আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা

বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী

সকল মহান ভাষা শহীদগণের প্রতি,
এবং ভাষা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত

সকল ভাষা সৈনিক
ও বীর বাঙ্গালীদের জানাই অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী,
সেইসাথে সকলকে জানাই

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।

বিষয় সূচী

সাহিত্য (60) অন্যান্য কবিতা (53) ভালোবাসার পদবিন্যাস ( প্রেম সম্পর্কিত রচনা বিশেষ ) (53) আমার লেখা প্রবন্ধ-নিবন্ধ (37) কবিতা (35) দেশ নিয়ে ভাবনা (33) ফিচার (33) বাংলাদেশ (29) সমসাময়িক (28) খন্ড কাব্য (26) হারানো প্রেম (22) সংবাদ (18) কাল্পনিক প্রেম (16) ইতিহাস (15) প্রতিবাদ (15) সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ (15) Online Money Making Links (14) দেশাত্মবোধক কবিতা (13) আমার জীবনের দিনপঞ্জী (12) ধর্ম (12) প্রেমের কবিতা (11) ব্যক্তিত্ব (11) রাজনীতি (11) ধর্মীয় আন্দোলন (10) প্রবাসের কবিতা (10) খন্ড গল্প (9) জীবন গঠন (9) বর্ণমালার রুবাঈ (9) ইসলাম (8) প্রগতি (8) মানুষ ও মানবতা (8) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (8) VIDEOS (7) আমার লেখালেখির অন্তরালে (7) ইসলামী জাগরণ (7) মানব মন (7) ট্র্যাজেডি (6) শোক সংবাদ (6) সম্প্রীতি (6) নারী স্বাধীনতা (5) প্রেমের গল্প (5) বিজয় দিবসের ভাবনা (5) মৃত্যুপথ যাত্রী (5) সংবাদ মাধ্যম (5) স্মৃতিকথা (5) ঈদ শুভেচ্ছা (4) প্রবাস তথ্য (4) রমজান (4) শুভেচ্ছা (4) Computer Programer (3) আমার ছবিগুলো (3) আমার রাইটিং নেটওয়ার্ক লিংক (3) পর্দা (3) ফটিকছড়ি (3) বাংলাদেশের সংবিধান (3) বিশ্ব ভালবসা দিবস (3) শিক্ষা (3) শিক্ষার্থী (3) স্লাইড শো (3) News (2) VERIETIES POEMS OF VERIOUS POETS (2) আষাঢ় মাসের কবিতা (2) আষাঢ়ের কবিতা (2) ইসলামী রেনেসাঁ (2) ছাত্র-ছাত্রী (2) থার্টি ফাস্ট নাইট (2) নারী কল্যান (2) নারী প্রগতি (2) নির্বাচন (2) বর্ষার কবিতা (2) মহাসমাবেশ (2) শবেবরাত (2) শরৎকাল (2) শাহনগর (2) শ্রদ্ধাঞ্জলী (2) সত্য ঘটনা (2) সত্য-মিথ্যার দ্বন্ধ (2) সফলতার পথে বাংলাদেশ (2) Bannersআমার ছবিগুলো (1) DXN (1) For Life Time Income (1) For Make Money (1) Knowledge (1) Student (1) অদ্ভুত সব স্বপ্নের মাঝে আমার নিদ্রাবাস (1) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (1) আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আত(সুন্নী) (1) উপন্যাস (1) কবি কাজী নজরুল ইসলাম (1) কোরআন - হাদিসের কাহিনী (1) গল্প (1) চট্টগ্রাম (1) চিকিৎসা ও চিকিৎসক (1) জমজম (1) জাকাত (1) তরুন ও তারুণ্য (1) নারী জাগরণ (1) পরকিয়ার বিষফল (1) ফটিকছড়ি পৌরসভা (1) বন্ধুদিবস (1) বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম (1) বিবেক ও বিবেকবান (1) বিশ্ব বাবা দিবস (1) বিশ্ব মা দিবস (1) ভ্রমণ (1) মন্তব্য (1) মাহফুজ খানের লেখালেখি (1) রবি এ্যাড (1) রমজানুল মোবারক (1) রেজাল্ট (1) রোগ-পথ্য (1) লংমার্চ (1) শহীদ দিবস (1) শুভ বাংলা নববর্ষ (1) শৈশবের দিনগুলো (1) সমবায় (1) সস্তার তিন অবস্থা (1) সাভার ট্র্যাজেডি (1) সিটি নির্বাচন (1) স্বপ্ন পথের পথিক (1) স্বাধীনতা (1) হ্যালো প্রধানমন্ত্রী (1) ২১ ফেব্রোয়ারী (1)

APNAKE SHAGOTOM

ZAKARIA SHAHNAGARIS WRITING

সকলকে বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা

বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে আমরা আর বাংলা ভাষায় কথা বলতে চাইনা । নিজের মাতৃভাষাকে যখন-তখন যেখানে সেখানে অবমাননা করে তৎপরিবর্তে ইংরেজী ভাষা ব্যবহার করতে অভ্যাস্থ হয়ে যাচ্ছি বা হয়ে গেছি ।
আরও একটু এগিয়ে গেলে বলতে হয় - আমরা আজ বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালী জাতিসত্বা ভুলে গিয়ে ইংরেজী জাতিসত্বায় রক্তের ন্যায় মিশে গেছি !

অথচ একদিন আমরা বাঙ্গালী জাতি একতাবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় ভাষা উর্দুকে ত্যাগ করে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা বাংলা ভাষাকে সর্বত্র প্রচলন করতে প্রাণ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম ! ফলে বিজাতীয় ভাষা উর্দূকে অপসারন করে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলা ভাষাকে ধারন করেছিলাম । যখন আমরা বাংলার সর্বত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা শুরু করেছিলাম ,তখন কিন্তু বিশ্বায়নের যুগটা অনুপস্থিত ছিল তা নয় , বিশ্বায়নের যুগটা তখনও ছিল বিধায় আমরা ইংরেজী শিক্ষায় তখনও বাধ্য ছিলাম । অর্থাৎ যে জন্যে আজ আমরা ইংরেজী শিখছি সেইজন্যে তখনও ইংরেজী শিক্ষার প্রচলন ছিল । ছিল ইংরেজী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও । তাই বলে সে সময় বর্তমান সময়ের মত মাতৃভাষা বাংলাকে অবমাননা করা হয়নি । মানুষ সে সময় বাংলায়ই কথা বলেছিল । শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই সে সময় ইংরেজী ব্যাবহার করেছিল বাঙ্গালী জাতি

conduit-banners

Powered by Conduit

ফ্লাগ কাউন্টার

free counters

MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY

PLEASE CLICK ON MY BANNERS. VISIT MY AFFILIATE SITE "MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY ( অনলাইনে অর্থোপার্জনের একটা মাধ্যম )" I HOPE IT WILL BE HELPFUL FOR YOU. Create your own banner at mybannermaker.com!

শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১১

মুখবন্ধ [ ভালোবাসার পদবিন্যাস ( প্রেম সম্পর্কিত রচনা বিশেষ ) ]


-: মুখবন্ধ :-

আশা ও ভালোবাসাই মানবজীবনের চলতি পথের প্রতিটি কর্মে প্রেরণা জোগায় । মানুষের চলার গতিবেগ সঞ্চারিত হয় প্রেমের তাড়না এবং ভালোবাসার শক্তিতেই । প্রেম - হতে পারে তা নারীর প্রতি নরের কিংবা হতে পারে মানুষের নিজ জীবন কিংবা আপন স্বত্তার প্রতি ।
মানুষ সৃষ্টিশীল কর্মে তখনই আত্মনিয়োগ করে , যখন কোন ব্যক্তি - বস্তু - বিষয়ের প্রতি তার আকর্ষনের প্রবল বেগ ধারণ করে । মানবজীবনের আকর্ষিত দিককে প্রস্ফুটিত করার মানসেই মানুষ বিবিধ উপায় অবলম্বনের মাধমে উপযুক্ত পথ সৃষ্টি করে । আর সে পথেই মানুষ তার অভিষ্ঠ্য লক্ষ্যে পৌঁছতে চেষ্টা করে । সে পথেই মানুষ পৌঁছে যায় স্ব স্ব লক্ষ্যস্থলে । তেমনই নর-নারী একে অপরকে কাছে পাবার লক্ষ্য নিয়েই অবলম্বন করে নিত্য নতুন উপকরণ । সৃষ্টি করে নতুন নতুন পথ । আর সে পথ ধরেই একসময় তারা হয়ে যায় একে অপরের । সুতরাং , ধরে নেয়া যায় যে , মানুষ প্রয়োজনের তাগিদেই সৃষ্টশীল কর্মে আত্মনিয়োগ করে । আর ঠিক একই কারনে , প্রয়োজনের তাগিদে , জীবনের বিরহে কাতর সময়গুলো পেরোনোর লক্ষ্যে , হতাশা - দুশ্চিন্তা - মনের গুমোট ভাব - একাকিত্বের জ্বালা প্রশমন ইত্যাদির তাগিদেই আমার হাতে কলম ধরা । মৃতপ্রায় জীবনে নতুন প্রাণ সঞ্চারের মাধ্যমে প্রিয়তমার সান্নিধ্যে সুখকর - আনন্দময় সময় কাটানোর অদম্য ইচ্ছা , মানুষ হিসাবে পৃথিবী নামক রঙ্গশালায় আরো কিছুদিন মেতে থাকার একান্ত বাসনায় কলমের ডগায় কাগজের প্যাডে সময় ক্ষ্যাপনের মাধ্যমে একটি সৃষ্টিশীল কর্মে আমার আত্মনিয়োগ ।
নিতান্তই আপন খেয়ালে , সামান্য শব্দভান্ডার পূঁজি করে জীবনের শখ ও প্রবল কৌতুহল সঙ্গী করে কলম ও কাগজ নিয়ে এই সৃষ্টিশীল ( ? ) কর্মে আমার পদচারণা । প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বলতে আমার নেই বললেই চলে । এ কর্মে আমাকে হাতেখড়িও দেয়নি কখনো । সম্পূর্ণ নবাগত - অনভিজ্ঞ - আপন প্রচেষ্ঠায় লেখার জগতে এ প্রথমই আমার পদচারণা ।
কৈশোরকাল থেকেই সাহিত্যের প্রতি ঝুঁকটা ছিল আমার ভীষন প্রবল । বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্য পাতা দেখে দেখে কবিতা পড়তাম ,পড়তাম - গল্প - প্রবন্ধ - ছড়া - উপন্যাস ইত্যাদি । এসব থেকেই সারনির্যাস স্বরূপ গ্রহণ করে নিয়েছিলাম মনের অলিন্দ্যে কিছু শব্দ - কিছু বাক্য - কিছু অলঙ্কার আর কিছু অভিজ্ঞতা । এ সব অভিজ্ঞতা সম্বল করেই করেছিলাম বিভিন্ন দেয়াল পত্রিকায় , বিভিন্ন পত্রিকার চিঠিপত্র বিভাগ , বিভিন্ন পত্রিকার সাধারণ পাঠকদের লেখার মুক্তমঞ্চগুলোতে অংশগ্রহন । এগুলোর সংমিশ্রনে তৈরী করেছিলাম আমার ক্ষুদ্র লেখনি জগত । এ লেখনিজগতের উৎসাহেই আমার এই কঠিন কর্মচর্চা । “ আমি নিজেই একটা কবিতা লিখবো ’’ এই অদম্য প্রবল মনোভাবের ফলই আমার আজকের এই সৃষ্টি ।
যদিও আমার একাগ্র চেতনায় এ সৃষ্টকর্মের শুরু । তথাপি পরোক্ষভাবে সহযোগিতা স্বরূপ প্রেরণা জুগিয়েছে কোন এক নারী । সেই নারীর প্রতি দূর্বলতার কারনেই আমার আজকের এই প্রয়াস ।
পৃথিবীতে যত সাহিত্য - যত কবিতা - যত গল্প - যত উপন্যাস রচিত হয়েছে তার মূলেই রয়েছে এক একজন নারী । নারী মানস সামনে নিয়েই কবিরা গেঁথেছেন শব্দের মালা । রচিত হয়েছে অমর যত প্রেমকাব্য , তেমনি এক  অমর কাব্য - রুবায়াতে ওমর খৈয়্যাম শিল্পীরা এঁকেছেন তুলির আঁচড়ে নারীর রূপ ক্যানভাস , তেমনি এক ক্যানভাস - পৃথিবীর অনবদ্য সৃষ্টি মোনালিসা । জন্ম নিয়েছে শব্দালঙ্কারে অমর সব প্রেমকাহিনী , তেমনি এক প্রেমকাহিনী লায়লা-মজনু । কন্ঠশীলনেও পীছপা হননি বিশ্ববিখ্যাত কন্ঠশিল্পীরা নারীর স্মরণ নিয়ে । পৃথিবীতে যত সঙ্গীত রচিত হয়েছে সবের মূলেই নারী ।
তেমনই , আমার সৃষ্টিকর্মের মানসপটে একজন নারীর ছিল নিত্য আনাগোনা । যার উপস্থিতিতে রচিত হয়েছে আমার এই রচনার ক্যানভাস । সম্ভব ছিলোনা আমার এই আয়োজন ঐ নারীর অনুপস্থিতিতে । কেহই পারেনি নারীকে বাদ দিয়ে কোন বড় কিছু সৃষ্টি করতে। পৃথিবীতে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে তার মূলে রয়েছে নর-নারী উভয়েরই ফিফটি পার্সেন্ট শেয়ার । তাই তো আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে হয় -
       “ এই পৃথিবীতে মহান যা কিছু সৃষ্টি চির কল্যানকর ,
         তার অর্ধেক করিয়াছে নারী , অর্ধেক তার নর  । ’’
সুপ্রিয় পাঠক সমাজ ! লক্ষ্য করে থাকবেন , আমার এ সৃষ্টি একটি আত্মজীবনীমুলক , তথাপি এর মধ্যে পাঠক মহলের জন্য কিছুটা মনের খোরাক আছে বলে মনে করি । তাই , নবীন এ লেখকের লেখার উপর সমালোচনার দৃষ্টিতে একবার দৃষ্টি দানের জন্য পাঠক সমাজের কাছে অনুরোধ রইল ।
আমার এ নব্য সৃষ্টকর্মে ভুল ও নিয়ম বহির্ভূত তথ্য থাকা একান্তই স্বাভাবিক । লেখার জগতে নবীন হিসাবে সম্মানীত পাঠকদের সুদৃষ্টিই আমার একান্ত কাম্য । সেই সাথে সুপ্রিয় পাঠকের দৃষ্টিতে গোচরীভুত “ ভুলে ভরা অংশ ’’ টি সংশোধনের নিমিত্তে এ অধমকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো ।
সকলকে ফুলেল শুভেচ্ছা । 


- লেখক ,  মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী ( সৌরভ )

বিদেশী অপসংস্কৃতির থার্টি ফাস্ট নাইট বর্জন করুন


বিদেশী অপসংস্কৃতির 


থার্টি ফাস্ট নাইট বর্জন করুন 



মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 

------------------------------------- 




আজ ৩১/ ১২ / ২০১১ ইংরেজী । রাত ১২টার পর শুরু হবে নতুন বর্ষ । আর এ বর্ষবরণ শুরু হবে মদ খাওয়া মাতালদের উম্মত্ব উলঙ্গ নৃত্যের মাধ্যমে । পালন করা হবে অসভ্য মানুষদের সভ্যতার পরিপন্থি ( তথাকথিত সভ্য মানুষদের বিশ্ব বেহায়াপনার একটি উলঙ্গ প্রদর্শনীর প্রতীক - " থার্টি ফাস্ট নাইট '' ! 

বাংলাদেশে পালনোম্মুখ একটা বিদেশী কুরুচিপূর্ণ , বাংলার সভ্য রূপকে অসভ্যতার রূপ দিয়ে কলঙ্কিত করার বিদেশী পায়তারা । যাতে অংশ নেয় বাংলা মায়ের গর্ভ জন্ম নেয়া , নিজ মাতাকে অসম্মানকারী বিত্তশালীদের বিদেশী মদের নেশায় মাতাল সূর্যসন্তানরা । যার দেখাদেখি জড়িয়ে পড়ে বাংলা মায়ের সহজ সরল সন্তানরাও । 
দেশে কুরুচিপূর্ণ শো প্রদর্শনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী সকল সভ্য যুব-তরুন সমাজএকতাবদ্ধ হয়ে উদ্যোগ নিলে দেশের সভ্য রূপ ধ্বংসকারী আজকের এই অসভ্য কর্মসমূহ দেশের কোথাও চলতে পারবেনা । কারণ , বাংলাদেশের মানুষ যারা বিদেশী সংস্কৃতির ধারক তাদের চেয়ে বালাদেশকে নিজের মায়ের চেয়েও বেশী সম্মান দেয় এমন সভ্য সুনাগরিক অনেক বেশী । তাই সেইসব সভ্য সুনাগরিকদের প্রতি আহবান - জাগ্রত হোন বাংলার সভ্য জনগণ ও মহান দেশপ্রেমিক আজকের এই বিদেশী সংস্কৃতির প্রতীক " থার্টি ফাস্ট নাইট '' উদযাপনের বিরুদ্ধে । বাংলা মায়ের রক্ত যে সকল বালাদেশীদের শরীরে প্রবাহমান , আশা করছি তাঁরা আজকের এই বিদেশী সংস্কৃতিকে বর্জন করে , যারা না বুঝে অথবা বুঝেও গাদ্দার সেজে নিজ সভ্যতাকে পদদলিত করে বিদেশী সংস্কৃতির এই থার্টি ফাস্ট নাইটের অনুষ্টানে অংশ নিবে তাদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমের ব্রত নিয়ে গর্জে উঠবেন । 
জাগ্রত হোক জাতীয় বিবেক - সকলকে ধন্যবাদ । 
==================================== 

মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১১

বাংলাদেশের সংবিধান - ০০২


বাংলাদেশের সংবিধান - ০০২ 
প্রচারে - 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
------------------------------- 

[ সুপ্রীয় বন্ধুগণ ! 
আচ্ছালামু আলাইকুম । আমাদের দেশ বাংলাদেশ । এই দেশটি কোন নীতিতে , কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে আমাদের নাগরিকদের সে বিষয়ে জানা একান্ত কর্তব্য । দেশ পরিচালনার আইনগুলো সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান অর্জিত থাকলে দেশ পরিচালনার ভুলত্রুটিগুলো চোখের সামনে ধরা দেয় । ফলে একজন নাগরিক হিসাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক দায়িত্ব পালনে সরকারের ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দিতে তেমন বেগ পেতে হয় না । তাই , দেশ পরিচালনার আইনগুলো তথা বাংলাদেশের সংবিধানের আইনগুলো নাগরিক কল্যানে সকলের সাথে শেয়ার করতে শুরু করেছি ধারাবাহিক ভাবে । আশা করছি , বাংলাদেশের সকল নাগরিক এ থেকে উপকার লাভ করবে । সেই সাথে সংবিধানের আলোকে সরকারের দেশ পরিচালনার দিকে তীক্ষ্ন দৃষ্টি রেখে সুষ্ঠ ভাবে দেশ পরিচালনায় সরকারকে সহযোগীতা করে যাবেন । বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানটি মানুষের তৈরী । তাই তাতে ভুল থাকা স্বাভাবিক । যে আইনটি আপনার দৃষ্টিতে ভুল হিসাবে প্রতীয়মান হবে সেটা নিয়ে সরকারকে আপনার মতামত ব্যক্ত করুন । এটা আপনার নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য । আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে নাগরিক অধিকার ভোগ করার তৌফিক দান করুন - আমীন । 
- মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী ] 
--------------------------------- 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান 
  [ বিস্‌মিল্লাহির-রহ্‌মানির রহিম 
(দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে)/ 
পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে।] 

প্রথম ভাগ - প্রজাতন্ত্র 

প্রজাতন্ত্র :
১৷ বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহা “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ” নামে পরিচিত হইবে৷ 

প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা :
২৷ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত হইবে - 
  (ক) ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা-ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল এলাকা লইয়া পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল *৪ [ এবং সংবিধান (তৃতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৪-এ অন্তর্ভুক্ত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকা, কিন্তু উক্ত আইনে বহির্ভূত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকা তদ্‌বহির্ভূত; এবং] 
  (খ) যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হইতে পারে৷ 

রাষ্ট্রধর্ম : 
*৫ [ ২ক। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন] 

রাষ্ট্রভাষা :
৩৷ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা৷ 

জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক : 
৪৷ (১) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা”র প্রথম দশ চরণ৷ 
   (২) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত৷ 
   (৩) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর-সংযুক্ত পত্র, তাহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা৷ 
   (৪) উপরি-উক্ত দফাসমূহ-সাপেক্ষে জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কিত বিধানাবলী আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷ 

জাতির পিতার প্রতিকৃতি :
*৬ [ ৪ক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারী ও আধা-সরকারী অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।] 

রাজধানী :
৫৷ (১) প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ঢাকা৷ 
   (২) রাজধানীর সীমানা আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷ 

নাগরিকত্ব : 
*৭ [ ৬। (১) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে। 
         (২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন।] 

সংবিধানের প্রাধান্য : 
৭৷ (১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে৷ 
   (২) জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসমঞ্জস হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে৷ 

সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ : 
*৮ [ ৭ক। (১) কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায় - 
               (ক) এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে ; কিংবা 
               (খ) এই সংবিধান বা ইহার কোন বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে - তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে। 
          (২) কোন ব্যক্তি (১) দফায় বর্ণিত- 
               (ক) কোন কার্য করিতে সহযোগিতা বা উস্কানি প্রদান করিলে; কিংবা 
               (খ) কার্য অনুমোদন, মার্জনা, সমর্থন বা অনুসমর্থন করিলে - তাহার এইরুপ কার্যও একই অপরাধ হইবে। 
          (৩) এই অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধে দোষী ব্যক্তি প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে। 

সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য : 
৭খ।সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমুহের বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোন পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।] 
-------------------------------------------- 

পাদটিকা : 
*৪ - `এবং সংবিধান (তৃতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৪-এ অন্তর্ভুক্ত এলাকা বলিয়া উল্লেখিত এলাকা, কিন্তু উক্ত আইনে বহির্ভূত এলাকা বলিয়া 
উল্লেখিত
 এলাকা তদ্বহির্ভূত; এবং` শব্দগুলি, কমাগুলি, বন্ধনীগুলি এবং সংখ্যাটি `; এবং` সেমিকোলন এবং শব্দটির পরিবর্তে সংবিধান (তৃতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৪ (১৯৭৪ সনের ৭৪ নং আইন)-এর ৩ ধারা বলে প্রতিস্থাপিত 

*৫ - সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৪ ধারা বলে ২ক অনুচ্ছেদ প্রতিস্থাপিত। 

*৬ - সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৫ ধারা বলে ৪ক অনুচ্ছেদ প্রতিস্থাপিত। 

*৭ - সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪নং আইন)-এর ৬ ধারা বলে ৬ অনুচ্ছেদের পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত। 

*৮ - সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪নং আইন)-এর ৭ ধারা বলে ৭ক এবং ৭খ অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত। 
============================= 

বাংলাদেশের সংবিধান - ০০১


বাংলাদেশের সংবিধান - ০০১ 
প্রচারে - 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
----------------------------------- 

[ সুপ্রীয় বন্ধুগণ ! 
আচ্ছালামু আলাইকুম । আমাদের দেশ বাংলাদেশ । এই দেশটি কোন নীতিতে , কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে আমাদের নাগরিকদের সে বিষয়ে জানা একান্ত কর্তব্য । দেশ পরিচালনার আইনগুলো সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান অর্জিত থাকলে দেশ পরিচালনার ভুলত্রুটিগুলো চোখের সামনে ধরা দেয় । ফলে একজন নাগরিক হিসাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক দায়িত্ব পালনে সরকারের ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দিতে তেমন বেগ পেতে হয় না । তাই , দেশ পরিচালনার আইনগুলো তথা বাংলাদেশের সংবিধানের আইনগুলো নাগরিক কল্যানে সকলের সাথে শেয়ার করতে শুরু করেছি ধারাবাহিক ভাবে । আশা করছি , বাংলাদেশের সকল নাগরিক এ থেকে উপকার লাভ করবে । সেই সাথে সংবিধানের আলোকে সরকারের দেশ পরিচালনার দিকে তীক্ষ্ন দৃষ্টি রেখে সুষ্ঠ ভাবে দেশ পরিচালনায় সরকারকে সহযোগীতা করে যাবেন । বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানটি মানুষের তৈরী । তাই তাতে ভুল থাকা স্বাভাবিক । যে আইনটি আপনার দৃষ্টিতে ভুল হিসাবে প্রতীয়মান হবে সেটা নিয়ে সরকারকে আপনার মতামত ব্যক্ত করুন । এটা আপনার নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য । আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে নাগরিক অধিকার ভোগ করার তৌফিক দান করুন - আমীন । 
- মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী ] 
---------------------------------

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান 
*১ [ বিস্‌মিল্লাহির-রহ্‌মানির রহিম
(দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে)/
পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে।]

প্রস্তাবনা

আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া *২ [ জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের] মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি; 
* ৩ [ আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল -জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে ;] 
আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে; 
আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাঙ্খার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য; 
এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদে, অদ্য তের শত ঊনআশী বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের আঠারো তারিখ, মোতাবেক ঊনিশ শত বাহাত্তর খ্রীষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের চার তারিখে, আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম। 
------------------------------------------------- 
পাদটিকা : 
*১ - সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ২ ধারাবলে ‘‘বিস্‌মিল্লাহির-রহ্‌মানির রহিম (দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে)’’ শব্দগুলি, কমাগুলি, চিহ্নগুলি ও বন্ধনীর পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত।
*২ - সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৩ ধারাবলে ‘‘জাতীয় স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিক যুদ্ধের’’ শব্দগুলির পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত। 
*৩ - সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৩ ধারাবলে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত। 
======================================= 

শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১১

সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ১০


সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ১০ 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী  
---------------------------------

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্ । 
সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 
আজ শুক্রবার , ১৮ই অগ্রহায়ণ ১৪১৮ বঙ্গাব্দ , ৭ মহররম ১৪৩৩ হিজরী , ২ ডিসেম্বর ২০১১ ঈসায়ী । সৌদি আরব সময় ১০ : ৫৫ সকাল । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , আল মদিনা , সৌদি আরব থেকে সকলকে প্রভাতী শুভেচ্ছা । 
------------------------------------------------------------------------- 
বন্ধুগণ ! 
আশাকরি সবাই ভাল আছেন । আজ সৌদিবাসী প্রবাসীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন । যদিও খুব কম লোকই আছেন যারা এই সাপ্তাহিক ছুটির দিনটা উপভোগ করতে পারেন । এই ছুটি বন্ডেড বা স্পন্সরের কাছে থাকা প্রবাসীদের বেশীর ভাগই উপভোগ করতে পারেননা । তবে যাঁরা স্পন্সর থেকে বের হয়ে কাজ করছেন তাঁরা বেশীর ভাগই এই ছুটি উপভোগ করতে পারছেন । যাঁরা আজকের এই সাপ্তাহিক ছুটি উপভোগ করবেন তাঁদের জন্য আজকের দিনটা ঈদের দিনের মতই একটা খুশির দিন । 
পুরো সপ্তাহ ব্যাপী যান্ত্রিক জীবনের কর্মমাঝে ফাঁক পেয়ে আজকের দিনটা প্রবাসীরা মুক্ত বাতাসে নির্মল প্রকৃতির অক্সিজেন গ্রহণ করবেন । আবার এক সপ্তাহের জন্য ধারণ করবেন শারিরীক কল্যানে প্রাকৃতিক অক্সিজেন । সবার সাথে মিলিত হবেন । প্রবাসী জীবনের সুখ দুঃখের অনুভুতি বিনিময় করবেন একে অপরের সাথে । বিনোদনের মাঝে ডুবে গিয়ে এক সপ্তাহের জন্য পূর্ণ উদ্যোমে কর্মে মেতে উঠার লক্ষ্যে নতুন ভাবে শারিরীক শক্তি সঞ্চয় করবেন । প্রবাস জীবনের একগুয়েমী মনোভাব পরিহার করে মনকে ফ্রেস করে নিবেন । তাই প্রবাসীদের জন্য তাঁদের শারিরীক কল্যানে আজকের দিনটা তথা ছুটির দিনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ । 
প্রবাসীদের যান্ত্রিক জীবনের মাঝে লাগামহীন কর্মসময় নিয়ে আসে তাঁদের জীবনের প্রতি ঘৃণা । বেঁচে থাকার লড়াইয়ে তাঁরা শক্তি হারিয়ে ফেলেন । জীবনকে এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিন । জীবনকে ভাবতে থাকেন মূল্যহীন । ফলে অনেক প্রবাসীদের দেখা যায় দেউলিয়া হয়ে যেতে , সংসারবিমুখ হয়ে যেতে , তীলে তীলে জীবনকে ধ্বংস করতে । তাঁদের এ ধরণের জীবন বিমুখতা কেন কেউ জানতে চায়না । অন্তত এই মানবতাহীন পৃথিবীতে এই সব প্রবাসীদের নিয়ে কেউ ভাবতে চায়না । 
আন্তর্জাতিক শ্রম আইন নামে কোন আইন কাগজে কলমে থাকলেও কোন প্রবাসীদের জন্য এই আইন প্রয়োগ করা হয়না । ফলে প্রবাসীরা তাঁদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক না পেয়ে ও বিবিধ সুযোগ সুবিধা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে বেআইনী কর্মে জড়িয়ে যেতে বাধ্য হয় । পরিণতিতে প্রবাসীদের গ্রহণ করতে হয় বিভিন্ন প্রকার সাজা , দিতে হয় প্রবাসে জীবন বলি । এ জন্য দায়ী কে ? 
সৌদি আরবে ৮ মার্ডার তথা আটজন বাংলাদেশীর শিরচ্ছেদ কেন হলো ? এ ঘটনার প্রকৃত তথ্য খুঁজতে গেলে বেরিয়ে আসবে সৌদি আরব কর্তৃক আন্তর্জাতিক শ্রম আইন লঙ্গনের মুল বিষয় । যদি সৌদি আরব আন্তর্জাতিক শ্রম আইন শ্রমিকদের উপর বলবত রাখতো তবে উক্ত বাংলাদেশী আটজনের শিরচ্ছেদ করে মানবাধিকার আইন লঙ্গন করতঃ বিশ্ববাসীর ঘৃণার তীর গ্রহণ করতে হতোনা । এভাবে কোন বাংলাদেশী তথা কোন প্রবাসীকে সৌদি আরবের উম্মুক্ত ময়দানে শীর কর্তনের মধ্য দিয়ে জীবনবলি দিতে হতোনা । আজকে সৌদি আরবে প্রবাসীরা যত প্রকার অপরাধই করুকনা কেন , তার মূল কারণ সৌদি আরব কর্তৃক আন্তর্জাতিক শ্রম আইন ও মানবাধিকার আইন লঙ্গন । যদি এ দুটি আইন সৌদি আরবে যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করাহয় , তবে সৌদি আরবে কোন প্রবাসী কর্তৃক কোন প্রকার অপরাধ সংঘটিত হবেনা বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস । 
আমরা প্রবাসীদের অপরাধগুলোই বড় করে দেখি । কিন্তু প্রবাসীরা অপরাধগুলো কেন করছে সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিইনা । ফলে প্রবাসীদের অপরাধগুলোই দৃষ্টিগোচর হয় , অপরাধের মুল কারণ গুলো আমাদের অজানাই থেকে যায় । আমার দৃষ্টিতে যারা প্রবাসে অপরাধ করছে এটা প্রবাসীদের একটা আইনী লড়াই আন্তর্জাতিক শ্রম আইন ও মানবাধিকার আইন লঙ্গনের বিরুদ্ধে। অন্তঃত এটাই এটাই আমার ধারণা । কারণ , যারাই অপরাধ করছে তারা তাদের প্রকৃত পারিশ্রমিক , বিবিধ সুযোগ - সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েই করছে । তারা প্রকৃত পারিশ্রমিক ও সুযোগ - সুবিধগুলো পেলে কখনোই অপরধ করতে ইচ্ছুক হতোনা । আমরাই সন্ত্রাসী বানাই , লালন করি আবার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করি - এমনই চলছে প্রবাসীদের বেলায় । প্রবাসীদের অপরাধের মুলে স্ব-স্ব দেশের শ্রমিক আইনের অকার্জকারিতা । আন্তর্জাতিক শ্রম আইন ও মানবাধিকার আইন লঙ্গন । 
তাই যেসব দেশে বিদেশী শ্রমিক কাজ করছে , সেসব দেশে আন্তর্জাতিক শ্রম আইন ও মানবাধিকার আইন যথাযতভাবে প্রয়োগ করা জরুরী , অন্যথায় যদি সেসব দেশে বিদেশী শ্রমিক কর্তৃক কোন প্রকার অপরাধ সংঘটিত হয় , তবে সে অপরধের জন্য কোন বিদেশী শ্রমিক দায়ী হবেনা , দায়ী হবে সে সব দেশ ও দেশের অকার্জকর আইন । 
আমাদের দেশের যে আটজন প্রবাসী সৌদি আরবে বিভিন্ন অপরাধের জন্য নিজেদের জীবন বলি দিয়েছেন , তাঁরা সেসব অপরাধের জন্য দায়ী নয় , দায়ী সে দেশের আন্তর্জাতিক শ্রম আইন । তাঁরা তাঁদের জীবনদানের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়ে গেছেন একজন বিদেশী শ্রমিকদের উপর সে দেশের কি করনীয় । অথচ তারা তা না করে মানবাধিকার আইন লঙ্গন নিয়েই ব্যস্ত । 
সৌদি আরবে একজন বিদেশী শ্রমিকের বেতন যদি হয় বর্তমানে ৮০০ শত রিয়াল , আর তার খাওয়া খরচ বর্তমানে ৫০০ রিয়াল এবং আনুসাঙ্গিক খরচ যদি হয় ৩০০ রিয়াল , এবং তাকে যদি অন্যত্র কোন কাজ করতে দো না হয় , তবে সে কি করবে ? কেউ কি ভাবছেন ? এমতাবস্থায় সে যদি দেশে পারিবারিক ভরণপোষনের জন্য সৌদি আরবে চুরি করতে বাধ্য হয় , কাউকে খুন করে অর্থ ছিনিয়ে নেয় , কোন নারীর আর্থিক প্রলোভনে পড়ে অনৈতিক কর্মে জড়িয়ে যায় - তবে তার জন্য দায়ী কে ? ঐ প্রবাসী , না ঐ প্রবাসীর নিজ দেশের সরকার , নাকি ঐ প্রবাসীর নিয়োগকর্তা , নাকি ঐ প্রবাসী যে দেশে কর্মী হয়ে এসেছে সে দেশের সরকার ? এ প্রশ্নগুলোর যথাযত উত্তর কেউ কি দিতে পারবেন ? যদি দিতে না পারেন তবে দয়া করে কোন প্রবাসীকে অপরাধী ভাববেননা । কারণ , তারা অপরাধী নয় , তাদেরকে অপরাধ করতে বাধ্য করা হয় । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , মদিনা , সৌদি আরব থেকে বিশেষ ফেইসবুক কলাম আজ এ পর্যন্তই । সবাই ভালো থাকুন , প্রবাসী সকল বন্ধুদের জীবন নিরাপদ , সুন্দর , সুশীল ও সুস্থ থাক - এ কামনায় সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 

MOHAMMED ZAKARIA SHAHNAGARI 
=====================================

সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৯


সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৯ 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
--------------------------------- 

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্ । 
সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 
আজ বৃহস্পতিবার , ১৭ই অগ্রহায়ণ ১৪১৮ বঙ্গাব্দ , ৬ মহররম ১৪৩৩ হিজরী , ১ ডিসেম্বর ২০১১ ঈসায়ী । সৌদি আরব সময় ০৮ : ১৫ সকাল । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , আল মদিনা , সৌদি আরব থেকে সকলকে বিজয় মাসের সংগ্রামী এবং প্রভাতী শুভেচ্ছা । 

------------------------------------------------------------------------- 

বন্ধুগণ ! 
আশাকরি সবাই ভাল আছেন । ভাল থাকুন তাই হোক কামনা । প্রবাসীদের সুখ - দুঃখ নিয়েই আমার ধারাবাহিক আয়োজনের আজ ৯ম পর্ব । আশা করছি এ পর্বেও কিছু সুখ - দুঃখ আপনাদের শেয়ার করতে পারব । গতকাল বলেছিলাম প্রবাসীদের মুল লক্ষ্য নিয়েই প্রবাস জীবন কাটানো জরুরী । মুল লক্ষ্য থেকে সরে গেলেই প্রবাসে দেখা দিতে পারে পদে পদে বিপদ । 
আমি গতকাল রাতে ডিনারের সময় আমার ইটিং পার্টনারের সাথে আলাপচারিতায় এমন কিছু তথ্য জানতে পেরেছি , যা জানার জন্য কখনো উদ্গ্রীব ছিলাম না । ইটিং পার্টনার বললো - তার একজন রুমমেট হোন্ডা নিয়ে বের হয়ে ৪দিন ধরে আর বাসায় ফিরেনি । চারদিন পর জানা গেলো লোকটি জেলে । পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে হোন্ডাসহ সিগারেট পরিবহনের দায়ে । শুনেছি তার ভাই তাকে ছাড়ানোর চেষ্ঠা করছে । কিন্তু সিগারেট বিক্রির অপরাধে অপরাধী হওয়ায় তাকে ছাড়ানো যাচ্ছেনা । এমন ও হতে পারে , লোকটিকে দেশে চলে যেতে হবে , কয়েকদিন জেল খেটে । 
আর একজন লোকের কথা জানতে পারলাম - লোকটি আবাসিক হোটেলে কাজ করত সেই ফাঁকে হাজিদের কাছে সগারেট বিক্রি করত । একদিন লোকটি সিগারেট বিক্রি করে টাকা নেয়ার সময় সিগারেটের মুল্য নিয়ে এক হাজির সাথে তর্ক বিতর্ক শুরু হয় । এ দেখে অন্য এক হাজি হোটেল কর্তৃপক্ষকে ফোন করে । হোটেল কর্তৃপক্ষ এসেও যখন তাদের তর্ক থামাতে পারছিলনা , তখন অন্য হাজি পুলিশে ফোন করে । সাথে সাথে পুলিশ এসে লোকটিকে সিগারেট সহ হাতে নাতে ধরে ফেলে । তখন হাজিটি তার তর্কের কারণ জানাতে গিয়ে পুলিশকে বলে , ৭ রিয়ালের সিগারেট তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ২০ রিয়াল । পুলিশ তখন লোকটিকে জব্ধ করার আরো একটা মুক্ষম সুযোগ পেল । চুরি তো চুরি , চুরির উপর সিনাচুরির মত ঘটনা ঘটায় লোকটিকে সাথে সাথে গাড়িতে তোলে পুলিশ নিয়ে যায় । তার স্পন্সর এসে তার পক্ষে সাফাই গাইবার সুযোগ না দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাকে চালান করে দেয়া হয় আউটর জেলে । যেখান থেকে প্রবাসীদের তাদের স্বদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় । একদিন পরই তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয় । 
প্রবাসী ভাইয়েরা বলছিলাম কখনো লক্ষ্যচ্যুৎ হবেননা । তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে , অতি লোভে তাতী নষ্ঠের মতো ঘটনা ঘটা অবশ্যাম্ভাবি । আপনার মুল কাজটিতেই সন্তুষ্ঠ থাকতে চেষ্ঠা করুন । যদি তাতে আপনার লক্ষ্যপূরণ না হয় তবে আপনার স্পন্সরকে বলে কয়ে লিগাল ভাবে ভিন্ন কাজ করতে চেষ্ঠা করুন । তাতেও যদি আপনি সফল না হন , তবে নিজের জীবন তক্বদীরের উপর ছেড়ে দেয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , মদিনা , সৌদি আরব থেকে বিশেষ ফেইসবুক কলাম আজ এ পর্যন্তই । সবাই ভালো থাকুন , প্রবাসী সকল বন্ধুদের জীবন নিরাপদ থাকুক - এ কামনায় সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 

MOHAMMED ZAKARIA SHAHNAGARI 
======================================

বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১১

শুরু হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর



শুরু হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী  
----------------------------------  

আজ বৃহস্পতিবার , ১লা ডিসেম্বর ২০১১ । 
শুরু হলো বাংলাদেশের মহান বিজয়ের মাস । এ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগের স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে বছর ঘুরে আবার ফিরে এল বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ২৪ বছরের পাকিস্তানী শাসন-শোষণকে কবর দিয়ে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের দামাল সন্তানদের ছিনিয়ে আনা বীরত্বগাথা বিজয় অর্জনের মাস এই ডিসেম্বর। বিশ্ব মানচিত্রে আজকের এই বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডটির একটি নতুন জাতি হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের মাস এই ডিসেম্বর । 
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর শুরু করা হত্যাযজ্ঞ চলে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পাকিস্তানিরা এই সময়ে বাংলাদেশের প্রায় ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে। এ দেশের প্রায় ২ লাখ মা-বোন তাদের কাছে সম্ভ্রম হারান। পাকিস্তানিদের চেয়ে এদেশের সন্তান ঘৃণ্য রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের অসভ্যতা ও অমানুষিক আচরণ বিশ্ববাসীকে স্তম্ভিত করে। 
৯মাসের সামরিক ও কূটনৈতিক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর নিয়াজী প্রায় ৯৫ হাজার সৈন্য নিয়ে এ দেশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৭১ এর এইদিনে আজকের এই বাংলাদেশ শত্রু মুক্ত হয় , অর্জন করে স্বপ্নে লালিত মহান স্বাধীনতা। ২৬শে মার্চে জন্ম নেওয়া এই দেশটি বিশ্বের মানচিত্রে একটা সার্বভৌম দেশ হিসাবে নিজের স্থান দখল করে নিতে সক্ষম হয় । 
ডিসেম্বর এলেই বাংলাদেশের মানুষ হারিয়ে যায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোর স্মৃতিচারণে। ১৯৭১ র মুক্তিযুদ্ধ বাংলদেশের একটি শ্রেষ্ঠতম অর্জন। যার পেছনে রয়েছে এদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢেলে দেয়া রক্ত আর মহান আত্মত্যাগ। মুক্তিপাগল এ দেশের আপামর জনতার এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ এর এই ডিসেম্বরেই ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান বিজয়। বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পায় লাল-সবুজের রক্তস্নাত স্বাধীন পতাকা , স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। 
১৯৭১ সালে এদেশের আপামর জনতা গর্জে উঠে বিশ্বকে চিনিয়ে দিয়েছিল উদীয়মান এক জাতিকে। স্বাধীনতা নামের সোনার হরিণ পাবার জন্য অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছিল নিজেদের অমূল্য জীবন। তাদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জন এই বাংলাদেশ , আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।
১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর এ জাতি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রথম পর্ব শেষ করেছে। এখন মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করার সময় এসেছে । সময় এসেছে শান্তি , প্রগতি , সমাজ সংশোধন , ব্যক্তি সংশোধন অভিমুখী গণজাগরণ গড়ে তোলার। যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ লক্ষ্য ধারণ করে ব্যক্তি ও সমাজ সংশোধনের মাধ্যমে শান্তি ও প্রগতির মুলধারা প্রতিষ্ঠা পাবে এবং ১৯৭১ এর সেই উথ্থাল দিনগুলোর মত প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদনে মুক্তিযুদ্ধের এই দ্বিতীয় পর্বেও দেশের আপামর জনতা স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করে কাধে কাধ মিলিয়ে প্রকৃত বিজয় অর্জন করবে। 
অবশেষে , আজকের এই বিজয় মাসের শুরুতে স্মরণ করছি সেই সব মহান ত্যাগী মানুষদের । যারা দেশের স্বাধীনতার বিজয় অর্জনে অকুতুভয়ে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিল । অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করছি সেইসব লক্ষ লক্ষ শহীদদের যারা দেশের ও দেশের মানুষদের সুখ আর শান্তির লক্ষ্যে অকাতরে তাদের বুকের তাজা রক্ত দেশের রাজপথে ঢেলে দিতে কার্পণ্য করেনি এবং শ্রদ্ধা জানাচ্ছি অগুণিত সেই সব মহান মা - বোনদের , যারা দেশ ও দেশের মানুষদের জন্য তাদের জীবন - মান - সম্মান - সম্ভ্রম হারাতে হয়েছিল নরপিশাচ পাকিস্তানী ও তাদের দোষরদের হাতে । আজকের এই দিনে তাদের সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি । 

সকলকে মহান এ বিজয় মাসের সংগ্রামী শুভেচ্ছা । 
======================================== 

সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৮



সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৮ 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
--------------------------------- 

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্ । 
সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 
আজ মঙ্গলবার , ১৬ই অগ্রহায়ণ ১৪১৮ বঙ্গাব্দ , ৫ মহররম ১৪৩৩ হিজরী , ৩০ নভেম্বর ২০১১ ঈসায়ী । সৌদি আরব সময় ০৭ : ৪৫ সকাল । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , আল মদিনা , সৌদি আরব থেকে সকলকে প্রভাতী শুভেচ্ছা । 
------------------------------------------------------------------------- 
বন্ধুগণ ! 
আজকের দিনটা কিভাবে শুরু করলেন আপনারা ? ঘুম থেকে উঠে একটা সুন্দর হাসি দেয়ার মাধ্যমে নাকি মুখটা মলীন করে ? যদি মুখটা মলীন করে দিনের যাত্রা শুরু করেন , তবে বলবো আপনার দিবসযাত্রা শুভ হয়নি । আর যদি আপনি সুন্দর একটা হাসি দেয়ার মাধ্যমে ঘুম থেকে উঠে থাকেন , তবে বলবো আপনার দিবসযাত্রা সূচিত হয়েছে শুভদিক উম্মোচনের মধ্য দিয়ে কারণ , হাসি - নির্মল মনের বহিঃপ্রকাশ , মুক্তমনের দর্পণ , সুখী জীবনের দেয়ালিকা আর সকালের হাসি - পুরাটা দিনের শুভময় সফরসঙ্গী । আশা করছি সবাই আজ সুন্দর হাসি দেয়ার মাধ্যমে দিবসযাত্রার সূচনা করেছেন । 
গতকালের বৃষ্টিস্নাতা রজনীর পর শীতাক্রান্ত মদিনাবাসী । রহমতের সওগাত পুরা রাতের তুমুল বৃষ্টি নিয়ে এসেছে মদিনায় গা হিম হয়ে যাওয়া শীতের প্রকোপ । এই শীতার্থ রজনীতে আমার ইটিং পার্টনার ধরে বসল তার হজ্জ করতে আসা শাশুরকে দেখতে যাবে । তখনও ডিনারের রান্না শেষ হয়নি । রাত হয়েছিলো ১২টা । বললাম - বসেন খেয়েই বের হওয়া ভাল হবে । দশমিনিটের মধ্যে রান্না শেষ হলো । দুজনে খাওয়া দাওয়া শেষ করে যখন বের হওয়ার জন রেডি , তখন পার্টনার বললো - আপনি বের হয়ে গাড়ি দেখেন , আমি বাসায় গিয়ে দু’টি গায়ের চাদর আছে সেগুলি নিয়ে নিই , হাজিদের প্রয়োজন হতে পারে। পার্টনার চলে গেলে আমি কোট গায়ে জড়িয়ে শীতার্থ রজনী ভেদ করে বেরিয়ে পড়লাম । স্থানীয় সময় তখন রাত সাড়ে ১২টা । বাইরে যখন বের হলাম মনে হলো হঠাৎ যেন আমার শরীরে কেউ বরাফ জড়িয়ে দিলো ! চলতে শুরু করলাম । কিছুদূর যেতেই পেছন থেকে পুলিশের একটা গাড়ী আমাকে অনুসরণ করলো । আস্তে করে গাড়ীটা আমার গায়ে লাগিয়ে দিলো । “ হাত ইকামা ! ’’ বাছ্ ! কি আর করা , বের করে দিতে হলো “ রেসিডেন্স পারমিট ’’ তাদেরকে । “ হয়েন রো ? ’’ মনে মনে বললাম , তোদের জ্বালায় আর পারিনা । আমি যেখানেই যাই তোদের কি ? “ রো বাগালা ! ’’ পাঁচ মিনিট ধরে দেখলো আমার রেসিডেন্ট পারমিটটি । মিথ্যার আশ্রয় নিতে বাধ্য হলাম আমি । মুদি দোকানে যাচ্ছি বলতেই ছেরে দেয়া হলো আমাকে । 
সৌদি আরবে ঘটমান বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইদানিং চেক হচ্ছে বেশী । তাই সৌদি আরবে বসবাসকারী প্রবাসী বন্ধুদের অনুরোধ করবো - আপনারা পথ চলতে , কথা বলতে সাবধান হোন । বিশেষ করে যেখানেই যান না কেন রাত ১২টার পুর্বেই বাসায় ফিরতে চেষ্টা করুন । আলাপের সময় লাগামহীন আলাপ থেকে বিরত থাকুন । সকল প্রকার অবৈধ কর্ম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন , অন্যকেও বাঁচতে সাহায্য করুন । কোন প্রকার রাজনৈতিক আলাপ করবেননা । বিশেষ করে বহির্বিশ্বের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক নিয়ে যে কোন আলাপ থেকে বিরত থাকুন । আপনার পিছনে বা আশে পাশে ঘুরছে ছদ্ধবেশে আইন শৃন্খলা রক্ষাকারী কর্মী । তাই রুমের বাহিরে বের হতেই সাবধানতা অবলম্বন করুন। 
সৌদি আরব ছাড়াও যাঁরা প্রবাসী আছেন , পথ চলতে সাবধানতা অবলম্বন করুন । আপনি যে দেশে আছেন সে দেশের আইন শৃন্খলা মেনে চলুন । অবলম্বন করুন আপনার লক্ষ্য কে । আপনি প্রবাসী হয়েছেন আপনার পারিবারিক স্বচ্ছলতার জন্য , স্বদেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিবেগ দেয়ার জন্য - এটাই আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য । এ ছাড়া আর কোন লক্ষ্য নিয়ে আপনি প্রবাসী হননি । তাই অন্য কোন লক্ষ্য নয় । দেশ ত্যাগকালীন যে লক্ষ্যে আপনি বহির্বিশ্বে পা রেখেছেন , একমাত্র সে লক্ষ্য নিয়েই প্রবাস জীবন কাটাতে থাকুন । শ্রম দিয়ে সৎপথে আয় করুন , সকল প্রকার কুপথ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখুন । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , মদিনা , সৌদি আরব থেকে বিশেষ ফেইসবুক কলাম আজ এ পর্যন্তই - প্রবাসী সকল বন্ধুদের জীবন - মন সুস্থ থাক , নিরাপদ থাক - এ কামনায় সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 

MOHAMMED ZAKARIA SHAHNAGARI 
====================================== 

মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১১

সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৭



সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৭ 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
--------------------------------- 

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্ । 
সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 
আজ মঙ্গলবার , ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪১৮ বঙ্গাব্দ , ৪ মহররম ১৪৩৩ হিজরী , ২৯ নভেম্বর ২০১১ ঈসায়ী । সৌদি আরব সময় ০৬ : ৩০ সকাল । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , আল মদিনা , সৌদি আরব থেকে সকলকে প্রভাতী শুভেচ্ছা । 
------------------------------------------------------------------------- 

বন্ধুগণ ! 
কেমন আছেন ? মনে মনে কাল কতটুকু গালি দিয়েছেন আমায় আমার লেখাটি পড়ে ? নিশ্চয়ই অনেক তাই না ? আপনারা না বললেও আমি বুঝতে পেরেছি । ঠিক আছে বলতে হবেনা । যতই গালি দেন না কেন , আমি কিন্তু কানের বাহিরেই রাখি । তাই তো আপনাদের কিছু না বলে আবার আপনাদের সম্মুখে উপস্থিত হলাম । আজ রতন চৌধুরীর একটা গানের দু’টি লাইন দিয়েই শুরু করি কি বলেন 

অনেক দিন আগে শুনা , রতন চৌধুরী গেয়েছিলেন - 
“ যখন আমি থাকবোনা , কখনো ফিরে আসবোনা 
আমার নাম করবে স্মরণ , মোর কন্যা রত্না - স্বপ্না । “ 

হ্যাঁ , আমি মনে করি যারা দেশে সন্তান - সন্ততি রেখে প্রবাসী হয়ে একাকী ঘরে অবস্থান করছেন , তাঁরা আমার মতোই প্রতি রাতে এমনই ভাবেন - আমার খবর কেহই না নিক একদিন আমার সন্তানরা বড় হয়ে আমাকে স্মরণ করবেই , যেদিন আর আমি থাকবোনা , কখনো আর ফিরবোনা । 
এইতো কয়েকদিন আগের কথা - আমার সমবয়সী এক বন্ধু রাতে ঘুমানোর পর আর পৃথিবীর মুখ দেখতে পারেননি । ঘুমের মধ্যেই তিনি প্রবাসী জীবন ইতি দিয়ে অনন্তের পথে পা বাড়ালেন । ছিলোনা তাঁর পাশে তার কোন স্বজন । দেখতে পেলোনা তাঁর অবুঝ সন্তানেরা ৬৫০০ মাইলের দূরের বাংলাদেশ থেকে তাদের বাবার নিথর দেহটিও । শুনতে পেলেন না সেই প্রবাসী বন্ধু তার ছোট্ট মেয়েটির আদুরে কন্ঠের বাবা ডাক । অনেক স্বপ্ন ছিল তাঁর , দু’মাস পর তিনি তার মেয়েকে দেখতে যাবেন । তাঁর মেয়েকে বুকে নিয়ে খেলবেন । মেয়েটিকে নিয়ে তিনি বেড়াবেন দেশে গিয়ে । আরও কতই না তিনি স্বপ্ন বুকে ধরে রেখে ছিলেন । কিন্তু তাঁর সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে মরণ তাঁকে নিয়ে গেল , না ফিরবার দেশে । তাঁর পারিবারিক সম্মতিতে মৃত্যুর দীর্ঘ একমাস পর জান্নাতুল বাকীতে তাঁকে চিরদিনের মতো শুইয়ে দিলাম আমরা ক’জন তাঁর প্রবাসী সাথী । 
বেশ কিছুদিন পর আমাদের এক বন্ধু ঐ বন্ধুটির বাড়ি গিয়ে আমাদের শুনায় আর এক মর্মান্তিক কাহিনী । যখন তিনি মৃত বন্ধুটির বাড়ি গিয়ে পৌছান তখন মৃত বন্ধুটির ছোট্ট মেয়েঠি তাদের ঘরে উপস্থিত বন্ধুটিকে বাবা এসেছে বাবা এসেছে বলে চিৎকার করে তাঁর দিকে দৌড়ে আসছিল । কাছে এসে জড়িয়ে ধরলো তাঁকে । বন্ধুটি নির্বাক পাথরের মত দাঁড়িয়ে থাকলেন। মেয়েটিকে কোলে তুলে নিলেন । ততক্ষণে প্রতিবেশীরা চতুর্দিক থেকে এসে ভীড় জমে গেল । মেয়েটির মা কয়েকবার মূর্ছিত হলো । ঘরে যারা ছিল শুনা গেল সকলের বিলাপধ্বণি । প্রতিবেশী সবাই এই হৃদয় বিধারক দৃশ্য সহ্য করতে পারলোনা । সবারই নয়ন জলে হলো প্লাবিত । বন্ধুটি আর স্থির থাকতে পারলেননা । বসা থেকে উঠে চলে গেলেন নির্জনে । কিভাবে তিনি এ পরিবারকে শান্তনা দিবেন ? বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন তিনি । রাত্র ঘনিয়ে এলো । ছোট্ট মেয়েটি তাঁর কোল থেকে নামতে আপত্তি জানালো । কোনমতেই মেয়েটিকে বন্ধুর কোল থেকে নামানো গেলোনা । শেষমেষ তাঁকে ঐ বাড়িতেই রাত্রে থেকে যেতে হল । ভোরে যখন মেয়েটি তখনও ঘুমে , বন্ধুটির মেয়েটির পাশ থেকে উঠে তাকে না জানিয়ে নিজেদের বাড়িতে আসতে হল । 
এভাবেই প্রবাসীদের জীবন বিনা খবরে চলে যায় অনন্তের পথে । স্বজন বিহীন বিদেশ বিভুঁই একলা ঘরে মরে পড়ে থাকে সবার অজান্তে । থাকেনা কেউ দেখিবার । কলসে পানি আর হাতে চামচ নিয়ে তাকে শেষবারের মত পানি খাওয়াতে তার শিয়রে দাঁড়ায়না কেহ । তার স্বজনেরা পারেনা দিতে তার কবরে এক মুষ্টি মাটি । 


হায়রে প্রবাসী ! অপরের সুখে তুমি দিয়ে যাচ্ছ জীবন বলি , 
পাইলেনা জীবনে তুমি কোন সুখ , 
পরের তরে জীবন উৎস্বর্গ করে যাচ্ছ সবার অজান্তে তুমি চলি , 
পরার্থেই তুমি বরণ করে নিয়েছ জনম দুঃখ । 

ধন্য তোমার জীবন , পরার্থেই এসেছো তুমি এই ধরণীর তলে , 
স্বর্গ বরণ করেছো তুমি , যোগ দিয়েছো স্বর্গবাসীর দলে ! 
লক্ষ সালাম তোমায় , সম্মান জানাই তোমারই পায়ে মাথা টুকে , 
গৌরান্বিত তুমি , রয়ে যাবে অনন্তকাল এই প্রবাসীর বুকে । 

প্রবাসী বন্ধুগণ ! 
প্রবাসী হয়েছো বলে করোনা তোমাদের মনটি ছোট , 
প্রবাসে এসে থেকোনা বসে , 
পরকল্যানেই সুখ ভেবেই কর্মে মেতে উঠ । 

কেউ খবর নেয়না বলে ভেবো না তুমি কারো নও , 
প্রবাসী সকল তোমার আপন এই কথাটি মানিয়া লও । 

প্রবাসী বাংলাদেশ , মদিনা , সৌদি আরব থেকে বিশেষ ফেইসবুক কলাম আজ এ পর্যন্তই - প্রবাসী সকল বন্ধুদের মনন ও মস্তিস্ক সুস্থ থাক । তাঁদের এককীত্ব জীবন হোক কষ্টহীন । ভরে উঠুক সকলের জীবন লক্ষ্যে পৌঁছার আনন্দে - এ কামনায় সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 

MOHAMMED ZAKARIA SHAHNAGARI 
======================================= 


সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১১

সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৬



সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ - ০৬ 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
--------------------------------- 

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্ । 
সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 
আজ সোমবার , ১৪ই অগ্রহায়ণ ১৪১৮ বঙ্গাব্দ , ৩ মহররম ১৪৩৩ হিজরী , ২৮ নভেম্বর ২০১১ ঈসায়ী । সৌদি আরব সময় ০৬ : ৩০ সকাল । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , আল মদিনা , সৌদি আরব থেকে সকলকে প্রভাতী শুভেচ্ছা । 
------------------------------------------------------------------------- 
বন্ধুগণ ! 
কেমন আছেন ? ভালো থাকা - না থাকা বিষয়ে কাল একটুখানি লিখেছিলাম । তাই আজ আর লিখছিনা । দেখা যাক কি লিখতে পারি ? কি লেখা ব্রেনে আসে ঠিক এখনও বুঝতে পারছিনা । তাই অনির্ধারিত বিষয় দিয়ে লেখা শুরু করলাম । মনে হয় ব্রেনকে একটু ধার/তেজ দিলে লেখার বিষয় উঠে আসবে । ততক্ষণ একটু ব্রেনকে স্ক্যান করে নিই , কি বলেন ? 
যা হোক কিছুতো একটা লিখতে হবে , তা অখাদ্য হোক বা সুখাদ্য । আজ ইমাজিন চ্যানেলে ধারাবাহিক নাটকের একটা পর্ব দেখলাম । তাতে দেখানো হলো - একটা পরিবারের চারটা বাচ্ছা । খাবার সময় তিনটি বাচ্ছা তাদের বাবার কথামত খেয়ে নিল । অন্য বাচ্ছাটি কফি (অখাদ্য) রান্নার কারনে খানা না খেয়ে ঘুমিয়ে গেল । মধ্যরাতে ভুখাকষ্ট বাচ্ছাটি সহ্য করতে না পেরে লুকিয়ে সে খানা খেতে শুরু করলো । তা দেখে তার বাবা তার পাশে এসে বসলো । বাচ্ছাটি তার বাবারও না খাওয়ার কথা জানতে পেরে নিজ হাতে তার বাবাকেও খাইয়ে দিল । 
বন্ধুগণ ! আমার লেখাও তেমনই অখাদ্য । যা সবার সামনে কারো পড়া হয়না , কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে এই অখাদ্য পড়ে বলে আমার ধারণা । যদিও কোন মন্তব্য ধরা পড়েনা , তবুও মনে হয় আমার অখাদ্য লেখাগুলো অনেকেই চোখে ধারণ করে । যদি তা না হতো , আমার এই লেখালেখি অটোমেটিকলী বন্ধ হয়ে যেতো । 
সে যাক , গাজাখোরি গল্প অনেক বললাম । এবার দেখি কিছু লেখা যায় কিনা । আমি কুমিল্লার প্রবাসী এক বন্ধুর সাথে শেয়ারে খানা খাই । গতকাল দুপুরের রান্নার দায়িত্ব ছিল আমার । কিন্তু আমি ঘুমিয়ে পড়ি সকাল দশটায় । খবর নেই , কখন বিকেল ৪টা বেজে গেছে। বন্ধুটি এসে অনেক্ষণ দরজা ধাক্কাল , রিং দিল কয়েকবার । শেষবার রিং বাজার পর দরজা খুলতে পারলাম । সে বলল - রাতে ঘুমানোর চেষ্টা করেন । আমি বললাম পুরা রাত শুয়ে থাকলেও ঘুম আসেনা । আর নির্ঘুম শুয়ে থাকলে একমাস পর মৃত্যু অবধারিত বিভিন্ন টেনশানে । তাই কম্পিউটারে বসেই রাত পার করি । তাকে বললাম - নামাজ পড়ে আসেন আমি ততক্ষণে রান্না করে নিই । দুপুরে পাকানোর কথা ছিল মুরগী । কিন্তু সর্ট টাইমে আর মুরগী পাক হলোনা । পূর্বদিনের ডাল রান্না ছিল । তড়িঘড়ি করে ২ রিয়ালের ৪টা ডিম আর ১ রিয়ালের ধন্যপাতা এনে ফ্রাই করে লাঞ্চ সেরে ফেললাম বিকেল ৫টায় । পেঠ শান্তি হলো । পেলাম এক অশান্তির খবর । 
দীর্ঘ ৩ মাস ধরে জরুরী প্রয়োজনে ব্যাংকে একটা একাউন্ট খোলার চেষ্ঠা করছি আমরা দু’জন লোক - একজন আমি আর অন্যজন ইন্ডিয়ান কলকাতার এক বাঙ্গালী বন্ধু । কিন্তু বিভিন্ন অসুবিধা দেখিয়ে আমাদের ব্যাংক একাউন্ট ওপেন করতে চাচ্ছেনা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ । এ পর্যন্ত ২৫ টা ব্যাংকে ধর্ণা দিয়েছি । কোনভাবেই সফল হতে পারিনি । গতকাল অন্য একটা ব্যাংকে কলকাতার বন্ধুকে পাঠিয়েছিলাম । সে টেলিফোন করে বলল - আজ হবেনা । ব্যাংকে অনেক আবেদন জমা হয়ে গেছে । ১৫ দিন পর দেখা করতে বলেছে ! শান্তির আভাস পেয়ে ও অশান্তির ছোঁয়া এসে মনটা বিষয়ে দিল । এদিকে আমরা যত আগে একাউন্ট করতে পারি তত আগেই আমাদের উদ্দেশ্য সফল হবার কথা । কিন্তু তা ততই দেরীতে চলে যাচ্ছে । আমাদের অশান্তি বাড়ছে । এই হলো বিদেশের বি-প্যাঁচ , জিলাপীর মতো এখানে শুধু প্যাঁচ আর প্যাঁচ । 
বন্ধুগণ ! মনে করেছিলাম , আজ কিছু লিখতে পারবনা । শেষ পর্যন্ত লিখেই ফেললাম আপনাদের দোয়ায় লেখা স্বরূপ একটা অখাদ্য । ভাল লাগলে পড়বেন । ভাল না লাগলে গালি দেবেননা প্লীজ । 
প্রবাসী বাংলাদেশ , মদিনা , সৌদি আরব থেকে বিশেষ ফেইসবুক কলাম আজ এ পর্যন্তই - আপনাদের সকলের জীবন সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক - এ কামনায় সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ । 

MOHAMMED ZAKARIA SHAHNAGARI 
======================================= 

সেই দিন - যেই দিন



সেই দিন - যেই দিন 
মুহাম্মদ জাকারিা শাহনগরী 
-------------------------- 

একদিন সেই দিন - যেই দিন 
হয়েছিলো দেখা দু’জনার , 
বাম চোখ ছোট করে ডানচোখে দেখেছিলে 
সময়টি ছিল ভালোবাসা রচনার ।। 

ইশারায় শিষ দিয়ে জানিনা ডেকেছিলে কোন আশে 
লাজ ভয় বাদ দিয়ে বসেছিলে পাশে । 
হাওয়ার তালে উড়িয়ে চুল বলছিলে কথা , 
মুক্তোঝরা হাসিতে মোর খেয়েছিলে মাথা । 
হাত ধরে চলছিলে মানুষের মেলায় , 
সুখ লাভ হচ্ছিলো প্রেম প্রেম খেলায় । 
দেখছিলাম ইতি উতি করেছিলে চোখ মোর বন্ধ , 
বলেছিলে - আজ স্বর্ণালী দিন , এনো না মনে কোন দ্বন্ধ । 
অভিসারে করেছিলে আমায় নিয়ে প্রেমের অভিসার , 
বোকার মতো চেয়ে থেকেছি মেনেছিলাম তোমার কাছে হার । 

সাহস তোমার ছিলো সর্বনাশী 
করেছিলে আমায় নিয়ে খেলা , 
সেইদিন হয়েছিলাম আমি বিশ্ববোকা 
কাটিয়েছিলে আমায় নিয়ে সারাটা বেলা ! 

কিই না করেছিলে আমায় নিয়ে , পড়ে মনে আজও ক্ষণে ক্ষণে ; 
বুকের উপর মাথা রেখে বলেছিলে - এতেই সুখ , শান্তি এলো মনে ! 
সেই থেকে হয়েছিলো প্রেমের শুরু , 
সেইদিন তোমায় মেনেছিলাম প্রেমের গুরু । 
দিন যায় মাস যায় চলে সেই প্রেমের খেলা , 
বছর শেষে এসে যায় বসন্ত মেলা । 
বাসন্তি শাড়ীতে তোমায় লাগছিলো বেশ , 
মনেতে লাগলো দোলা করেছিলাম মোর ভালোবাসা পেশ । 
সেইদিন - যেইদিন করেছিলাম মোর ভালোবাসা পেশ , 
দিয়েছিলে ভালোবাসার এক চিরন্তন প্রতীক , মহামূল্য তাহা তুলনার অশেষ । 
============================================================ 

একদিন সত্যি হবে



একদিন সত্যি হবে 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
---------------------------- 

একদিন সত্যি হবে , আমরা স্বাধীন হবো 
মুক্ত বাংলায় বুক ফুলিয়ে জয়েরই গান গাবো ।। 

যেদিন থাকবেনা কোন অন্যায় , 
ভাসবেনা কোন লাশ সন্ত্রাসী বন্যায়। 
নেতা সব করবেনা কোন চুরি , 
জনগণ করবে তাঁদের বাহাদুরী । 
শান্তির স্বর্গভূমি মোরা দেখতে পাবো , 
শান্ত শীতল হাওয়াতে মোরা মন হারাবো ।। 

অন্যায় দমনে নামবে রাজনীতিবিদ , 
সন্ত্রাসী কবর দিয়ে দেখাবে শান্তির জিদ। 
সবুজ গালিছায় লাগবেনা আর রক্তের দাগ , 
অশান্ত এই দেশ হয়ে যাবে শান্তির বাগ। 
শান্তির সুখ মোরা দেখতে পাবো , 
নিরাপদ দেশে শান্তির নিদ্রা যাবো ।। 

নিরাপদ হবে সব চলাচল পথ , 
হয়ে যাবে সকলেরই একই মত । 
থাকবেনা ভেদাভেদ জনতার মাঝে , 
সাজবে যে এই দেশ নতুন সাজে । 
ভুখা আর থাকবেনা কেহই কভু , 
হাসিমুখ সকলের দেখতে পাবো ।। 
==================================