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এবং ১১,৩৬৩ রান সংগ্রহ করেছেন। পাশাপাশি তিনি ১১৩টি টেস্ট খেলেছেন ও ৭,২১২ রান সংগ্রহ করেছেন। ভারতকে তিনি ৪৯টি টেস্ট ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যার মধ্যে ভারত জিতেছিল ২১টি ম্যাচে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতকে ১৪৬টি একদিনের আন্তজার্তিক ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যার মধ্যে ভারত জিতেছিল ৭৬ টি ম্যাচে। তিনি ভারতের একজন মিডিয়াম পেসার বোলারও ছিলেন।
বাঁহাতি ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অদ্যাবধি ভারতের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক বলে বিবেচিত হন। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তাঁর অধিনায়কত্বেই ভারত ফাইনালে পৌঁছে যায়। ২০০৮ সালের ৭ অক্টোবর সৌরভ ঘোষণা করেন যে সেই মাসে শুরু হতে চলা টেস্ট সিরিজটিই হবে তাঁর জীবনের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ। ২০০৮ সালের ২১ অক্টোবর সৌরভ তাঁর সর্বশেষ প্রথম-সারির ক্রিকেট ম্যাচটি খেলেন। ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার পর তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।
এরপরে ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০-এ আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেন এবং ২০০৮ ও ২০১০-এ এই দলকে নেতৃত্ব দেন। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আইপিএলের চতুর্থ সিজনে নিলামে তিনি অবিক্রীত থেকে গেলেও শেষ পর্যন্ত পুনে ওয়্যারিআর্সের দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭২ অনূর্দ্ধ ১৫ বাংলার হয়ে ওড়িশার বিরুদ্ধে শতরান, ১৯৯১ সালে পূর্বাঞ্চলের হয়ে দলীপ ট্রফিতে ১২১ রান তাঁকে ভারতীয় দলে যায়গা করে দিয়েছিল।
ভাষাবিদ আবু ইউসুফ ইয়াকুব বিন ইসহাক ঃ ২৪৪ (হিজরি) সালের এইদিনে - বিখ্যাত মুসলিম মনীষী ও ভাষাবিদ আবু ইউসুফ ইয়াকুব বিন ইসহাক বা 'ইবনে সাকিত' আব্বাসীয় শাসক মুতাওয়াক্কিলের হাতে শাহাদাত বরণ করেন। তিনি দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানের খুযিস্তানে জন্মগ্রহন করেন এবং পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের সাথে ইরাকের বাগদাদে গিয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। নিজের মেধার গুণে তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বিজ্ঞ মহলে পরিচিতি লাভ করেন এবং এ কারণে আব্বাসীয় শাসক মুতাওয়াক্কিল নিজের সন্তানদের শিক্ষক হিসেবে ইয়াকুব বিন ইসহাককে নিয়োগ দেন। কিন্তু বিশ্বনবী (সাঃ) এর আহলে বাইতের প্রতি তার গভীর অনুরাগের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ার কারণে মুতাওয়াক্কিল তাকে হত্যা করেন। ইবনে সাকিত ২০টিরও বেশী বই রচনা করেছেন।
কোরআন বিশেষজ্ঞ আবু আলী আব্দুল্লাহ ইবনে বানা ঃ ৪৭১ (হিজরি) সালের এইদিনে বিশিষ্ট মুসলিম ফকীহ, মোহাদ্দেস ও কোরআন বিশেষজ্ঞ আবু আলী আব্দুল্লাহ ইবনে বানা ৮৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। ইতিহাস, নৈতিকতা, হাদিস ও কোরআনের ওপর তিনি ব্যাপক গবেষণা করেন এবং ঐ গবেষণালব্ধ ফলাফল তিনি বই আকারে লিখে রেখে যান। ইবনে বানার বইয়ের সংখ্যা দেড়শ'রও বেশী বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে তার হাতের লেখা তিনটি বই সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কেন্দ্রীয় পাঠাগারে সংরক্ষিত আছে। এছাড়া ইবনে বানা প্রতিদিন যে ডাইরি লিখতেন, তা থেকে হিজরি পঞ্চম শতকের মুসলিম ইতিহাস, বিশেষ করে বাগদাদের শাসকদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়।
দার্শনিক শাহাবুদ্দিন সোহরাওয়ার্দি ঃ ৫৪৯ (হিজরি) সালের এইদিনে - ইরানের বিখ্যাত পন্ডিত ও দার্শনিক শাহাবুদ্দিন সোহরাওয়ার্দি শহীদ হন। তিনি ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত যানজানের কাছে জন্মগ্রহন করেন। আল্লাহ প্রদত্ত মেধাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ইসলামের ওপর ব্যাপক গবেষণা করেন। বিশেষ করে তিনি দর্শন শাস্ত্রে তৎকালীন যুগের সেরা পন্ডিতে পরিণত হন। মরহুম সোহরাওয়ার্দি বিশ্বের বহু মুসলিম দেশ সফর করে নিজের জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ করেন। তিনি দর্শনশাস্ত্রে নতুন ধারার প্রবর্তন করেন। তার পূর্ববর্তী দার্শনিকদের ব্যাখ্যার বিপরীতে তিনি মনে করতেন, কোন সত্য উদঘাটনের জন্য যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি যথেষ্ট নয় বরং এর সাথে এরফান বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানকেও যুক্ত করতে হবে। সোহরাওয়ার্দির এই দর্শন, তার বিরোধী চিন্তাধারার বুদ্ধিজীবীদের ক্ষিপ্ত করে তোলে এবং তাদের প্ররোচনায় তাকে গ্রেফতার ও হত্যা করা হয়। অল্পদিনের জীবনে সোহরাওয়ার্দি ফার্সি ও আরবি ভাষায় বহু বই লিখে যান, যা আজো দর্শনশাস্ত্রের ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে মূল্যবান জ্ঞানভান্ডার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিখ্যাত তিলসিত চুক্তি স্বাক্ষরিত ঃ ১৮০৭ সালের এইদিনে ঃ রাশিয়ার তিলসিত এলাকায় বিখ্যাত তিলসিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রুশ সম্রাট প্রথম আলেক্সান্ডার ও ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়নের মধ্যে ঐ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইতিহাসখ্যাত ঐ চুক্তিতে রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্রাটগণ তাদের কোনো একটি দেশে তৃতীয় কোন শক্তি হামলা চালালে পরস্পরকে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। কিন্তু দুই দেশের এই বন্ধুত্ব মাত্র তিন বছর অর্থাৎ ১৮১০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ঐ বছর রুশ সরকার এ বিষয়টি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় যে, নেপোলিয়নের সাথে বন্ধুত্ব এবং তাকে সহযোগিতা করলে রাশিয়ার বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে রাশিয়া তার পানিসীমা ও বন্দরগুলো সব দেশের জাহাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় এবং রাশিয়ায় ফরাসী পন্যের ওপর ব্যাপক আমদানী শুল্ক ধার্য্য করে। এ পরিস্থিতিতে ফরাসী সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮১২ সালের ২৪শে জুন অকস্মাৎ রাশিয়া আক্রমণ করেন এবং এর ফলে দুই সাম্রাজ্যের মধ্যে ৫ বছরের মিত্রতার অবসান ঘটে।
কিম ইয়েল সুং এর পরলোকগমন ঃ ১৯৯৪ সালের এইদিন ঃ উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা ও সেদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব কিম ইয়েল সুং পরলোকগমন করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে উত্তর কোরিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন। কিম ইয়েল সুং ১৯৪৮ সালে কোরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বের ভার গ্রহন করেন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কোরিয়ো যুদ্ধের সময় সুং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন এবং ১৯৭২ সালে তিনি কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কোরিয়ার বিভক্তি এবং কোরিও উপদ্বীপে মার্কিন হস্তক্ষেপের স্পর্শকাতর সময়ে কিম ইয়েল সুং উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করেন। একই সাথে তিনি সে সময়কার দুটি বৃহৎ কমিউনিস্ট শাসিত দেশ রাশিয়া ও চীনের সাথে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার নীতিও গ্রহন করেন। এছাড়া দেশের পুনর্গঠন ও শিল্প উন্নয়নে কিম ইয়েল সুং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিম ইয়েল সুং এর মৃত্যুর পর তার ছেলে কিম জং ইল উত্তর কোরিয়ার নেতা নির্বাচিত হন।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুগুরি সন্দিন্তি রাজশেখর রেড্ডি ঃ ১৯৪৯ সালের এইদিনে - ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুগুরি সন্দিন্তি রাজশেখর রেড্ডি (ওয়াইএসআর ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। পুলিভেন্দুলা বিধানসভা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় ছয় বার নির্বাচিত রাজশেখর রেড্ডি কুদ্দাপা লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৯ম, ১০ম, ১১শ ও ১২শ লোকসভায় নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজশেখর রেড্ডির হেলিকপ্টার নাল্লামালা জঙ্গলের কাছে নিখোঁজ হয়ে যায়। ৩ সেপ্টেম্বর সকালে সংবাদমাধ্যম জানায় যে কুর্নুলথেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে রুদ্রকোন্ডা পাহাড়ের চূড়ায় সেই হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। সেই দিনই পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয় এবং অন্যান্য আরোহীদের সঙ্গে রাজশেখর রেড্ডির মৃত্যুর কথাও ঘোষণা করা হয়।
ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসারের সুবিখ্যাত 'ক্যান্টারবেরি টেলস' ঃ ১৯৯৮ সালের এইদিনে - খ্যাতনামা ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসারের সুবিখ্যাত 'ক্যান্টারবেরি টেলস' কাব্যগ্রন্থের একটি মূল কপি বিশ্বের সবচেয়ে দামি বইয়ের মর্যাদায় আসীন। কারণ এটি লন্ডনের 'ক্রিস্টিস' নিলাম ঘরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৬০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছিল! বইটি ছাপা হয়েছিল ১৪৭৭ সালে।
নাথুলা পাস উম্মুক্ত ঃ ২০০৬ সালের এইদিনে - দীর্ঘ ৪৪ বছর বন্ধ থাকার পর নাথুলা পাস সীমান্ত পথটি ভারত চীনের সাথে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে খুলে দেয়। নাথুলা পাস ভারত ও চীনের মধ্যে একমাত্র স্থল সীমান্ত পথ। ভারত-চীন পথটি হিমালয়ের ১৪,৪২৫ ফুট উচুতে অবস্থিত। পথটিতে ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তের সঙ্গে চীনের তিব্বতের সীমান্ত মিলেছে। ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের সময় ভারতের সাথে চীনের এই বাণিজ্য পথটি বন্ধ হয়ে যায়।
টোকিও ব্যাঙ্কের বেইজিং শাখা ঃ ১৯৯৫ সালের এইদিন - বেইজিংয়ে প্রথম বিদেশী ব্যাঙ্ক খোলা হয়। টোকিও ব্যাঙ্কের বেইজিং শাখা চীনা গণ ব্যাঙ্কের সদর দপ্তরের অনুমোদন পেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত টোকিও ব্যাঙ্ক হচ্ছে জাপানের পেশাগত বিদেশী মুদ্রা ব্যাঙ্ক। টোকিও ব্যাঙ্ক চীনের সঙ্গে প্রায় ৪০ বছর ধরে আদান-প্রদান করেছে, চীনের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য ঋণ দিয়েছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চীনের অর্থনৈতিক নির্মানকাজে সমর্থন দিয়েছে।
চীনের টেলিযোগাযোগ নেট প্রতিষ্ঠিত ঃ ১৯৮৬ সালের এইদিন - চীনের অভ্যন্তরীণ উপগ্রহ টেলিযোগাযোগ নেট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। টেলিযোগাযোগ উপগ্রহ হচ্ছে বিষুবরেখার উপর ৩৬ হাজার কিলোমিটার উঁচু স্থানে বসানো সমকালীন উপগ্রহ রিলে স্টেশন হিসেবে আঞ্চলিক টেলিযোগাযোগ বাস্তবায়নের আধুনিক পদ্ধতি।
নেটোর পূর্ব-মুখী পরিকল্পণা ঃ ১৯৯৭ সালের এইদিন - নেটোর পূর্ব-মুখী সম্প্রসারণ পরিকল্পণা শুরু। নেটোর শীর্ষ সম্মেলন স্পেনের মাদ্রিদের পৌর সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। ১৬টি সদস্য দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানগণ পাঁচ ঘন্টা ধরে তুমুল বিতর্ক করার পর চেক প্রজাতন্ত্র, হাংগেরি এবং পোল্যান্ডকে নেটোতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন, অবশেষে উল্লেখিত তিনটি দেশ ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে নেটোর ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আনুষ্ঠানিকভাবে নেটোর সদস্যে পরিণত হয়। এ থেকে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, ৩ বছর ধরে পরিকল্পিত নেটোর পূর্ব-মুখী সম্প্রসারণ পরিকল্পণা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
অভিনেত্রী ভিভিয়ান লেইগ ঃ ১৯৬৭ সালের এইদিনে – অস্কার প্রাপ্তা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ভিভিয়ান লেইগ ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের নিজ বাসস্থানে ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯১৩ সালের ৫ নভেম্বর তিনি ভারতের দার্জিলিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা-মা ব্রিটিশ নাগরিক। তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হচ্ছে "Gone with the wind"। এই চলচ্চিত্র মুক্তি পাবার অব্যবহিত পরেই বিশ্ব চলচ্চিত্র জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। সেই বছরই তিনি অস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পুরস্কার পান।
শিল্পী আমিনুল ইসলাম ঃ ২০১১ সালের এইদিনে - শিল্পী আমিনুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন। ৭ নভেম্বর, ১৯৩১ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ভাস্কো ডা গামা ঃ ১৪৯৭ সালের এইদিনে - নৌ অভিযাত্রি ভাস্কো ডা গামা লিসবন থেকে ভারতে যাত্রা শুরু করেন।
কলকাতা বুক সোসাইটি ঃ ১৮১৭ সালের এইদিনে - কলকাতা বুক সোসাইটি স্থাপিত হয়।
লর্ড ক্যানিং কর্তৃক ‘শান্তি’ ঘোষণা ঃ ১৮৫৮ সালের এইদিনে - সিপাহি বিদ্রোহের অবসানের পর লর্ড ক্যানিং ‘শান্তি’ ঘোষণা করেন।
ভারতের সংবিধান সংস্কার ঃ ১৯১৮ সালের এইদিনে - ভারতের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কে মন্টেগু-চেমসফোর্ড রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
ব্রিটেনের কেনিয়া অধিগ্রহণ ঃ ১৯২০ সালের এইদিনে - ব্রিটেন কেনিয়া অধিগ্রহণ করে।
কবি পার্সি বিসি শেলি ঃ ১৮২২ সালের এইদিনে - ইংরেজ কবি পার্সি বিসি শেলির মৃত্যু।
দার্শনিক এর্নস্ট ব্লখ ঃ ১৮৭৫ সালের এইদিনে - জার্মান দার্শনিক এর্নস্ট ব্লখের জন্ম।
বিষ্ণু দে ঃ ১৯০৯ সালের এইদিনে - বিষ্ণু দের জন্ম।
ঔপন্যাসিক অ্যানথোনি হোপ ঃ ১৯৩৩ সালের এইদিনে - ইংরেজ ঔপন্যাসিক অ্যানথোনি হোপের জন্ম।
ধনকুবের ডেভিড রকফেলার ঃ ১৯৩৯ সালের এইদিনে - মার্কিন ধনকুবের ডেভিড রকফেলারের জন্ম।
অভিযাত্রী স্যার উইলিয়াম এডওয়ার্ড পিয়ারি ঃ ১৮৫৫ সালের এইদিনে - মেরু অভিযাত্রী স্যার উইলিয়াম এডওয়ার্ড পিয়ারির মৃত্যু।
কার্ক মার্শম্যান ঃ ১৮৭৭ সালের এইদিনে - বাংলা সংবাদপত্র জগতের অন্যতম পুরোধা জন কার্ক মার্শম্যানের মৃত্যু।
জার্মানি ইতালিয়া চ্যাম্পিয়ন ঃ ১৯৯০ সালের এইদিনে - আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ ইতালিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়।
ফার্স্ট লেডি বেটি ফোর্ড ঃ সালের এইদিনে - যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি বেটি ফোর্ড মৃত্যুবরণ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮তম প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের স্ত্রী।