আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা
বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী
সকল মহান ভাষা শহীদগণের প্রতি,
এবং ভাষা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত
সকল ভাষা সৈনিক
ও বীর বাঙ্গালীদের জানাই অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী,
সেইসাথে সকলকে জানাই
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।
বিষয় সূচী
APNAKE SHAGOTOM
সকলকে বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা
অথচ একদিন আমরা বাঙ্গালী জাতি একতাবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় ভাষা উর্দুকে ত্যাগ করে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা বাংলা ভাষাকে সর্বত্র প্রচলন করতে প্রাণ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম ! ফলে বিজাতীয় ভাষা উর্দূকে অপসারন করে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলা ভাষাকে ধারন করেছিলাম । যখন আমরা বাংলার সর্বত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা শুরু করেছিলাম ,তখন কিন্তু বিশ্বায়নের যুগটা অনুপস্থিত ছিল তা নয় , বিশ্বায়নের যুগটা তখনও ছিল বিধায় আমরা ইংরেজী শিক্ষায় তখনও বাধ্য ছিলাম । অর্থাৎ যে জন্যে আজ আমরা ইংরেজী শিখছি সেইজন্যে তখনও ইংরেজী শিক্ষার প্রচলন ছিল । ছিল ইংরেজী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও । তাই বলে সে সময় বর্তমান সময়ের মত মাতৃভাষা বাংলাকে অবমাননা করা হয়নি । মানুষ সে সময় বাংলায়ই কথা বলেছিল । শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই সে সময় ইংরেজী ব্যাবহার করেছিল বাঙ্গালী জাতি ।
conduit-banners
Powered by Conduit |
বুধবার, ২৯ জুন, ২০১১
ও রূপসী ললনা !
রবিবার, ২৬ জুন, ২০১১
গোলাপ দিয়ে
শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০১১
আমার জীবনের দিনপঞ্জী ( পর্ব - ০০০২ )
আমার এই দিনপঞ্জী লেখার কোন তারিখ নেই । জীবনের মেমোরীতে যে সকল দৃশ্য ধারণ করা আছে , সেইসব পর্যায়ক্রমে জনসম্মুখে দৃশ্যমান হবে এই দিনপঞ্জীর মাধ্যমে । জীবনের এই দিনপঞ্জী লিখতে গিয়ে হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে কারও কারও জীবনের বাস্তব চিত্রগুলোও । তাই আমার এই লেখার মাঝে যাদের জীবনের বাস্তব চিত্র এসে যাবে তাদের কাছে অগ্রীম ক্ষমা প্রর্থনা থাকলো ।
আমি মনে করি প্রতিটি মানুষের দিনপঞ্জীতে লিপিবদ্ধ থাকে অন্য মানুষদের জন্য শিক্ষাপাঠ । কারণ , জীবনের দিনপঞ্জীতে মানুষের জীবনের চিত্রগুলো প্রদর্শিত হয় । মানুষের সফলতা - বিফলতা - উন্নতি - অবনতি - ভালো - মন্দ - আশা - হতাশাগুলো পরিলক্ষিত হয় এই জীবনের দিনপঞ্জীতে ।
তাই , সকলের উচিত সকলের দিনপঞ্জীতে চোখ বুলানো , যাতে উক্ত দিনপঞ্জী থেকে মানুষ নিজ জীবন পরিচালনার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে । গ্রহণ করতে পারে উপযুক্ত জীবন পরিচালনা পদ্ধতি ।
আমার ধারণা , যিনি নিজ জীবনের ডাইরী লিখে জনসম্মুখে প্রদর্শন করে যান , তিনি আর কিছু না হোন একজন মহৎ হৃদয়ের অধিকারী । কেননা , তিনি নিজ জীবনের সুখ - দুঃখ - জয় - পরাজয় - আশা - নিরাশা - আনন্দ - খুশি - সৎকর্ম - অসৎকর্ম - দোষ - গুণ ইত্যাদ জনসম্মুখে প্রকাশ করে নিজ নিজ জীবন সংশোধনের নিমিত্তে একটি মহৎ কাজের আঞ্জাম দিয়ে যান । এতে তাঁর জীবন নিয়ে মানুষ ঠাট্টা-বিদ্রুপ করবে , তাঁকে নিয়ে নিয়ে মানুষ কি বলবে , সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে তিনি তাঁর জীবনের সবকিছু মানুষের সামনে প্রকাশ করে যান , যাতে তাঁর জীবনের কর্মসমূহ থেকে মানুষ উৎকৃষ্ঠ পথে পরিচালিত হতে পারে । অর্থাৎ , একটা মানুষের জীবনের দৃষ্টান্ত দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের সুন্দর জীবন গঠনের শিক্ষাদানের মাধ্যমই হলো - জীবন ডাইরী , জীবনী বা জীবনের দিনপঞ্জী লেখা বা প্রকাশ ।
যাঁরা নিজেদের জীবনের দিনপঞ্জী প্রকাশ করেন , তাঁরা নিজেদের জীবনের অপ্রকাশ্য বিষয় অপরকে জানানোর মধ্য দিয়ে অন্যের উপকার করনে নিজেদের জীবনকে বলিদান দেন । তাই , প্রত্যেক জীবনী লেখক এক একজন মহৎ হৃদয়ের অধিকারী ।
আমাদের সমাজে এমন কিছু লোক আছে , যারা নিজেদের জীবনকে সুন্দর রুপে বিকষিত করে তুলেছে । কিন্তু , অন্যদেরকে তারা তাদের সফলতার পথ পরিচয় করাতে চায় না । তারা মনে করে যদি সবাই সফল হয় , তবে তাদের মূল্য কি থাকবে ! তারা আবার মুখে বলে বেড়ায় তারা সভ্য সমাজের বাসিন্দা । আমি বলি , যারা সভ্য হয়ে গেছে তাদের কি অসভ্যদের সভ্য করনে কোনই চিন্তা নেই ? যদি সভ্য লোকদের অসভ্যদের সভ্য করার চিন্তা না থাকে , তবে সভ্যদের মৃত্যুর পর সভ্য সমাজের অস্থিত্ব টিকে থাকবে কি ?
এহেন চিন্তাধারী সভ্যলোকেরা আসলেই কি সভ্য ? নাকি সভ্য সমাজের খোলস পরা এক একটা নরকের কীট ? যারা মানব সমাজের উন্নয়ন চায়না , মানবতার উন্নয়ন চায়না , তারা চায় নিজেদের সভ্য পরিচয় দিয়ে যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন মানুষের মাঝে তারা আধিপত্য বিস্তার করে নিজেদের দাপট দেখিয়ে যাবে , নিজেদের মহামূল্যবান রত্ন হিসাবে মানুষের কাছে পরিচয় প্রদান করে যাবে ! তারা মনে করে অন্যরা গোল্লায় যাক তাতে তাদের কি সমস্যা ? এই ধরণের চিন্তার ধারক - বাহকরা যতই নিজেদের সভ্য ভাবুক না কেন , তারা কখনো সভ্য নয় অসভ্যই । তারা কখনো সমাজের বাসিন্দা নয় । তারা সভ্য সমাজের সভ্য রপী এক একটা অসভ্য কীট । যারা সমাজের এক একটা দুষ্টগ্রহ ।
যারা প্রকৃত সভ্য তারা সবসময় চাইবে অসভ্য যারা তাদের সভ্য করে তোলার জন্য । সভ্য সমাজ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদের প্রধান কাজ তাই অসভ্যদের সভ্য সমাজের বাসিন্দা রূপে গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্ঠা ।
আমাদের শিক্ষিত সমাজের অনেক শিক্ষিত আজকাল সভ্য হয়েও অসভ্যতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে । তারা অশিক্ষিতদের শিক্ষিত করে তোলা দূরে থাক , তারা অশিক্ষিতদের অশিক্ষিত - মূর্খ - গোঁয়াড় ইত্যাদিতে গালি দিয়ে যাচ্ছে । তাদের মাথার উপর হাত বুলিয়ে তাদের ঠকিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ভাবে শিক্ষিত নামধারী কুশিক্ষিতরা । অশিক্ষিত বলে তাদেরকে সমাজের বিভিন্ন কর্মকান্ড থেকে কোনঠাসা করে রাখছে কুশিক্ষিতরা । আসলে এসব শিক্ষিতরা শিক্ষিত নামের কলঙ্ক । তারা শিক্ষালাভ করেও হয়ে আছে শিক্ষিত মূর্খ রূপে , কুশিক্ষিত বা শিক্ষিত গোঁয়াড় রূপে ।
আমি জানি , আমার জীবনের দিনপঞ্জীতে এমন কোন উল্লেখযোগ্য সুন্দর ও অনুকরনীয় দৃশ্য নেই , যার মাধ্যমে কোন মানুষ উপকৃত হতে পারে । তবে আমি মনে করি , আমি মানুষ । আমারও একটা জীবন আছে । আমার জীবন সময়ে যা ঘটেছে , ঘটছে সেগুলো মানুষের অনুকরনীয় না হোক , মানুষ আমার জীবন থেকে সেই শিক্ষায়ই লাভ করবে , যা জীবনযুদ্ধে পরাজিত একজন সৈনিক কেন , কিভাবে পরাজয় বরণ করেছিল ? আর জীবনযুদ্ধে আমার মত পরজয় বরণ করতে না চাইলে তাদের কি করতে হবে ? তাদের চিন্তা শক্তিতে তা উঠে আসবে ।
আমরা জানি , ইতিহস মানুষের কোন উপকার করেনা । ইতিহাস মানুষকে শিক্ষা প্রদান করে থাকে সম্মুখে সুন্দর রূপে পথ চলার জন্য । আমার জীবন একটা ইতিহাস । এই ইতিহাস থেকে মানুষ কোন উপকার লাভ করবেনা । কিন্তু , এই ইতিহাস থেকে কোন কোন মানুষ তাদের জীবন পরিচালনার উৎকৃষ্টতম কোন পথ আবিস্কার করতে পারবে বলেই আমি মনে করি । তাই , আমার এই জীবনের দিনপঞ্জী পাঠে স্বাগতম জানাচ্ছি ।
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০১১
আমার জীবনের দিনপঞ্জী ( পর্ব - ০০০১ )
[ একটা মানুষের জীবন জলাঞ্জলী দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের সুন্দর জীবন গঠনের শিক্ষাদানের একটা মাধ্যমই হলো - জীবন ডাইরী , জীবনী বা জীবনের দিনপঞ্জী লেখা বা প্রকাশ । ]
এক সময় ডাইরী লিখতাম । যখন স্কুলে পড়তাম । ক্লাস ফোর থেকে আমার ডাইরী লেখার শুরু হয়েছিলো তখনকার বাংলা খাতায় ।
ডাইরী লেখার বিষয় জানতে পেরেছিলাম ক্লাস ফোর-এ যখন পদার্পন করেছিলাম । তখনকার কোন এক পত্রিকা উল্টাতে গিয়ে দেখতে পেয়েছিলাম একজন বিখ্যাত ব্যক্তির ডাইরী লেখার কাহিনী । শিখেছিলাম ডাইরী কিভাবে লিখতে হয় সেখান থেকেই । ঐ কাহিনীটা পড়েই জেগেছিলো মনে ডাইরী লেখার সাধ ।
১৯৭৯ সালের কথা । সম্ভবতঃ পত্রিকাটি ছিলো দৈনিক ইত্তেফাক । কারণ , ঐ সময় মফজল দা ( ইনি পড়শী বড় ভাই সমতুল্য , যাঁর রয়েছে একটা গল্প । একটু পরেই তাঁর গল্পটি বলতে চেষ্ঠা করবো ) পত্রিকা পড়তেন । সপ্তাহে একদিন - বৃহষ্পতিবার । তিনি প্রতি বৃষ্পতিবার তিন মাইল দূরের বিবির হাট বাজার থেকে পত্রিকা এনে পড়তেন । একমাত্র তিনিই ছিলেন ঐ সময় আমাদের এলাকায় একমাত্র পত্রিকা পাঠক । তিনি পড়তেন ইত্তেফাক পত্রিকা । যদি ইত্তেফাক না আসতো অন্য পত্রিকা পড়তেন । তাই বলতে হয় ঐ পত্রিকাটা ছিলো ইত্তেফাক । যা আমার ডাইরী লেখার অনুপ্রেরণা ।
যা হোক , মফজল দা’র কাহিনীটা না বললেই নয় । মফজল দা ছিলেন আমাদের পড়শী বড় ভাই । সেই সাথে ছিলেন আমাদের বাড়ির সম্মুখের একজন মুদী দোকান্দার । আমার জন্মের পূর্ব থেকেই তিনি আমাদের বাড়ির সামনে তাঁর নিজস্ব জায়গায় নিজ মালিকানাধীন দোকানে তাঁর ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন । খুবই সহজ সরল একজন ভালো ও উপকারী লোক হিসাবেই তিনি পরিচিত । তাঁর এ পরিচিতির প্রমাণও পেয়েছিলাম আমার বাবার কাছ থেকে ।
আমার বাবা ছিলেন তখন একজন প্রবাসী । বার্মা ( বর্তমান মায়ানামার ) ‘র রেঙ্গুন ছিল তাঁর কর্মস্থল । জাপান - বৃটিশের যুদ্ধে যখন বার্মা হলো আক্রান্ত , আমার বাবা তখন সাঁইত্রিশ হাজার টাকার সমপরিমাণ জীবনের কামাই বার্মায় ফেলে প্রাণ বাঁচাতে চলে এসেছিলেন নিজ দেশে । দেশে ফিরে বাবা হয়ে পড়েছিলেন দিশেহারা । পরিবারের ভরণ-পোষনের মত কোন সহায়-সম্পত্তি ছিলোনা তাঁর । এ অবস্থায় যখন বাবা চোখে ষর্ষে ফুল দেখতে লাগলেন , তখন বাবার এ দূরাবস্থা দর্শনে এগিয়ে এসেছিলেন উক্ত মফজল দা । মফজল দা’র পরামর্শে বাবা একমত হয়ে মফজল দা’র কাছ থেকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাবার ভাড়ার টাকা নিয়ে বাবা দিশেহারা জীবন নিয়ে পাড়ি জমালেন ঢাকায় । বাবার নতুন জীবন শুরু হলো তার ঢাকায় পাড়ি জমানোর মধ্য দিয়ে । একজন সরকারী লাইসেন্সধারী কনষ্ট্রাকশন ফার্মের অধিকারী হয়ে সফল মানুষ হিসাবে আত্মপ্রতিষ্ঠা করলেন তিনি । দিশেহারা একজন মানুষ মফজল দা’র সহযোগীতায় আত্মপ্রতিষ্ঠিত হয়ে দিশারী হলেন অনেক দিক হারা মানুষের । মফজল দা’র কাহিনী এটাই যে , তিনি ছিলেন বিপদে পড়া মানুষদের একজন অকৃত্রিম বন্ধু । তাঁর একটুখানি সহযোগীতায় আমাদের পরিবারটি ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো ।
তাই , আমার এ দিনপঞ্জী লেখার সন্ধিক্ষণে কতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি সেই মফজল দা’কে ( যিনি বাদশাইয়া বর মফজল নামে এলাকার সর্বত্র পরিচিত ) । মহান আল্লাহ তাঁকে উত্তম প্রতিদান দান করুন - আমীন ।
যা হোক , বলছিলাম - আমার ডাইরী লেখার গল্প । কিন্তু , এসে গেলো মফজল দা’র গল্প । জীবনের ডাইরীতো এমনই হয় । সকলের সন্ধিতে সকল জীবনের আনাগোনা । মানুষ মাত্রই সামাজিক জীব । সমাজে বাস করতে হলে মানুষ মানুষের সাথে সম্পৃক্ত হবেই ।
একটা জীবনের গল্প বলতে গেলেই বহু জীবনের গল্প এসে যাবেই । তাই তো , মফজল দা’র জীবনের গল্প এসে গেলো । আমার বাবার জীবনের গল্প এসে জুড়ে গেলো আমার জীবনের গল্পের সাথে । এভাবে আরও কত মানুষের জীবনের গল্প যে এসে যাবে সম্মুখে অগ্রসর হলে তার ইয়ত্ত্বা নেই । কারণ , আমিও সমাজবদ্ধ মানুষ । সমাজে মিশতে গিয়ে ধাক্কা খেতে হয়েছে কত জীবনের সাথে , তা একসাথে বলতে না পারলেও ধাপে ধাপে , সময়ের প্রয়োজনে , জীবনের পরিচ্ছেদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাবেই ।