আজকের চীন, জাপান, জার্মানের দিকে তাকিয়ে দেখলে বুঝা যাবে, তারা কত পরিশ্রমী জাতি। অলসতাহীন সামান্য মেধার উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে কতইনা তারা উন্নতির শিখরে আরোহন করেছে। ছোট্টকালে পড়েছিলাম , চীন জাতি বিশ্বের সর্বাধিক পরিশ্রমী জাতি। তাদের মাঝে নেই কোন অলসতা, নেই কোন অবহেলা। তাই তারা সভ্য জাতি। চীন, জাপান, জার্মানে নেই কোন অপরাধ প্রবনতা। আছে শুধুই উন্নয়নের চিন্তা।
আর একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে , অষ্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার ন্যায় উন্নয়মুখী কর্মধারা। কি আছে মালয়েশিয়া আর সিঙ্গাপুরে ? কতদিন লাগল এ দু’টি দেশ উন্নয়নের শিখরে আরোহন করতে ? অল্প দূরের এ দু’টি দেশের উন্নয়নে আমরা আমাদের দেশের জনশক্তি রফ্তানী করছি । আর তারা কিভাবে করছে আমাদের দেশ থেকে জনশক্তি আমদানী ? কিভাবে তারা এ জনশক্তি কাজে লাগাচ্ছে ? কিভাবে তারা দেশের মানুষ দেশের বাইরে যেতে না দিয়ে দেশেই থাকতে বাধ্য করছে আর কিভাবে অন্য দেশ থেকে মানুষ নিয়ে সেখানে তাদেরকে বেতন দিয়ে পুষছে ?
সিঙ্গাপুরে আছে শুধু একটা পোর্ট বা পোতাশ্রয়। আর মালয়েশিয়ায় কি আছে তা জানে তারাই , যারা এদেশ থেকে সেখানে বেড়াতে গেছে বা সেদেশের কলকারখানার কর্মী হয়ে গেছে। মালয়েশিয়া পর্যটনের দেশ। কলকারখানার দেশ। আমাদের দেশের অর্ধেক সম্পদও উক্ত দু’টি দেশে রয়েছে কিনা সন্দেহ। অথচ কত উন্নত এ দু’টি দেশ ! এশিয়ার উক্ত ছোট্ট দু’টি দেশ আজ অল্প সময়ে ধনী দেশে রূপান্তরিত। কিভাবে ? তাদের এ রূপান্তর আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের মত দেশের সম্পদ লুন্ঠণ , ভাগাভাগি করে নিজেদের গোলাভর্তি করে নয় , নয় চুরি - ডাকাতি – রাহাজানী – খুন – অপহরণ – চিন্তাই – করেও । একমাত্র মেধা ও শ্রম দিয়ে এবং অলসতাকে দূরে ঠেলে দেশপ্রেমের মত শক্তিশালী অস্ত্রের জোরে অল্প সময়েই বিশ্বের বুকে এ দু’টি দেশ নিজেদের দাঁড় করিয়ে দিয়েছে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে। আর আমরা সে দু’টি দেশের সমবয়সী হওয়া সত্বেও এখনো কত পিছিয়ে !
যা হোক , উন্নয়নশীল দেশের গল্প বলে কলেবর বৃদ্ধি করা আমার উদ্ধেশ্য নয়। আমরা কেন উন্নয়নের পথে পিছিয়ে এবং কিভাবে উন্নয়নের পথে পরিভ্রমণ করতে পারি সেটা নিয়ে কিছু লেখাই আমার উদ্দেশ্য।
অলসতা, অবহেলা, দূর্নীতি, কর্মবিমুখতা, মেধাশক্তির অস্বীকার ও নির্লিপ্ততা, সময়ানুবর্তিতার অনুপস্থিতি, পারস্পরিক রেষারেষি, মেধা বিকাশে প্রতিবন্ধকতা, অসুস্থ রাজনীতি, আত্মবিশ্বাসের অভাব, বেকারত্বের লালন, কর্মক্ষত্র সৃষ্টির জ্ঞানহীনতা, অপরাধ প্রবণতা, উন্নত চিন্তার অনাগ্রহ, দলাদলি, সঠিক কর্মপদ্ধতির অভাব, সর্বোপরী ক্ষমতার লড়াইয়ে উপনীত হওয়া – ইত্যাদি কারণে আমাদের দেশ আজ উন্নতির সোপান থেকে পীছনে পড়ে আছে।
আমাদের দেশের একটি রসাত্মক প্রবাদ- “নয়টার গাড়ী কয়টা ছাড়ে”? অর্থাৎ, যে গাড়ী নয়টায় ছাড়ার কথা সে গাড়ী ছাড়ার কোন টাইম নেই বা কয়টায় ছাড়বে তার কোন ঠিক নেই। সময় বেঁধে দেয়া থাকলেও আমাদের দেশে কর্মটি নির্ধারিত সময়ে করা হয়না। তাই, আমরা পিছিয়ে আছি। সময়ানুবর্তীতা আমাদের কাছে অনুপস্থিত। ঘড়ি হাতে থাকলেও আমরা বলতে পারিনা সঠিক সময়। আমরা যখন বেলা নয়টায় ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে অফিসে যেতে তৈরী হই, চীনজাতি তখন তাদের দিনের অর্ধেক কাজ সমাপ্ত করে ফেলে। চীন জাতিরা ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠার সময় বিছানা ঘুটিয়ে ফেলে। আবার রাতে ঘুমুতে যাবার সময় রাত দশটায় বিছানা বিছায়। বিছানা ঘুটিয়ে ফেলার কারণ হল, তারা যদি কখনো ঘরে আসে তবে একটু শুতে মন চাইবে। তাই দুপুরে চেয়ারে হেলান দিয়ে তারা সামান্য বিশ্রামের পর শুরু করে পুনরায় কর্ম। এমনই এক পরিশ্রমী জাতি চীন।
অথচ আমরা ! বেলা ন’টায় ঘুম থেকে উঠি। অফিসে উপস্থিত হই দশটা বা এগারোটায়। চা পান, গায়ের কোট খুলে চেয়ার সাজিয়ে রেখে, গলার টাঁই বা ফাঁস ঢিলা করে কাজ শুরু করি এগারোটা বা বারোটায়। আবার দুপুরে রেষ্ট তিনঘন্টা। আবার কাজের ফাঁকে রয়েছে বিপরীত লিঙ্গের সহকর্মীর সাথে আলাপচারিতা আর এখন নতুন যোগ হয়েছে ফেইসবুকের মঞ্চে সময় কাটানো। কর্মদিবস শেষ বিকেল পাঁচটায়। সব মিলিয়ে যদি ঠিক ভাবে কাজের হিসাব করি, তবে আমাদের দিনের কর্মঘন্টা হবে দুই থেকে তিনঘন্টা। অথচ মে দিবস পালন করা হয় আট ঘন্টা শ্রমের স্বার্থে। কিন্তু, আমাদের দেশে কিছু সৎ ও ন্যায়-পরায়ন সময়ের মূল্য দানকারী মহৎ ব্যক্তি মহোদয় এবং কলকারখানার হার্ডকোর লেবার ব্যতিত আদৌ অফিসারদের কেউ আট ঘন্টা কর্ম করেন কি না জরীপের বিষয়।
বিগত ১৯শে জুলাই ২০০২ ইং তারিখে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় – “মিটিং, সিটিং, ইটিং – এ মন্ত্রী সচিবদের দিনে ১৯০ কর্মঘন্টা (অতিবাহিত)’’। এই যদি হয় একটি দেশের অবস্থা তবে সেই দেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে সেটাই বিবেচ্য। যদি সাধারণ শ্রমিকদের ন্যায় আমাদের অফিসারগণ দৈনিক ওভারটাইম বাদ দিয়ে আট ঘন্টা পরিশ্রমও যথাযতভাবে করতেন তবে আমাদের সোনার বাংলা সোনার মোড়কে মোড়ানো যেতো বৈকি।
আমাদের দেশে অপরাধী ধরা পড়লে পাঠিয়ে দেয়া হয় কারাগারে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর সাজা দেয়া হয় তাদের কারাগারে আটক রেখে। সেখানে অপরাধীরা বেকার ভাবে বসে থাকে। খায়, ঘুমায়। চিন্তায় তাদের জন্ম নেয় কিভাবে তারা আরো বড় অপরাধী হতে পারবে। কারাগারে আটক বড় বড় অপরাধীদের মিশে ছোট অপরাধীরাও বড় অপরাধী হয়ে এক সময় বের হয়। কারণ, কারাগারে আটক অপরাধী গুরুরা সেখানে বসে তাদের অতীত জীবনের অভিজ্ঞতা সাগরেদদের বয়ান করে থাকে। যার ফলে সাগরেদরা গুরুদের দেয়া বয়ান অনুযায়ী কাজ করতে ইচ্ছাপোষণ করে। পরবর্তীতে সাগরেদরা কারাগার থেকে বের হয়ে শুরু করে আবার অপরাধের। কি লাভ হলো তাদের কারাগারে আটক রেখে ? কোন লাভই হয়নি, হয়নি তারা সংশোধন। হয়েছে সরকারের লোকসান। অর্থভান্ডারের অর্থ কমেছে। অপরাধীদের বসিয়ে বসিয়ে বেকার রেখে বছরের পর বছর খাওয়াতে হয়। এক টাকাও অর্থভান্ডারে জমা হয়না, হয় খরচ। অপরাধীদের কারাগারে এভাবে আটকে রেখে তাদের সংশোধন করা যায়না। বরঞ্চ সে অপরাধীদের বড় অপরাধী হিসেবেই রূপান্তর করা যায়। করা হয় জাতির ক্ষতি।করা হয় জাতীয় নিরাপত্তার বিলুপ্তি।
এমতাবস্থায় আমার একটা প্রস্তাব হলো – যে অপরাধীই ধরা পড়ুকনা কেন তাকে সংশোধন এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে এমন সাজা দেয়া হোক, যাতে অপরাধী নিজে সংশোধন হবে, সেই সাথে সেই অপরাধী তার পারিবারিক ও জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে। আজ দেশের অনেক মেধাবী ও দক্ষ জনশক্তি বিদেশে অবস্থান করছে। তারা বৈদেশীক মুদ্রা অর্জন করে তা দেশে পাঠিয়ে জাতীয় উন্নয়নে ভুমিকা রাখছে। অথচ এদের প্রায়ই জনসমষ্টি দেশে কাজ না পেয়ে অপরাধীদের ভয়ে দেশান্তরীত হয়েছে। যাদের দিয়ে দেশ অনেক উন্নতির পথ সৃষ্টি করতে পারতো।
অন্যদিকে দেশে অবস্থানকারী অপরাধীরা জাতীয় উন্নয়নের বিবিধ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তাই, অপরাধীদেরকে জনশক্তি রফতানী হিসাবে বিদেশে পাঠিয়ে দেশের জাতীয় উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা যেতো। দেশের মেধাশক্তি বিদেশে না পাঠিয়ে একমাত্র অপরাধীদেরকেই বিদেশে পাঠিয়ে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জনের পদক্ষেপ নেয়াই হতো শোভনীয়। মেধাশক্তি দেশে কাজে লাগিয়ে এবং অপরাধীদের সাজা হিসাবে বিদেশে পাঠিয়ে দেশের উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা দূর করে উন্নয়ন করা যেতো।
এখন যারা বিদেশে অবস্থান করছে তাদের বেশীর ভাগই দুই/তিন বৎসর পূর্বে দেশে গমন করতে পারেনা, পারেনা বিদেশে কোন অপরাধ করতে। কাজ না করেও বিদেশে বসবাস করতে পারেনা। খেতে গেলেই কাজ করতে হয় বিদেশে। তাই , যদি কোন অপরাধীর ধরা পড়ে জেলে যেতে হয়,তবে তাকে জেলে পাঠিয়ে সাজা দেয়ার চাইতে নিদ্রিষ্ট মেয়াদে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়াই ভাল হবে বলে মনে করি। যদি সরকারী ভাবে অথবা আদালত কর্তৃক পারিবারিক ভাবে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ঐ অপরাধীকে সাজা স্বরূপ দুই বৎসর , তিন বৎসর, পাঁচ বৎসর , দশ বৎসর এভাবে বিভিন্ন মেয়াদের জন্য বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়, তবে অপরাধী নিজেও সংশোধন হবে, সাথে সাথে পারিবারিক ও জাতীয় উন্নয়নে বৈদেশীক মুদ্রা পাঠিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারী ভাবেই (জেলে বসিয়ে বেকার ভাতা না দিয়ে) অপরাধীদের দেশের রাজস্ব ফান্ড থেকে ঋণ স্বরূপ বিদেশ যাবার খরচ প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে বিদেশ পাঠানো যেতে পারে। কেননা, ঐ অপরাধীদের কারাগারে ভরে রাখলে সরকারের বা দেশের যে ক্ষতি হবে , তাদেরকে বিদেশ পাঠালে সেই ক্ষতি থেকে দেশ বা সরকার নিরাপদ থাকতে পারবে। বরঞ্চ সরকার তাতে লাভবান হবে।
যদি অপরাধীদের সরকারীভাবে জনশক্তি রপ্তানী হিসাবে বিদেশ পাঠায়, তবে সরকারের লাভবান হবার পথ এভাবে করা যায় – সরকার যে দেশে তাদেরকে জনশক্তি হিসাবে রপ্তানী করবে সে দেশের সহিত একটা চুক্তি করবে যে, উক্ত অপরাধী (জনশক্তি)কে সে দেশে নিদ্রিষ্ট মেয়াদে নিয়োগ দান করা হবে। আর তাকে ঐ নিদ্রিষ্ট মেয়াদের পূর্বে দেশে গমনের ছাড়পত্র দেয়া যাবেনা। তার জন্য নিদ্রিষ্ট মজুরী বাবদ অর্জিত বৈদেশীক মুদ্রার একটা নিদ্রিষ্ট অংশ তার নিজের খরচের জন্য নির্ধারিত করে দিয়ে বাকি অর্থ সরকার নিজ আওতাধীনে দেশে আনার ব্যবস্থা করবে। ঐ অর্থ থেকে সরকারের প্রদানকৃত খরচ কিস্তিতে গ্রহণ করে বাকি অর্থ তার পরিবারের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করবে। এমতাবস্থায় উক্ত অপরাধীর সাজাও হবে, তার দ্বারা বৈদেশীক মুদা অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে সহযোগীতা ও করা হবে।
তাছাড়া, অপরাধী নিজেকে সংশোধন ও কর্মমুখী করে নিবে। বেকারত্বের চিন্তা তার কাছ থেকে সরে যাবে। সরে যাবে তার মাথা থেকে অপরাধ প্রবনতার ভুত। অপরাধ চিন্তা তার মাথা থেকে সরে গিয়ে কর্মমুখী হয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে সে একজন ভাল মানুষ রূপে। সাজাকালীন তার পাঠানো যে অর্থ সঞ্চিত হবে দেশে, সাজা শেষে সে দেশে এসে সেই সঞ্চিত অর্থ নিয়ে ভাল একটা কাজের সন্ধানে নামতে পারবে। অপরাধী থেকে মানুষ হয়ে পরিচিতি লাভ করতে পারবে।
দেশের লক্ষ লক্ষ অপরাধী আজ বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছে। সরকার তাদের লালন করছে সরকারী রাজস্ব ফান্ড থেকে খরচ দিয়ে। কোটি কোটি টাকা তাদের পীছনে ব্যয় হচ্ছে। জাতীয় আর্থিক ফান্ডের ক্ষতি হচ্ছে তাতে। ওদিকে তাদের আটক রাখায় তাদের পরিবার আর্থিক ভাবে অভাব অনটনে ধুঁকে ধুঁকে মরছে।দেশের লক্ষ লক্ষ অপরাধী দেশের সর্বত্র অপরাধী জীবন নিয়ে আইন ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঘুরছে তারা বেকার হয়ে। জাতীয় উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বিভিন্নভাবে। বাড়ছে অপরাধ । হচ্ছে ক্ষতি নানামুখী। সরকারের দায়িত্ব – আটক সাজাপ্রাপ্ত ঐ সব অপরাধীদের বসিয়ে বসিয়ে না খাওাইয়ে ঐ খরচ দ্বারা উক্ত অপরাধীদের সংশোধনের উপযুক্ত পথে পরিচালিত করা। অর্থাৎ যে টাকা দিয়ে কারাগারে তাদের লালন করা হবে, সে টাকা দিয়ে বিদেশে জনশক্তি হিসেবে তাদেরকে রপ্তানী করা। তাদের মাধ্যমে আয়কৃত অর্থ দ্বারা তাদের ধ্বংসপ্রায় পরিবারকে নতুন জীবন দান করা এবং জাতীয় উন্নয়নে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা।
আর দেশের অভান্তরে যারা বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত রয়েছে , তাদেরকেও ধরপাকড় করে প্রথমে কারাগারে নেয়া। সেখান থেকে আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করে উক্ত সাজা মোতাবেক নিদ্রষ্ট মেয়াদে বিদেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করা। দেশের মেধাশক্তি , দক্ষ জনশক্তি বিদেশে প্রেরণ না করে অপরাধীদেরকেই বিদেশে প্রেরণের টার্গেট করা সরকারের একান্ত দায়িত্ব । এভাবে অপরাধীদের জন্য বিদেশ হবে কারাগার, আর তাদের সাজা হবে বিদেশ গিয়ে কর্ম করা। বৈদেশীক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে সহযোগীতা করা। বিদেশে নিদ্রিষ্ট মেয়াদী অবস্থানই প্রত্যেক অপরাধীর জন্য মুলতঃ সংশোধন হবার আসল স্থান।
তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার এ প্রস্তাব বিবেচনার জন্য উত্থাপন করছি – প্রত্যেক অপরাধীকে সাজা দিন বিদেশে পাঠিয়ে কায়িক শ্রমের মাধ্যমে, কারাগারে আটকিয়ে রেখে জামাই আদরে খাইয়ে নয়। জাতীয় স্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। জাতীয় উন্নয়নে সহায়ক হবে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জনে অপরাধীদের বিদেশ প্রেরণ। নতুন নতুন কারাগার নির্মাণ করে জাতীয় আর্থিক ফান্ডের অপচয় করা থেকে বিরত থাকুন। দেশের অলস মস্তিষ্কগুলো সচল করুন। ঘুমন্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করতে স্বচেষ্ঠ হোন। মেধাশক্তি বিদেশে পাচার না করে দেশে রাখুন। দেশের দক্ষ জনশক্তিকে বহির্বিশ্বে না পাঠিয়ে দেশের কাজেই লাগান। যদি এইসব মেধাশক্তি বহির্বিশ্বে গিয়ে সেসব দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে পারে , তবে তারা নিজেদের দেশের কল্যানে আসতে পারছেনা কেন ? তা একটিবার বিশুদ্ধ মন নিয়ে ভাবুন। যদি তারা নিজেদের মেধা দিয়ে পৃথিবীর রূপ পাল্টে দিতে পারে , তবে তারা নিজেদের ছোট্ট এই দেশটির রূপ পাল্টাতে পারবেনা কেন ? একটু চোখ খুলে দেখুন সমস্যা কোথায় ?
আমাদের দক্ষ জনশক্তি ও মেধাগুলো পরদেশে গিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে পারে , তবে তারা নিজেদের দেশেও কাজ করে , মেধা খাটিয়ে, শ্রম দিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে বলতে পারবে “আমরাও আমাদের দেশকে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে গড়তে পারি উন্নত দেশগুলোর মতন”। আর এ জন্য প্রয়োজন সঠিক উদ্যোগ। এতেই দেশ সফলতার মুখ দেখবে। তাই শ্রমক্ষেত্র তৈরী করে অলস, বেকার, ও অবহেলীত আমাদের বিপুল পরিমাণ মানবসম্পদকে কাজে লাগান। দেশ স্বর্ণশিখরে উন্নীত হবেই।
পরিশেষে বলতে হয় – অপরাধীদের জন্য বিদেশ হোক কারাগার এবং তাদের সাজা হোক বৈদেশীক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যম – এটাই কামনা করি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন