সৌদি আরবে মহিলা কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
-----------------------------------------------------
[ আমার এ লেখাটি বায়তুশ শরফের মুখপত্র মাসিক দ্বীন দুনিয়া , সেপ্টেম্বর ২০০৩ ইং সংখ্যায় “ মধ্যপ্রাচ্যে মহিলা কর্মী নিয়োগ ঃ বাংলাদেশের নবদিগন্ত উম্মোচন -ঃ একটা জরুরী মতামত ঃ- ’’ নামে পূর্বে প্রকাশিত ।
বর্তমান সরকারের পূণরায় সৌদি আরবে মহিলা কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষীতে লেখাটির কিছুটা সংশোধন করে পুণরায় জনসম্মুখে প্রকাশের ব্যবস্থা নেয়া হলো । ]
বর্তমান সরকারের সৌদি আরবে মহিলা কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত , বিগত সরকারের একটা ভুল সিদ্ধান্তের অনুরূপ সিদ্ধান্ত ।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে মহিলা কর্মী পাঠানোর সংবাদটি দেখে বিষ্ময় প্রকাশ ও আক্ষেপ করা ছাড়া উপায় নেই । মদিনাবাসী প্রায়ই প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের একটাই বক্তব্য - ছিঃ ! কি করতে যাচ্ছে বর্তমান সরকার ? তবে কি দেশটাকে ইজ্জত বিক্রির দেশ বা নারীর সতীত্ব রফতানীর দেশ বলে পুণরায় চিহ্নিত করতে যাচ্ছে সরকার ?
হ্যাঁ , নতুন করে সৌদি আরবে মহিলা কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানতে পেরে এ মন্তব্যটাই ছিল মদিাবাসী প্রবাসী বাংলাদেশীদের । কেউ কেউ বলছেন , চাঁদা সংগ্রহ করে দেশের প্রতিটি দৈনিক - সাপ্তাহিক - পাক্ষিক - মাসিক পত্রিকাসমুহ সহ প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে এখানকার পরিস্থিতি সমপর্কে দেশের মা-বোনদের জানিয়ে দেবে । জানিয়ে দেয়া হবে মাতৃজাতের প্রতি বৈরী মনোভাবের কথা । জানিয়ে দেবে মাতৃজাতের উপর অসম্মানের কথা ।
আর এ কথাটিই সরকারের দৃষ্টিতে ফেলার জন্যই আমার এ লেখার উপস্থাপনা । বর্তমান সরকারের সৌদি আরবে মহিলা কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত , বিগত সরকারের একটা ভুল সিদ্ধান্তের অনুরূপ সিদ্ধান্ত । কারণ , যে খরচে বিদেশে মহিলা কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে , একই খরচে দেশের লক্ষ লক্ষ বেকার পুরুষ কর্মী পাঠিয়ে দেশের অপরাধ জগতের সদস্য কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই শ্রেয় মনে করছি । দেশের বেকার মহিলাদের বিদেশে না পাঠিয়ে স্বদেশেই তাদের জন্য কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে সেখানেই তাদের নিয়োগ দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করার চিন্তা করা যেতে পারে । দেশের নারীদের সম্মানের সহিত দেশেই বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিয়ে দেশে অবস্থানকারী অপরাধ জগতের লক্ষ লক্ষ বেকার ও অপরাধীদের ধরে বিদেশে পাঠিয়ে বৈদেশীক মুদ্রার্জনের চিন্তা করাই উচিত বলে মনে করি এবং এটাই বর্তমান সরকারের জন্য বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বহন করবে ।
যতটুকু জানি , যৌন হয়রানীর অভিযোগে এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে নারী পাচার বন্ধের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৮ ইং সালে একটি নির্বাহী আদেশ জারী করেছিলো । সে আদেশটি শিথিল করে তথাকথিত নারী পাচারের রাস্তাটি যৌন হয়রানীতে আবদ্ধ রাখার জন্য নারী কর্মী ( নারীর ইজ্জত ) রফতানীর একটি মতামত প্রকাশ হয়েছিলো বিগত সরকারের পক্ষ থেকে । উক্ত মতামতের ভিত্তিতে নাকি পঁয়ত্রিশ বৎসরের বেশী বয়সী মহিলারা তাদের স্বামীসহ ( তাদের সন্তান-সন্ততি বতিত ) বিদেশ গমন করতে পারবে । তাতে আরও মতামত ব্যক্ত করা হয়েছিলো যে , যারা যাবে তাদের বেতন পাঁচশত সৌদি রিয়াল , থাকা - খাওয়া ফ্রি ।
যা হোক , বিগত সরকারের মতামতের সংবাদটি না তুলে সে আঙ্গিকে কিছু অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত পেশ করা একান্ত কর্তব্য বলে মনে করছি । নতুন করে সৌদি আরবে মহিলাকর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত , দেশের নারীদের অধিক উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে ভিন্নদেশে পাচার করে তাদেরকে দেহ ব্যবসায় ঠেলে দেয়ার শামিল হবে ।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে , সৌদি আরবে মহিলা কর্মী পাঠানোর পূর্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পতি অনুরোধ করবো , বর্তমানে বিদেশের মাটিতে যে সকল বাংলাদেশী মহিলারা ( সরকারী হিসাবে ) অবস্থান করছেন , তাদের প্রবাসী জীবনের ইতিবৃত্তি জানার জন্য । বিশেষ করে যারা গৃহপরিচারিকা , নার্স ও গার্মেন্টস কর্মী তাঁদের প্রবাসের জীবনালেখ্য জানা একান্ত প্রয়োজন আছে বলে মনে করি । বিভিন্ন রিপোর্টে দেখেছি , এঁরা বিদেশে নিজেদের জন্য যেমন আলাদা একটা পরিচয় তৈরী করতে পেরেছেন , ঠিক তেমনি অবদান রেখে যাচ্ছেন দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার ক্ষেত্রে । উল্লেখিত কথাটি যদিও বাস্তব , কিন্তু তাঁরা যে একটা আলাদা পরিচয় তৈরী করেছেন , তাদের সে পরিচয়টা দেশে ঠিক কতটুকু গ্রহণীয় ?
আমরা যারা বিদেশে আছি , দেখছি বাংলাদেশী মহিলা যাঁরা নিম্নতম বেতনে গৃহপরিচারিকা , নার্স ও গার্মেন্টস কর্মী হিসাবে বিদেশে এসেছেন , তাঁরা তাঁদের আলাদা পরিচয়টা কিভাবে তৈরী করছেন । অনেক বাংলাদেশী মহিলা পাঁচশত রিয়াল বেতনে এসে খেতে না পেয়ে বারবণিতা সেজে এদেশের কঠরতম আইন ফাঁকি দিয়ে পুরুষদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিয়ে ঘুরছে । তাদের বয়স কম না হলেও ৩০ থেকে ৪০ এর কোটায় ।
আমার পার্শ্ববর্তী এক লোক তেমনি কজন মহিলাকে জিজ্ঞেস করেছিলো , তার বাড়ি কোথায় ? তার সাথে বিয়ে বসবে কিনা ? তখন মহিলাটি নাকি বলেছিলো - “ আমার বাড়ি কোথায় তা দিয়ে আপনার কাম কি ? প্রয়োজন থাকলে ভিতরে নেন , না চাইলে বলুন চলে যাই । আমি নাম-ঠিকানা বলবো , আর আপনি বাংলাদেশে গিয়ে তা প্রচার করবেন । সবাই শুনবে আমার বিরত্বগাঁথা । আমি বাংলাদেশে গেলে নিজ বাড়িতে উঠতে না পারার একটা বিহীত ব্যবস্থা হয়ে যাবে , এই তো ? ’’ কথাগুলো বলেই নাকি মহিলাটা তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছিলো !
এতো গেলো বাংলাদেশী মহিলা কর্মীদের একটি দিক পরিচিতি । আর একটা দিকের কথা বলি - ইন্দোনেশিয়ার কিছু মহিলা কর্মীদের দেখা-শুনার অভিজ্ঞতা দিয়ে । ইন্দোনেশিা থেকে আসা কিছু মহিলা কর্মীর কথা জানি , যারা সৌদিদের বাসায় কাজ করে । বয়সও তাদের কম না । ৩০ / ৩৫ তো হবেই , এমনকি ৪০ / ৪৫ ও হতে পারে । যদিও ধরা যায়না তাদের বয়স । শুনেছি , এদেশে আসতে তাদেরকে জন্মনিরোধক মেয়াদী ভ্যাকসিন দিয়ে প্রবেশ করতে হয় সৌদিতে । প্রতিটি মহিলা আসেও সেরূপ ভ্যাকসিন গ্রহণ করে । এখানে এসে শুরু হয় তাদের কাজ । বাসায় যদি কোন বৃদ্ধ পুরুষও থাকে তবে ঐ মহিলা কর্মী তার হাত থেকেও নিস্তার পায়না । এমনতর অবস্থা প্রায় শুনা যায় পুরুষ কর্মীদের বেলায়ও । তারা ফাঁদে পড়ে বাড়ির কচি - যুবা এমনকি মধ্যবয়স্কা মহিলারও । শেষে অতিষ্ঠ হয়ে নিজেই টাকা পয়সা ফেলে অন্যত্র চলে গেছে পালিয়ে ।
সৌদির আইনগত কারনে অনেক বিবাহযোগ্য ছেলে - মেয়ের বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও তারা টাকার অভাবে বিয়ের পীড়িতে বসতে পারছেনা । কিন্তু , যৌবন কতদিন ধরে রাখা যায় ? ফল-ফ্রুটের শক্তিকে কতদিন দমন রাখা যায় ? তাই তারা পরিবারের কর্তাকে মহিলা কর্মী বা পুরুষ কর্মী সংগ্রহ করার জন্য ভিসা বের করতে চাপ সৃষ্টি করে । ঘরর ভতরগত অন্যায় কর্ম সরকার দখতে পায়না । তাইতো , কর্মী এনে ঐ কর্মীর উপর ছড়াও হতে পারে বিবাহযোগ্য ছেলে-মেয়েরা । ঐ কর্মী জওয়ান হউক কিংবা বুড়ো , তাতে আপত্তি নেই ।
আর মহিলা কর্মীর সাথে যদি স্বামীও বিদেশ গমন করে , তবে তাতে যে ঐ মহিলা কর্মী নিস্তার পাবে তেমন আশা বৃথা বৈ কিছু নয় । একটা কথা আছে - বিদেশ হলো বি-প্যাঁচ বা পদে পদে বিপদ । তাই বলছি - কোন মহিলা কর্মীর স্বামী সাথে আসলেও সে স্বামী এখানে এসে সৌদিদের কেনা দাস বা গোলামের মতো হয়ে যায় । সৌদিদের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করবে তাদের স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় সত্ত্বা । এক্ষেত্রে তার সামনে তার স্ত্রীর সাথে সৌদি পুরুষ যদি যা তা ব্যবহার করে করে তবে সে স্বামী নির্বাক হয়ে চেয়ে থাকবে । তার কিছুই করার ক্ষমতা থাকবেনা । কিছু করতে চাইলে নয়তো তার জেল , নয়তো তার দেশ ফেরত এ দু’টির একটি নির্ধারিত ।
২০০৩ সালে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল বলে শুনেছি মক্কায় । স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই সৌদিতে কর্ম নিয়ে এসেছিলো । কিছুদিন পর এক ইন্দোনেশিয়ান মহিলা কর্মীর সাথে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে তার মালিক ঐ স্বামীকে জেলে ভরে দেয় । স্ত্রীর চিন্তায় স্বামী ঐ জেলেই মৃত্যুবরণ করে ।
বর্তমান সরকার কত বেতনে মহিলা কর্মী সৌদি আরবে পাঠাতে যাচ্ছে জানা নেই । বিগত সরকারের সিদ্ধান্তানুযায়ী যদি পাঁচশত রিয়াল বেতন নির্ধারণ করে মহিলা কর্মী পাঠায় তবে ঐ কর্মীরা যে কয়েকদিন পর বাধ্য হয়ে বিপথে পা বাড়াবে তার শতভাগ গ্যারান্টি দিতে আমাদের আপত্তি নেই । কেননা , সৌদিরা কর্মীদের যত ভালো খানাই দিক না কেন , ঐ কর্মীরা সে খানা খেয়ে জীবন ধারণ করতে সমর্থ হবেনা । সৌদিতে একজন সর্বনিম্ন বেতনধারী ব্যক্তির থাকা - খাওয়া - আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ নুন্যতম ৪০০ / ৬০০ রিয়াল চলে যায় । তারপর দুই বৎসর পর তার টিকেট লাগবে , লাগবে ইকামা , লাগবে ব্যগেজ ভরার খরচ , লাগবে বসন - ভুষন । এই খরচ ঐ কর্মী কিভাবে , কোথ্থেকে জোগাড় করবে ? তাই , বাধ্য হয়ে ঐ কর্মী অনৈতিক কর্মে জড়িত হয়ে যাবেই ।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ না করে পারছিনা । বাংলাদেশের শ্রমিকরা তাদের সরকারের অদূরদর্শী ও অকার্যকর বৈদেশীক শ্রম বিনিময় ব্যবস্থার কারণে বিদেশের মাটিতে এমনই অবহেলিত - পদদলিত যে , যেন তারা মানুষই নয় । যার ফলে তাদের উপর নানা রকম অত্যাচার - উৎপীড়ন করতেও বিদেশীরা ছাড়েনা । পথের কুকুর - বিড়ালও বাংলাদেশের শ্রমিকদের চেয়ে উত্তম সৌদিদের কাছে । যদি তা না হতো সৌদিরা যা না খায় , ঝুঁটা , মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার গুলো বাংলাদেশীদের খেতে বলতোনা । এখানে এসে অন্যরা যে কাজ করে ১২০০ রিয়াল বেতন পায় , সে একই কাজে ডাবল খাটুনি দিয়েও বাংলাদেশীরা পায় ২৫০ রিয়াল ( বলদিয়ার রোড ক্লিনার কর্মী ) !
একমাত্র বাংলাদেশীদের দ্বারাই যেমন - তেমন কর্ম আদায় করে নিতে পারে বিদেশীরা । তাছাড়া , যেখানে ইন্দোনেশিয়া , ফিলিপাইন , শ্রীলন্কা , ইন্ডিয়া , পাকিস্তান ইত্যাদি দেশের শ্রমিকরা ১০০০ রিয়ালের বেতনে চাকরী করতে আসছে , সেখানে একই কর্মে একমাত্র বাংলাদেশীরাই আসে ২৫০ / ৫০০ রিয়ালের বেতনে চাকরী করতে ! আর আসার পর বলতে বাধ্য হয় “ কেন আসলাম ’’ ? এখানে এসেই যখন পড়ে , জীবন বাঁচানোর তাগিদে হলেও যেমন তেমন কাজ করতে বাধ্য হয় । সময় মত দেশের মুখ দেখতে পারেনা । জীবন - যৌবন শেষ করে যা ও একদিন দেশে ফেরে তখন তারা পরিবারের সাথে খাঁপ খেতে পারেনা । চলে অশান্তির দাবানল সমগ্র পরিবারে । দেখা দেয় তখন বিবিধ অনাকান্খিত ঘটনাবলী । তাই , সকলের প্রতি পরামর্শ , কোন কর্মী যাতে ১২০০ রিয়ালের কম বেতনে সৌদিতে পাড়ি না জমায় ।
সবচেয়ে জরুরী একটা বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুধাবনে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে , দেশে বর্তমানে বেকার কর্মক্ষম পুরুষের সংখ্যা কত তার পরিসংখ্যান এ মুহূর্তে আমার জানা নেই । তবে এটা জানি , লক্ষ লক্ষ এমনকি দেশের মোট জনসংখ্যার অধিকাংশ পুরুষই দেশের সর্বত্র বেকার ছন্নছাড়া জীবন নিয়ে পথে পথে ঘুরছে । চাকরীর আশায় বিভিন্ন অফিস আদালতে গিয়ে গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছে , চাকরী পাচ্ছেনা । চাকরী না পেয়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে অস্ত্র হাতে নিয়ে পথে দাঁড়াচ্ছে । কেড়ে নিচ্ছে পূঁজিপতিদের ধন , করছে সম্পদশালীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় , কেড়ে নিচ্ছে সুন্দর সুন্দর জীবনগুলো । কেন ? একটিই কারণ , বেকারত্বের দূর্বীসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবার লক্ষ্য । তাদের জীবনকে সুন্দর রূপে বিকশিত করার অদম্য অভিপ্রায় । একমুঠো অন্নের জন্য , পিতা - মাতা - ভাই - বোন - স্ত্রী - সন্তানদের পেঠে একমুঠো অন্ন প্রদানের জন্য ।
দেশের অভ্যান্তরে এতগুলো বেকার প্রতিপালন করে ঘরের ভিতর যারা কর্মরত মহিলা তাদেরকে বিদেশ পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের এত তোড়জোড় কেন ? তবে কি বাংলাদেশ সরকার নারীদের ইজ্জত রফ্তানীর মত আরও একটা দূর্নাম কুড়াতে স্বচেষ্ঠ হচ্ছে ? নাকি বেকার পুরুষদের দেশে বেকার করে রেখে দেশের নোংরা রাজনীতিতে তাদেরকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এ ধরণের সিদ্ধান্ত ? এ হলো সচেতন নাগরিকদের মন আলোড়িত একটা প্রশ্ন ।
যে সিদ্ধান্তে মহিলা কর্মী বিদেশে পাঠানোর মাধ্যমে বৈদেশীক মুদ্রার্জনের লক্ষ্য নিরূপিত হচ্ছে , সে সিদ্ধান্তে দেশের বেকার পুরুষ কর্মী পাঠিয়ে সে লক্ষ্য কি অর্জন করা যায়না ? মহিলা কর্মীদের চেয়ে আরো অধিক বৈদেশীক মুদ্রার্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকাকে স্বচল করতে স্বচেষ্ঠ হবে ।
অতএব সার্বিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ থেকে কোন মহিলাকর্মী বিদেশে না পাঠাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেশের নাগরিক হিসাবে আমরা বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি । আশা করছি , বিদেশে মহিলা কর্মী না পাঠানোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন । দেশের সম্মান রক্ষার্থে সরকার বিদেশে মহিলা কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে সুষ্ঠ ও বিবেক সম্পন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে স্বচেষ্ঠ হবেন । এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শুভবুদ্ধি ও সৎবিবেক জাগ্রত হবে , এ কামনাই করছি ।
[ বিঃ দ্রঃ আমার এ লেখা আরব জাতিকে কটাক্ষ ও হেয় প্রতিপন্ন করতে নয় , আরবদেশে যা ঘটেছে , যা ঘটমান , যা ঘটিতব্য সেদিকে আলোকপাত করেই লেখা । ]
=================================================================
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন