আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা

বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী

সকল মহান ভাষা শহীদগণের প্রতি,
এবং ভাষা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত

সকল ভাষা সৈনিক
ও বীর বাঙ্গালীদের জানাই অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী,
সেইসাথে সকলকে জানাই

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।

বিষয় সূচী

সাহিত্য (60) অন্যান্য কবিতা (53) ভালোবাসার পদবিন্যাস ( প্রেম সম্পর্কিত রচনা বিশেষ ) (53) আমার লেখা প্রবন্ধ-নিবন্ধ (37) কবিতা (35) দেশ নিয়ে ভাবনা (33) ফিচার (33) বাংলাদেশ (29) সমসাময়িক (28) খন্ড কাব্য (26) হারানো প্রেম (22) সংবাদ (18) কাল্পনিক প্রেম (16) ইতিহাস (15) প্রতিবাদ (15) সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ (15) Online Money Making Links (14) দেশাত্মবোধক কবিতা (13) আমার জীবনের দিনপঞ্জী (12) ধর্ম (12) প্রেমের কবিতা (11) ব্যক্তিত্ব (11) রাজনীতি (11) ধর্মীয় আন্দোলন (10) প্রবাসের কবিতা (10) খন্ড গল্প (9) জীবন গঠন (9) বর্ণমালার রুবাঈ (9) ইসলাম (8) প্রগতি (8) মানুষ ও মানবতা (8) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (8) VIDEOS (7) আমার লেখালেখির অন্তরালে (7) ইসলামী জাগরণ (7) মানব মন (7) ট্র্যাজেডি (6) শোক সংবাদ (6) সম্প্রীতি (6) নারী স্বাধীনতা (5) প্রেমের গল্প (5) বিজয় দিবসের ভাবনা (5) মৃত্যুপথ যাত্রী (5) সংবাদ মাধ্যম (5) স্মৃতিকথা (5) ঈদ শুভেচ্ছা (4) প্রবাস তথ্য (4) রমজান (4) শুভেচ্ছা (4) Computer Programer (3) আমার ছবিগুলো (3) আমার রাইটিং নেটওয়ার্ক লিংক (3) পর্দা (3) ফটিকছড়ি (3) বাংলাদেশের সংবিধান (3) বিশ্ব ভালবসা দিবস (3) শিক্ষা (3) শিক্ষার্থী (3) স্লাইড শো (3) News (2) VERIETIES POEMS OF VERIOUS POETS (2) আষাঢ় মাসের কবিতা (2) আষাঢ়ের কবিতা (2) ইসলামী রেনেসাঁ (2) ছাত্র-ছাত্রী (2) থার্টি ফাস্ট নাইট (2) নারী কল্যান (2) নারী প্রগতি (2) নির্বাচন (2) বর্ষার কবিতা (2) মহাসমাবেশ (2) শবেবরাত (2) শরৎকাল (2) শাহনগর (2) শ্রদ্ধাঞ্জলী (2) সত্য ঘটনা (2) সত্য-মিথ্যার দ্বন্ধ (2) সফলতার পথে বাংলাদেশ (2) Bannersআমার ছবিগুলো (1) DXN (1) For Life Time Income (1) For Make Money (1) Knowledge (1) Student (1) অদ্ভুত সব স্বপ্নের মাঝে আমার নিদ্রাবাস (1) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (1) আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আত(সুন্নী) (1) উপন্যাস (1) কবি কাজী নজরুল ইসলাম (1) কোরআন - হাদিসের কাহিনী (1) গল্প (1) চট্টগ্রাম (1) চিকিৎসা ও চিকিৎসক (1) জমজম (1) জাকাত (1) তরুন ও তারুণ্য (1) নারী জাগরণ (1) পরকিয়ার বিষফল (1) ফটিকছড়ি পৌরসভা (1) বন্ধুদিবস (1) বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম (1) বিবেক ও বিবেকবান (1) বিশ্ব বাবা দিবস (1) বিশ্ব মা দিবস (1) ভ্রমণ (1) মন্তব্য (1) মাহফুজ খানের লেখালেখি (1) রবি এ্যাড (1) রমজানুল মোবারক (1) রেজাল্ট (1) রোগ-পথ্য (1) লংমার্চ (1) শহীদ দিবস (1) শুভ বাংলা নববর্ষ (1) শৈশবের দিনগুলো (1) সমবায় (1) সস্তার তিন অবস্থা (1) সাভার ট্র্যাজেডি (1) সিটি নির্বাচন (1) স্বপ্ন পথের পথিক (1) স্বাধীনতা (1) হ্যালো প্রধানমন্ত্রী (1) ২১ ফেব্রোয়ারী (1)

APNAKE SHAGOTOM

ZAKARIA SHAHNAGARIS WRITING

সকলকে বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা

বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে আমরা আর বাংলা ভাষায় কথা বলতে চাইনা । নিজের মাতৃভাষাকে যখন-তখন যেখানে সেখানে অবমাননা করে তৎপরিবর্তে ইংরেজী ভাষা ব্যবহার করতে অভ্যাস্থ হয়ে যাচ্ছি বা হয়ে গেছি ।
আরও একটু এগিয়ে গেলে বলতে হয় - আমরা আজ বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালী জাতিসত্বা ভুলে গিয়ে ইংরেজী জাতিসত্বায় রক্তের ন্যায় মিশে গেছি !

অথচ একদিন আমরা বাঙ্গালী জাতি একতাবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় ভাষা উর্দুকে ত্যাগ করে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা বাংলা ভাষাকে সর্বত্র প্রচলন করতে প্রাণ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম ! ফলে বিজাতীয় ভাষা উর্দূকে অপসারন করে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলা ভাষাকে ধারন করেছিলাম । যখন আমরা বাংলার সর্বত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা শুরু করেছিলাম ,তখন কিন্তু বিশ্বায়নের যুগটা অনুপস্থিত ছিল তা নয় , বিশ্বায়নের যুগটা তখনও ছিল বিধায় আমরা ইংরেজী শিক্ষায় তখনও বাধ্য ছিলাম । অর্থাৎ যে জন্যে আজ আমরা ইংরেজী শিখছি সেইজন্যে তখনও ইংরেজী শিক্ষার প্রচলন ছিল । ছিল ইংরেজী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও । তাই বলে সে সময় বর্তমান সময়ের মত মাতৃভাষা বাংলাকে অবমাননা করা হয়নি । মানুষ সে সময় বাংলায়ই কথা বলেছিল । শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই সে সময় ইংরেজী ব্যাবহার করেছিল বাঙ্গালী জাতি

conduit-banners

Powered by Conduit

ফ্লাগ কাউন্টার

free counters

MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY

PLEASE CLICK ON MY BANNERS. VISIT MY AFFILIATE SITE "MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY ( অনলাইনে অর্থোপার্জনের একটা মাধ্যম )" I HOPE IT WILL BE HELPFUL FOR YOU. Create your own banner at mybannermaker.com!

শনিবার, ৭ জুলাই, ২০১২

সমবায় কি ও কেন ? (পর্ব-১)


সমবায় কি ও কেন ? (পর্ব-১)
(আজকের আন্তর্জাতিক সমবায় দিবস স্মরণে)
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
-----------------------

আন্তর্জাতিক সমবায় দিবসে সকল সমবায়ীদের প্রতি শুভেচ্ছা।

সমবায় কি বা সমবায়ের পরিচয় ঃ

সমবায় শব্দের বাংলা আভিধানিক অর্থ - মিলন ,নিত্য সম্বন্ধ, একত্র হবার বুদ্ধি ও প্রয়াস, সমবেত বা যৌথ কর্মপ্রচেষ্ঠা। ইংরেজীতে যা CO-OPERATIVE নামে অভিহীত। সমবায় অর্থ হলো – আত্মসাহায্য ও পারস্পরিক সহযোগীতা।

ব্যাপক অর্থে সমবায় হচ্ছে – একাধিক লোকের শতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ন্যায়-নীতির ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত একটা কর্মপ্রচেষ্ঠা। সমশ্রেনী বা সমপেশাভুক্ত সকলের সাবলম্বী হবার একটা উত্তম পন্থা ও মহৎ প্রেরণা। সর্বোপরী সমবায় হলো – একটা আন্দোলন।

প্রতিটি মানুষের একটা জন্মগত বৈশিষ্ঠ যে , সে সাংগঠনিক জীবন চায়। চায় একটা স্বীকৃতি। কিছু মানুষের সম্মিলিত সহাবস্থানে সৃষ্ঠ তেমনই একটি সাংগঠনিক জীবন ও স্বীকৃতির নাম সমবায়।

এক সমবায়ী বলেছিলেন – “Co-operative , this is a various business. It’s not a package program but it’s a long term practice – অর্থাৎ সমবায়, ইহা একটি বাস্তব ভিত্তিক ব্যবসা। ইহা গাঁটবাধা কোন কর্মসুচী নয়, কিন্তু ইহা একটা দীর্ঘায়িত অনুশীলন”।

Co-operation বা সহযোগীতা কথাটা থেকেই Co-operative বা সমবায় কথাটার জন্ম। সমবায় হলো – পরস্পরের সহযোগীতায় পরস্পরের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা দূর করার একটা উপায়।

সাম্য – ঐক্য – সততার সমন্বয়ে সৃষ্ট একটা জোটই হলো সমবায়। সমবায় একটি আচরণ বিজ্ঞান। একক প্রচেষ্ঠা যেখানে ব্যর্থ সেখানেই প্রয়োজন দলগত প্রচেষ্ঠা। সমন্বিত প্রচেষ্ঠায়ই আনতে পারে আশাতীত সাফল্য। একটা চিন্তা একজনে না করে বহুজনের মধ্যে যদি সেটা বিস্তার ঘটানো যায় তবে এর কাটামো থেকে চূড়ান্ত অবস্থাবধি আমুল পরিবর্তন সম্ভব। চূড়ান্ত অবস্থায় আমুল পরিবর্তন আনায়নে আশাতীত সাফল্য লাভের লক্ষ্যে সমন্বিত এক প্রচেষ্ঠার নামই সমবায়।

সমবায় মানে আত্মসাহায্য ও পারস্পরিক সহযোগীতা। সমবায় সংগঠন একটি আইনগত স্বতন্ত্র ও কৃত্রিম স্বত্তা। সমবায় সাংবিধানিক মালিকানার দ্বিতীয় সেক্টর। সমবায় একটা সুশৃন্খল ও গণতান্ত্রিক আর্থ-সামাজিক সংগঠন।

সমবায় একটি সামাজিক অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা। সমবায় হলো সমাজতন্ত্রের জন্য একটা পরিপূর্ণ প্রস্তুতি। সমবায় হলো লক্ষ লক্ষ কৃষক সাধারণের কাছে ক্ষুদ্র খোদকস্থ জোত থেকে বৃহৎ যৌথ অর্থনীতিতে উত্তরণের সবচেয়ে সহজ-সরল আয়ত্বাধীন একটা পথ। সমবায় কৃষকদের এক একটা বাহিনী বা স্তরকে নয়, সমগ্র গরীব - মাঝারী জোতগুলোকে মেলাবার একটা পথ। কবি রবীন্দ্রনাথের ভাষায় – “ অনেক গৃহস্থ , অনেক মানুষ একজোট হইয়া জীবিকা নির্বাহ করিবার যে উপায়, তাহাকেই ইউরোপে আজকাল Co-operative প্রণালী আর বাংলায় সমবায় প্রণালী নাম দেওয়া হইয়াছে”।

সমবায় হলো পূঁজিবাদী সমাজের একমাত্র যন্ত্র – নতুন ক্ষমতা যাকে চূর্ণ করেনা , টিকিয়ে রাখে , ঢেলে সাজায় , বিকশিত ও সম্পূর্ণ করে, গণসংগঠন হিসাবে গণউদ্যোগকে প্রণোদিত করে, দেশকে খাদ্য জোগাতে সাহায্য করে, সাহায্য করে নতুন ক্ষমতাকে।

সমবায় হলো একটা আদর্শ, একটা দর্শন ও একটা অর্থনৈতিক কাজের পদ্ধতি। সমবায় হলো সাবলম্বিতা অর্জনের লক্ষ্যে একটা ঐক্যবদ্ধ কর্মপ্রয়াস। দশে মিলে সুনিদ্রিষ্ট নীতিমালা ও আদর্শের ভিত্তিতে কাজ করাই হচ্ছে সমবায়ের মূল দর্শন।

সমবায় সংগঠন হচ্ছে – সংগবদ্ধ অর্থনৈতিক কাজের একটি পরিশৃন্খল রূপ। জনসাধারণের আর্থসামজিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে একটি সুশৃন্খল মানবসংগঠন হচ্ছে সমবায়। সমবায় স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর একটা সংগঠন। সমবায় একটি Concept বা ধারণা, একটা Movement বা অবস্থান পরিবর্তনের আন্দোলন।

মানুষকে কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে অমুলক ধারণাক পাল্টে উন্নতর কিছু ধারণা , মতাদর্শ দান এবং সত্যিকার ও অর্থবহভাবে বেঁচে থাকার স্বার্থেই সমবায়। অনেক মানুষ একজোট হয়ে জীবিকা নির্বাহ করার যে উপায় , তাই উন্নত দেশের Co-operative বা সমবায় প্রণালী। যা আমাদের দেশকে দারিদ্রতা থেকে বাঁচাবার একমাত্র উপায়। তাই, দেশের দারিদ্রতা দূরীকরনের জন্যই সমবায়। একের নয় , সমষ্ঠগত উন্নয়নের জন্যই সমবায়। কতক নয় , বহু মানুষের কল্যানের জন্যই সমবায়। সমবায় উত্তরণের জন্য, স্বপ্নলোকের রাজ্য জয়ের জন্যই সমবায়। টেকসই করার লাগসই প্রযুক্তিই হচ্ছে সমবায়। সমবায় হচ্ছে – সমমনা মানুষদের একত্রিত চিন্তা ও সম্ভাবনাময় বহুমুখী কার্যক্রমের আত্মপ্রকাশ।

জীবন যাত্রাপথে স্বচ্ছতা আনায়নে কিছু উদ্যোগী মানুষ সমমনা হয়ে একই ঘরের সদস্য স্বরূপ একই ঘরে অবস্থানের মত সহাবস্থানের একটি জোট গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে সামান্য পূজি ধাপে ধাপেএকটা পাত্রে সঞ্চয়ের মাধ্যমে একে অপরকে সহযোগীতা দান এবং একে অপরের কল্যান চাওয়ার নামই হচ্ছে সমবায়।

সবশেষে , সমবায়ের পরিচয় দিতে গিয়ে বলতে হয় –
সমবায়
যুগে যুগে মানুষ চলতে চেয়েছে একা
হতে চেয়েছে মানী,
একক বলয়ে সময় কাটিয়ে
এনেছে জীবনে গ্লানী।
যেদিন থেকেই জেনেছে মানুষ
সামাজক জীব তারা,
সেদিন থেকেই মানুষ জাতি
মেনে নিল সমাজ গঠনের ধারা।
সমাজবদ্ধ হয়ে যখন মানুষ জাতি
করলো আত্মপ্রকাশ ,
চতুর্দিকেই দেখা দিলো
গৌরান্বিত সভ্যতার ক্রমবিকাশ!
একাত্বতার দিকবলয়ে
প্রবেশ করে মানুষ
দূর করে সেই একাকীত্বের গ্লানী ,
ফিরে পায় হুঁশ।
পৃথিবীতে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে
মুলে ছিল তা একতায় নির্ভর -
একতা – এই একটি মাত্রই মত,
যুগে যুগে বিশ্ব নবরূপ নিয়েছে –
হয়েছ সবে স্বনির্ভর ;
মুলে ছিল তার – যুবদের খুনরাঙ্গা পথ।
পৃথিবীতে যা কিছু বৃহৎ সৃষ্টি –
মূলে ছিল তার ছোট্ট ছোট্ট বিষয় ,
দেখো ! ব্যাংকের ঐ বিশাল টাকার স্তুপ –
সেতো বহু মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়।
যুগে যুগে মানুষ হয়েছে একতা ,
সংগঠন করে দেখিয়েছে সমতা ;
প্রগতির ধারাকে রেখেছে বহতা ,
দেখিয়েছে মানুষ নিজেদের ক্ষমতা।
যুগে যুগে মানুষ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ,
পাল্টিয়েছে পৃথিবীর শোভা ;
বহু মানুষের ভিন্ন মত ঐক্য হেছে,
সমবায় গড়ে করেছে মানুষকে মনোলোভা।

**********************
সকলের জন্যই সকল মানুষ
জীবনতরী চলমান - বয়ে যাওয়া সময়ের তালে তালে ,
অনন্তের পথে ধীরে ধীরে যাচ্ছে তাহা গন্তব্যে চলে ।
আপন আপন জীবন নিয়ে ব্যস্ত মানুষ পুরু জীবন ভরি ,
মানবতার মৃত্যু হচ্ছে আজ মানুষের ব্যস্ততার চাপে পড়ি !
সৃষ্টির সেরা মানবজাতির নহে নহে ইহা ধর্ম ,
মানুষতো এসেছে পৃথিবীতে দেখাতে মানবতার কর্ম ।
মানবজীবন নয়তো শুধুই আপনারে নিয়ে বিব্রত রহিতে ,
সকলের জন্যই সকল মানুষ লিখেছে মানবধর্ম বহিতে ।

=======================

সমবায়ের সংজ্ঞা ঃ

বিভিন্ন দার্শনিক , চিন্তাবিদদের দৃষ্টিতে সমবায় বিভিন্ন রূপে ধরা দিয়ছে । সমবায়ের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে কালবার্ট বলেন – “ কোন সংগঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত আত্মসাহায্যের নামই সমবায় ।

সি এফ ষ্ট্রিকল্যাণ্ড সমবায়ের সংজ্ঞা দেন এভাবে – “কতিপয় ব্যক্তির যৌথ উদ্যোগে বিশেষ একটি লক্ষ্যে উপণিত হবার উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটি আন্দোলন, যা কারো একক প্রচেষ্ঠায় সাধন সম্ভব নয়, তাই সমবায়”।

স্যার এম এল ডালিং সমবায়ের সংজ্ঞা যেটি দেন , তা হলো – “ সমশ্রেণী বা পেশাভুক্ত কিছু লোক একে অন্যের সাহায্যে নিজেদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য সংস্থা গঠন করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তা পরিচালনা করা। সমবায় হচ্ছে একটি ধর্ম যা ব্যবসায়ে প্রয়োগ করা হয়।

সমবায়ের লক্ষ্য ঃ

সকলের সার্বিক মঙ্গল ও সুখী জীবনের নিশ্চয়তা বিধানই সমবায়ের লক্ষ্য।

সমবায়ের উদ্দেশ্য ঃ

মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সমাজ থেকে বিতাড়ন করা , শোষকদের কাছ থেকে দরিদ্র ও স্বল্পভিত্বদের মুক্তি পেতে সাহায্য প্রদান করা, উন্নত সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, উন্নত কৃষি ব্যবস্থার ও ঋণের বোঝার মুক্তি দান করা, ন্যায্য মু্ল্য পাবার ব্যবস্থ করা ও ন্যায্য মুল্যে ভোগপণ্য বিক্রি করাই হলো সমবায়ের উদ্দেশ্য ।

সমবায়ের বৈশিষ্ঠ্য ঃ

একক প্রচেষ্ঠা যেখানে ব্যর্থ সমবায় সেখানে যে কোন জটিল ও বড় কাজ সম্পাদনে সক্ষম।পূঁজি গঠনে , নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধনে সমবায় মানুষকে সংঘবদ্ধ করে সুশৃন্খল ও শক্তিশালী করে তোলে। ব্যবহারকারীর স্বার্থ সংরক্ষনের জন্য সমবায় উৎপাদনকারীকে তার উৎপাদনে সর্বাদিক প্রতিষ্ঠার সুযোগ প্রদান করে।

যেহেতু সমবায় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সদস্যগণ গণতান্ত্রিক উপায়ে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দ্রুত করতে পারে , সেহেতু সমবায় মানুষের অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠান বটে। যেহেতু সমবায় প্রচেষ্ঠায় মানুষ তাদের শক্তি সঞ্চয় করে পূঁজি গঠন করতে পারে এবং শ্রমজীবি মানুষেরা সমবায়ের মাধ্যমে বাঁচতে পারে, সেহেতু শ্রমজীবি মানুষের আত্মপ্রতিষ্ঠায় ও তাদের জীবন মান উন্নয়নের একটি প্রতিষ্ঠান।

সমবায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অব্যাহত সম্পদকে উৎপাদনমুখী সম্পদে রূপান্তর করা যায়। সমবায় দেশের ধন সম্পদ গুটিকতক মানুষের হাতে পুঞ্জীভুত হওয়া থেকে মুক্ত করে এবং সম্পদকে পরিব্যপ্ত করে। উন্নত ব্যবসা , উন্নত চাষাবাদ ও উন্নত জীবনযাত্রায় সমবায় একটি পরীক্ষিত উপায়।

সমবায়ের গুরুত্ব ঃ

সমবায় সাধারণ মানুষকে বিশেষকরে কৃষক ও শ্রমজীবি মানুষদেরকে একটি সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ করে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এক গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পান করে, শেয়ার ও সঞ্চয় সংগ্রহ করে তাদের পূঁজি গঠনে সাহায্য করে। মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য এবং তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আনায়নের জন্য সাহায্য হিসাবে উৎপাদন কাজে তাদের শ্রম ও পূঁজি বিনিয়োগের পথ সুগম করে। তাই সমবায়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।

সমবায়ের প্রয়োজনীয়তা ঃ

দরিদ্র ও অশিক্ষিত লোকের ক্ষুদ্র শক্তিকে একত্রিত করে একটি অর্থবহ উৎপাদন সক্ষম দল প্রতিষ্ঠিত করার উপায় হচ্ছে সমবায়। অথচ এ ধরণের সংগঠনের অভাবে এদের শক্তিকে কাজে লাগানো যাচ্ছনা। এদের প্রত্যেকের আর্থিক সম্পদ এত কম যে একক প্রচেষ্টায় কোন আর্থিক উৎপাদন কর্ম পরিচালনা করা এদের পক্ষে সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন তাদের কর্মসংস্থানে সম্পদ সৃষ্টি ও উৎপাদনে এবংসম্পদের সুষম বন্টনে সমবায় দেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদন ও বন্টন প্রক্রিয়ায় সমবায়ী তৎপরতা একটি অতীব প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বিধায় এদেশে তথা যে কোন দরিদ্র দেশে সমবায় একটি অতি উপযোগী ও প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান।

==============

ইতিহাসে ৭ জুলাই


ইতিহাসে ৭ জুলাই
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
----------------------


মুক্তিসংগ্রামী দীনেশচন্দ্র গুপ্তের ফাঁসি কার্যকর ঃ ১৯৩১ সালের এইদিনে - ভারতের স্বাধীনতা (বৃটিশ বিরোধী) আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী স্বনাম ধন্য বাঙালি বিপ্লবী ও মুক্তিসংগ্রামী দীনেশচন্দ্র গুপ্ত ১৯৩১ সালের ৭ই জুলাই আলীপুর জেলে ফাঁসির দণ্ডে দন্ডিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ফাঁসি কার্যকর করার সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। তিনি ১৯১১ সালের ৬ ডিসেম্বর (বাংলা ১৩১৮ সনের ২০ অগ্রহয়ণ) তৎকালীন ঢাকা জেলার বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলার যশোলঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সতীশচন্দ্র গুপ্ত। আর মা’য়ের নাম বিনোদিনী দেবী। ছোটবেলায় দীনেশ গুপ্তের ডাকনাম ছিল নসু। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে দীনেশ গুপ্ত ছিলেন পিতামাতার তৃতীয় সন্তান। তিনি দীনেশ গুপ্ত নামেই সমধিক পরিচিত।


গৌরীপুরের পাঠশালাতেই দীনেশের শিক্ষারম্ভ। পরে নয় বছর বয়সে ভর্তি হন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। বাল্যকাল থেকেই দীনেশ ছিলেন নির্ভীক, বেপরোয়া ও বাগ্মী। এই সময় থেকেই তাঁর মনে স্বদেশ চেতনা ও ব্রিটিশ বিরোধিতার আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছিল। কৈশোরে দীনেশ বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স (বিভি) নামে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠনের সদস্য হন। ১৯২৬ সালে ঢাকা বোর্ড থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি মেদিনীপুরে কর্মরত তাঁর বড়োদাদা যতীশচন্দ্র গুপ্তের কাছে বেড়াতে আসেন। এই সময় থেকেই মেদিনীপুর শহরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার সুপ্ত বাসনা তাঁর মনে জাগে।


১৯২৮ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পরীক্ষা দেন। দলের তরফ থেকে দীনেশকে মেদিনীপুরে বিভির শাখা স্থাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেদিনীপুরে এসে দল সংগঠন ও সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যান তিনি। তিনি ঢাকা ও মেদিনীপুরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। ঢাকা কলেজে পড়ার সময় ১৯২৮ সালে দীনেশ 'ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস'-এর কলকাতা সেশনের প্রাক্কালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস সংগঠিত 'বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে যোগদান করেন। এ বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স একটি সক্রিয় বিপ্লবী সংগঠনে পরিবর্তিত হলে কুখ্যাত ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারদেরকে হত্যা ও নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করা হয়।


স্থানীয় বিপ্লবীদের আগ্নেয়াস্ত্র চালনা শেখানোর জন্য দিনেশ গুপ্ত কিছু সময় মেদিনীপুরেও ছিলেন। তাঁর প্রশিক্ষিত বিপ্লবীরা ডগলাস(Douglas), বার্জ(Burge) এবং পেডি(Peddy)--এই তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রটকে পরপর হত্যা করেছিল। সংগঠনটি জেলখানার বন্দীদের উপর পাশবিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল এনএস সিম্পসনকে হত্যার টার্গেট করে। এই বিপ্লবীরা সিদ্ধান্ত নেয় যে তাঁরা শুধু সিম্পসনকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হবেন না, বরং কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসকদের সচিবালয় রাইটার্স ভবনে আক্রমণ করে ব্রিটিশ অফিস পাড়ায় ত্রাস সৃষ্টি করবেন। এ স্বপ্ন সফল করতে ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিপ্লবী বিনয় বসুর নেতৃত্বে তিনি ও বাদলগুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং (বর্তমান মহাকরণ) ভবনে ইউরোপীয় পোশাকে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে অভিযান চালিয়ে কারা বিভাগের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন। ব্রিটিশ পুলিশও তখন গুলি শুরু করে।


যার ফলশ্রুতিতে এই তিন তরুণ বিপ্লবীর সাথে পুলিশের একটি সংক্ষিপ্ত বন্দুকযুদ্ধ হয়। পুলিশ দ্রুতই তাঁদেরকে পরাভূত করে ফেলে। কিন্তু এই তিনজনের গ্রেফতার হওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না বিধায় বাদল গুপ্ত পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং অন্যদিকে বিনয় এবং দিনেশ নিজেদের রিভলবার দিয়ে নিজেদেরকেই গুলি করেন। বিনয়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তিনি ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ , ১৯৩০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। দীনেশ কোনো রকমে এ চরম আঘাত থেকে বেঁচে ওঠেন। তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা হলে বিচারের রায়ে সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড এবং খুনের জন্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ হয়। মৃত্যুর পূর্বে দীনেশ তাঁহার মা, বোন, প্রত্যেকের নিকট পত্র লিখে যান। যাতে লেখা থাকে মৃত্যুর জন্য শোক না করার অনুরোধ বাক্য। এই চিঠিগুলি ভারতের বিপ্লবী ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং সাহিত্যিক বিচারেও অত্যন্ত মূল্যবান।


১৯৩১ সালের ৭ জুলাই দীনেশের ফাঁসির তারিখে তিনি ভোরবেলা স্নান করে ফাঁসির পোশাক পরলেন। অতপর হাঁসিতে হাঁসিতে সার্জেন্টকে বলিলেন¾“এবার যাওয়া যেতে পারে। ধীর গম্ভীর পদক্ষেপে ফাঁসিমঞ্চের দিকে অগ্রসর হলেন মৃত্যুঞ্জয়ী দীনেশ। সার্জেন্টকে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন ¾“তোমার কিছু বলার আছে কি বন্দী?” দীনেশের উত্তর¾ দিল “প্লিজ স্টপ। আমাদের বলার অধিকার যে কারা কেড়ে নিয়েছে, সে কথা তোমরাই ভাল জান। ডু ইওর ডিউটি, আই এম রেডি।” পর মুহূর্তে দীনেশ ফাঁসির মঞ্চে উঠে স্বহস্তে ফাঁসি-রজ্জু গলায় পরেন। বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম বলতে বলতে ফাঁসি-রজ্জুতে শেষ নি:শ্বাস থমকে যায়। সেই সাথে নিবে যায় বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তের জীবন প্রদীপ।


৮ জুলাই সমস্ত কলিকাতা নগরী শোকাভিভুত হয়ে হরতাল পালন করে। লক্ষ লক্ষ বিষাদ-ক্লিষ্ট নর-নারী মনুমেন্টের নীচে সমবেত হয়ে সেদিন বিকালবেলা দীনেশের বিপ্লবী কর্মকান্ডের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং ভারতমাতার স্বাধীনতা জন্য লড়াই-সংগ্রাম করার শপথ নেয়। আর বিপ্লবী তরুণরা ঘোষণা করেছিল¾ “দীনেশ আমাদের জাতীয় বীর। অন্যায়ভাবে তাঁর ফাঁসি আমরা কিছুতেই বরদাস্ত করব না। এর প্রতিশোধ আমরা নিবই।


সত্যিই বিপ্লবীরা এর প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। ইংরেজদের তাড়িয়েছেন ভারতবর্ষ থেকে। বাংলাসহ ভারতের অন্যান্য অংশে বিনয়, বাদল এবং দিনেশকে শহীদ বিপ্লবী হিসেবে সম্মান করা হয়। ভারত স্বাধীন হবার পর তাঁর ও তাঁর অপর দুই সহবিপ্লবীর সম্মানার্থে কলকাতার প্রসিদ্ধ ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (সংক্ষেপে বিবাদীবাগ) রাখা হয়। বাংলাসহ ভারতের অন্যান্য অংশে বিনয়, বাদল এবং দিনেশকে শহীদ হিসেবে সম্মান করা হয়। ভারত উপমহাদেশে বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারতমাতা স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবী রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ঢাকার এই বিনয়-বাদল-দীনেশ অন্যতম।


জাসদের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জলিল মুক্তি লাভ করেন ঃ ১৯৭২ সালের এইদিন - স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দী , আধিপত্যবাদবিরোধী এক সংগ্রামী চেতনা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জলিল মুক্তি লাভ করেন। স্বাধীনতার পরপর ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সম্পদ ও পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া অস্ত্রশস্ত্র লুটপাট করে নিয়ে যেতে থাকে। যশোরে লুটের মাল বয়ে নেয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর গাড়িবহরকে বাধা দেয়ায় ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেজর জলিলকে গ্রেফতার এবং যশোর সেনানিবাস অফিসার্স কোয়ার্টারের একটি নির্জন বাড়িতে তাকে আটকে রাখা হয়। তিনিই ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দী।


১৯৪২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুর থানা সদরে মামার বাড়িতে মেজর জলিলের জন্ম। ১৯৬০ সালে মেজর জলিল উজিরপুর ডব্লিউবি ইনস্টিটিউশন থেকে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিক পাস করেন। ওই সময় তিনি পথের কাঙাল ও রীতি নামে দু’টি উপন্যাস লেখেন। তবে পাণ্ডুলিপি দু’টি হারিয়ে যায়। ১৯৬১ সালে জলিল ইয়াং ক্যাডেটে ভর্তি হন। পাকিস্তানের মারিতে তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে কাকুলে সামরিক একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি কমিশন লাভ করেন এবং আর্টিলারিতে যোগ দেন।


ওই বছর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ১২ নম্বর বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে মেজর জলিল সামরিক একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেন। পরে তিনি মুলতান থেকে ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি নেন। অসুস্থ মাকে দেখতে এক মাসের ছুটি নিয়ে ১৯৭১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে আসেন। ২৬ মার্চ থেকেই মেজর জলিল মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে নিজেকে নিয়োজিত করেন। ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল ও পটুয়াখালীকে তিনি মুক্ত অঞ্চল হিসেবে রাখতে সক্ষম হন। ৭ এপ্রিল মেজর জলিল খুলনা রেডিও স্টেশন মুক্ত করতে অপারেশন চালান। ২১ এপ্রিল অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সুন্দরবনের পথ ধরে ভারতে যান। ফিরে এসে ৯ নম্বর সেক্টরের প্রধান হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮ ডিসেম্বর বরিশালে মেজর জলিলকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। ২১ ডিসেম্বর বরিশাল হেমায়েত উদ্দীন খেলার মাঠে বিশাল জনসভায় তিনি ভাষণ দেন। সেক্টর কমান্ডারদের প্রায় সবাইকেই খেতাব দেয়া হলেও তাকে বঞ্চিত করা হয়। ’৭২-এর ৩১ অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে এম এ জলিলের রাজনীতিতে পদার্পণ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৯৭৩ সালে সংসদ নির্বাচনে বরিশালের বাকেরগঞ্জ-উজিরপুরসহ পাঁচটি আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে তার বিজয় ছিল নিশ্চিত। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তাকে বিজয়ী হতে দেয়নি। বলা যায়, রাজনীতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ মুজিবের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিলেন মেজর জলিল।


১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি করলে জাসদের বহু নেতাকর্মী নিহত হন। মেজর জলিল নিজেও হন আহত। তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৫ সালের ৮ নভেম্বর তিনি মুক্তি লাভ করেন। ২৩ নভেম্বর তাকে আবার গ্রেফতার করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য মেজর জলিলের মৃতুদণ্ড মওকুফ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রায় সাড়ে চার বছর কারাভোগের পর ১৯৮০ সালের ২৬ মার্চ তিনি মুক্তিলাভ করেন। ১৯৮২ সালের আগস্ট মাসে তিনি টাঙ্গাইলের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা সায়মা আকতারকে বিয়ে করেন। ১৯৮৪ সালের ৩ নভেম্বর তিনি জাসদ থেকে পদত্যাগ করেন।


এ প্রসঙ্গে তিনি তার কৈফিয়ত ও কিছুকথা গ্রন্থে লিখেছেনঃ ‘দলীয় জীবনে জাসদের নেতাকর্মীরা ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রায় সম্পূর্ণভাবে বিসর্জন দেয়ার ফলে নৈতিকতা এবং মূল্যবোধে পরিচালিত সমাজদেহ থেকে নিজেরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও সমাজে বসবাসরত জনগণকে ঐতিহ্যবাহী ইসলামি সাংস্কৃতিক জীবন এবং মূল্যবোধ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে মোটেও সক্ষম হয়নি। প্রচলিত পারিবারিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনধারা থেকে কেবল নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখলেই বিকল্প সংস্কৃতি জন্ম নেয় না, বরং এ ধরনের রণকৌশল অবলম্বন সমাজে প্রচলিত নীতি, নৈতিকতা, আচার-অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতি তাচ্ছিল্য, উপহাস ও ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়, যা প্রকারান্তরে বিপ্লবী আন্দোলনের বিপক্ষে চলে যায়।‘ইসলাম ধর্ম এ দেশের শতকরা ৯০ জন গণমানুষের কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসই নয়, ইসলাম ধর্মভিত্তিক নীতি-নৈতিকতা, আচার-অনুষ্ঠান, উৎসব-পর্ব, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং এ দেশের সাধারণ গণমানুষের দৈনন্দিন জীবনের নানা ঘটনার সাথে ইসলাম ধর্ম অঙ্গাঙ্গিভাবেই জড়িত। জন্ম-পর্ব থেকে শুরু করে জানাজা পর্যন্ত ইসলামের নীতি-নির্দেশের আওতায় নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবন। এমন একটি জীবন দর্শনকে অবহেলা, উপেক্ষা কিংবা সম্পূর্ণভাবে পরিহার করে চলার নীতিকে বাস্তবসম্মত কিংবা বিজ্ঞানসম্মত বলা যায় না। প্রগতিশীল আন্দোলনের স্বার্থেই ইসলাম ধর্মের বিজ্ঞানসম্মত মূল্যায়ন অত্যাবশ্যকীয় বলে আমি মনে করি। কারণ ইসলাম শোষণ-জুলুম, অন্যায়, অসুন্দরসহ সব রকম স্বৈরশাসন এবং মানুষের ওপর প্রভুত্বের ঘোর বিরোধী। ইসলাম পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, রাজতন্ত্র উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়। সম্পদের ব্যক্তিমালিকানা ইসলামে নিষিদ্ধ, কারণ সব সম্পদের মালিকানা একমাত্র আল্লাহরই। মানুষ হচ্ছে তার কেবল প্রয়োজন মেটানোর জন্য আমানতদার বা কেয়ারটেকার।’


মেজর জলিল এমন কিছু গ্রন্থ লিখে গেছেন, যা আমাদের জাতীয় জীবনের সন্ধিক্ষণে দিকনির্দেশনার কাজ করবে। তার একটি গ্রন্থের নাম অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা দেশপ্রেমের বলিষ্ঠ ও উচ্চকিত স্লোগানে রূপান্তরিত হয়েছে। তার লেখা আটটি গ্রন্থ হলোঃ ১. সীমাহীন সমর (মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ডায়রি), ২. মার্কসবাদ (প্রবন্ধ), ৩. সূর্যোদয় (রাজনৈতিক উপন্যাস), ৪. কৈফিয়ত ও কিছু কথা (প্রবন্ধ), ৫. দাবী আন্দোলন দায়িত্ব (প্রবন্ধ), ৬. দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবন দর্শন (প্রবন্ধ), ৭. অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা (প্রবন্ধ), ৮. A Search for Identity (Essays).


জাসদ থেকে পদত্যাগের মাত্র ১৬ দিন পর মেজর জলিল ‘জাতীয় মুক্তি আন্দোলন’ নামে একটি দল গঠন করেন। এ সময় তিনি মরহুম হাফেজ্জী হুজুরের নেতৃত্বে ‘সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ’ গঠনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে গৃহবন্দী করা হয়। এক মাস ছিলেন বন্দী। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে ১৯৮৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১৯৮৮ সালের মার্চ পর্যন্ত সরকার তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখে। এর আগে মেজর জলিল লিবিয়া, লেবানন, ইরান, ব্রিটেন ও পাকিস্তানে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ইসলামি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর মেজর জলিল পাকিস্তান যান। ১৬ নভেম্বর রাজধানী ইসলামাবাদে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সাথে সাথে তাকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ১৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ২২ নভেম্বর তার লাশ ঢাকায় আনা হয়। পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মেজর জলিলের লাশ দাফনের মাধ্যমেই মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা গোরস্থানে লাশ দাফন শুরু হয়।


অলরাউন্ডার মোহাম্মদ আশরাফুল অ্যাশের জন্ম ঃ ১৯৮৪ সালের এইদিনে - বাংলাদেশী ক্রিকেটার অলরাউন্ডার মোহাম্মদ আশরাফুল অ্যাশ (Ash) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ডানহাতি ব্যাটিং স্টাইল এবং ডানহাতি লেগ ব্রেক বোলিং স্টাইলের এ খেলোয়াড়ের ওডিআই অভিষেক - ১১ এপ্রিল, ২০০১ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এবং টেস্ট অভিষেক - ৬ সেপ্টেম্বর, ২০০১ শ্রীলংকার বিপক্ষে। তাঁর সেরা অর্জনের মধ্যে - কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট শতক করার রেকর্ডের অধিকারী (১৭ বছর ৫৯ দিন)। ২০০১ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে তাঁর অভিষেক টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৪ রান করে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। ২০০৪ সালে জাতীয় দলে ভারতের বিরুদ্ধে ১৫৮ রান করেন, যা তার ব্যক্তিগত দ্বিতীয় শতক এবং কোন বাংলাদেশী ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ টেস্ট রান। ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনি ১৩৬ রান করেন। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তার অভিষেক হয় ২০০৭ এ, শ্রীলংকার বিপক্ষে। ২০০৭-০৮ এর দক্ষিণ আফ্রিকা ট্যুরের একটি টেস্টে আশরাফুল খুবই ব্যতিক্রমী উপায়ে এবি ডি ভিলিয়ার্সকে আউট করেন। বোলারের হাত থেকে ছুটে যাওয়া বল দু'বার বাউন্স খায় এবং ব্যাটসম্যান বলটিকে সজোরে হিট না করে বোলারের হাতে তুলে দেন। আশরাফুল বলটিকে লুফে নেন। ক্যারিয়ারের শুরুটা ভালো না হলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কিছু বিখ্যাত জয়ে আশরাফুলের অনেক অবদান রয়েছে। ২০০৫ সালের ১৮ জুন তারিখে ইংল্যান্ডের কার্ডিফে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে তৎকালীন বিশ্বের একনম্বর ক্রিকেট পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্মরনীয় জয়ে আশরাফুল ১০০ রান করেন। এটি তার একমাত্র শতক এবং খেলাটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরনীয় ম্যাচ।


ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি জন্মগ্রহণ করেন ঃ ১৯৮১ সালের এইদিনে - ভারতের বিহারের রানচিতে ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সফলতম অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি জন্মগ্রহণ করেন। রাহুল দ্রাবিড়ের হাত ঘুরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর থেকেই দলকে তিনি স্বর্ণ সাফল্যে ভাসিয়ে চলেছেন। তার নেতৃত্বে ভারত টি২০ বিশ্বকাপসহ ২৮ বছর পর বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে। ঘরোয়া টি২০ ক্রিকেট আইপিএলেও ধোনির নেতৃত্বে টানা দুই আসরে ট্রফি জিতেছে চেন্নাই সুপার কিংস। এ ছাড়া তাঁর নেতৃত্বেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা বগলদাবা করে চেন্নাই। নেতৃত্ব পাওয়ার পর থেকেই প্রতিটি ঘরানায় এমন তাক লাগানো সাফল্য পেয়ে চলেছে ভারত। তার স্পর্শে সবকিছুই যেন পরশপাথরে পরিণত হচ্ছে ! ২০০৭ সালে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর থেকে ক্রিকেট বিশ্বে ধোনিই সফলতম অধিনায়ক।


সাঁওতালদের বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে ঃ ১৮৫৫ সালের এইদিনে - সান্তাল জনতার হাতে কুখ্যাত মহাজন কেনারাম ভগত ও দিঘি থানার অত্যাচারী দারোগা মহেশাল দত্তসহ ১৯ জনকে হত্যার মধ্যদিয়ে সাঁওতালদের বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে। সাঁওতাল বিদ্রোহ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে শুধুমাত্র প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামই নয়_ ব্যাপক কৃষক সম্প্রদায়ের দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে, বাঁচার অধিকারের দাবিতে কৃষক সমাজের প্রথম গণসংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ বিদ্রোহকে নির্মূল করার জন্য কোম্পানির বড় কর্তারা ৩৭শ. ৭ম, ৩১শ রেজিমেন্ট, হিল রেঞ্জার্স, ৪৩, ৪২ ও ১৩ রেজিমেন্ট প্রভৃতিকে ব্যবহার করেছিল। সাঁওতাল নেতাদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য সেদিন কমিশনার প্রধান নায়েকের জন্য ১০ হাজার টাকা, সহকারী নায়েকের প্রত্যেকের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় নায়েকদের জন্য এক হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। এই ইতিহাসখ্যাত আন্দোলনে আদিবাসী সাঁওতাল নারীদের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে। অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আদিবাসী নারীরা ঘরের কোণে লুকিয়ে থাকেনি, নরম হাতেই অস্ত্র তুলে।


স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের পরলোকগমন ঃ ১৯৩০ সালের এইদিনে - স্কটিশ সাহিত্যিক, শার্লক হোম্‌সের গল্পসমূহের জন্য বিখ্যাত অসামান্য প্রতিভাধর লেখক স্যার আর্থার কোনান ডয়েল ইংল্যান্ডের ক্রবরোতে পরলোকগমন করেন। গল্প, নাটক, প্রেমকাহিনী, কবিতা, ননফিকশন, রম্যরচনা, ঐতিহাসিক রচনা প্রভৃতি লেখার মাধ্যমে বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। ডয়েলের জীবন ছিল বহুমাত্রিক এবং রোমাঞ্চপূর্ণ। ইতিহাসবিদ, তিমি শিকারি, ক্রীড়াবিদ, যুদ্ধ-সাংবাদিক, আত্মিকবাদী হিসেবেও তিনি সমধিক পরিচিত।


১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দের ২২ মে ডয়েলের জন্ম স্কটল্যান্ডের এডিনবরায়। ভেষজ ব্যবসায় গা-ছাড়া ভাবের কারণে ডয়েলের হাতে বিস্তর অবসর ছিল। এই অবসরেই তিনি বিখ্যাত শার্লক হোমসের গল্পগুলো লিখতে থাকেন। বোয়ের যুদ্ধকালে দক্ষিণ আফ্রিকার এক মাঠ-চিকিত্সাকেন্দ্রে অবদান রাখার জন্য ১৯০২ সালে তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এই অসামান্য প্রতিভাধর লেখকের রচনার মধ্যে আছে - কল্পবিজ্ঞান গল্প, নাটক, প্রেমের উপন্যাস, কবিতা, ননফিকশন, ঐতিহাসিক উপন্যাস এবং রম্যরচনা।


আর্থার কোনান ডয়েলের জীবন ছিল বহুমাত্রিক এবং রোমাঞ্চপূর্ণ। তিনি একাধারে ছিলেন একজন ইতিহাসজ্ঞ, তিমি শিকারী, ক্রীড়াবিদ, যুদ্ধ-সাংবাদিক এবং আত্মিকবাদী। জীবনের প্রথমভাগে, তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেষজবিদ্যা বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর প্রথম সাফল্য ছিল 'রক্তসমীক্ষা'(A Study in Scarlet)'। এটি সর্বপ্রথম ১৮৮৭ সালে বীটনের বড়দিনের বার্ষিকী (Beeton's Christmas Annual) তে প্রকাশিত হয়। ১৮৯০ সালে 'চিহ্নচতুষ্টয়'(The Sign of Four) প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি ভেষজ-ব্যবসা ছেড়ে দেন এবং লেখা-লেখিতে পুরোমাত্রায় আত্মনিয়োগ করেন।


তিনি অনেক গল্প, কল্প-কাহিনী এবং ইতিহাস-কেন্দ্রিক রোমাঞ্চ কাহিনী লিখলেও বিখ্যাত চরিত্র শার্লক হোম্‌স-কে নিয়ে লেখা গোয়েন্দা-কাহিনীগুলিই তাকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে। এই হোমস্ চরিত্রটির উপর একঘেয়েমিজনিত বিরক্তির কারণে ডয়েল যখন 'তার শেষ অভিবাদন'(His Last Bow)-এ হোম্‌স-কে মেরে ফেলেন, তখন জনতার দাবির মুখে হোমস চরিত্রটিকে অলৌকিকভাবে পুনরুজ্জীবিত করতে বাধ্য হন। বাস্তব জীবনেও তিনি দু-দুবার গোয়েন্দাগিরি করে অন্যায়ভাবে দোষী-সাব্যস্ত ব্যক্তিদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সফল হন।


সোলাইমান দ্বীপপুঞ্জ স্বাধীনতা লাভ করে ঃ ১৯৭৮ সালের এইদিনে - উত্তর পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত সোলাইমান দ্বীপপুঞ্জ স্বাধীনতা লাভ করে। ইউরোপীয়রা প্রথম ১৫৬৭ সালে এই দ্বীপপুঞ্জ আবিস্কার করে। ১৮৮৫ সালে জার্মান সোলাইমান দ্বীপপুঞ্জ দখল করে এবং এর মালিকানা দাবী করে। কিন্তু এর প্রায় দশ বছর পর বৃটিশরা ঐ দ্বীপ দখল করে নেয়। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর সোলাইমান দ্বীপপুঞ্জে বৃটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৭৮ সালে উপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে। এই দ্বীপপুঞ্জের মোট আয়তন ২৯ হাজার বর্গ কিলোমিটার এবং প্রশান্ত মহাসাগরে অষ্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত।


লন্ডনে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ ঃ ২০০৫ সালের এইদিনে - লন্ডনের তিনটি মেট্রো ষ্টেশন এবং একটি বাসষ্ট্যান্ডে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে ব্রিটেনের ইতিহাসে রচিত হয় এক কালো অধ্যায়। সকাল আটটা ৫১ মিনিট থেকে শুরু করে ৯টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত একে একে বিস্ফোরিত হয় বোমা। পৃথিবীর টেরোরিস্ট আক্রমণের ইতিহাসে যোগ হয় সেদিন নুতন ঘৃণা। ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে পড়ে ৫২ জন মানুষ, ৭০০ এরও বেশী মানুষ আহত হয়। উত্তর বৃটেনের স্কটল্যান্ডে শিল্পোন্নত আটটি দেশের শীর্ষ বৈঠক জি-৮ সম্মেলনের সময়ে এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন হামলা এবং দেশ দুটির জনগণের উপর হত্যা নির্যাতন চালানোর কাজে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৃটেনেরও অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ঐ বোমা বিষ্ফোরণ ঘটানো হতে পারে। অন্যদিকে এ বিস্ফোরণের ফলে বৃটেনের নিরাপত্তা বিভাগের দুর্বলতাও ফুটে উঠেছে। বৃটিশ সরকার বিস্ফোরণের জন্য সেদেশের মুসলমানদেরকে দায়ী করে এবং তাদের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে।


টানাকা কাখুই জাপানের প্রধানমন্ত্রী ঃ ১৯৭২ সালের এইদিনে - ডিগ্রিবিহীন নিরীহ নাগরিক টানাকা কাখুই জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন। টানাকা কাখুই জাপানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাপানে দেশজুড়ে "টানাকা উষ্ণতা" জেগে উঠেছে। সাধারণ মানুষের চোখে টানাকা হচ্ছেন দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ এবং অঘটন ঘটন-পটিয়সী একজন বলিষ্ঠ ব্যক্তি, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর জাপানের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে কমবয়সী রাজনীতিবিদ। তাঁর জন্ম স্থান এক দিনে হঠাৎ জনপ্রিয় পর্যটন স্থানে পরিণত হয়েছে।


জাতিসংঘের কোরিয় বিষয় পরিচালনা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা ঃ ১৯৫০ সালের এইদিনে - জাতিসংঘ কোরিয় বিষয় পরিচালনা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। পরের দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তুর্মান জেনারেল ম্যাক আর্থারকে কোরিয়ায় জাতিসংঘের প্রধান সেনাপতি নিয়োগ করেন। তারপর তারা ব্রিটেন, ফ্রান্স, তুরস্ক, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া, গ্রীস, ফিলিপাইন, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বেলজিয়াম, লোকসেম্বার্গ এবং ঈথিওপিয়া প্রভৃতি ১৫টি দেশের সঙ্গে জোট বেঁধে কোরিয়া আগ্রাসন যুদ্ধ বাঁধিয়েছে।


লুগো সেতু ঘটনা ঃ ১৯৩৭ সালের এইদিনে - "৭ জুলাই ঘটনা " সংঘটিতহয়। এই দিনে জাপানী বাহিনী বেইজিংয়ের লুগো সেতুর নিকটবর্তী উয়ানপিং নগরে গোলা বর্ষণ করে। চীনের বাহিনী তাদের প্রতিরোধ করে। জাপানী বাহিনী এই ওজুহাতে চীনে সার্বিক আগ্রাসী যুদ্ধ বাঁধায়। "৭ জুলাই ঘটনাকে" "লুগো সেতু ঘটনা"ও বলা হয়।


রানতুন বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি ঃ ১৯৫৭ সালের এইদিনে - চীনের পর্বতারোহী রানতুন বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেন। এদিন চীনের নারী ও পুরুষ মিশ্র পর্বতারোহী দলের ৩৩ জন এ্যাথলেট বেইজিং সময় বিকাল ৬টা ২০ মিনিটে সমুদ্রতল থেকে ৭৫০০ মিটার উচু সিনচিয়াংয়ের মুসতাগ পাহাড়ের পর্বত শৃঙ্গে আরোহণ করে নিরাপদে সর্বাধিক জনসংখ্যা বিশিষ্ট দলগত পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে একটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেন।


নরওয়ের স্বাধীনতা লাভ ঃ ১৯০৪ সালের এইদিনে - নরওয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। এর আগে ১৮১৪ সালে সুইডেন ইউনিয়নে সম্পৃক্ত হবার পর ১৯ শতকে নরওয়ে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে লিপ্ত হয়।


সাহিত্যিক মুন্সী মেহেরুল্লাহর মৃত্যুবরণ ঃ ১৯১০ সালের এইদিনে - বাংলাদেশের ইসলামী চিন্তাবিদ, সমাজ সংস্কারক, সাহিত্যিক মুন্সী মেহেরুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন।


বাংলাদেশে ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম ঘোষণা ঃ ১৯৮৮ সালের এইদিনে - বাংলাদেশ সংসদে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী গৃহীত হবার মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম ঘোষণা করা হয়।


শুক্র গ্রহের ট্রানজিট ঃ ২০০৪ সালের এইদিনে - ১২২ বছর পর শুক্র গ্রহের ট্রানজিট বাংলাদেশের আকাশে পরিস্কার দেখা যায়।


সেলজুকী রাষ্ট্রের সূচনা ঃ ১০৩৭ সালের এইদিনে - সেলজুকী রাষ্ট্রের সূচনা হয়।


শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী (রহ.) ঃ ১৮২৩ সালের এইদিনে - শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী (রহ.) মৃত্যুবরণ করেন।


ভারতের প্রথম সিনেমা ঃ ১৮৯৬ সালের এইদিনে - বোম্বাইয়ে ভারতের প্রথম সিনেমা প্রদর্শিত হয়।


বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা ঃ ১৯০৫ সালের এইদিনে - লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করেন।


বিবিসি প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ডের অনুষ্ঠান ঃ ১৯২৭ সালের এইদিনে - বিবিসি প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ডের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।


ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ ঃ ১৯২৯ সালের এইদিনে - ভ্যাটিকান সিটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে।


রামনাথ বিশ্বাসের সাইকেলে চড়ে বিশ্ব ভ্রমন ঃ ১৯৩১ সালের এইদিনে - বিশিষ্ট ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাস সাইকেলে চড়ে বিশ্ব পরিক্রমা শুরু করেন।


মার্ক শাগালের জন্ম ঃ ১৮৮৭ সালের এইদিনে - রুশ চিত্রশিল্পী মার্ক শাগালের জন্মগ্রহণ করেন।


সাহিত্যিক নরেন্দ্র দেবের জন্ম ঃ ১৮৮৮ সালের এইদিনে - সাহিত্যিক নরেন্দ্র দেব জন্মগ্রহণ করেন।


প্রবোধ কুমার সান্যাল জন্ম ঃ ১৯০৫ সালের এইদিনে - সাহিত্যিক প্রবোধ কুমার সান্যাল জন্মগ্রহণ করেন।


প্রথমবারের মত কৃত্রিম অঙ্গ মানবদেহে সংস্থাপন ঃ ২০১১ সালের এইদিনে - ইতিহাসে প্রথমবারের মত কৃত্রিমভাবে তৈরি অঙ্গ মানবদেহে সংস্থাপন করা হয়। অঙ্গটি তৈরি করা হয় ইংল্যান্ডে আর অস্ত্রোপচার হয় সুইডেনে।


পাকিস্তানের টেস্ট অলরাউন্ডার নাভিদ আনজুমের জন্ম ঃ ১৯৬৩ সালের এইদিনে - পাকিস্তানের টেস্ট অলরাউন্ডার নাভিদ আনজুম জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৯-৯০ সালে দু’টি টেস্ট খেলেন তিনি।


ইংল্যান্ডের পেসার বিল হিথচের মৃত্যুবরণ ঃ ১৯৬৫ সালের এইদিনে - ইংল্যান্ডের পেসার বিল হিথচ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯১১-২১ সালে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে ৭টি টেস্ট খেলেছেন ।
=====================