কাঁজল আঁকা চোখ
-মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী (মদিনা প্রবাসী )
----------------------------------------------
[পটভূমিকা :- ১৯৯৪/’৯৫ খ্রীষ্ঠাব্দ । তখন আমি গ্রামে ছোট্ট একটা গ্রোসারীসপ চালাচ্ছিলাম । প্রতিদিন একটা মেয়ে একই সময়ে সকাল আটটায় আমার দোকানের সম্মুখ দিয়ে চলে যেতো । কোথায় যেতো তা খোঁজও নিইনি । আমার দোকানের সামনে এসে তার চলার গতি যেন কমে যেতো । দেখতাম আঁড়চোখে এক পলকের জন্য আমাকে দেখতো অবনত মস্তকে লাল ওড়নাটা দুই হাতের চার আঙ্গুলে ধরে দাঁতে কামড় দিয়ে ! তারপর সামান্য দৌড়ে সামনে গিয়ে আবার নরমাল হাঁটা ! প্রায় দুইঘন্টা পর ফিরতি পথে আবার অনুরূপ ! এভাবে প্রায় আটমাস । আটমাস পর একদিন হঠাৎ - থমকে গেলো সে পুরো পনের মিনিট ! অনড়-নিশ্চল পদযুগল , দৃষ্টি তার আমার চোখে ! অসাড়-নিস্তব্দতা , কারো মুখে ভাষা নেই ! আমার অবাধ্য দৃষ্টিও তার চোখ থেখে ফিরতে চায়না যেন !
আজও ভুলতে পারিনি সেই মেয়েটির সেই দিনের সেই দৃষ্টি ! তাই – তার স্মরণে আমার আজকের এই রচনা -]
একই সময়ে প্রতিদিন একটা মেয়ে
পাশ কেটে চলে যায় কোন অজানায় ,
হঠাৎই বেজে উঠে মোর মনোবীন ;
তার কাঁজল আঁকা চোখ যেন পড়ে ভাবনায় ।
সেই চোখের উপরে তার সাইজ করা ভ্রু ,
আমায় দেখে ভ্রু তার নাচতে করে শুরু !
গ্রাম্য ললনার বেশ তার পুরো অঙ্গ জুড়ে ,
হাঁটা-চলা পদভার যেন সে শহুরে !
এক পলক দেখে মোরে তাঁর কাঁজল আঁকা চোখ ,
লজ্জায় যায় ভরে মিষ্টিমাখা তার মুখ !
গ্রামীণ মেঠোপথে চলে সেই আধুনিকা শহুরে ,
তার এক পলকের দেখায় দৃষ্টি মোর যায়না তার মনুরে ।
অকস্মাৎ একদিন তার কাঁজল আঁকা চোখ –
ফিরায় না মোর দিক থেখে , তাই মোর কাঁপন ধরে বুক !
কিভাবে যে লুকাই দৃষ্টি মোর
তার দিক থেকে –
সেই কাঁজল আঁকা চোখে হঠাৎ এসে বৃষ্টি –
দিলো মোরে রুখে !
===============================================
