যা হোক, আজ জোহরের পর ঝালমুরি কিনতে একটা মুদি দোকানে গেলাম আমি। যখন ক্যাশ কাউন্টারে টাকা দিতে গেলাম , তখন একটা লোক এসে ক্যাশিয়ারকে তার বাসায় যেতে বলল। ক্যাশিয়ার বলল তার মাথা ঘুরাচ্ছে যেতে পারবেনা। তখন লোকটি বলল - অসুবিধা নেই তার বাসায় মাথা ঘুরানীর ঔষধ আছে।
এদিকে গত দু'দিন ধরে আমিও ভীষন মাথার সমস্যায় ভুগছি। তাই কৌতুহল হলাম লোকটার কথায়। ভাবলাম ফার্মেসীর বাইরে সেক্সুয়াল ঔষধ বিক্রির এজেন্টেদের মত এরাও একটা ঔষধ কোম্পানীর এজেন্ট হতে পারে, যারা কাষ্টমার ফোন করলেই তাদেরকে ঔষধ সরবরাহ করে। এ ভাবনায় জিজ্ঞেস করলাম লোকটাকে - আমিও কি মাথা ঘুরানীর ঔষধ পেতে পারি ? সে বলল অবশ্যই পেতে পারেন। বিভিন্ন ধরণের মাথা ঘুরানীর ঔষধ আমাদের কাছে আছে। আরও কৌতুহল হয়ে জানতে চাইলাম - দাম কত পড়বে ? সে বলল - ৫০ থেকে ৩০০ রিয়ালের মধ্যে মাথা ঘুরানীর ঔষধ দেয়া যাবে। বললাম - তবে তো আপনার সথে যেতেই হয়। সে বলল - ঠিক আছে চলুন।
তার বাসায় গিয়েই দেখি সাদা-কালো-বেগুনী-লাল সহ বিভিন্ন ধরণের মেয়ে বসে আছে সেখানে। এ ধরণের বাসায় এসব মেয়ে ! আশ্চর্যাম্বিত হলাম আমি। তখন অন্য রুম থেকে একজন উচ্ছস্বরে বলতে লাগল - হাবিব, রেইট বলেছিস ? কোন রেইট এ কতক্ষণ থাকতে পারবে বলেছিস তো ?
বুঝতে আর বাকি রইলনা মাথা ঘুরানীর ঔষধ কি ? অন্যরুম থেকে যে কথা বলছিল সে বেরিয়ে এল রুম থেকে। আমাকে দেখেই লোকটির চোখ ছানাবড়া। ভয় ও পেল মনে হয়। এই লোকটাকে আমি অনেকদিন থেকে চিনি। পরিচিত লোক। বিশেষ অনুরোধের কারণে পূর্ণ পরিচয় দেয়া থেকে বিরত থাকলাম। যা হোক ভয়ের চাপ তার চোখে মুখে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ভয় পাওয়ারই কথা। গত পাঁচ বছর আগে ঠিক এ ধরণের অপকর্মের কারণেই এ গ্রুপের একজনকে ধরিয়ে দিয়েছিলাম পুলিশের হাতে। তখন তার অপরাধের মাত্রা এত বেড়ে গিয়েছিল যে যদি সে ৪৫ জন মেয়ে ও ১০০ এর উপর খদ্দের সহ পুলিশের হাতে ধরা খেত তবে বাংলাদেশের অবস্থান নরকের শেষ স্তরে পৌঁছে যেত। অবশ্য তখন সে একটি মেয়েসহ আমার কথায় ধরা দিতে বাধ্য হয়েছিল। তিনমাস জেলখাটিয়ে আবার আমিই তাকে শেষবারের মত জেল থেকে দেশে ফেরত পাঠানোর কাজে সহযোগিতা করেছিলাম। সে সময় আজকের এ লোকটিও জড়িত ছিল। সেদিন সে পালিয়ে গিয়ে বেঁচে যায়।
সেদিন বেঁচে গেলেও মনে করেছিলাম সে এ কাজ ছেড়ে দিবে কিন্তু আজ আবার তাকে দেখে বুঝলাম সে ঐ অপকর্ম ছাড়েনি। মেয়েগুলোর দিকে ইশারা করে ওদের দুজনকে জিজ্ঞেস করলাম- এগুলোই কি আপনাদের মাথা ঘুরানীর ঔষধ ? আবার শুরু করেছেন আপনারা ? পাঁচ বৎসর আগের কথা কি ভুলে গেছেন ?
তাদের মুখ যেন আটকে দিল কেউ, কথা না বলে নীচের দিকে চেয়ে থাকল। আজ ছেড়ে দিয়ে তাদের সংশোধনের একটা সুযোগ দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। বললাম- আপনি তো আমাকে চিনেন । আমি কি করতে পারি তাও জানেন। দয়া করে এ পবিত্র স্থানে এসব বন্ধ করেন। টাকা কামানোর অনেক রাস্তা আছে ,সে পথগুলো অনুসরন করেন। এই ধরণের অপকর্ম করে দেশ ও দশের ক্ষতি করবেননা। যদি না শুনে এই কাজ করে যেতে থাকেন তবে পাঁচ বৎসর আগের একই ঘটনা ঘটাতে আমি বাধ্য হব।
তারা বলল- ঠিক আছে ভাই আমরা দুদিনেই এদেরকে সেটেল করে দিচ্ছে। দুদিনের মধ্যে কিছু করবেননা দয়া করে। আজকের মত চলে এলাম ঐ লোকদের সংশোধন হবার সময় দিয়ে।
উল্লেখ্য যে, এ লোকগুলো এ অপকর্মের সংগঠন করে খরিদ্দারদের পতি জনের কাছ থেকে পায় ৫০% আর বাকী ৫০% পায় মেয়েগুলো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন