১৮৭৩ সালের এই দিনে - উনিশ শতকের বাঙালি কবি , বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক , বাংলা সাহিত্যের যুগপ্রবর্তক , নাট্যকার , মহাকবি ও বেঙ্গল থিয়েটার - এর অন্যতম উপদেষ্টা মধুকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি, ১৮২৪ – ২৯ জুন, ১৮৭৩) মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী সাগরদাড়ি গ্রামে এক জমিদার বংশে। মাইকেলের বাবা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার প্রতিষ্ঠিত উকিল। সাগরদাড়ি গ্রামে মা জাহ্নবী দেবীই তাঁকে রামায়ণ , মহাভারত, পুরাণ প্রভৃতির সঙ্গে সুপরিচিত করে তোলেন। সাগরদাড়ির পাশের গ্রাম শেখপুরা মসজিদের ইমাম মুফতি লুৎফুল হকের কাছে তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। বিদ্বান ইমামের কাছে তিনি বাংলা, ফারসী ও আরবি শিক্ষা লাভ করেন।
সাগরদাঁড়িতেই তাঁর বাল্যকাল অতিবাহিত হয়। প্রথমে তিনি সাগরদাড়ি গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি হন। সাত বছর বয়সে তিনি কলকাতায় যান এবং খিদিরপুর স্কুলে দুবছর পড়াশোনার পর ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। হিন্দু কলেজে পড়াশোনার সময় থেকেই বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় তার কিছু কবিতা পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। এ সময় ১৮৪৩ সালে তিনি খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেন ও তার নামে মাইকেল শব্দটি যোগ করেন। ফলে হিন্দু কলেজে তার লেখাপড়া বন্ধ করতে হয় এবং তিনি ১৮৪৪ সালে বিশপস কলেজে ভর্তি হন।
ধর্মান্তরের কারণে তিনি তাঁর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এ কারণে ১৮৪৮ সালে মাদ্রাজ যান এবং ১৮৫২ সাল পর্যন্ত সেখানে শিক্ষকতা করেন। মাদ্রাজেই তিনি সাংবাদিক ও কবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। মাদ্রাজে বসেই তিনি হিব্রু, ফ্রেঞ্চ, জার্মান, ইটালিয়ান, তামিল ও তেলেগু ভাষা শেখেন। তার প্রথম দুটি গ্রন্থ এখান থেকেই প্রকাশিত হয়। এখানেই তিনি প্রথমে রেবেকা ম্যাকটিভিস ও পরে হেনরিয়েটাকে বিয়ে করেন। রেবেকা ম্যাকটিভিসের সাথে দাম্পত্যজীবন কাটান সাত বছর । রেবেকার গর্ভে মধুসূদনের দুই পুত্র ও দুই কন্যার জন্ম হয়েছিল। এরপর ম্যাকটিভিসের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ।
পিতার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে স্ত্রী হেনরিয়েটাকে নিয়ে তিনি ১৮৫৬ সালে কলকাতায় আসেন এবং প্রথমে কেরানি ও পরে দোভাষীর চাকরি করেন। এ সময় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখা শুরু করেন মাইকেল এবং বেলগাছিয়া নাট্য থিয়েটারের সঙ্গে জড়িত হন। ১৮৫৮ সালে রচনা করেন নাটক শর্মিষ্ঠা। প্রকৃতপক্ষে এটি বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক।
১৮৬২ সালে মধুসূদন ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য ইংল্যান্ড যান। ১৮৬৩ সালে প্যারিস হয়ে ভার্সাই নগরীতে যান এবং সেখানে দু’বছর থাকেন। ভার্সাই-এ থাকার সময়ই তিনি সনেট লেখা শুরু করেন। ১৮৬৬ সালে গ্রেজ-ইন থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করে ১৮৬৭ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টে আইন ব্যবসায় যোগ দেন ও পরে বিভিন্ন চাকরি করেন। তিনি বাংলায় ১২টি এবং ইংরেজি ভাষায় পাচটি বই প্রকাশ করেন। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদ বধ কাব্য নামক মহাকাব্য।
তাঁর রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে, কাব্য - মেঘনাদ বধ কাব্য, তিলোত্তমা সম্ভব, দি ক্যাপটিভ লেডী, ব্রজাঙ্গনা। নাটক – শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী, পদ্মাবতী। প্রহসন - বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একেই কি বলে সভ্যতা। এ ছাড়াও - পত্রকাব্য বীরাঙ্গনা, সনেট বঙ্গভাষা, কপোতাক্ষ নদ, দ্য ক্যাপটিভ লেডি, চতুর্দশপদী কবিতাবলী , ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। হোমারের ইলিয়াড অবলম্বনে তিনি রচনা করেন হেক্টরবধ। তাঁর শেষ রচনা - মায়াকানন নাটক।
বাংলার এই মহান কবীর শেষ জীবন অত্যন্ত দুঃখ-দুর্দশায় কেটেছে। তিনি ছিলেন অমিতব্যয়ী। ঋণের দায়, অর্থাভাব, অসুস্থতা, চিকিৎসাহীনতা ইত্যাদি কারণে তার জীবন হয়ে উঠেছিল দূর্বিষহ। স্ত্রী হেনরিয়েটার মৃত্যুর তিনদিন পর মাত্র ৪৯ বছর বয়সে কলকাতা আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকশূন্য করুণ অবস্থায় মৃত্যু হয় এই মহাকবির। কবির এ মৃত্যুদিনে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলী।
*******************
০১। ২০০৯ সালের এই দিনে - বার্নি ম্যাডোফ নামে এক ধনকুবেরকে ১৮০০ কোটি ডলার আত্মসাতের ঘটনায় ১৫০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এটা ছিল মার্কিন ইতিহাসে অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সর্বোচ্চ সাজার ঘটনা।
০২। ২০০৮ সালের এই দিনে - দিল্লি, বেঙ্গালুরু, পুদুচেরি ও কলকাতায় গৌরব পদযাত্রা আয়োজিত হয়।
০৩। ১৯৯৯ সালের এই দিনে - ই.ইউ.ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম শীর্ষ সম্মেলন সমাপ্ত হয় ।
০৪। ১৯৯২ সালের এই দিনে - আততায়ীর গুলিতে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোদিয়াফ নিহত হন।
০৫। ১৯৯১ সালের এই দিনে - কোমেকোন নামক অর্থনৈতিক জোটের বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর জোটের প্রতিনিধিরা হাঙ্গেরির রাজধানীতে সমবেত হয়ে এই সংস্থাটির বিলুপ্তি ঘোষণা করে। ১৯৪৯ সালে পূর্বাঞ্চলীয় ব্লকের দেশগুলোর অর্থনীতিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে পরিচালিত করার লক্ষ্যে এই জোটটি গঠন করা হয়েছিল। পোল্যান্ড, রুমানিয়া, হাঙ্গেরি, চেকোস্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া, ভিয়েতনাম, কিউবা, মঙ্গোলিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে নিয়ে এই সংস্থাটি গঠিত হয়েছিল।
০৬। ১৯৮৬ সালের এইদিনে – প্রখ্যাত কৃষক নেতা ও রাজনীতিবিদ হাজী মোহাম্মদ দানেশ মৃত্যুবরণ করেন।
০৭। ১৯৭৬ সালের এই দিনে - সেইশেলস নামক দীপপুঞ্জটি স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৬০ সাল থেকে দীপ দেশটিতে স্বাধীনতা আন্দোলন তীব্রতর হয় এবং ১৬ বছর ব্যাপী তীব্র সংগ্রামের পর দেশটির জনগণ স্বাধীনতা লাভ করতে সক্ষম হয়। ২৮০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট পূর্ব আফ্রিকার সেইশেলস প্রজাতন্ত্র, ভারত মহাসাগরের কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত।
০৮। ১৯৬৬ সালের এইদিনে – মার্কিন বোমারু বিমান উত্তর ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বোমা বর্ষণ করে।
০৯। ১৯৩৮ সালের এইদিনে – বাংলাদেশী সংগীতশিল্পী, সুরকার ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংগঠক অজিত রায় জন্ম জন্মগ্রহণ করেন। অজিত রায় (মৃত্যুঃ ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১) ছিলেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী। প্রথিতযশা কন্ঠ শিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ভুবনে অত্যন্ত পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে চার দশক কালেরও অধিক সময় ধরে তাঁর দৃপ্ত পদচারণায় মুখরিত ছিল সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল।
শিক্ষা ও সঙ্গীত ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে রংপুর কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন অজিত রায়। কৈশোরেই তবলা বাজানো শিক্ষা গ্রহণ করেন। পাশাপাশি তাঁকে গানে হাতে খড়ি দিয়েছেন তার মা কণিকা রায়। তাঁর গান শেখার প্রেরণা ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। এরপর ১৯৬৩ সাল থেকে রেডিওতে গান গাইতে শুরু করেন। পরে টেলিভিশন প্রচলনের পর থেকে সেখানেও গান গেয়েছেন তিনি। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়কাল হতে প্রতি বছর ভাষা আন্দোলনের বিশেষ দিন হিসেবে ২১শে ফেব্রুয়ারীকে স্মরণ করে একটি করে নতুন গান করে আসছিলেন তিনি। এই রকমই একটি গান হলো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত বিদ্রোহী কবিতায় আলতাফ মাহমুদের সুর করা গান।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সহকর্মী শিল্পীদের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের জুন মাসে তিনি কলকাতায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। এসময় তাঁর সতীর্থ হিসেবে ছিলেন - আপেল মাহমুদ, আব্দুল জব্বার, সমর দাস, কাদেরী কিবরিয়া, সুজেয় শ্যাম-সহ অন্যান্য শিল্পীরা। এ সময়ে তাঁর রচিত ও সুরারোপিত বিখ্যাত গানগুলো রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনীসহ সাধারণ মানুষদেরকে স্বদেশকে ঘিরে চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে সাহায্য করেছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসে প্রচারিত আখতার হোসেন রচিত “ স্বাধীন স্বাধীন দিকে দিকে আজ ’’ গানটিতে সুর ও কন্ঠ দিয়েছিলেন এ অজিত রায়।
১০। ১৯৩৮ সালের এইদিনে – সিরাজউদ্দৌলা বিষয়ক দ্বিতীয় উলেৱখযোগ্য ও শচীন সেনগুপ্তের সুবিখ্যাত নাটক সিরাজউদ্দৌলা প্রথম মঞ্চস্থ হয়। শচীন সেনগুপ্তের সিরাজউদ্দৌলা বাংলার রঙ্গমঞ্চে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় নাটক। এ নাটকটি ছিল ৩ অঙ্ক ও ৯ দৃশ্যের। এ নাটকে ইতিহাসের তথ্য যেমন ছিল তেমনি ইতিহাসের সম্ভাবনাসিদ্ধ কাল্পনিক চরিত্রের সমন্বয়ও ঘটেছিল। তৎকালীন বাঙালির দেশপ্রীতির সঙ্গে সিরাজের দেশ্রপ্রেমের সম্মেলন সাধন করে নাট্যকার সিরাজউদ্দৌলাকে বাঙালি জাতির নায়করূপে নির্ণয় করেছিলেন।
১১। ১৯২৯ সালের এইদিনে – ইতালির ফোরেন্সে জন্মগ্রহণ করেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ফ্যাসিবাদ বিরোধী সক্রিয় কর্মী, আপসহীন রাজনৈতিক সাক্ষাতকার গ্রহণকারী , সাহসি সাংবাদিক ও ইটালিয়ান লেখিকা ওরিয়েনা ফাল্লাচি । তিনি এমন একজন সাংবাদিক ছিলেন যে, কথপোকথনের মাধ্যমে আসল সত্যকে উদ্ধার করতে পারতেন। সাংবাদিক হিসেবে ওরিয়ানা আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচিত রাজনৈতিক ও নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। তাদের মাঝে হেনরি কিসিঞ্জার, ইরানের শাহ, আয়াতুল্লাহ খোমিনি, উইলি ব্রান্ডিট, জুলফিকার আলী ভুট্টো, ওল্টার ক্রনকিট, ওমর খাদাফি, ফেডরিকো ফেলিনি, ইয়াসির আরাফাত, ইন্দিরা গান্ধী, শেখ মুজিব,শন কনারি প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ওরিয়ানা ফাল্লাচি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গণতান্ত্রিক স্বশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী 'গুইয়াসতিজিয়া ই লিবার্তা'য় যোগ দেন। রাজনৈতিক ম্যাগাজিন 'এল ইউরোপীয়' তে দীর্ঘদিন বিশেষ রাজনৈতিক প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও তিনি বহু খ্যাতনামা সংবাদপত্র এবং ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেছেন। ১৯৬৮ সালে মেক্সিকান স্বশস্ত্র গোষ্ঠী ওরিয়ানার ওপর তিনবার বন্দুক হামলা চালায়। প্রতিবারই তিনি অল্পের জন্যে প্রাণে রক্ষা পান।
১৯৭৩ সালে সাক্ষাতকার নিতে গিয়ে আলেক্সজান্ডার প্যানাগোউলিস'র প্রেমে পড়েন তিনি। ১৯৬৭ সালের গ্রিক একনায়কের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ছিলেন আলেক্সজান্ডার প্যানাগোউলিস।সাংবাদিকতায় ওরিয়ানা ফাল্লাচি দুইবার সম্মানজনক 'সেন্ট ভিনসেন্ট' পুরস্কার অর্জন করেন। শিকাগোর কলাম্বিয়া কলেজ তাঁকে 'ডি লিট' সম্মানে ভূষিত করে। ওরিয়ানা ফাল্লাচি ইউনির্ভার্সিটি অব শিকাগো, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, হার্ভাড ইউনিভার্সিটি এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে লেকচার দিয়েছেন। তাঁর লেখা বিশ্বের প্রায় ২১টি ভাষায় অনূদিত হয়।
তাঁর রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে - এ ম্যান , দ্য সেভেন সিনস অব হলিউড , দ্য ইউজলেস সেক্স : ভয়েজ অ্যারাউন্ড দ্য ওম্যান, পেনেলোপ এট ওয়ার , লাইমলাইটার্স , দ্য ইগোটিস্ট : সিক্সটিন সারপ্রাইজিং ইন্টারভিউস, কুয়েল জিওরনো সুলা লুনা, ইনশাল্লাহ, ইফ দ্য সান ডাইস, ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরি, লেটার টু অ্যা চাইল্ড নেভার বর্ন, নাথিং অ্যান্ড সো বি ইট, ওরিয়ানা ফাল্লাসি ইন্টারভিসতা ওরিয়ানা ফাল্লাচি, দ্য রেজ অ্যান্ড দ্য প্রাইড এবং দ্য ফোর্স অব রিজন উল্লেখযোগ্য। ২০০৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছর বয়সে নিজ শহর ইতালির ফোরেন্সে মৃত্যবরন করেন তিনি। ১৯৭২ সালের ফেব্রিয়ারীতে ফেল্লাচি বাংলাদেশে আসেন শেখ মুজিবের সাক্ষাতকার নেবার জন্য।
১২। ১৯১৩ সালের এই দিনে - বলকান অঞ্চলে দ্বিতীয় যুদ্ধের সূচনা হয়। এ যুদ্ধ ছিল বুলগেরিয়ার সাথে সার্বিয়া, গ্রীস, মন্টিনিগ্রো, রুমানিয়া ও ওসমানীয়দের। এর এক বছর আগেই প্রথম বলকান যুদ্ধে ওসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, গ্রীস ও মন্টিনিগ্রো বেরিয়ে যাবার ঘোষণা দেয় এবং ওসমানীয়দের দূর্বলতার কারণে এসব দেশ স্বাধীনতা লাভ করতে সক্ষম হয়। এভাবেই ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু প্রথম বলকান যুদ্ধে স্বাধীনতা লাভকারী এসব দেশের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ অব্যাহত থাকে এবং অবশেষে ১৯১৩ সালের এই দিনে দ্বিতীয় বলকান যুদ্ধের সূচনা হয়। এ যুদ্ধে বুলগেরিয়া নিরুপায় হয়ে শান্তির প্রস্তাব দেয় এবং বুখারেস্ট শান্তি চুক্তি অনুযায়ী বুলগেরিয়া,ওসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে দখলীকৃত ভূখন্ডের কিছু অংশ সার্বিয়া, রুমানিয়া, গ্রীস ও মন্টিনিগ্রোর নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দেয়। বলকান যুদ্ধই আসলে ১৯১৪ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রথম মহাযুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরী করেছিল।
১৩। ১৮৮৬ সালের এই দিনে - ফ্রান্সের বিখ্যাত চিত্র শিল্পী এডলফ মন্টিসেলি ৬২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
১৪। ১৮৬৮ সালের এইদিনে – প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের নিউজ এজেন্সি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৫। ১৮৬৪ সালের এইদিনে – আইনজ্ঞ , বাংলার বাঘ (Tiger of Bengal - ২৯ জুন,১৮৬৪ - ২৫ মে, ১৯২৪) স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতার ভবানীপুরে সেসময়ের চিকিৎসক গঙ্গাপ্রসাদ মুখার্জী ও জগত্তারীনী দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভাইস-চ্যান্সেলর। ১৮৭৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। ১৮৮৪ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ডিগ্রী , ঈশান বৃত্তি এবং ১৮৮৫ সালে গণিতে এম.এ ও ১৮৮৬ সালে পদার্থবিদ্যায় এম.এ ডিগ্রী লাভসহ একই সালে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি (পি.আর.এস.) অর্জন করেন। ১৮৮৮ সালে তিনি বি.এল. ডিগ্রী লাভ করেন এবং তখন থেকেই আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৮৮০ থেকে ১৮৯০ সালের মধ্যে বিভিন্ন জার্নালে তিনি উচ্চতর গণিতের ওপর প্রায় বিশটির মতো প্রবন্ধ প্রকাশ করেন।
ইন্ডিয়ান অ্যাসোশিয়েসন ফর দি কালটিভেশন অব সায়েন্স-এর সাথে তিনি সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং ১৮৮৭ থেকে ১৮৯১ সালের মধ্যে তিনি গণিতের ওপর একাধিক লেকচার প্রদান করেন। তাঁর দুটি অসাধারণ অ্যাকাডেমিক অবদান হলো ১৮৯৩ সালে প্রকাশিত জিওমেট্টি অব কোণিক্স এবং ১৮৯৮ সালে প্রকাশিত ল অব পারপিচুইটিস। ১৯০৮ সালে তিনি ক্যালকাটা ম্যাথেমেটিক্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯৪ সালে তিনি ল’ এর ওপর ডক্টরেট ডিগি্র লাভ করেন এবং ১৮৯৮ সালে ট্যাগোর ল প্রফেসর হন। ১৯০৪ সালে তিনি তাঁর কাঙ্খিত কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতির পদে অধিষ্ঠিত হন। এর আগে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ও ১৮৮৯ সালে এর সিন্ডিকেটের সদস্যের পদ অলংকৃত করেন।
তিনি ১৮৯৯ থেকে ১৯০৩ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৯০২ সালে লর্ড কার্জন তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করেন। ১৯০৬ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত হন এবং ১৯১৪ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯২১ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ভাইস-চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত হন। এ সময়েই তিনি কলা ও বিজ্ঞান শাখার পি.জি. কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হন। ১৮৮৯ সাল থেকেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেটের সবচেয়ে প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন। আশুতোষ মুখার্জী ১৯২৩ সালে কলকাতা হাইকোর্ট ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯২৪ সালের ২৫ মে পাটনায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১৬। ১৭৯৫ সালের ২৯ জুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের গোড়াপত্তন হয়েছিল। তখন বাহিনীর নাম ছিল রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন। সৈন্যসংখ্যা ছিল ৪৪৮। ছয় পাউন্ড গোলা, চারটি কামান এবং দুটি অনিয়মিত অশ্বারোহী দল নিয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়। সীমান্ত এলাকায় সমস্যা বৃদ্ধির কারণে এ বাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের অভিযানে অংশ নেয়।
১৮৬০ সালে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়নের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ফ্রন্টিয়ার গার্ডস।
১৮৬১ সালে পূর্বাঞ্চলের নিয়মিত-অনিয়মিত পুলিশ বাহিনীর এক হাজার ৪৫৪ জনের সমন্বয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়নকে পুনর্গঠিত করে নাম রাখা হয় ফ্রন্টিয়ার গার্ডস। এর সদর দপ্তর ছিল চট্টগ্রাম; কামরূপ, গোয়ালপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সিলেট ও ত্রিপুরা সীমান্ত-ফাঁড়িগুলো এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৭৯ সালে স্পেশাল কোম্পানি নামে এই বাহিনীর তৎকালীন সদস্যরা পিলখানায় প্রথম ঘাঁটি স্থাপন করেন।
১৮৯১ সালে এ বাহিনীকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে ফ্রন্টিয়ার গার্ডসের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ। বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ বাহিনীকে চারটি কোম্পানিতে ভাগ করা হয়। এর স্থায়িত্বকাল ছিল ১৯১৯ সাল পর্যন্ত।
১৯২০ সালে বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন করে নাম রাখা হয় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলস। ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলসকে ১৬টি প্লাটুনে ভাগ করে সীমান্ত রক্ষায় নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত করা হয়। এর স্থায়িত্বকাল ছিল ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারত বিভাগের পর ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলসের নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস। এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয় ইপিআর। কলকাতা মেট্রোপলিটন আর্মড পুলিশের একটি দল এবং বাঙালি ও পশ্চিম পাকিস্তানের এক হাজার সেনা এ বাহিনীতে যোগ দেয়। দক্ষ নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার জন্য ইপিআরে সামরিক বাহিনী থেকে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বাংলাদেশের একটি আধাসামরিক সংস্থা। এর কাজ হল মূলত বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা করা। এর প্রধান কার্যালয় ঢাকার পিলখানায় অবস্থিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পূর্বে এর নাম ছিল ইপিআর অর্থাৎ ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল্স। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালের ৩ মার্চ ইপিআর বাহিনীকে পুনর্গঠন করে এর নাম রাখা হয় বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)। ১৯৮০ সালের ৩ মার্চ থেকে এ বাহিনীর স্বীকৃতি হিসেবে সরকার একে জাতীয় পতাকা প্রদান করে। ১৯৯৭ সালের ১৬ মার্চ বিডিআর বাহিনীর জন্য তিন রঙের সংমিশ্রণে ছাপা কাপড়ের ইউনিফর্মের প্রবর্তন করা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানা সদর দপ্তরে বিডিআরের কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল জওয়ান সংঘটিত করেন ইতিহাসের বিভীষিকাময় নারকীয় হত্যাকাণ্ড। পিলখানা সদর দপ্তরে ঘটে যাওয়া ইতিহাসের বিভীষিকাময় উক্ত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বিডিআরের ২১৫ বছরের গৌরবময় অধ্যায়ের ছন্দপতন ঘটে। কিন্তু বিডিআর আইনে দোষীদের নগণ্য শাস্তির বিধান থাকায় আইন পরিবর্তনেরও প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ বাহিনীর নাম ও পোশাক পরিবর্তন করে নতুন আইনও প্রবর্তন করা হয়। ২৩ জানুয়ারি ২০১১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিবির পতাকা উত্তোলন করেন।
১৭। ১৭৫৭ সালের এইদিনে - লর্ড ক্লাইভ মুর্শিদাবাদে প্রবেশ করেন । মীর জাফরের প্রথম দরবারে মীর জাফরের আবদারক্রমেই ক্লাইভ মীর জাফরের হাত ধরে তাঁকে নবাবী মসনদে বসান । মীরজাফর বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার নবাব হন। লোভী, বিশ্বাসঘাতক, অপদার্থ এ মীর জাফর ছিলেন এদেশের ইতিহাসের এক ঘৃণ্য চরিত্র, একটি ক্লীব, একটি ক্লেদ, একটি অপাঙক্তেয় নাম।
১৮। ৮৪৬ সালের এইদিনে - বিখ্যাত আরবি কবি আবু তাম্মাম মৃত্যুবরণ করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন