আমাদের দেশে আগে যে গানগুলো হতো সেগুলো ছিল গভীর অর্থবোধক জ্ঞান। অবশ্য এদিক দিয়ে অনুন্নত গান পরিবেষণে শিল্পীদের দোষ দেয়া যায় না , কারণ তারা গান রচনা করেননা , তারা অন্যদের রচিত গানে কন্ঠ দেন। কিন্তু আধুনীক যুগের বেশীর ভাগ শিল্পীরা একটা গান রচনা থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত সবকিছু নিজেরাই করেন। তাদের কাছে অনুন্নত গান পরিবেষণ কোনমতেই কাম্য নয় , অথচ সেসব শিল্পীদের কাছ থেকে অতীতের মত অর্থবোধক কোন মুল্যবান গান পরিবেষিত হচ্ছেনা , আশা করাও যাচ্ছেনা। ফলে বাংলাদেশের শিল্পীরা উন্নত বিশ্বে অনুন্নতই রয়ে যাচ্ছে।
বর্তমান যুগে যারা প্রেমের গান রচনা করছেন , তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি - অতীতের প্রেমের গানগুলো দিয়ে আপনাদের প্রেমের গানগুলো বিচার করুন । তবেই বেরিয়ে আসবে আপনাদের হাত দিয়ে গানের অমরত্বতা। একজন শিল্পী মন্তব্য করেছিলেন ব্যান্ড সংগীত এসে গানের জগতকে করেছে কলুষিত। আসলেই ঠিক । ব্যান্ডের গানগুলোকে শুধুমাত্র চিল্লানী , গলা ফাটানী , অযৌক্তিক উশৃন্খলার আয়োজন ছাড়া আর কিছুই ভাবা যায় না। হয়তো মাঝে মাঝে দুই একটা গান ব্যান্ডগুলো ভাল করে। কিন্তু বেশীর ভাগই অর্থহীন চিল্লাচিল্লি রূপেই প্রদর্শিত হয়।
আজ দেশের ঈদ আয়োজনে হিন্দী গানের আয়োজন দেখে মনে হয়েছিল বাংলা গানের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে। এমন হলে দেশের বাংলা গানের শিল্পীদের গানের জগত থেকে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। অথচ বাংলা গানের শিল্পীরা এ অবস্থার বিরুদ্ধে কোন অবস্থান নিচ্ছেননা । তাতে মনে হচ্ছে হিন্দী গানের আছরে বাংলা গান বাদ দিয়ে বাংলা গানের শিল্পীরা অচিরেই হিন্দী গান গাইতে শুরু করবে। এভাবেই একদিন আত্মহত্যা করবে বাংলাগানের জগত । যেভাবে মরণ হয়েছে বাংলা সভ্য সমাজের সংস্কৃতি ।
বলছিলাম আমাদের দেশে ঈদের গান হয়না । ঈদের গান পরিচয়ে যে গানগুলো হয় , তা হচ্ছে তথা কথিত প্রেমের গান। আজ নেট ব্রাউজ করে কুমার শানুর "আজকে খুশির বাঁধ ভেঙ্গেছে , ঈদ এসেছে ভাই ঈদ এসেছে" ঈদের গানটি পেলাম । এ ধরণের গান আমাদের বাংলাদেশে কয়টি হয়েছে আমার জানা নেই। যদিও হয়ে থাকে হাতে গোনা একটি বা দুটি পাওয়া যেতে পারে। অথচ অন্যান্য দেশে এই ধরণের ঈদের গান রচিত হয়েছে অসংখ্য।
যদি আমাদের শিল্পীদের কাছ থেকে উন্নত গান প্রকাশ না হয় , তবে তারা বিশ্বমঞ্চে দাঁড়াবে ? কিভাবে হবে বাংলাদেশের বাংলা গানের বিশ্বায়ন ? এ বিষয়ে সঙ্গীতবোদ্ধাদের দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজন আছে কি ?
========================