আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা

বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী

সকল মহান ভাষা শহীদগণের প্রতি,
এবং ভাষা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত

সকল ভাষা সৈনিক
ও বীর বাঙ্গালীদের জানাই অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী,
সেইসাথে সকলকে জানাই

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।

বিষয় সূচী

সাহিত্য (60) অন্যান্য কবিতা (53) ভালোবাসার পদবিন্যাস ( প্রেম সম্পর্কিত রচনা বিশেষ ) (53) আমার লেখা প্রবন্ধ-নিবন্ধ (37) কবিতা (35) দেশ নিয়ে ভাবনা (33) ফিচার (33) বাংলাদেশ (29) সমসাময়িক (28) খন্ড কাব্য (26) হারানো প্রেম (22) সংবাদ (18) কাল্পনিক প্রেম (16) ইতিহাস (15) প্রতিবাদ (15) সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ (15) Online Money Making Links (14) দেশাত্মবোধক কবিতা (13) আমার জীবনের দিনপঞ্জী (12) ধর্ম (12) প্রেমের কবিতা (11) ব্যক্তিত্ব (11) রাজনীতি (11) ধর্মীয় আন্দোলন (10) প্রবাসের কবিতা (10) খন্ড গল্প (9) জীবন গঠন (9) বর্ণমালার রুবাঈ (9) ইসলাম (8) প্রগতি (8) মানুষ ও মানবতা (8) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (8) VIDEOS (7) আমার লেখালেখির অন্তরালে (7) ইসলামী জাগরণ (7) মানব মন (7) ট্র্যাজেডি (6) শোক সংবাদ (6) সম্প্রীতি (6) নারী স্বাধীনতা (5) প্রেমের গল্প (5) বিজয় দিবসের ভাবনা (5) মৃত্যুপথ যাত্রী (5) সংবাদ মাধ্যম (5) স্মৃতিকথা (5) ঈদ শুভেচ্ছা (4) প্রবাস তথ্য (4) রমজান (4) শুভেচ্ছা (4) Computer Programer (3) আমার ছবিগুলো (3) আমার রাইটিং নেটওয়ার্ক লিংক (3) পর্দা (3) ফটিকছড়ি (3) বাংলাদেশের সংবিধান (3) বিশ্ব ভালবসা দিবস (3) শিক্ষা (3) শিক্ষার্থী (3) স্লাইড শো (3) News (2) VERIETIES POEMS OF VERIOUS POETS (2) আষাঢ় মাসের কবিতা (2) আষাঢ়ের কবিতা (2) ইসলামী রেনেসাঁ (2) ছাত্র-ছাত্রী (2) থার্টি ফাস্ট নাইট (2) নারী কল্যান (2) নারী প্রগতি (2) নির্বাচন (2) বর্ষার কবিতা (2) মহাসমাবেশ (2) শবেবরাত (2) শরৎকাল (2) শাহনগর (2) শ্রদ্ধাঞ্জলী (2) সত্য ঘটনা (2) সত্য-মিথ্যার দ্বন্ধ (2) সফলতার পথে বাংলাদেশ (2) Bannersআমার ছবিগুলো (1) DXN (1) For Life Time Income (1) For Make Money (1) Knowledge (1) Student (1) অদ্ভুত সব স্বপ্নের মাঝে আমার নিদ্রাবাস (1) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (1) আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আত(সুন্নী) (1) উপন্যাস (1) কবি কাজী নজরুল ইসলাম (1) কোরআন - হাদিসের কাহিনী (1) গল্প (1) চট্টগ্রাম (1) চিকিৎসা ও চিকিৎসক (1) জমজম (1) জাকাত (1) তরুন ও তারুণ্য (1) নারী জাগরণ (1) পরকিয়ার বিষফল (1) ফটিকছড়ি পৌরসভা (1) বন্ধুদিবস (1) বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম (1) বিবেক ও বিবেকবান (1) বিশ্ব বাবা দিবস (1) বিশ্ব মা দিবস (1) ভ্রমণ (1) মন্তব্য (1) মাহফুজ খানের লেখালেখি (1) রবি এ্যাড (1) রমজানুল মোবারক (1) রেজাল্ট (1) রোগ-পথ্য (1) লংমার্চ (1) শহীদ দিবস (1) শুভ বাংলা নববর্ষ (1) শৈশবের দিনগুলো (1) সমবায় (1) সস্তার তিন অবস্থা (1) সাভার ট্র্যাজেডি (1) সিটি নির্বাচন (1) স্বপ্ন পথের পথিক (1) স্বাধীনতা (1) হ্যালো প্রধানমন্ত্রী (1) ২১ ফেব্রোয়ারী (1)

APNAKE SHAGOTOM

ZAKARIA SHAHNAGARIS WRITING

সকলকে বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা

বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে আমরা আর বাংলা ভাষায় কথা বলতে চাইনা । নিজের মাতৃভাষাকে যখন-তখন যেখানে সেখানে অবমাননা করে তৎপরিবর্তে ইংরেজী ভাষা ব্যবহার করতে অভ্যাস্থ হয়ে যাচ্ছি বা হয়ে গেছি ।
আরও একটু এগিয়ে গেলে বলতে হয় - আমরা আজ বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালী জাতিসত্বা ভুলে গিয়ে ইংরেজী জাতিসত্বায় রক্তের ন্যায় মিশে গেছি !

অথচ একদিন আমরা বাঙ্গালী জাতি একতাবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় ভাষা উর্দুকে ত্যাগ করে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা বাংলা ভাষাকে সর্বত্র প্রচলন করতে প্রাণ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম ! ফলে বিজাতীয় ভাষা উর্দূকে অপসারন করে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলা ভাষাকে ধারন করেছিলাম । যখন আমরা বাংলার সর্বত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা শুরু করেছিলাম ,তখন কিন্তু বিশ্বায়নের যুগটা অনুপস্থিত ছিল তা নয় , বিশ্বায়নের যুগটা তখনও ছিল বিধায় আমরা ইংরেজী শিক্ষায় তখনও বাধ্য ছিলাম । অর্থাৎ যে জন্যে আজ আমরা ইংরেজী শিখছি সেইজন্যে তখনও ইংরেজী শিক্ষার প্রচলন ছিল । ছিল ইংরেজী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও । তাই বলে সে সময় বর্তমান সময়ের মত মাতৃভাষা বাংলাকে অবমাননা করা হয়নি । মানুষ সে সময় বাংলায়ই কথা বলেছিল । শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই সে সময় ইংরেজী ব্যাবহার করেছিল বাঙ্গালী জাতি

conduit-banners

Powered by Conduit

ফ্লাগ কাউন্টার

free counters

MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY

PLEASE CLICK ON MY BANNERS. VISIT MY AFFILIATE SITE "MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY ( অনলাইনে অর্থোপার্জনের একটা মাধ্যম )" I HOPE IT WILL BE HELPFUL FOR YOU. Create your own banner at mybannermaker.com!

শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১২

কোরআন ও হাদিসের আলোকে রমজান


কোরআন ও হাদিসের আলোকে রমজান
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
----------------------

আল কোরআনে মাহে রমজান ও রোযা সম্পর্কীয় কিছু আয়াত ঃ

পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন -

১। “হে মু'মিনগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে,যেমনি ফরয করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর; যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার’’। (সূরা বাকারা: ১৮৩)।
২। “রমজান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হিদায়াতের জন্য।” (সূরা বাকারা- ১৮৫)।
৩। “কদরের রাত, হাজার মাস থেকেও উত্তম।” (সূরা কদর: ৩)।
৪। “তোমরা খাও পান কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় আল্লাহ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না’’। (সূরা আ'রাফ: ৩১)।
৫। “তোমাদের জন্য রোযার বিধান দেয়া হল,যেমন বিধান ছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য,যেন তোমরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে শিখ অশুভের হাত থেকে।”(সূরা বাকারা: ১৮৩)।
৬। “নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কী জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত।’’ (সূরা আল-কদর, আয়াত ১-৫)।
৭। “রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে আল-কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৫)।
৮। “তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। এ (সিয়াম) যাদের অতিশয় কষ্ট দেয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদ্ইয়া—একজন মিসকিনকে অন্নদান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎ কাজ করে, তবে সেটা তার পক্ষে অধিকতর কল্যাণকর। তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে, তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে। আর কেউ পীড়িত থাকলে অথবা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যেটা সহজ সেটাই চান এবং যা তোমাদের জন্য ক্লেশকর, তা চান না এ জন্য যে তোমরা সংখ্যা পূরণ করবে।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪-১৮৫)।
৯। “তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হবে না, যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফে থাকবে।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৮৭)।
১০। “যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎ কাজ করে, তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর যদি তোমরা উপলব্ধি করতে, তবে বুঝতে রোযা পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণপ্রদ।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪)।
১১। “শপথ আত্মার এবং যিনি তা সুঠাম করেছেন তাঁর, অতঃপর তাঁকে পাপাচারের ও ধার্মিকতার পথ শিক্ষা দিয়েছেন। সুতরাং সে সফলকাম, যে আত্মশুদ্ধি অর্জন করে। আর সে ব্যর্থ, যে নিজেকে কলুষিত করে।’’ (সূরা আশ-শামস, আয়াত: ৭-১০)।
১২। “আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রাত্রি পর্যন্ত রোযা পূর্ণ করো।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৭)।
১৩। “রমজান মাসে মানুষের পথপ্রদর্শক এবং সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী রূপে আল কোরআন নাজিল হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।'’ (বাকারা : ১৮৫)।
১৪। “সিয়াম নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ ব্যাধিগ্রস্ত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। এটা যাদেরকে অতিশয় কষ্ট দেয়, তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদ্রা একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎ কাজ করে এটা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন তথা রোযারাখাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণপ্রসূ যদি তোমরা জানতে।” (সুরা বাক্বারা ১৮৩-১৮৪)।


মাহে রমজান ও রোযা বিষয়ক কিছু হাদীস ঃ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন -

১। “তোমাদের নিকট বরকতময় মাস রমজান এসেছে, যার সিয়াম আল্লাহ তোমাদের উপর ফরয করেছেন’’। (সুনান নাসায়ী: ২০৭৯)।
২। “এক রমজান তার পূর্ববর্তী রমজানের মধ্যবর্তী সময়ের সকল সগীরা গুনাহ মিটিয়ে দেয়।” (সহীহ মুসলিম: ৩৪৪)।
৩। “সবরের মাসে সাওম পালন ও প্রত্যেক মাসে তিনদিন সাওম পালন অন্তরের অস্খিরতা দূর করে।” (মুসনাদ আহমাদ: ৭২৬১)।
৪। “যখন রমজান আগমন করে তখন খুলে দেয়া হয় জান্নাতের দরজাসমূহ এবং বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের প্রবেশ পথগুলো। আর শৃকôখলিত করা হয় শয়তানদের।” (সহীহ মুসলিম: ১৭৯৩)।
৫। “এ মাসের প্রত্যেক রাতেই আল্লাহ তার কতিপয় বান্দাহকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।” (সুনান তিরমিযী: ৬১৮)।
৬। “রমজান মাসের সিয়াম দশ মাসের সমতূল্য এবং শাওয়ালের ছয় দিনের সিয়াম দুই মাসের সমতুল্য। এ যেন সারা বছরের সিয়াম।” (মুসনাদ আহমাদ: ২১৭৮)।
৭। “এ মাসের প্রতি রাতেই আহ্বানকারী ঘোষণা দেয়, হে কল্যাণ কামনাকারী,কল্যাণের দিকে আস। হে অকল্যাণ কামনাকারী থেমে যাও।” (সুনান তিরমিযী: ৬১৮)।
৮। “রমজান মাসে কৃত প্রত্যেক মুসলমানের দোয়া কবুল হয়ে থাকে।” (মুসনাদ আহমাদ: ৭১৩৮)।
৯। “তোমাদের নিকট বরকতময় মাস রমজান এসেছে, যার সিয়াম আল্লাহ তোমাদের উপর ফরয করেছেন।” (সুনান নাসায়ী: ২০৭৯)।
১০। “সাওম পালনকারীদেরকে রাইয়ান নামক দরজা হতে ডাকা হবে।” (সহীহ বুখারী: ১৭৬৪)।
১১। “তোমাদের কারোর যুদ্ধক্ষেত্রের ঢালের ন্যায় সাওমও জাহান্নামের ঢালস্বরূপ।” (সুনান নাসায়ী: ২২০০)।
১২। “কিয়ামতের দিনে সাওম ও কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।” (মুসনাদ আহমাদ: ৬৩৩৭)।
১৩। “কোন ব্যক্তির ফিতনা তার পরিবার, জান, মাল, সন্তান ও প্রতিবেশির মাঝে। যাকে মিটিয়ে দেয় সালাত, সাওম,সাদাকাহ, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ।” (সহীহ বুখারী ৪৯৪)।
১৪। “কেবল সাওম ছাড়া আদম সন্তানের প্রত্যেক আমল তার জন্য; সাওম আমার জন্য আমি নিজে এর প্রতিদান দিব।” (সহীহ বুখারী: ১৭৭১)।
১৫। “যার হাতে আমার জীবন তার কসম, রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তা'আলার নিকট মিশকের ঘন্সাণের চেয়েও অধিক উত্তম।” (সহীহ বুখারী: ১৭৬১)।
১৬। “যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” (সহীহ বুখারী: ১৭৭০)।
১৭। “কত সাওম পালনকারী রয়েছে যারা অনাহার ছাড়া আর কিছু পায় না।” (মুসনাদ আহমাদ: ৯৩০৮)।
১৮। “সাওম ঢাল স্বরূপ।তোমাদের কেউ যেন সাওম পালনের দিনে অশ্লীল আচরণ ও শোরগোল না করে। যদি তাকে কেউ গালি দেয় বা তার সাথে ঝগড়া করে তখন সে যেন বলে ‘আমি রোযাদার'।” (সহীহ বুখারী: ১৭৭১)।
১৯। “নবীজী (স·) ছিলেন মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি দানশীল। তিনি সবচেয়ে বেশি দান করতেন রমজান মাসে।” (সহীহ বুখারী: ৫)।
২০। “যে ঈমান ও সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজানের রাতে সালাত আদায় করে তার অতীতের পাপসমূহ মা করে দেয়া হয়। (সহীহ বুখারী: ৩৬)।
২১। "সাওম ও কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।" (মুসনাদ আহমাদ: ৬৩৩৭)।
২১। “যে ব্যক্তি রমজান মাসে পেয়েও তার পাপ ক্ষমা করাতে পারেনি তার নাক ধুলায় ধূসরিত হোক।” (সুনান তিরমিযী: ৩৪৬৮)।
২২। “রমজান মাসে উমরা আদায় আমার সাথে হজ্ব আদায়ের সমতূল্য। (সহীহ বুখারী: ১৭৩০)।
২৩। “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করতেন’’ (সহীহ বুখারী: ১৮৮৫)।
২৪। “যে কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে সে রোযাদারের অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে, তবে তাতে রোযাদারের সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমবে না।' (সুনান তিরমিযী: ৭৩৫)।
২৫। “রমজান মাসে কৃত প্রত্যেক মুসলমানের দোয়া কবুল হয়ে থাকে’’।(মুসনাদ আহমাদ: ৭১৩৮)।
২৬। “তোমরা সাহরী খাও, কারণ সাহরীতে বরকত রয়েছে।” (সহীহ বুখারী: ১৭৮৯)।
২৭। “মু'মিনের উত্তম সাহরী হল খেজুর।” (সুনান আবু দাউদ: ১৯৯৮)।
২৮। “তোমরা তাড়াতাড়ি ইফতার কর এবং দেরিতে সাহরী কর’’।(আসসিলসিলাতুস সহীহা: ১৭৭৫)।
২৯। “আমাদের রব তাবারাকা ওয়া তা'আলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, কে আছ! যে আমার নিকট দোয়া করবে আমি তার দোয়া কবুল করব। কে আছ! যে আমার নিকট চাইবে আমি তাকে দান করব। কে আছ! যে আমার কাছে মা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব।” (সহীহ বুখারী: ১০৭৭)।
৩০। “মানুষ যতদিন পর্যন্ত তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের সাথে থাকবে।” (সহীহ বুখারী: ২৮২১)।
৩১। “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের পূর্বে তাজা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি তাজা খেজুর পাওয়া না যেত তবে শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি শুকনো খেজুর পাওয়া না যেত তাহলে কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন।” (সুনান আবু দাউদ: ২০০৯)।
৩২। “তিন ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়, ন্যায়পরায়ণ নেতা,রোযাদার যখন ইফতার করে,নির্যাতিত ব্যক্তি।” (সুনান তিরমিযী: ২৪৪৯)।
৩৩। “যে কোরা রোযাদারকে ইফতার করাবে সে রোযাদারের অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে, তবে তাতে রোযাদারের সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমবে না।” (সুনান তিরমিযী: ৭৩৫)।
৩৪। “যে মিথ্যা কথা ও অন্যায় কাজ পরিত্যাগ করেনি তার পানাহার ত্যাগ আল্লাহর কোন কাজে আসবে না।” (সহীহ বুখারী: ১৭৭০)।
৩৫। রাসূলুল্লাহ (স·)বলেন, যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-

“পিপাসা নিবারণ হল, শিরা-উপশিরা সিক্ত হল এবং প্রতিদান সাব্যস্ত হল ইনশাআল্লাহ ’’।(সুনান আবু দাউদ: ২০১০)।
৩৬। আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন-

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা অবস্খায় তাকে চুম্বন করতেন এবং রোযা অবস্খায় আলিঙ্গন করতেন।” (সহীহ মুসলিম: ১৮৫৪)।
৩৭। “রাসূলুল্লাহ (স.) যখন রমজানের শেষ দশকে পৌঁছতেন তখন লুঙ্গি শক্ত করে বেঁধে নিতেন (প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন), রাত্রি জাগরণ করতেন,পরিবারবর্গকে নিদন্সা থেকে জাগিয়ে দিতেন’’। (সহীহ বুখারী: ১৮৮৪)।
৩৮। “রাসূলুল্লাহ (স.) রমজানের শেষ দশকে ইবাদত-বন্দেগীতে যে পরিশন্সম করতেন অন্য সময় তা করতেন না।'’ (সহীহ মুসলিম: ২০০৯)।
==================

স্বাগতম মাহে রমজানুল মোবারক



স্বাগতম মাহে রমজানুল মোবারক 

মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 

---------------------- 

বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম।

আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদানিন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়ালা আলিহী ওয়াছহাবিহী ওয়াবারিক ওয়াছাল্লিম।

রমজান মাসের পরিচয়,মাহাত্ম্য,প্রয়োজনীয়তা এবং রোযা পালন নিয়ম ঃ

স্বাগতম মাহে রমজানুল মুবারক। একটি বছর ঘুরে আবারও অসংখ্য নিয়ামত ও সুসংবাদের বার্তা নিয়ে আমাদের দরজায় এসে উপস্থিত হলো মানবজাতির ইহলৌকিক কল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তির দিকদর্শন গ্রন্থ পবিত্র আল কুরআন অবতীর্ণের মাস, আত্মিক প্রশান্তি লাভের মাস, ইসলামের বিজয়ের মাস, বরকতের মাস, গুনাহ মাফের মাস, হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রাত ক্বদরের রাত বিশিষ্ট মাস, দোয়া কবুলের মাস, ধৈর্য ধারণের মাস, সাহায্য-সহযোগিতা-সমবেদনা-সহমর্মিতা প্রদর্শনের মাস, মঙ্গল ও কল্যাণের প্রতি আহ্বানের মাস, সাম্য–মৈত্রী-ঐক্য-ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের মাস, রোজা পালনের মাস, স্বর্গদ্বার সমূহ উন্মুক্ত এবং নরকদ্বার সমূহ বন্ধের মাস, নিয়ামতপূর্ণ মোবারকময় মাস, নরক থেকে মুক্তির মাস, পবিত্র মাস, সংযম সাধনার মাস, স্থিতিশীলতা–শান্তি-সমপ্রীতি–নিরাপত্তার মাস, দশমাস রোজা পালনের সমপরিমাণ সাওয়াব বিশিষ্ট মাস, আত্মশুদ্ধির মাস, আত্মবিশ্লেষণের মাস, সমবেদনা প্রকাশের মাস, রিজিক বাড়ার মাস, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাস, তাকওয়া অর্জনের মাস, আত্মোন্নয়নের মাস, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস এবং মুসলমানের শান্তির সওগাত পবিত্র মাহে রমজান।



ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয় স্তম্ভটি হচ্ছে সিয়াম বা রোযা। রোযা অর্থ আত্মসংযম। মাহে রামাদান বা রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আল্লাহর তরফ থেকে এক বিশেষ রহমত স্বরুপ। এই রমজান মাস আল্লাহর তরফ থেকে বান্দার জন্য রহমত-বরকত-মাগফেরাত হিসেবে অভির্ভূত হয়ে থাকে। মানুষের দেহ ও মনকে সংযমের শাসনে রেখে ইসলামি শরিয়ত বা জীবনবিধানের পরিপন্থী যাবতীয় অসামাজিক ও অমানবিক কাজ পরিহার করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও তাকওয়া অর্জনের কঠোর সিয়াম সাধনাই হচ্ছে মাহে রমজানের মূলকথা। রোযা পালনের মধ্য দিয়ে মানুষের ইচ্ছাশক্তির বিকাশ, সংযম ও আত্মোন্নয়ন ঘটে। যা কিছু কল্যাণকর তার সঙ্গে রয়েছে এই পবিত্র মাসের সম্পর্ক।

মানুষের কথাবার্তায়, আচার-আচরণে, কাজকর্মে ও চলাফেরায় ধৈর্য ধারণের মাধ্যমেই সিয়াম সাধনা পরিপূর্ণ হয়। এটি এমন এক মাস যে মাসে মানুষ নিজেকে পরিশুদ্ধ করার সুযোগ পায়। পরিশুদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের তওফিক অর্জন করে।

এটি এমন এক মাস যে মাসে পাপ থেকে ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ ঘটে। কোরআন এবং হাদীসে এই রমজান শরীফ সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিধান আবর্তিত হয়েছে এবং প্রতিটি সক্ষম মুসলমানের উপর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, সাথে সাথে এর অসংখ্য ফজিলতও বর্ণনা করা হয়েছে। রোজাদারের পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহপাক তার বান্দাদেরকে প্রদান করবেন বলে ঘোষনা করা হয়েছে। রমজান হলো কৃচ্ছ্রসাধন করে আখিরাতের সম্বল সংগ্রহের এক উত্তম সময়। জাগতিক ধন-সম্পদ উপার্জনে যেমন বিশেষ মৌসুম ও উপলক্ষ আছে, তেমনি রমজান মাসও সৎকর্ম ও আখিরাতের নেকি লাভের উত্তম মৌসুম। আর এসব আমলের প্রতিদান হলো বেহেস্ত। পবিত্র রমজান মাস আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা ও মার্জনালাভের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট মাস। রমজান মাসের সাধনা একজনকে কালগত দুটি দিকের সাথেই সম্পৃক্ত করে। একদিকে আমরা অতীতের সাথে সম্পৃক্ত হই কৃত মন্দ কাজগুলোর এবং অমনোযোগিতা, ব্যর্থতা ও অবহেলার খতিয়ানের জন্য। সেজন্য আমরা ক্ষমা প্রার্থী হই আল্লাহর নিকট। অপরদিকে, নিজেদেরকে প্রস্তুত করি ভবিষ্যতের জন্য। রোযা কেবল খাবার ও সম্ভোগ থেকে বিরত থাকাকে বুঝায় না, সব রকমের অন্যায়-অশুভ চিন্তা, আকাঙ্ক্ষা ও কাজ থেকে দূরে থাকাও বুঝায়। মানুষের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নয়নে রোযা সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিজেকে পরিশুদ্ধ করার, শোভামণ্ডিত করার, আল্লাহর সাথে ও অন্যদের সাথে নিজেকে আরও ঘনিষ্ঠ করার সাধনার এ মাসে আমরা আমাদেরকে চিন্তা, মনন, বাচন, আচরণ ও কর্মে আরও উন্নত করতে পারবো এবং সামনের দিনগুলো আমরা আরও সুন্দরভাবে যাপন করতে শিখব এই আশা করতে পারি নিজের জন্য এবং সকল সিয়াম সাধকদের জন্য।

মাহে রমজানের রোজার উদ্দেশ্য হচ্ছে পশু প্রবৃত্তিকে দমন করা এবং ঈমানি শক্তিতে বলীয়ান হওয়া। মাহে রমজানে সিয়াম সাধনা বা রোযাব্রত পালন মানব জীবনকে পূতপবিত্র ও সুন্দরতর করে গড়ে তোলার একটি অত্যন্ত কার্যকরী পন্থা। মানুষের আত্মশুদ্ধির একটি বলিষ্ঠ হাতিয়ার সিয়াম পালন বা রোযা। বিশেষত, মাহে রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে মানুষ তার পাশবিক প্রবৃত্তিকে সংযত এবং আত্মিক শক্তিকে জাগ্রত ও বিকশিত করে তোলার পরিপূর্ণ সুযোগ লাভ করে। কুপ্রবৃত্তির হাতিয়ার বা অস্ত্রকে দুর্বল করে বশে আনার লক্ষ্যে আল্লাহ তাআলা সিয়াম সাধনার অপূর্ব সুযোগ দিয়েছেন। মাহে রমজানের রোযা আত্মশুদ্ধি ও চরিত্র উন্নয়নের এক বিশেষ প্রক্রিয়া। সিয়াম বা রোযা দ্বারা শরীর, মন ও আত্মা বিধৌত হয়। দেহ যখন সংযমের শাসনের অধীন থাকে, আত্মা তখন সবল হয়ে ওঠে। সত্যকে গ্রহণ ও ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করে। রোযা বা সিয়াম সাধনার চর্চায় মানুষ এক অমিয় সুধা লাভ করে। এতে মানুষ জাগতিক লোভ-লালসা, অতিরিক্ত ধনসম্পদ অর্জনের মারাত্মক ব্যাধি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ পায়। আর অন্তরের বিশুদ্ধতা বা আত্মশুদ্ধির হাতিয়ার রোযা দ্বারাই অর্জিত হয়। মাহে রমজান আত্মশুদ্ধির মাস। এ মাসে মানবীয় মন্দ স্বভাবগুলো থেকে বিরত থাকা রোযা আদায়ের জন্য শর্তারোপ করা হয়েছে। তাই পবিত্র রমজান মানুষকে এসব মন্দ স্বভাব পরিহার করে সৎ স্বভাব অর্জন করতে শিক্ষা দেয়। সিয়াম সাধনায় পাশবিক প্রবৃত্তি যখন দমে যায়, তখন মানবাত্মার তেজ ও প্রাণশক্তি বাড়তে থাকে। রোযার দ্বারা মানুষের আত্মার উন্নতি সাধিত হয়।

এ রমজান মাসে যারা ধৈর্যের সঙ্গে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবেন, মহান আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন। সিয়াম বা রোযা ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে ত্যাগের মাধ্যমে ধৈর্য ধারণের অভ্যাস গড়তে শেখায়। এ মাস মানুষকে ধৈর্যশীল হওয়া ও সংযমবোধ শেখায়। ঈমান ও সৎকর্ম চালু রাখা এবং সত্য-ন্যায়ের সংরক্ষণ ব্যক্তি ও সমাজের জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ। এ কঠিন কাজ সম্পাদনের জন্য যে ধৈর্য ও সহনশীলতার প্রয়োজন, তা মাহে রমজানের দীর্ঘ সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। মাহে রমজানে কঠোরভাবে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে ধৈর্য ও সহনশীলতার যে মানবিক গুণটি অর্জিত হয়, তা শুধু ব্যক্তি পর্যায়ের গুণই নয় বরং এ মহৎ গুণটি কারও মধ্যে সৃষ্টি হলে ঈমানদারের সমষ্টিগত জীবনে অপরের জন্য তা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে, মানুষকে কঠিন ও দুর্গম পথপরিক্রমায় চলতে শক্তি জোগায়। রোযা পালনের মাধ্যমে অর্জিত ধৈর্য ও সহনশীলতা ঈমান ও তার ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম সাধনায় প্রচুর নিয়ামক শক্তি সঞ্চার করে। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জিত সহনশীলতা তাই শুধু ব্যক্তিগত কল্যাণই বয়ে আনে না, বরং মুসলমান সমাজের জন্য একটি দলগত কল্যাণ বয়ে আনে।

আল্লাহ পাক তাঁর অসীম দয়া, ক্ষমা ও পরিত্রাণ প্রাপ্তির জন্য মাসব্যাপী রোজা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, যেন সংযমের মাধ্যমে বান্দারা আত্মনিয়ন্ত্রণ ও পরিশুদ্ধি অর্জন করেন। রোজার উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মসংযম, আত্মসংশোধন ও কৃচ্ছ্র সাধন। মানবজীবনকে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও পরিশুদ্ধ করে গড়ে তোলার একটি অত্যন্ত কার্যকরী দৈহিক ইবাদত রোযা। শারীরিক রোযার মূল ভিত্তি হচ্ছে অন্তরের রোযা। তাই রোযার জন্য নিজেদের মন-মানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা ও প্রবৃত্তিকে দমন ও কলুষমুক্ত হতে হবে। সৎ নিয়ত, স্বচ্ছ চিন্তা-পরিকল্পনা, একনিষ্ঠতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও পরিশুদ্ধতা হচ্ছে অন্তরের মূল কথা।

রোযা মানুষকে আত্মনিয়ন্ত্রণ লাভের শিক্ষা দেয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেহির খাওয়া, ইফতার করা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা, জামাতে খতমে তারাবি পড়া প্রভৃতি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে নিয়মানুবর্তিতাও শেখায়। মাহে রমজানে ইফতার থেকে সেহরী পর্যন্ত যে রুটিন অনুযায়ী দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম ধর্মীয় কার্যক্রম পালন করতে হয়, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ। মাহে রমজান মানুষকে সৎ, নির্লোভ ও আত্মসংযমী হতে শেখায়। কাজকর্মে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, সর্বোপরি এমন এক আলোকিত মানুষ হতে শেখায়, যিনি ঘুষ-দুর্নীতি ও অপকর্ম থেকে মুক্ত। কাম, ক্রোধ, লোভ-মোহ, পরচর্চা, মিথ্যাচার, যেকোনো ধরনের অনিষ্টকর ও পাপ কাজ ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। রোজাদার ব্যক্তি তাঁর জাগতিক লোভ-লালসার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও প্রবণতার সব খারাপ দিককে দূরে সরিয়ে রাখেন এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে কৃচ্ছ্র সাধন করে নিজেকে সর্বোত্তম মানুষে রূপান্তরিত হওয়ার এ সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগান। ফলে তিনি নম্রতা, সংযম, উদারতা, শিষ্টতা ইত্যাদি সৎগুণ চর্চার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতিনিধিরূপে নিজেকে পরিপূর্ণতা দিতে পারেন। মানুষের জন্য তাই সিয়াম সাধনা একটি উৎকৃষ্ট আত্মশুদ্ধির কর্মকৌশল, যে কৌশল অবলম্ব্বনে একদল পরিশুদ্ধ মানুষ সব কলুষতার ঊর্ধ্বে উঠে, পূতপবিত্র পরিশীলিত মন নিয়ে নিজেকে মানবসেবায় উৎসর্গ করতে পারে।

মাহে রমজানে সিয়াম সাধনা মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও সাম্য সৃষ্টি করে। মাহে রমজানে সিয়াম সাধনা বা রোযাব্রত পালন সমাজে সাহায্য-সহযোগিতা, সমবেদনা তথা সহমর্মিতা প্রদর্শনের অন্যতম মাধ্যম। মাহে রমজান সামাজিক ঐক্য ও নিরাপত্তা বিধানে এবং একটি সংঘাতমুক্ত গঠনমূলক আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। রমজান মাসে কঠোর সিয়াম সাধনার মাধ্যমে রোজাদার ব্যক্তিরা অপরের বদনাম ও কূটনামি থেকে বিরত থাকেন। তাঁরা সকল প্রকার ঝগড়া-বিবাদ, ফিতনা-ফ্যাসাদ, অযথা বাগিবতণ্ডা ও যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকেন। তাঁদের মুখ থেকে কোনো প্রকার অশ্লীল কথা বের হয় না। যদি কোনো রোযাদার লোককে কেউ গালিগালাজ ও ঝগড়া-বিবাদে প্ররোচিত করতে চায়, তখন সেই রোযাদার যদি উত্তেজিত না হয়ে ঝগড়া-বিবাদ ও গালিগালাজ থেকে দূরে সরে যান, তাহলে সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট হয় না এবং একটি আদর্শ নৈতিকতাপূর্ণ সহনশীল সমাজ গড়ে ওঠে। মাহে রমজানে সমাজের স্থিতিশীলতা, শান্তি, সমপ্রীতি ও নিরাপত্তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিদ্যমান। সমাজের প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মানুষ যদি মাহে রমজানের মতো অন্যান্য মাসেও আত্মসংযমের সঙ্গে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-দল-মতনির্বিশেষে সব ধরনের বিরোধ এড়িয়ে যান, তাহলে কোনোরূপ সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় না। তাই সমাজ জীবনে পরস্পরের প্রতি সাহায্য-সহযোগিতা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এবং সাম্য, মৈত্রী, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের ক্ষেত্রে রোযার ভূমিকা অনস্বীকার্য। মাহে রমজান প্রকৃত অর্থেই যেন মানুষের মনের পশুত্ব, আত্মঅহমিকা, হিংস্রতাসহ সব অমানবিক দোষ-ত্রুটি জ্বালিয়ে ভস্ম করে ও ধৈর্য-সহনশীলতা বিকশিত করে।

মুসলিম উম্মাহর জন্য রমজান মাসের শ্রেষ্ঠতম নিয়ামত আল্লাহর বাণী আল কোরআনুল কারিম। এই মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়। মানব জাতির পথ-প্রদর্শক হিসেবে আল্লাহ এই মহাগ্রন্থ নাজিল করেন। মাহে রমজান হচ্ছে পবিত্র কোরআন মজিদের শিক্ষা অর্জন ও বিস্তারের মাস।
রোযাদারেরা যেন রোযা পালন ও পবিত্র কোরআনের মহিমাময় আদর্শের পরিপূর্ণ অনুশীলনের মাধ্যমে মাহে রমজানে প্রশিক্ষণ লাভ করতে পারেন এবং জীবন-দর্শন হিসেবে আল-কোরআনের আলোকে নিজেদের চরিত্র গঠন করতে পারেন,পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে নিজেদের প্রশিক্ষিত করার জন্য মাহে রমজানই উত্তম। এই মাহে রমজানে সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানের আল-কোরআনের চর্চা ও অনুশীলনে আত্মনিয়োগ করা বাঞ্ছনীয়। পবিত্র কোরআনের মর্মবাণী উপলব্ধি করে ইসলামের বিধান অনুসারে জীবনযাপন করতে পারলেই মাহে রমজানের যথার্থ হক আদায় হবে। রমজান মাস আমাদের জন্য কোরান অনুযায়ী নিজেকে গড়ার বিশেষ প্রশিক্ষণ কাল এবং আমাদেরকে কোরান দানের জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা বিশেষভাবে প্রকাশের কাল। রমজান মাসে আল্লাহ কোরান অবতীর্ণ করা শুরু করেন।

যে রাতে প্রথম কোরান নাজিল হয় সে রাতকে আল্লাহ মহিমান্বিত রাত ও মর্যাদার রাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ রাতের মহিমা ও মর্যাদা কোরানের জন্যই, কোরানের মহিমা ও মর্যাদার জন্য। আল্লাহ কোরানের মাধ্যমে ঘোষণা করেছেন নিজের এবং জগতে মানুষের মহিমা ও মর্যাদা। কাজেই এ রাত হয়ে উঠেছে প্রকৃত প্রস্তাবে আল্লাহ ও মানুষের মহিমা আর মর্যাদার রাত। কোরান এসেছে মানুষের পথ-নির্দেশনার জন্য। এ রাতেই শুরু হয়েছিল মানুষের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞা পূর্ণ বিষয়াদির নিষ্পত্তি এবং মানুষের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় শান্তির সম্প্রসারিত বার্তা। এ রাত তাই আমাদের কাছে সহস্র মাসের চেয়েও উত্তম রাত। এ রাত রমজান মাসের রাত এবং রমজান মাসের শেষ দশ দিনের কোন এক বেজোড় রাত। কাজেই রমজান মাস এবং এ মাসের শেষ দশ দিন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রমজান মাস এবং কদরের রাত মানব জাতির ইতিহাসে মানুষের সাথে তার প্রতিপালকের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ যোগাযোগের মাস ও রাত।

আল্লাহ এ মাসকেই বেছে নিয়েছেন মানুষের জন্য বিশেষ সাধনার মাস হিসেবে। এই সাধনাই সিয়াম সাধনা। তদুপরি, এ মাসের শেষের দশ দিন আমরা পালন করি আরও কঠোর সাধনা যাকে বলা হয় এতেকাফ। উদ্দেশ্য একটিই আর তা হলো তাকওয়া অর্জন। তাকওয়ার অর্থ হলো - সচেতনতা, সংযম, বিচারশীলতা, সতর্কতা। এ সচেতনতা যেমন আল্লাহ সম্বন্ধে, তেমনই নিজের সম্বন্ধে, তেমনই জীবনে দায়িত্বের গুরুভার সম্বন্ধে।

মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা বা রোযাকে দেহের জাকাত স্বরূপ বলা হয়েছে। জাকাত আদায় করলে যেমন মানুষের উপার্জিত সব ধনসম্পদ পবিত্র হয়, তেমনি রমজান মাসে রোজা পালন করলে সারা শরীর পবিত্র হয়ে যায়।বস্তুর পবিত্রতা হাসিলের জন্য যেমন জাকাত দিতে হয়, তেমনি মানুষের শরীর তথা আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য সত্যিকারের সিয়াম বা রোযা পালন করতে হয়।

জাকাত দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়ের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও রমজান মাসই জাকাত আদায়ের সর্বোত্তম সময়। মাসব্যাপী রোযা রেখে রোজাদার লোকেরা পরস্পরের প্রতি সহমর্মী ও সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন। ফলে বিত্তবানেরা বেশি বেশি দান-খয়রাত, সাদকা, জাকাত দিতে উৎসাহিত হন। কেননা রমজান মাসে যেকোনো ধরনের দান-সাদকা করলে অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি সওয়াব হাসিল হয়। তাই রমজান মাসে রোজাদার মুমিন বান্দারা একসঙ্গে জাকাত ও ফিতরা আদায় এ দু’টি আর্থিক ইবাদত করে থাকেন।

মাহে রমজানসহ সারা বছর নিজের ও পরিবারের যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে যদি কোনো মুসলমানের কাছে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ বছরের আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যদি কমপক্ষে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রৌপ্য অথবা সমমূল্যের ধন-সম্পদ থাকে, তবে তার সম্পদের শতকরা আড়াই টাকা হিসাবে আল্লাহর নির্ধারিত খাতে গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বণ্টন করতে হয়, আর এটাই হলো জাকাত। যার ওপর জাকাত ফরজ হয়েছে, তাকে অবশ্যই জাকাত দিতে হবে। আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক ধন-সম্পদের ৪০ ভাগের ১ ভাগ অসহায় গরিব-দুঃখীদের জাকাত প্রদান করে রোজাদার আত্মিক প্রশান্তি লাভ করে থাকেন।

জাকাত গরিবের প্রতি ধনীর অনুগ্রহ নয়, বরং তা গরিবের ন্যায্য অধিকার। এভাবে জাকাতের মাধ্যমে ধনী রোজাদারেরা গরিবদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করেন। ধনী রোজাদার লোকেরা যদি ঠিকমতো জাকাত আদায় করেন, তাহলে সমাজে কোনো অন্নহীন, বস্ত্রহীন, আশ্রয়হীন, শিক্ষাহীন লোক থাকতে পারে না। মাহে রমজানে যে জাকাত-ফিতরা প্রদান করা হয়, কতিপয় ধনী লোক গরিবদের প্রতি তা দয়া বা অনুগ্রহ বলে মনে করেন। আর গরিব-দুঃখীদের মনে করা হয় করুণার পাত্র। কিন্তু ধনীর অর্থ-সম্পদে দরিদ্র অসহায়দের অধিকার রয়েছে। রমজান মাসে ধনী লোকেরা জাকাত-ফিতরা দিয়ে সেই দায়িত্বমুক্ত হচ্ছেন মাত্র। আর জাকাত-ফিতরা আদায় না করলে তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করেননি বলে দোষী সাব্যস্ত হবেন। জাকাত-ফিতরা বা দান-খয়রাত করুণার বিষয় নয়, এগুলো হলো বান্দার হক। রোজা পালনকারী প্রত্যেক ধনী ব্যক্তিরই আল্লাহকে ভয় করে কড়ায়-গন্ডায় জাকাত আদায় করা উচিত।

রমজান মাসে বঞ্চিতদের অধিকার রক্ষায় ও সমাজের ধনী-দরিদ্রের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে জাকাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জাকাতের প্রকৃত হক্বদার হচ্ছে তারা, যারা কর্মক্ষমতাহীন এবং যারা কর্মক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও উপার্জনহীন অথবা পর্যাপ্ত পরিমাণে উপার্জন করতে পারছে না। এমতাবস্থায় দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দুর্বিপাকে ধনী লোকেরা যদি রমজান মাসে অগ্রিমও জাকাত আদায় করেন, তাহলে সব ধরনের অভাবী, দুর্দশাগ্রস্ত, দুর্গত মানুষের অভাব দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিধান ও পুনর্বাসন করা সহজ হতে পারে। মাহে রমজানে জাকাতকে সঠিক খাতে এবং সহায়-সম্বলহীন দুস্থ এতিমদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে ব্যবহার করতে পারলে সমাজ থেকে সহজেই অভাব-অনটন ও দারিদ্র্য বিমোচন করা সম্ভব হবে।

মানুষের সুপ্রবৃত্তিগুলো মানব মনে ইসলাম-নির্দেশিত শান্তি, শৃঙ্খলা, ঐক্য, সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব, প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা প্রভৃতি মহৎ কাজের প্রতি অনুরাগ এনে দেয়। আর কুপ্রবৃত্তি বা কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য এ ষড়িরপুসমূহ মানবজীবনে অনৈক্য, হিংসা, বিদ্বেষ, অন্যায়, অত্যাচার, ব্যভিচার, নির্মমতা, পাশবিকতা, হত্যাকাণ্ড, ধনসম্পদের লোভ-লালসা, আত্মসাৎ প্রবণতা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, চাঁদাবাজি, ঘুষ-দুর্নীতি, অশান্তি, বিশৃঙ্খলা প্রভৃতি অনৈসলামিক ও অমানবিক কার্যকলাপের উদ্ভব ঘটায়।
মানুষের কুপ্রবৃত্তির এ তাড়না থেকে আত্মশুদ্ধির উপায় এবং উন্নততর জীবনাদর্শের অনুসারী হওয়ার জন্যই মাহে রমজানে রোজা রাখার বিধান করা হয়েছে।

রোজার মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তির ওপর বিবেকের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়, এর দ্বারা মানুষের পাশবিক শক্তি অবদমিত হয় এবং রুহানি শক্তি বৃদ্ধি পায়। রমজান মাসের প্রশিক্ষণের ফলে একজন ধর্মভীরু মানুষ হালাল খানাপিনা এবং জৈবিক রিপুর তাড়না ও কামনা-বাসনা থেকে দূরে থাকতে সক্ষম হন।প্রতিটি রোযাদারের মধ্যে যখন মানবিক গুণাবলি বিকশিত হবে, প্রতিটি মানুষ যখন হবে প্রকৃত মানুষ, থাকবে না হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, হানাহানি, সন্ত্রাস, ঘুষ-দুর্নীতি, অরাজকতা, সামপ্র্রদায়িকতা ও মানুষে মানুষে ভেদাভেদ। চূর্ণ হবে মানুষের অহমিকা ও আমিত্ববোধ, যা সব অন্যায় ও অনাচারের জন্মদাতা। সৃষ্টি হবে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি। এ অশান্ত পৃথিবীর বুকে বয়ে চলবে শান্তির সুশীতল বায়ু। এ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিবছর মাহে রমজান মুসলিম উম্মাহর দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়।

রোজার মূল লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি আর রোযার ব্যবহারিক উদ্দেশ্য হলো কুপ্রবৃত্তি দমন, আত্মসংশোধন, আত্মসংযম ও খোদাভীতি অর্জন। রমজান মাসের রোযার মাধ্যমে রোযাদার খোদাভীতি অর্জন করেন, সৃষ্টিকর্তার শোকর আদায় করতে শেখেন এবং আল্লাহর হুকুমের কদর বুঝতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে সব কাজকর্মের মধ্য দিয়ে রোযাদার মানুষ মূলত আল্লাহর আদেশ-নিষেধগুলোকে মেনে চলার চেষ্টা করেন। রোযা রাখার কারণে মানুষ নিজের নফস বা আত্মাকে কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ প্রভৃতি কুপ্রবৃত্তি থেকে পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে। মানুষ তার সমস্ত কামনা-বাসনা ও লোভ-লালসা পরিত্যাগ করে বিভিন্ন যাতনা ও দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে খোদাভীতি অর্জনে ব্রতী হয়।

দেহকে আত্মনিয়ন্ত্রণে আনতে হলে দৈহিক প্রেরণাকে সংযত করতে হয়। আত্মিক শক্তিকে সমৃদ্ধ করতে হয়। দৈহিক কামনা-বাসনাকে সংযত করার জন্য একদিকে ক্ষুধা-তৃষ্ণার কষ্ট সহ্য ও রিপুর তাড়নাকে পরিত্যাগ করতে হয়, অন্যদিকে জিহ্বা ও মনের চাহিদা এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এভাবে দৈহিক আকাঙ্ক্ষা ও প্রেরণাকে যত সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, অন্য কোনোভাবে তা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যবিশারদগণ বলেন - শরীরটাকে ভালো রাখতে চাও তো রোযা করো। নীরোগ, দীর্ঘজীবী ও কর্মক্ষম সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে বছরের কিছুদিন উপবাসের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খাদ্যাভাব বা আরাম-আয়েশের জন্য মানুষের শরীরের যে ক্ষতি হয়, রোযা তা পূরণ করে দেয়।

মাহে রমজানে একজন রোযাদার সারা দিনের ক্লান্তি, অবসাদ ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে সিয়াম সাধনা করে উন্নত মানবিক গুণাবলি অর্জনে সক্ষম হন। মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার মধ্যে রোযাদারদের জন্য রয়েছে অশেষ কল্যাণ ও উপকার। স্বাস্থ্যগতভাবে এবং মানসিক উৎকর্ষ সাধনের ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। রোযার মাধ্যমে মানুষের আত্মিক ও নৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটে। লোভ-লালসা, হিংসা-ঈর্ষা, প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষমুক্ত হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিশ্ব মানবসমাজ ও সম্প্রদায়কে সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য মাহে রমজান এক নিয়ামক শক্তি। রোযার মধ্যে এমন একটি অপ্রতিরোধ্য আধ্যাত্মিক চেতনাশক্তি আছে, এমন এক বরকতময় ও কল্যাণকর উপাদান আছে, যা মানুষকে সব রকমের পাপাচার, অনাচার থেকে ঢালস্বরূপ রক্ষা করে, তেমনি তাকে পাপের কালিমামুক্ত এক পবিত্র, পরিশুদ্ধ খাঁটি মানুষ করে তোলে।

রমজান মাসে শুধু রোযাদারই নন বরং আল্লাহর সব সৃষ্টি তাঁর অশেষ রহমতলাভে ধন্য হয়। এ নিয়ামতপূর্ণ মোবারকময় মাসে আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিনের অপার রহমতের দরজাগুলো তাঁর নেক বান্দাদের জন্য খুলে দেয়া হয়। দরজা খোলার অর্থ হচ্ছে, রমজান মাসে আল্লাহর অসীম রহমত উম্মতের ওপর অবিরাম বৃষ্টির মতো বর্ষিত হতে থাকে। সৎকাজ ও নেক আমলগুলো আল্লাহতায়ালার দরবারে পেশ করা এবং দোয়া কবুল হয়।

মানবজীবনের সামগ্রিক কল্যাণ লাভের প্রত্যক্ষ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা রমজান মাসের সিয়ামের মধ্যে নিহিত রয়েছে। রোযার মৌলিক উদ্দেশ্যই হচ্ছে জীবনকে পবিত্র ও পরিশীলিত রাখা। আর একটি পবিত্র ও পরিশীলিত জীবন সর্বদাই সমাজ ও মানবতার জন্য নিবেদিত হয়ে থাকে। রোযাদার মাহে রমজানের মাসব্যাপী নফসের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করেন, যার ফলে পরিশুদ্ধতার সৌকর্য-শোভায় তিনি সুশোভিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। রোযা পালনের মধ্য দিয়ে মানুষ পরিশুদ্ধতার শীর্ষে পৌঁছাতে পারে।
মাহে রমজানের আরেক অর্থ জ্বালিয়ে ফেলা, ভস্ম করা। এবারের মাহে রমজান প্রকৃত অর্থেই যেন মানুষের পশুত্ব, আত্মঅহমিকা, হিংস্রতাসহ সব অমানবিক দোষ-ত্রুটি ভস্ম করে, ধৈর্য-সহনশীলতা, প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা-হূদ্যতা বিকশিত করে এবং মানবিক গুণাবলি অর্জন করে যেন আমরা মুত্তাকি হয়ে নিজেদের মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করতে পারি।
রমজান মাস যেন মানুষে মানুষে সমপ্র্রীতি ও ভালোবাসা গড়ে ওঠার অবলম্বন হয়। সমাজ থেকে যেন সব ধরনের অরাজকতা-অনাচার দূরীভূত হয়, মানুষ যেন খুঁজে পায় সত্য, সুন্দর ও মুক্তির পথ। আল্লাহ তাআলা আমাদের যথাযথভাবে মাহে রমজানের গুরুত্ব উপলব্ধি করার এবং এ মাসের মূল উদ্দেশ্য মানবজীবনকে সুন্দর-সুশৃঙ্খল ও পরিশীলিত করার জন্য বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দান করুন! আমীন।

রোযা পালনের সংক্ষিপ্ত নিয়ম

যাদের উপর রোযা ফরয ঃ

ক) মুসলিম নর-নারীর উপর রোযা ফরয।
খ) প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীর উপর রোযা ফরয।
গ) সুস্থ মস্তিক সম্পন্ন নর-নারীর জন্য রোযা ফরয।
ঘ) মুকিম নর-নারীর উপর রোযা ফরয।
ঙ) সামর্থ্যবান নর-নারীর উপর রোযা ফরয।
চ) মাসিক বন্ধ এমন নারী।

যাদের উপর রোযা ফরয নয় ঃ

ক) অপ্রাপ্ত বয়স্কের উপর রোযা ফরয নয়।
খ) পাগলের উপর রোযা ফরয নয়।
গ) মুসাফিরের উপর রোযা ফরয নয়।
ঘ) সামর্থ্যহীন লোকের উপর রোযা ফরয নয়। (যেমন অতি বার্ধক্যের কারণে যে ভাল-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না এমন ব্যক্তি। যে অসুস্থতার কারণে রোযা রাখতে সামর্থ নয় এমন ব্যক্তি। গর্ভবতী ও দুগ্ধদান কারী নারী নিজের ও সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করলে রোযা ছাড়তে পারবে। পরে কাযা আদায় করে নিবে)।

যে সব কারনে রোযা ভঙ্গ হয় ঃ

ক) রোযার সময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা। (চাই তা স্বাস্খ্যের জন্য উপকারী হোক বা তিষ্ঠার জন্য।) যেমন ধুমপান,তামাক পান ইত্যাদি।
খ) রোযা অবস্খায় যৌন মিলন ঘটানো। (এতে কাযা ও কাফ্ফারা উভয়টি ওয়াজিব হবে।)
গ) জাগ্রত অবস্খায় চুম্বন, স্পর্শ, হস্তমৈথুন, আলিঙ্গন, সহবাস ইত্যাদির মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটানো।
ঘ) পানাহারের বিকল্প হিসেবে রক্তগ্রহণ, স্যালাইনগ্রহণ, এমন ইনজেকশন নেয়া বা আহারের কাজ করে, যথা- গ্লুকোজ ইনজেকশন ইত্যাদি নেয়া। অনুরূপ রক্তরণ মিটানোর জন্য ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্ত প্রদান করা।
ঙ) ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা। তবে অনিচ্ছাকৃত বমি করলে তাতে রোযা ভঙ্গ হবে না।
চ) মহিলাদের হায়েজ (ঋতুস্রাব) ও নিফাস (প্রসবজনিত রক্তক্ষরণ) হওয়া।

যে সব কারনে রোযা ভঙ্গ হয় না ঃ

ক) ভুলবশত পানাহার বা স্ত্রী সহবাস করা।(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কেউ যদি রোযা অবস্খায় ভুলবশত: পানাহার করে সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে; কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।)
খ) শরীর বা কাপড়ে সুগন্ধি ব্যবহার করা। এমনকি নাকে মুখে ঘন্সাণযুক্ত তেল ব্যবহার করা। চোখে সুরমা ব্যবহার করা।
গ) রোযা অবস্খায় স্বপ্নদোষ হওয়া। এমনকি কারো প্রতি অসৎ দৃষ্টি নিক্ষেপের কারণে বীর্যপাত ঘটা। অনুরূপ কোন রোগের কারণে উত্তেজনা ব্যতীত বীর্যপাত ঘটা।
ঘ) স্বাভাবিক কোন কারণে যেমন কেটে যাওয়া, দাঁত উঠানো, নাকের রোগ ইত্যাদিতে রক্ত বের হলে রোযা ভাঙ্গবে না।
ঙ) স্বামী-স্ত্রী চুম্বন-আলিঙ্গন। তবে শর্ত হল - বীর্যপাত না ঘটা। (তবে যে ব্যক্তি চুম্বন-আলিঙ্গনের পর নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না বলে আশংকা রয়েছে, তার জন্য এরূপ করা সঠিক হবে না।)
চ) অপবিত্র অবস্থায় সকাল করা। এমনকি তাতে সারাদিন গড়িয়ে গেলেও রোযা নষ্ট হবে না।
ছ) সাওম পালন অবস্থায় মিসওয়াক করা।
জ) খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করার জন্য জিহ্বায় তার স্বাদ গ্রহণ করা। (তবে তা যেন পেটে চলে না যায়।)
ঝ) অসুস্থতার কারণে গ্যাস জাতীয় স্প্রে ব্যবহার করা। ডায়াবেটিস রোগীর ইনসুলিন ব্যবহার করা।
ঞ) পরীক্ষার জন্য রক্ত প্রদান করা।
ট) কুলি করার সময় অনিচ্ছাকৃত মুখে পানি ঢুকে যাওয়া।
ঠ) সূর্য ডুবে গেছে অথবা ফজর এখনো হয়নি ভেবে পানাহার করা।
ড) এমন ইনজেকশন নেয়া যা খাবারের সহায়ক নয়। যেমন পায়ুপথে ডুশ ব্যবহার করা অথবা রোগে ইনজেকশন নেয়া।

যেসব কারণে রমজান মাসে রোযা ভঙ্গ করা যেতে পারে, কিন্ত পরে কাজা আদায় করতে হবে ঃ

ক) মুসাফির অবস্থায়।
খ) রোগ বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কা থাকলে।
গ) গর্ভের সন্তানের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে।
ঘ) যদি এমন তৃষ্ণা বা ক্ষুধা হয়, যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে।
ঘ) শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে।
ঙ) কোনো রোযাদারকে সাপে দংশন করলে।
চ) মেয়েদের হায়েজ-নেফাসকালীন রোযা ভঙ্গ করা যায়।

রোযা ভঙ্গের কাফফারা ঃ

শরিয়তে কঠোর নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বিনা কারণে কেউ রোযা ভঙ্গ করলে তার উপর কাজা ও কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোযা ভঙ্গ হবে ততটি রোযা আদায় করতে হবে। কাজা রোযার ক্ষেত্রে একটির পরিবর্তে একটি।

কাফফারা আদায় করার তিনটি নিয়ম।

ক) এক একটি রোযা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোযা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোযাই রাখতে হবে, মাঝে কোনো একটি রোযা ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
খ) যদি কারও জন্য ৬০টি রোযা পালন সম্ভব না হয়, তাহলে সে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খানা দেবে। অপরদিকে কারও অসুস্থতাজনিত কারণে রোযা রাখার ক্ষমতা না থাকলে ৬০ জন ফকির, মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে প্রতিদিন দুই বেলা করে পেট ভরে খানা খাওয়াতে হবে।
গ) গোলাম বা দাসী আজাদ করে দিতে হবে।
===============================

বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১২

Ramadan Prayer Times Schedule Of Madina Al Munawarah, Saudi Arabia





Ramadan Prayer Times Schedule Of


Madina Al Munawarah, Saudi Arabia


Ramadan Month:- 9/1433, 7-8 / 2012 C.E ,


Calculation Method: Umm Al-Qura

Juristic Method: Standard

---------------------------------- 

Day=Ramd.=Greg.=Fajr=S.rise=Dhr.=Asr=Mag.=Isha

Fri =01=20/07=4:17=5:44=12:28=3:52=7:11=9:11

Sat =02=21/07=4:18=5:44=12:28=3:52=7:11=9:11

Sun =03=22/07=4:18=5:45=12:28=3:52=7:11=9:11

Mon=04=23/07=4:19=5:45=12:28=3:52=7:10=9:10

Tue =05=24/07=4:20=5:46=12:28=3:53=7:10=9:10

Wed=06=25/07=4:20=5:46=12:28=3:53=7:09=9:09

Thu =07=26/07=4:21=5:47=12:28=3:53=7:09=9:09

Fri =08=27/07=4:22=5:47=12:28=3:53=7:08=9:08

Sat =09=28/07=4:22=5:48=12:28=3:53=7:08=9:08

Sun =10=29/07=4:23=5:48=12:28=3:53=7:07=9:07

Mon=11=30/07=4:24=5:49=12:28=3:54=7:07=9:07

Tue =12=31/07=4:24=5:49=12:28=3:54=7:06=9:06

Wed=13=01/08 =4:24=5:49=12:28=3:54=7:06=9:06

Thu =14=02/08 =4:26=5:50=12:28=3:54=7:05=9:05

Fri =15=03/08 =4:26=5:50=12:28=3:54=7:04=9:04

Sat =16=04/08 =4:27=5:51=12:28=3:54=7:04=9:04

Sun =17=05/08 =4:28=5:51=12:28=3:54=7:03=9:03

Mon=18=06/08 =4:28=5:52=12:28=3:54=7:02=9:02

Tue =19=07/08 =4:29=5:52=12:28=3:54=7:02=9:02

Wed=20=08/08 =4:30=5:53=12:27=3:54=7:01=9:01

Thu =21=09/08 =4:30=5:53=12:27=3:54=7:00=9:00

Fri =22=10/08=4:31=5:53=12:27=3:54=7:00=9:00

Sat =23=11/08=4:32=5:54=12:27=3:54=6:59=8:59

Sun =24=12/08=4:32=5:54=12:27=3:54=6:58=8:58

Mon=25=13/08=4:33=5:55=12:27=3:54=6:57=8:57

Tue =26=14/08=4:34=5:55=12:26=3:54=6:56=8:56

Wed=27=15/08=4:34=5:56=12:26=3:54=6:56=8:56

Thu=28=16/08=4:34=5:56=12:26=3:54=6:56=8:56

Fri =29=17/08=4:35=5:56=12:26=3:54=6:54=8:54

Sat =30=18/08=4:36=5:57=12:26=3:54=6:53=8:53

-----------------------------------------------------------

Note 1: Fajr means both Fajr Athan (Azan) and

Imsak (starting fast) and Maghrib means

both Maghrib Athan (Azan) and Iftar (breaking fast).

Note 2: Ramadan starting date is according to Makkah.

=========================================

সোমবার, ১৬ জুলাই, ২০১২

অখ্যাত এক প্রেমের গল্প (০১)


অখ্যাত এক প্রেমের গল্প (০১)
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
----------------------

একদিন একটা ছেলে মদিনার এক জনাকীর্ণ স্থানে বসে পরিশ্রান্ত শরীর ও মনে শক্তি সঞ্চার করছিল। চারিদিকে চলছিল মানবযাত্রা। আর সে আনমনে বসে টিপছিল মোবাইল বটম। হঠাৎ এক মেয়ে এসে বললো -


**আপনাকে কোথাও দেখেছি ।
*দেখতেই পারেন , পুরুষ মানুষ তো সব সময় রাস্তা দিয়েই হেঁটে যায় কারনে , অকারনে।
** না , তা নয় । আপনাকে বিশেষ একটা স্থানে দেখেছি।
* আচ্ছা দেখেছেন ভাল কথা , এখন আপনি কি চান তাই বলুন ।
** আচ্ছা মানুষ তো আপনি ! বলার পরিবেশ করতে পারলেই তো বলব, নাকি ?
* তবে কি আপনি বলতে চান - এটা দুষিত পরিবেশ !
** দুষিত ছিলনা , আপনার ব্যবহারে দুষিত হয়ে যাচ্ছে !
*ও তাই ! আমি কি আপনাকে তেমন কিছু বলেছি যে , আপনার ইজ্জত হানি হতে যাচ্ছে !
** বড় বিচিত্র মানুষ তো আপনি !
* আপনি কি আমাকে চিড়িয়াখানার চিড়িয়া ভাবছেন নাকি !
** আপনাকে তাই যদি ভাবা যেতো তবু ভাল হতো।
* বুঝেছি আপনার সাথে প্রেমের আলাপ না করাতেই মনে হয় আপনার খারাপ লাগছে।
** এই তো রেল তার লাইনের উপরে উঠতে শুরু করেছে।
* সেটা আগে বলবেন তো , আমাকে কোথাও দেখার ভান করে আপনি প্রেম করতে চাইছেন ! তবেই তো আপনকে কোলে বসিয়ে প্রেমের আলাপ শুরু করতাম।
** আপনি না একটা সীজ !
* দেইখেন সীজ কে পছন্দ করে , আবার বুকে জড়িয়ে ফেলতে যাবেন না।
** জড়িয়ে ফেলতে পারলে তো ভালই হতো , এত কথা বলা লাগতোনা।
* তাই , তবে বাধা দিচ্ছে কে ? সাহস থাকলে ...
** সাহস দেখতে চান ?
* দেখতে চাইনা , তবে দেখাতে চাইলে কেউ কি বাধা দিয়ে রাখতে পারে ?
** বুঝেছি , আপনাকে সেজে দিলে আপনি মানাও করেন না।
*এতই যখন বুঝেন এত কথা কেন ?
** কোন কথা না বলে , কিছু দেয়াতে কি মজা আছে ?
* তবে তো আপনি মজাও করতে জানেন দেখছি।
** মজা আর দেখাতে দিলেন কই ?
* আমি কি আর দেওয়া লাগে ? এতক্ষণ সেজ সেজে যে মজা দেখালেন...
** চলুন না একটু নিরিবিলি স্থানে বসে আলাপ করি ।
* কেন আপনি আমার কে ? পুলিশে দেখলে সোজা মুতাওয়া অফিসে । জানেন তো ?
** না জানলে কি এতক্ষণ আপনার সাথে কথা বলতাম ?
* বুঝলাম না।
** এত বুঝার কাম নেই । যা বলছি তাই করেন ।
* আপনি কি আমার ঘরণী নাকি যে , আপনার কথায় আমি উঠব বসব ?
** এই তো বুঝে গেছেন পুলিশে জিজ্ঞেস করলে কি পরিচয় দিতে হবে !
* মানে ?
** আবার মানে ? আমরা স্বামী-স্ত্রী ! বিয়ে করে বেড়াতে এসেছি।
* ঠিক আছে , তাই বলবো । তবে এক বিছানায় থাকতে রাজি আছেন তো ?
** আপনি না বেশী কথা বলেন ।
* হাঁ , সব সুবিধা আপনি ভোগ করবেন , আর আমার সুবিধার কথা বললে আমি বেশী কথা বলি , তাই না ?
** আচ্ছা , সুবিধা - অসুবিধা চিনেন আপনি ?
* কেন আপনি এখনো বুঝতে পারেননি , বুঝিয়ে দিতে হবে ?
** বুঝিয়ে দেয়ার দরকার নেই , অনেক বুঝে ফেলেছি ।
* কি বুঝেছেন ?
** এই , আপনি সুবিধাভোগী , স্বার্থপর ।
* আমি যদি তাই হই , আপনি ?
** এভাবে কি শুধু প্রশ্নোত্তর পর্ব চলবে ?
* আর কি করতে চান আপনি ?
** সেটা দেখানোর জন্যই তো বলছি একটু নিরিবিলিতে চলুন।
* ঠিক আছে , চলুন । দেখি আপনি কি দেখাতে চান ।
** চলুন ।
বলেই সেই ছেলেটির হাত ধরে টেনে নিয়ে বসাল এমন এক স্থানে , যেখানে দু'জনকে কেউ দেখবেনা। ছেলেটি বসেই বললো -
* কি দেখাবেন দেখান ।
** দেখাচ্ছি ।
এই বলেই মেয়েটি ছেলেটিকে কাছে টেনে নিয়ে .....
। এখানেই মেয়েটির সাথে ছেলেটির প্রথম দিনের পরিচয় পর্ব শেষ । শুরু হয় তিনদিন পর দ্বিতীয় দিনের পরিচয় পর্ব।
==================

শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১২

জাগ্রত হোন মুসলমানগণ


জাগ্রত হোন মুসলমানগণ
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
-----------------------

অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মকে যেভাবে মানে সেভাবে মুসলমানরা তাদের ধর্মকে মানেনা, তাই মুসলমানদের ভিতরে এতো অশান্তি। মুসলমানরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের দিকে তাকিয়ে দেখুন , তারা দিনের শুরুটা কখনো তাদের ধর্ম পালনের আগে শুরু করেনা। ধর্মের নিয়ম পালম শেষ করেই তারা দিনের কাজ শুরু করে।


আমি একবার ইন্ডিয়াতে গিয়ে একটা হিন্দু পরিবার ও একটা খ্রীষ্টান পরিবারের ভিতরে কয়েকদিন থেকে দেখেছি , তারা পুরো পরিবার সকালে উঠেই প্রথমে তাদের প্রার্থনার কাজ শেষ করে, তারপর তারা বাইরে কর্মপালনে পদসঞ্চালন করে। আমি তখন নামাজ পড়তামনা। হিন্দু পরিবারটিতে যেদিন প্রথম উঠি সেদিন রাত প্রায় একটা। যখন ঘুমাতে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখন হিন্দু পরিবারের কর্তা আমাকে একটা নতুন সাদা কাপড়ের প্যাকেট দিয়ে বলল , “ বাবা এটা নতুন কাপড় এর উপর তুমি নামাজ পড়লে মনে হয় কোন অসুবিধা হবেনা, আমরা তো সকালে উঠেই আমাদের প্রার্থনা শুরু করব , তুমিও নিশ্চয় তোমার প্রার্থনা করবে, তাই ঘুমানোর আগেই কাপড়টা দিয়ে যেতে এলাম।’’

এই প্রথম একটা সুন্দর আততীয়তার প্রদর্শন দেখলাম। যাতে এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের মানুষকে তার ধর্ম পালনের জন্যও আততীয়তার কমতি দেখায়নি। তেমনিই খ্রীষ্টান পরিবারে গিয়ে দেখেছিলাম তাদের ধর্মপালন। অথচ মুসলমানরা তাদের ধর্মপালন থেকে অনেক দূরে। তারা ধর্ম পালন করে শুধু জুমার দিন আর রমজান আসলে । বা কিছু নিদ্রিষ্ট দিন আসলে তারা ধর্ম পালনের প্রদর্শনী করে।

আজ দেখলাম ফেইসবুকে একটা ষ্ট্যাটাস এসেছে “ আসিতেছে রমজান, পড়ি সবাই কোরান , একটা হরফে দশটা নেকী , ঘোষনা করেছেন আল্লাহ মহান।’’ যিনি ষ্টাটাসটা দিয়েছেন তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করতে চাইনা। মুসলমানদের ধর্মপালনের দূরাবস্থা দেখেই অন্তত পবিত্র মাস রমজানে হলেও তাদেরকে ধর্ম পালনের জন্য তিনি আহবান করেছেন । এতে তিনি বিরাট একটা সওয়াবের কাজ করেছেন। তাঁর এই সুন্দর ষ্ট্যাটাসের ভিত্তিতে মুসলমানদের ধর্মপালনের দূরাবস্থা প্রদর্শন করে তাদের জাগ্রত হবার লক্ষ্যে আমার উক্ত ষ্ট্যাটাসের উপরে আমার এ মন্তব্য লেখার অবতারনা।

বলছিলাম অমুসলীমরা যেভাবে ধর্মপালন করে সেভাবে মুসলমানরা ধর্মপালন করেনা। তারা যে ধর্মপালন করেনা শুধু তাই নয় , মুসলমানদের মধ্যে যারা ধর্ম পালন করে এমন যারা, তারা যদি ধর্মপালন করেনা এমন মুসলমানদের ধর্মপালনের জন্য আহবান করে তবে তারা সেই আহবানকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করতেও দ্বিধা করেনা। ধর্মপালনে আহবানকারীদের তারা মৌলবাদী , ধর্মের অন্ধভক্ত ইত্যাদি উপাধি দিয়ে গালিগালাজ করতে থাকে , জনসমক্ষে তারা এদের সম্মানহানী করতেও ছাড়েনা। তারা আবার মুসলমান নাম নিয়ে মুসলমানদের গন্ডীতে থেকে মুসলমান হিসাবে পরিচয়ও দিতে চায়।

মুসলমানদের এই দুর্দশার কারনে আজ মুসলমানরা দিকে দিকে অশান্তির দাবানলে জ্বলছে। আজ অমুসলীমরা ধর্মকে ঠিকভাবে তাদের ধর্মকে মানছে বলেই তাদের মাঝে এত অশান্তি বিরাজ করছেনা , যত অশান্তি বিরাজ করছে মুসলমানদের মধ্যে তাদের ধর্ম ঠিকভাবে না মানার ফলে।

তাই , মুসলমানদের অশান্তি দূরকরনে প্রয়োজন হবে তাদের ধর্মপালনে জাগ্রত হবার। শুধুমাত্র বিশেষ দিনগুলোতে নয় মুসলমানদেরকে ধর্মপালন করতে হবে দৈনিক। দৈনিক কর্মদিবস শুরু করতে হবে তাদের ধর্মপালনের মধ্য দিয়েই। আল্লাহ পাক আমাদের মুসলমানদের সঠিক ভাবে ধর্মপালনে সুমতি দান করুন । আমীন।
=================


Islam is my life
By Sister Hina
------------------

Iman, rooted deeply in the centre of my heart,
Upon reciting Shahada, from the dunya do I depart
With Islam do me and my heart truly meet
Fixed firmly within every heartbeat

Salah, now an action in my life, everyday
And I Pray Ya Allah that I never go astray
It is through these daily actions I try to purify my soul
It is through praising you Ya Allah , I feel complete and whole

Ramadhan, a whole month I dedicate to you
Away from all desires, sticking to what’s true
SubhanAllah a whole night I pray with sabr (patience)
The night you have named Laylat Al Qadr

Zakat now I give so willingly
To my brothers and sisters, all so dear to me
Again Allah I thank you for everything
All the blessings you have showered on me, makes my heart sing

Hajj is now what I’m yearning to achieve
And join with others, others who truly believe
Ya Allah make a reality what I dream
Ya Allah let me fulfill this beautiful deen

A new life, a straight path leading to you Allah
So honored, so blessed Alhumdulillah
From now on there is no looking back at the past
For Islam is my way until my heart beats its last!!
=================================

বৃহস্পতিবার, ১২ জুলাই, ২০১২

বৃষ্টি দিনের ভালোবাসার কথন : পর্ব-০৩


বৃষ্টি দিনের ভালোবাসার কথন : পর্ব-০৩ 
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী 
---------------------- 

১৮। 

সুদূর দৃষ্টি দিয়ে যখন দেখি তোমায়
বৃষ্টির ফোটা ভেদ করে যায় না দেখা,
একলা বসে বসে শুধু তোমায় ভাবি
বৃষ্টি দিনে হয়না তাই কবিতা লেখা। 

১৯। 

কলম ধরেছি লিখব বলে
তোমারই জন্যে একটা গান,
বৃষ্টির ফোটা দিল যে হঠাৎ খাতা বিজিয়ে
হলো না আর মনের ডাকে আমার সাড়া দান। 

২০। 

মন হয়েছে উদাস আমার আষাঢ় মাসের বৃষ্টিতে,
কোন কাজে মন বসেনা তুমিই কেবল দৃষ্টিতে। 

২১। 

সুখের আবেশে ঘেরা মন দুঃখেরই জ্বালায় জ্বলে তখন,
বৃষ্টি দিনে একলা বসেই বৃষ্টি ফোটায় হাত লাগে যখন। 

২২। 

বৃষ্টি দিনে প্রিয়া যদি কাছে নাহি রয়, 

মন মরা হয়ে যাই বৃষ্টি যখন হয়। 

২৩। 

বৃষ্টি সময় প্রিয়া যখন কাছে থাকেনা,
বৃষ্টি দিনে বৃষ্টি হলেও ভাল লাগে না। 

২৪। 

মন ভাল না আমার দিন ভাল না,
বৃষ্টি দিনে বৃষ্টি ছাড়া মন জমে না। 

২৫। 

আনন্দ আজ ধরেনা তার কি হলো বুঝিনা,
কল কল কল জল বহে যায় কারণ খুঁজিনা। 

২৬। 

মন উচাটন রাঙ্গা মুখী নাচছে আমার প্রিয়া,
নাচের তালে বলছে আমায় করবে কবে বিয়া! 

২৭। 

শিশুর মতো কাদা নিয়ে খেলছে প্রিয়া আজ,
বৃষ্টি ফোটায় হচ্ছে তারই মুখের মাঝে সাজ! 

২৮। 

পুকুরেতে ভাসলো সে যে কাতাল মাছের মত,
করলো খেলা তার উপরে বৃষ্টি ফোটা যত। 

২৯। 

বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যাক্ষণে আসলো সেদিন সে,
সকাল হলেই দেখি তারে সর্দি জ্বরে কাঁশে! 

৩০। 

আষাঢ় মাসের আমের ঠেলায় হলো পেঠখারাপ,
কাছে যেতেই প্রিয়া আমার চাইতে লাগলো মাফ! 

৩১। 

গুণগুণিয়ে গান গেয়ে যায় প্রিয়া আমার শুধু,
বৃষ্টি দিনে বলে বেড়ায় সেই যে আমার বধু! 

৩২। 

গান গেয়ে যায় রাতের পাখি প্রেমের বাঁশী বাজে,
প্রিয়া আমার বৃষ্টি দিনে শুধুই কেবল সাজে! 

৩৩। 

বৃষ্টি জ্বরে ভুগছি আমি বৃষ্টি দেখিনা,
জ্বরের ঘোরে চেতনাহীন তাই কাব্য লেখিনা। 

৩৪। 

দিন ফুরালো , রাত পেরোলো বৃষ্টি এলোনা,
প্রিয়া আমার চলে গেলো ? দেখা দিলোনা। ===================

বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১২

তুমি কেবল স্মৃতি


তুমি কেবল স্মৃতি
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
----------------------

ও আমার বাংলা মাগো -
কি আঁচল কি ছায়াগো !
কি অপরূপ কি মায়াগো !
চতুর্দিকে সাজিয়ে আছে
সবুজ ভরা মাঠ !
জল থৈ থৈ বর্ষা দিনে ,
চৈত্র দিনের রাখাল বীনে
সুরের সাথে রূপ ভেসে যায় ,
মাতাল যে হয় সকল রাস্তাঘাট !
ফাগুন দিনের রূপের শোভা,
ফুল ফুটে সব মনলোভা ,
বসন্তেরই মাতাল হাওয়ায়
মন ঝুঁকে যায় গান গাওয়ায় !
ও আমার বাংলা মাগো-
তোমার মতো দেশ যে আর
কোথাও দেখি না গো।
মন উচাটন এখন আমার
তোমায় দেখতে চায় ,
অভিশপ্ত জীবন যে মোর -
কেমনে দেখতে যাই ?
বোশেখ মাসে আম পাকে
ভাদ্রে পাকে তাল ,
অগ্রহায়নে ধান পাকে
জৈষ্ঠে পাকে কাঠাল।
এমন সব মধুর দিন
উতলে উঠে মনে ,
প্রবাসে মোর যায় যে জীবন
হয়না দেখা তোমার সনে।
এই প্রবাসে যায়না দেখা
তোমার মত রূপ ,
দেখতে তোমায় হয়না যাওয়া
আছি যে তাই চুপ।
মনের মাঝে আছো তুমি
কেবল স্মৃতি হয়ে ,
হয়না দেখা তোমার সনে
বেড়াই তোমার ভালবাসা বয়ে।
=============

মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১২

জীবনের গোধূলী বেলা



জীবনের গোধূলী বেলা
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
-----------------------
গোধূলী লগ্নে যেমন হঠাৎই
সূর্যের আলো ডুব দিয়ে হারিয়ে যায় ,
তেমনিই সময়ের অস্তাচলে যাত্রা ,
মানুষের জীবনের অনন্ত পথে গমন।
তবে সূর্য রাত পোহালেই দেখা দেবে আবার
মানুষ এমন আশা করতে পারে ,
কিন্তু সময় আর মানুষের জীবন ব্যতিক্রম ,
একবার ডুব দিয়ে হারিয়ে গেলে
তা আর আসবেনা ফিরে ,
দেখা যাবেনা এই দুইকে এই পৃথিবীর নীড়ে।

তেমনি এক গোধূলী বেলায় দাঁড়ীয়ে আমি ,
সময়ের অপেক্ষায় ,
হঠাৎই ডুব দেয়া সূর্যের মতো -
দিতে ডুব এই আমাকে , যেতে হবে হারিয়ে
এই পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে দেখা যাবেনা আমায় কভু ,
রঙ্গলীলায় উঠবোনা মেতে এই আমি,আমার শরীর।
সময়ের অতলান্তে তলিয়ে যাবে আমার সকল কিছু -
আমার নাম - পরিচয় - এই দেহ - সবকিছুই
বিলীন হয়ে যাবে প্রবাহমান সময়ের সাথে সাথে।

সময় শুধু বারেবার জানান দিয়ে যাচ্ছে
সময় হয়েছে হারিয়ে যাবার ,
বুঝে নাও জীবনের শেষ চাল
পাবেনা সময় জীবনকে ঘুছাবার।
আসবে সময় তুফান বেগে
নিয়ে যাবে তোমায় উড়িয়ে একদিন,
কালবোশাখী যেভাবে উড়িয়ে নিয়ে
করে দিয়ে যায় সব বিলীন।

নিবু নিবু প্রদীপের মত আমার জীবন ;
ক্ষনে ক্ষনে জ্বলছে আর ক্ষনে ক্ষনে নিবছে ,
জোড়াতালী দেয়া হৃদয়খানা মোর বারবার ছিড়ছে।
ঝরা পাতা যেমন হাওয়ার তালে উড়ে উড়ে
চলে যায় আবার ঘুরে ফিরে আসে ;
তেমনি আমার জীবন , নিঃশ্বাস যায় আর আসে ,
বন্ধ হবে হঠাৎ করেই
এই আমার জীবনের নিঃশ্বাস ,
যেমন তেলবিহীন প্রদীপের আলো
নিবে যাবে কবে নেই তার বিশ্বাস।
===============

সোমবার, ৯ জুলাই, ২০১২

আমি এক পরাজিত সৈনিক


আমি এক পরাজিত সৈনিক

মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
----------------------

[বিঃদ্রঃ - এ লেখাটি উৎসর্গ করছি মীরপুর ঢাকার সেই ফারহানাকে (যার ছদ্ধনাম ছিল আজমুন্নাহার) – যে ২০ বছর আগে এ লেখাটি পড়ে পাঠিয়েছিল নিজ হাতে বানানো কাপড়ের একটা লালগোলাপ।

এ লেখাটি “সাপ্তাহিক দেশচিত্রের” ২৩–২৯ নভেম্বর – ১৯৯২ইং ১ম বর্ষ , ৪৯ সংখ্যা এবং একই সময়ের “অপরাধচিত্র” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকাশিত হয়েছে দেখলাম আজই একটি ব্লগে-(http://dsore.blogspot.com/2011/10/blog-post_29.html)। এটি কিছুটা সংশোধন করে পুনরায় প্রকাশ করা হলো।]
*******************

জীবনযুদ্ধে আজ আমি এক পরাজিত সৈনিক। সকলের ঘৃণার পাত্র। সকলের কাছে আজ আমি এক অবাঞ্চিত ছেলে। সকলের খেলনার পুতুল। সকলের ষড়যন্ত্রে নিষ্পেষিত সমাজের এক দুষ্টগ্রহ। সমাজের কাছে চক্ষুসুল এক ব্যক্তি। পিতার নিরাদর, মায়ের মমতাহীনতা , ভাই-বোনদের অবজ্ঞা , ভাবীদের ঘৃণা , বন্ধুদের ষড়যন্ত্র , বান্ধবীদের প্রতারণা , শুভাকান্খীদের ছলনা , প্রতিবেশীদের তীরস্কার , সমাজের লাঞ্চনা , গ্রামের হেয়কার , দশের বাহির , দেশের গণনাহীনতায় আজ আমি অসহায়। ভীষণ পিপাসার্ত আমি। হৃদয় আমার জর্জরিত , শরীরের তাবৎ গীটগুলো লালাহীন। প্রতিটি শিরা-উপশিরায় ব্যর্থতার ছাপ সুস্পষ্ট। আত্মগ্লানীতে সমগ্র শরীর আজ বিষাদময় কন্টকে আবৃত।

আজ আমাকে দেখলেই পিতার স্নেহ জাগে স্বকরুন ভাবাবেগে। মায়ের মমতা নাড়া দেয় তার হৃদয়খণির অবাঞ্চিত স্থান থেকে। ভাই-বোনদের অবজ্ঞা তাদের কপালের উপর প্রকাশ ঘটে। ভাবীদের ঘৃণা প্রস্ফুটিত হয় লাল গোলাপের ন্যায়। বন্ধুদের ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হয় আপাদমস্তক। বান্ধবীরা প্রতারণা করতে সুযোগ খুঁজে। শুভাকান্খীদের ছলনা ধারণ করে তীব্রবেগ। প্রতিবেশীরা উদ্যত হয় তিরস্কারে। সমাজ দান করে লাঞ্চনা। গ্রামবাসী হেয় মনে করে। দশজনের বাইরে পাতা হয় আমার আসন। দেশের আদমশুারীতে রাখা হয় আমায় গণনার বাহিরে।

আজ আমাকে দেখলেই ভাবীরা শব্দ করে ঘরের কপাট বন্ধ করে ছুঁড়ে ঘৃণার তীর। বোনেরা ধরে অপরিচিত রূপ। ভাগ্নে-ভাগ্নিরা মামা বলে স্বীকার করতে কষ্ট অনুভব করে। চাচা-চাচী ভিন্ন চোখে জরিপ করে। ভাতিজা-ভাতিজী চাচা বলতে সংকোচবোধ করে। আত্মীয়-স্বজন পরিচয় গোপন করে মুখ ফিরায়। প্রিয়জন করে মুখের উপর থুথু নিক্ষেপ। প্রেমিকা প্রেমের প্রতিদান চায় সম্পদের জয়কারে। ছাত্রবন্ধু চায় পকেটে টাকার ভাঁজ। শিক্ষক চায় প্রাইভেট পড়ানোর নামে টাকা উপার্জনের সুযোগ।

কিন্তু আমাকে কেউ চায়না। চায় আমার কাছ থেকে হাসিল করে নিতে যার যার উদ্দেশ্য। এটাই আমার বিগত জীবনের চাওয়া , পাওয়া আর অভিজ্ঞতা। তীক্ষ্ন অথচ ক্ষুদ্র , কম অথচ বিস্তর পরীক্ষার আয়োজন করে সকলের কাছ থেকে আমি এতটুকু সম্পদই সঞ্চয় করতে পেরেছি। এখন আমার এটাই একমাত্র সঞ্চিত ধন।

তবে যদি আমি প্রত্যেক বিষয়ে পাহাড়ের মত অটল আর নদীর স্রোতের মত গতিময় হতে পারতাম , যদি পারতাম বজ্রের ন্যায় হুন্কার ছাড়তে , হাতীর ন্যায় শরীর গড়তে , বাচালের ন্যায় বক বক করতে , রাক্ষসের ন্যায় ভক্ষণ করতে , বাঁদরেরে ন্যায় যত্রতত্র থাবা মারতে , নির্লজ্জের ন্যায় বেহায়া কথা বলতে , অভদ্রের ন্যায় গর্জিয়ে কথা বলতে , ভিখারীর প্রসারিত হাতকে লাথ্থি মেরে গুড়িয়ে দিতে , ভুখাদের কুড়ানো অন্নের থালা দরোজা বন্ধর ছলে ধাকা মেরে ছিটিয়ে ফেলে দিতে , অসহায়দের পাতানো হাতে থুথু দিতে , এতিমদের তাবৎ সম্পত্তি ভোগ করতে , অন্নের ঘাম ঝরানো সম্পদ জবর দখল করে নিজের অধিকারে নিয়ে আসতে – তবে হয়তো প্রতিষ্ঠা পেতাম সমাজের একজন আদরনীয় ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্ব হিসাবে , বসার সুযোগ পেতাম সমাজের প্রতিটি স্তরে , নাম লেখাতে পারতাম বর্তমান মুখোশধারী ভদ্দরনোকদের মত সুশীল সমাজে (?) এর মানুষদের কাতারে , রাষ্ট্রীয় গণনায় দেশের নাগরিক হিসাবে পরিচিত হতে পারতাম। পারতাম উঁচুতলার মানুষদের জলসায় শামীল হতে , হতে পারতাম গ্রাম বা দেশবাসীর মাথার মুকুট ।

কিন্তু তা আমি হতে পারিনি। মনের অবাঞ্চিত দৃষ্টিকোণ থেকেও আসে সে সবে নিষেধাজ্ঞা। তাই আমি আজ তা হওয়া থেকে অনেক দূরে। এতে আমি অপারগ। বর্তমান সমাজনীতির কাছে আজ আমি পরাজিত। সমাজনীতির কাছে পরাজিত হয়ে অবস্থান করছি তাই সমাজ থেকে অনেক দূরে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে , সমাজ থেকে , লোকালয় থেকে হয়েছি আমি বিচ্ছিন্ন।

আজ আমি হয়েছি জীবনযুদ্ধে পরাজিত এক সৈনিক। জীবনটা তাই আজ হয়েছে বড়ই দূর্বীসহ। আমি এই দূর্বীসহ সৈনিক জীবন থেকে মুক্তি চাই। চাই নির্মল ও সুস্থ সমাজের একজন সদস্য হতে।====================

Dsore.com: আমি এক পরাজিত সৈনিক

Dsore.com: আমি এক পরাজিত সৈনিক: এই পোষ্টটি পড়লে আপনার কণ্ঠ নিস্তব্দ হয়ে যাবে। মাথা নিচু হয়ে যাবে । বেচে থাকার ইচ্ছা অপনার শেষ হয়ে যাবে।এই পোষ্ঠটি পড়ুন এবং একটু ভাবু...

রবিবার, ৮ জুলাই, ২০১২

ইতিহাসে ৮ জুলাই

ইতিহাসে ৮ জুলাই

মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী

-----------------------

রাষ্ট্রপতি ও বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম এর মৃত্যু ঃ ১৯৯৭ সালের এইদিনে - বাংলাদেশের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ঢাকায় মৃত্যু বরণ করেন। ১৯১৬ সালে তিনি রংপুর জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি রংপুর জেলা স্কুলে পড়া লেখা করেন এবং পরবর্তিতে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। এরপর তিনি কলকাতা প্রসিডেন্সি কলেযে পড়ালেখা করেন ও ইউনিভার্সিটি ল' কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন। কলকাতা কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পর ১৯৪৭ সালে সায়েম ঢাকা চলে আসেন। ঢাকায় এসে তিনি ঢাকা হাইকোর্টে প্রাকটিস শুরু করেন। বাঙ্গালি রাজনীতিবিদ এ.কে. ফজলুল হকের সাথেও তিনি কাজ করেন। একসময় তিনি ঢাকা হাই কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচিত মহাসচিব ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৬২ সালের ৩ জুলাই তিনি বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তাঁকে ১২ জানুয়ারি , ১৯৭২ এ দেশের প্রথম প্রধান বিচারপতির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি। তিনি ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ থেকে ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।


১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ও ৬ নভেম্বর এর সামরিক অভ্যুত্থানের পর বিচাপতি সায়েমকে দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সামরিক আইন জারি করেন এবং নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি সামরিক আইন প্রশাসকের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে সেনা প্রধান জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করেন। ১৯৭৭ এর ২১ এপ্রিল তিনি দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে জিয়াউর রহমানের হাতে রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে দিয়ে অবসরগ্রহণ করেন। বিচারপতি সায়েম তার আত্মজীবনী "বঙ্গভবনে:শেষ অধ্যায় (At Bangabhaban : Last Phase)" লিখে প্রকাশ করেন ১৯৮৮ সালে। এ বইটিতে তিনি ১৯৭৫-৭৭ এর মাঝের দেশের রাজনৈতিক ঘটনাগুলো উল্লেখ্য করেন।

অবিসংবাদী জননেতা, কমরেড জ্যোতি কিরণ বসুর জন্ম ঃ ১৯১৪ সালের এইদিনে - বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কমিউনিস্ট নেতা, পশ্চিমবঙ্গের নবম মুখ্যমন্ত্রী, ভারতীয় উপমহাদেশের বরেন্য বামপন্থী রাজনীতিবিদ, অবিসংবাদী জননেতা, কমরেড জ্যোতি কিরণ বসু (যিনি জ্যোতি বসু নামেই বিখ্যাত) কলকাতার ৪৩/১ হ্যারিসন রোডস্থ (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) বাসভবনের এক সম্ভ্রান্ত বাঙ্গালী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল জ্যোতিরিন্দ্র বসু; ডাকনাম ছিল গনা। জ্যোতি বসুর পিতা নিশিকান্ত ছিলেন এক প্রথিতযশা ডাক্তার এবং মা হেমলতা ছিলেন এক গৃহবধূ। তিনি বাবা-মার তৃতীয় সন্তান। তাঁর সাথে বাংলাদেশের নাড়ির টান রয়েছে। কারন বসু পরিবারের আদিনিবাসও ছিল ব্রিটিশ বাংলা প্রদেশের ঢাকা জেলার (অধুনা বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার) বারদী গ্রামে। একসময় ছেলেবেলাও কেটেছে তার বারদিতে।

১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পিতামাতা ওল্ড হিন্দুস্তান বিল্ডিং-এর (বর্তমান ফুটনানি চেম্বার) একটি ভাড়াবাড়িতে উঠে আসেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতারই ৫৫ এ হিন্দুস্তান রোডস্থ নিজস্ব বাসভবনে উঠে আসেন তাঁরা। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় কলকাতার ধর্মতলার লরেটো স্কুলে ১৯২০ সালে, ছয় বছর বয়সে। স্কুলে ভর্তির সময়ই নিশিকান্ত বসু ছেলের নাম ছোট করে জ্যোতি বসু রাখেন। জ্যোতি বসু ১৯২০ সালে কলকাতার ধর্মতলার মেয়েদের স্কুল লোরেটোতে প্রথম ভর্তি হয়েছিলেন। লরেটো স্কুলে পাঁচ বছর পড়ার পর তিনি ১৯২৫ সালে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়া শুরু করেন। এরপর ১৯২৫ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে সিনিয়র কেমব্রিজ বা নবম শ্রেণি পাস করেন। ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। পরে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স সম্পন্ন করেন।

গ্র্যাজুয়েশন সম্পূর্ণ করার পর ১৯৩৫ সালে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার্থে তিনি বিলেত চলে যান। সেখান থেকে ব্যারিস্টারি পাস করেন। সেখানে পড়াশোনা করতে গিয়ে তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় ব্রিটেনে যেসব ভারতীয় ছাত্র পড়াশোনা করত তাদের অধিকাংশই ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা মূলত ইন্ডিয়া লীগ ও লন্ডন মজলিস নামে দুটি প্লাটফর্মে কাজ করত। জ্যোতি বসু এই দুটি সংগঠনেই সক্রিয়ভাবে কাজ করা শুরু করেন। ১৯৩৭ সালেই তিনি ইন্ডিয়া লীগের সদস্য হন। ১৯৩৮ সালে জ্যোতি বসু ও তাঁর সহকর্মীদের উদ্যোগে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর ব্রিটেন সফরের সময় সভার আয়োজন করা হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের লন্ডন সফরকালেও একই ধরনের উদ্যোগ নেন জ্যোতি বসু।

লন্ডনে থাকাকালীন সেখানকার ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে গড়ে ওঠা লন্ডন মজলিশের তিনি ছিলেন প্রথম সম্পাদক। ইংল্যান্ডে গ্রেট ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির সাথে তার সখ্যতা বাড়ে। বিশিষ্ট কমিউনিস্ট দার্শনিক ও লেখক রজনী পাম দত্ত কর্তৃক কমিউনিস্ট মতাদর্শে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন জ্যোতি বসু। লন্ডনে আইন পড়তে গিয়েই রাজনীতিতে তাঁর দীক্ষা হয়। ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনে আইন পড়তে পড়তেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, আইন ব্যবসা নয়, কমিউনিস্ট রাজনীতিই হবে তার জীবনের ব্রত।

তখন বিশ্বে ফ্যাসীবাদী অভ্যূত্থান শুরু হয়েছে। লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সে হ্যারল্ড লাস্কির বক্তৃতা শুনতে শুনতে তিনি উদ্দীপ্ত হয়ে পড়লেন। কার্ল মার্কসের দাস ক্যাপিটাল এবং এঙ্গেলসের কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো পড়ে মেতে উঠলেন রাজনীতিতে। সে সব সভায় ব্রিটেনের লেবার ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকতেন। ব্রিটেনে অধ্যয়নকালেই তিনি প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যারল্ড লাক্সির বক্তৃতা শোনার জন্য লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সে যেতেন। এ সময় তিনি প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা রজনীপাম দত্তের সংস্পর্শে আসেন। মূলত তাঁর অনুপ্রেরণাতেই তিনি মার্কসীয় দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। একসময় বন্ধু ভূপেশ গুপ্তের অনুপ্রেরণায় গ্রেট ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পরিচিত হন। স্নেহাংশু আচার্য, হীরেন মুখার্জি, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, এন কে কৃষাণ প্রমুখ বহু তরুণ ভারতীয় সে সময় বিলেতে বিদ্যার্থী থাকাকালে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। সে সময় কমিউনিস্ট জুজুতে সারা ইউরোপ কাঁপছে। এই অবস্থাতেই তিনি ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির পরামর্শে পূর্ব লন্ডনে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। মূলত এর মধ্য দিয়েই তিনি সরাসরি শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে কাজ করা শুরু করেন। এক পর্যায়ে ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হ্যারি পোলিত তাঁকে এতে নিরুৎসাহিত করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ। তাই তিনি যদি এই পার্টির সদস্য হন তাহলে ভারতে ফিরে যাওয়া তাঁর পক্ষে কঠিন হবে। জ্যোতি বসু সিদ্ধান্ত নেন, ভারতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। লন্ডনের মিডল টার্ম থেকে তিনি ১৯৪০ সালে ব্যারিস্টারি সম্পন্ন করেন।

সেই বছরই তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে এসেই 'কাকাবাবু' কমরেড মোজাফ্ফর আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং নিষিদ্ধঘোষিত গোপনে কর্মরত কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। প্রথমে কিছুদিন বোম্বে থাকার পরে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। আর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন রেল শ্রমিকদের নেতা হিসাবে। স্বাধীনতার পূর্বে দেশের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, তেভাগা আন্দোলন ও বঙ্গবিভাগ নিয়ে আইনসভায় বিভিন্ন আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীনোত্তর পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য আন্দোলন, শিক্ষক আন্দোলন, বন্দীমুক্তি, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত আন্দোলনের পুরোভাগে থাকেন জ্যোতি বসু। এই সময় একাধিকবার বিভিন্ন কারণে কারারুদ্ধও হতে হয় বসু সহ তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় কমিউনিস্ট নেতাদের। রাজ্যের ক্ষমতায় এসে জ্যোতি বসু পাটশিল্প, কয়লাশিল্প ইত্যাদির রাষ্ট্রায়াত্ত্বকরণ এবং জমিদারি প্রথার উচ্ছেদের ঘোষনা করেন। জমিদারি প্রথার উচ্ছেদের পাশাপাশি ভূমিহীনদের মধ্যে জমিবণ্টন নিয়ে তার উদ্যোগ ভারতের ইতিহাসে চিরদিন লেখা থাকবে। তার সরকারের ৩৬ দফা কর্মসূচীর অবদান পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে চিরঋনী করে রেখেছে।

মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে দেশ শাসনের দর্শন ব্যক্ত করে তিনি বলেছিলেন, “আমরা রাইটার্স বিল্ডিং থেকে ক্ষমতা প্রয়োগ করব না, আমরা আমাদের কর্মসূচী রূপায়ণ করব মাঠ আর কারখানা থেকে, জণগণের সহায়তা নিয়ে, কারণ এরাই আমাদের ক্ষমতার উৎস।” সারা পৃথিবীতে কোন একটি নির্বাচিত সরকারে একনাগাড়ে বহু বছর শাসন করার কৃতিত্ত্ব আর কোন রাজনীতিকের নেই। এমন এই মানুষটি ছিলেন বাঙ্গালী। দেশে বিদেশে এমন কোন বাঙ্গালী নেই যিনি জ্যোতি বসুর নাম শোনেননি। ছাত্রাবস্থায় উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে গিয়ে তিনি কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।

১৯৪০ সালে ভারতে ফিরে এসে প্রথমে আইন ব্যবসাতে যুক্ত হলেও অচিরেই সেই পেশা ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে। সেই সময় ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের জনক ছিলেন প্রবাদপতিম নেতা মুজফফর আহমেদ। তার সাথে যুক্ত হয়ে তিনি বামপন্থী আন্দোলনকে নিয়ে গেলেন একটি বিশেষ জায়গায়। ১৯৪৩ সালে সালে সিপিআই'র প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেই কংগ্রেস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত পার্টির বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে তিনি প্রদেশ কমিটির সংগঠক নির্বাচিত হন। তখন থেকেই তিনি পার্টিনির্দেশে সার্বক্ষণিকভাবে বেঙ্গল-আসাম রেলওয়েতে ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। একই সঙ্গে তিনি বন্দর ও ডক শ্রমিকদেরও সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। দীর্ঘ ৬৭ বছর তিনি একটানা সেই পার্টি-সার্বক্ষণিকের জীবনযাপন করে গেছেন।

১৯৪৬ সালে তিনি অবিভক্ত বঙ্গপ্রদেশের আইনসভায় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হন। অসংখ্যবার ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের দায়ে তিনি গ্রেফতার বরন ও আত্মগোপনে বাধ্য হন। এরপরে দেশভাগের পরেও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। ড. বিধানচন্দ্র রায়ের মুখ্যমন্ত্রীত্বের সময় তিনি হন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম বিরোধী দলনেতা। এই সময় ভারত সরকার তার দলকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করলে তিনি আবারো গ্রেফতার হন। এ সময় পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ডা. বিধানচন্দ্র রায়। জ্যোতি বসু তখন বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন করেন। বিধানসভার একজন তরুণ সদস্য হিসেবে তিনি সে- সময়ের কংগ্রেস-নীতির ব্যাপক গঠনমূলক সমালোচনা করেন। শুধু সংসদেই আলোচনা-সমালোচনা নয়, একই সঙ্গে তিনি রাজপথে কংগ্রেসের জনবিরোধী নীতির বিপক্ষে লাগাতার আন্দোলন গড়ে তোলেন। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা হিসেবে রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারী এবং শ্রমিক-মজুরদের মধ্যে তিনি জনপ্রিয় তো ছিলেনই, পাশাপাশি ছাত্র ও তরুণদের মধ্যে তিনি পার্টিকে বিস্তৃত করতে সক্ষম হন। সে সময় জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতেও ঐতিহাসিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এ সময় তিনি ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলনেরও নেতৃত্ব দেন।

১৯৪৬ সালে যখন সারা ভারতে দাঙ্গা ছড়িয়ে পরে তখন মহাত্মা গান্ধী কলকাতার বেলেঘাটায় আসেন। জ্যোতি বসু তাঁর সঙ্গে সেখানে দেখা করেন এবং সর্বদলীয় শান্তি রক্ষা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন। ১৯৪৬ সালে জ্যোতি বসু প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। বেঙ্গল-আসাম রেলওয়ে নিয়ে গঠিত আসন বা কনস্টিটুয়েন্সি থেকে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে তিনি দলীয় মুখপত্র 'স্বাধীনতা' পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন। ১৯৫৩ সালে তিনি সিপিআই'র পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে জ্যোতি বসু সিপিআই'র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৬৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। সেখান থেকে অনেকেই বেরিয়ে এসে নতুন করে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআই-এম বা সিপিএম) নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। জ্যোতি বসু তখন সিপিএম-এর পলিটব্যুরোর সদস্য নির্বাচিত হন। তবে দল ভাগ হলেও সমস্ত বামপন্থী দলকে নিয়ে তিনি একসাথে লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যান। ১৯৬৭ সালেই পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস সরকারের পতন হলে জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গের যুক্তফ্রন্ট সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬৭-৬৯ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। তখন যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বাংলা কংগ্রেসের নেতা অজয় মুখার্জি। এ সরকারকে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়া হয়নি। ষড়যন্ত্র করে তাঁকে অপসারণ করা হয়।

১৯৭২ সালে কংগ্রেস ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে পুনরায় ক্ষমতায় আসে। সিদ্ধার্থ শংকর রায় তখন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। সিপিএম নির্বাচন বয়কট করে। ১৯৭৭ সালেই সিপিএম-এর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার প্রথমবারের মতো পশ্চিমবঙ্গে এককভাবে ক্ষমতায় আসে। জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৭ সালের ২১ জুন শপথ নেন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। ১৯৯৬ সালে ভারতে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হলে জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সব দল মিলে। কিন্তু সিপিএম-এর পলিটব্যুরো সেই প্রস্তাব গ্রহণ না করায় জ্যোতি বসু ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ ছেড়ে দেন।

২০০০ সালের ২৮ জুলাই সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চলাকালীন হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন জ্যোতি বসু। চিকিৎসার পর সুস্থ্য হয়ে উঠে ১৫ আগস্ট নিজেই জানান ১৫ সেপ্টেম্বরের পর অবসর নিতে চলেছেন তিনি। তবে পার্টির চাপে অবসরের তারিখ নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পিছিয়ে যায়। ৩ নভেম্বর শেষ বারের মতো পশ্চিমবঙ্গ এর রাজ্য সচিবালয় মহাকরণে আসেন বসু। ৫ নভেম্বর রাজারহাট নিউটাউনে একটি আবাসিক ভবনের অনুষ্ঠানে যান। সেটিই ছিল তাঁর জীবনের শেষ সরকারি অনুষ্ঠান। একটানা ৮৫৪০ দিন (২৩ বছর) মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিদায় সংবর্ধনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেন জ্যোতি বসু। এটাই কোনো ভারতীয় মুখ্যমন্ত্রীর সর্বোচ্চ কার্যকাল। শুধু ভারতে নয়, গোটা বিশ্বেই অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে ছয়-ছয়বার একটানা নির্বাচিত হয়ে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ঘটনা আর নেই বললেই চলে। বিরল এই ঘটনা তাঁর ও তাঁর পার্টির অসাধারণ জনপ্রিয়তা ও নানা বৈরী শক্তির ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূলতার মুখেই তা বজায় রাখতে পারার কৃতিত্বের প্রমাণ বহন করে। পার্টির শৃঙ্খলা ও যৌথ সিদ্ধান্তের প্রতি তাঁর আনুগত্য ছিল নিটোল। একজন ভালো কমিউনিস্টের জন্য যা থাকা একান্ত আবশ্যক।

মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অবসর নেয়ার পরও জ্যোতি বসু দলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন দীর্ঘদিন। ২০০৫ সালে দলের ১৮তম কংগ্রেসে তিনি পুনরায় পলিটব্যুরোর সদস্য হন। কিন্তু ২০০৬ সালের মাঝামাঝি শারীরিক কারণে দলের রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চাইলে দলের অনুরোধে ১৯তম কংগ্রেস পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেন। সেই বছর ২৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন প্রদান করতে চাইলে তিনি তা গ্রহণে অসম্মত হন। এরপরে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জ্যোতি বসুকে সাম্মানিক ডি. লিট. সম্মান প্রদান করে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি বসু বিধাননগরের অ্যাডভান্সড মেডিকেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (আমরি হসপিটাল) ভর্তি হন। । সতের দিনের দীর্ঘ অসুস্থতার পর ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ১১ টা ৪৭ মিনিটে জ্যোতি বসুর জীবনাবসান হয়। তাঁর দেহের সৎকার হয় নি - তিনি তাঁর চোখ দান করে গেছেন ; তাঁর মরদেহ ব্যবহৃত হবে মেডিক্যাল কলেজের গবেষণায়। তাঁর মৃত্যু উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে ১৮ জানুযারী ২০১০ সোমবার সরকারী ছুটি পালিত হয়। ২০ জানুযারী তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। তার শেষযাত্রায় ভারতের সব দল তো বটেই, পৃথিবীর নানা দেশের রাষ্ট্রনেতারা উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, জ্যোতি বসুর কোন বিকল্প হয়না। তিনি কমিউনিস্ট নেতা, জননেতা, রাষ্ট্রনেতাও বটে।

জ্যোতি বসু ভারতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন সন্দেহ নেই। তার জন্যেই ভারত-বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জলচুক্তি হয়েছিল। বাংলাদেশের যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষকে আশ্রয় দেবার ক্ষেত্রেও তার অবদান চিরস্মরনীয় থাকবে। অতি সম্প্রতি তার দল কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা থেকে সরে গেলেও এখনো একক দল হিসাবে সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়েছে তারা। এখনো ত্রিপুরা রাজ্যের ক্ষমতায় আছে তার দল। আর এই কৃতিত্তের জন্যে দলের যে মানুষটির অবদান সবচেয়ে বেশী, তার নাম অবশ্যই জ্যোতি বসু।

জ্যোতি বসু তাঁর সারা জীবনের উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন যে, তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ ভালো কমিউনিস্ট এবং সেজন্য তিনি মানুষ হিসেবেও হয়ে উঠতে পেরেছিলেন অনন্যসাধারণ মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিবাদী মানুষ। তাঁর দরদ ছিল অপরিসীম। এসব গুণের জন্যই তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হতে পেরেছিল। কমরেড জ্যোতি বসু প্রয়াত, কিন্তু তিনি চিরঞ্জীব। শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি সংগ্রামের অব্যাহত কাফেলার ধারায় জীবন্ত হয়ে থাকবেন জ্যোতি বসু অগণিত কাল ধরে। তিনি ইতিহাসের মহানায়ক। মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ রচনার দ্বারা সভ্যতার নতুন দিগন্ত অবারিত করার বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের তিনি ছিলেন এক মহান স্থপতি। তিনি বিশ্ব সভ্যতার এক অনন্য সম্পদ। ভারতবর্ষ ও বিশ্ব সভ্যতা তাঁকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।

বেগম খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার সেলফোনে কথা বলা ঃ ২০০৭ সালের এইদিনে - দীর্ঘ দিন পর অভিন্ন সঙ্কটে প্রধান দুই দলের অস্তিত্ব আরো বিপন্ন হতে পারে­ এই আশঙ্কায় বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সেলফোনে কথা বলেন। এরই মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ দুই নেত্রীর মধ্যকার ব্যবধান কমে আসতে থাকে। পরিবর্তিত পরিস্খিতিতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং রাজনৈতিক ইনস্টিটিউশনকে ‘ধ্বংসের হাত থেকে’ বাঁচাতে তারা নিজেরাই উদ্যোগী হন। এদিন দুপুরে শেখ হাসিনার সাথে একটেলের একটি পার্টনার ফোনে দুই নেত্রী কথা বলেন। সে সময় বেগম খালেদা জিয়ার পাশে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব গয়েশ্বর চন্দ্ররায় এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে বেগম মতিয়া চৌধুরী উপস্খিত ছিলেন। সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে এই দুই নেত্রী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এক হয়েছিলেন। এর দু’দিন আগেও দু’নেত্রীর মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় দুই নেত্রী রাজনৈতিক ইনস্টিটিউশন রক্ষায় একযোগে কথা বলতে একমত হন।

ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌ দুর্ঘটনায় ‘এমভি নাসরিন’ এর সলিল সমাধি ঃ ২০০৩ সালের এইদিনে - ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌ দুর্ঘটনা ‘এমভি নাসরিন’ ডুবে ৬৪১ জনের মৃত্যু ঘটে। এদিন ঢাকা থেকে লালমোহনগামী ‘এমভি নাসরিন-১’ চাঁদপুরের ডাকাতিয়া এলাকায় অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল বোঝাইয়ের কারণে পানির তোড়ে তলা ফেঁটে গেলে প্রায় ২ হাজারের বেশি যাত্রীসহ এটি ডুবে যায় মেঘনা নদীতে। এ দুর্ঘটনায় ১২৮ পরিবারের প্রধানসহ সরকারিভাবে ৬৪১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে লাশ উদ্ধার করা হয় প্রায় ৮০০। দুর্ঘটনার দুইদিন পর ভোলার মেঘনা পরিণত হয়েছিল লাশের নদীতে।

যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান টটাম ও’নিল জাডেনের জন্ম ঃ ১৯৯৮ সালের এইদিনে - বিস্ময় বালক হলিউডের অভিনেতা, র‌্যাপার, গীতিকার, ড্যান্সার ও যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান টটাম ও’নিল জাডেন জন্মগ্রহণ করে। জাডেন পিতা উইল স্মিথ-এর সঙ্গে পারসুইট অব হ্যাপিনেস ছবিতে অভিনয় করে। এটাই ছিল জাডেনের অভিনয়ে হাতেখড়ি। প্রথম ছবিতেই তার তাক লাগানো অভিনয় তাকে একাধিক পুরস্কার এনে দেয়।

২০০৮ সালে মুক্তি পায় তার দ্য ডে দ্য আর্থ স্টুড স্টিল ছবিটি। এ বছরেই মুক্তি পায় জ্যাকি চ্যানের সঙ্গে দ্য কারাতে কিড। অল্প কিছু ছবিতে অভিনয় করেই জাডেন প্রমাণ করেছে হলিউডে এখনো অনেক চমক দেখানো বাকি তার। রয়েছে আরো অনেকে শার্লি টেম্পল (দ্য লিটিল প্রিন্সেস), জুডি ফস্টার (ট্যাক্সি ড্রাইভার), নাটালি পোর্টম্যান (দ্য প্রফেশনাল), এনজো স্টেইয়োলা (দ্য বাইসাইকেল থিফ), আবিগালি ব্রেসলিন (লিটিল মিস সানসাইন) লিন্ডা ব্লেয়ার (দ্য এক্সোরসিস্ট)।

মাত্র ১০ বছর বয়সে অস্কারের আলো ঝলমলে বিশাল মঞ্চে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেয় টটাম ও’নিল। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় তার পেপার মুন ছবিটি। এ ছবিতে তার অনবদ্য অভিনয় তাকে একাডেমি এ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন গ্লোবসহ আরো অনেক পুরস্কার ভূষিত করে। সবচেয়ে কমবয়েসী হিসেবে তার অস্কার জয় শিশুদের অভিনয় ইতিহাসে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ছবির সহঅভিনেতা ছিল বাবা রায়ান ও’নিল। শিশু বয়সের সফল ক্যারিয়ারে টটাম অভিনয় করেছে দ্য ব্যাড নিউজ রেয়াবস, লিটল ডার্লিং, ইন্টারন্যাশনাল ভেলভেট এর মতো সাড়া জাগানো ছবিতে।

চাঁদের বুকে নামা তৃতীয় মানুষ Charles “Pete” Conrad এর মৃত্যু ঃ ১৯৯৯ সালের এইদিনে - চাঁদের বুকে নামা তৃতীয় মানুষ Charles “Pete” Conrad মৃত্যুবরণ করেন। Apollo 12 মিশনের মাধ্যমে চাঁদে অবতরণ করেন Charles “Pete” Conrad। তিনি ২ জুন, ১৯৩০ আমেরিকার পিনসেলভেনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। অভিযানে অংশ নেয়ার সময় তার বয়স ছিল ৩৯ বছর ৫ মাস ১৭ দিন। Charles “Pete” Conrad এর মিশন উৎক্ষেপণ: ১৪ নভেম্বর, ১৯৬৯ এবং চাঁদে পৌঁছে: ১৯ নভেম্বর, ১৯৬৯ আর পৃথিবীতে ফিরে আসে: ১৪ নভেম্বর, ১৯৬৯।

নাসার মহাকাশমুখী সর্বশেষ খেয়াযান আটলান্টিস উৎক্ষেপণ ঃ ২০১১ সালের এইদিনে - মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা খেয়াযান আটলান্টিস উৎক্ষেপণ করে। আর এর মধ্যদিয়ে মার্কিন শাটল কর্মসূচি এসটিএস-১৩৫র পরিসমাপ্তি ঘটে। আটলান্টিসের ক্রুদের মধ্যে ছিলেন মিশন কমান্ডার ক্রিস ফারগুন, পাইলট ডগ হারলে, মিশন বিশেষজ্ঞ স্যান্ডি মাগনাস ও রেক্স ওয়ালহেইম। এই মিশন ১২ দিনের। গন্তব্য আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। উৎক্ষেপণের সময় আটিলান্টিসের শরীরের ভার ছিল ৩.৫ টন। এর এক-তৃতীয়াংশই ভবিষ্যতের মহাকাশ পর্যটকদের জন্য খাদ্য !

মহাকাশফেরির বিকল্প বাহন শাটল কর্মসূচি বন্ধ করা হলেও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) যাতায়াত ও রসদ আনা-নেওয়ার জন্য রাশিয়ান মহাকাশযান সয়ুজকে ব্যবহার করবে নাসা। স্পেস শাটলের বিকল্প হিসেবে নাসা তৈরি করছে মহাকাশযান ওরিয়ন। তাছাড়া নাসার কিছু মহাকাশযান নির্মাণাধীন আছে যেমন-ক্রু এক্সপ্লোরেশন ভেহিকল (সিইভি), এরেস ১ ও ৫। বিকল্প বাহন হিসেবে ব্যবহূত হতে পারে স্পেস-এক্সের ফ্যালকন-৯ ও ড্রাগন মহাকাশযান এবং অরবিটাল সায়েন্স করপোরেশনের টরাস-২ ও সিগনাস মহাকাশযান।

১৯৭২ সালের তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন আনুষ্ঠানিকভাবে নাসার স্পেস শাটল কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ১৯৮১ সালের ১২ এপ্রিল প্রথম স্পেস শাটল কলাম্বিয়া উৎক্ষেপণ করে আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স ও স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)। পৃথিবীর চতুর্দিকে ৩৬ বার প্রদক্ষিণ করার পর এটি দুদিন পর ১৪ এপ্রিল পৃথিবীতে ফিরে আসে। এরপর চ্যালেঞ্জার, এন্ডেভার, ডিসকভারি আর আটলান্টিস এই ৫টি নভোযান ৩০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মানুষ ও রসদ আনা নেওয়া করেছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এসে মহাশূন্যে স্পেস শাটলের অভিযান কেবল আর বিজ্ঞানী এবং মহাকাশ গবেষকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকল না। নাসার কল্যাণে মহাশূন্য অভিযান পরিণত হয়েছিল আকর্ষণীয় ভ্রমণের বিষয়ে। এর আগের অভিযানে আটলান্টিসের প্রথম মিশন সম্পন্ন হয়েছিল ১৯৮৫ সালের ৩ অক্টোবর।

অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ঃ ১৯৭২ সালের এইদিনে - বিশিষ্ট ভারতীয় ক্রিকেটার তথা ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (দাদা, মহারাজ, প্রিন্স অফ কলকাতা) বেহালা, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম চন্ডিদাস গঙ্গোপাধ্যায় ও মাতার নাম নিরুপা গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভ মূলত তাঁর দাদার সাহায্যে ক্রিকেট জীবনে প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি প্রথম জীবনে স্কুল ও রাজ্যের হয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন ক্রিকেট জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে থাকেন তিনি।

তিনি তাঁর জীবনের প্রথম একদিনের আন্তজার্তিক ম্যাচ খেলেন ১১ই জানুয়ারী, ১৯৯২ সালে। কিন্তু তিনি সেই অভিষেক ম্যাচে মাত্র তিন(৩) রান করেন, যার ফলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে দল থেকে বাদ পড়েন। তার পর ১৯৯৩-১৯৯৪ এবং ১৯৯৪-১৯৯৫ সালের রঞ্জি ট্রফিতে চমৎকার সাফল্য লাভ করেন যার ফলে তিনি আবার ১৯৯৬-এর ইংল্যান্ড সফরের জন্য খেলার সুযোগ পান। এরপরে সেই সফ- রেই তিনি তাঁর জীবনের প্রথম টেষ্ট খেলেন ২০ই জুন, ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তিনি সেই সফরে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছিলেন। তিনি তাঁর ক্রিকেট জীবনে সর্বমোট ৩১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এবং ১১,৩৬৩ রান সংগ্রহ করেছেন। পাশাপাশি তিনি ১১৩টি টেস্ট খেলেছেন ও ৭,২১২ রান সংগ্রহ করেছেন। ভারতকে তিনি ৪৯টি টেস্ট ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যার মধ্যে ভারত জিতেছিল ২১টি ম্যাচে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতকে ১৪৬টি একদিনের আন্তজার্তিক ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যার মধ্যে ভারত জিতেছিল ৭৬ টি ম্যাচে। তিনি ভারতের একজন মিডিয়াম পেসার বোলারও ছিলেন।

বাঁহাতি ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অদ্যাবধি ভারতের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক বলে বিবেচিত হন। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তাঁর অধিনায়কত্বেই ভারত ফাইনালে পৌঁছে যায়। ২০০৮ সালের ৭ অক্টোবর সৌরভ ঘোষণা করেন যে সেই মাসে শুরু হতে চলা টেস্ট সিরিজটিই হবে তাঁর জীবনের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ। ২০০৮ সালের ২১ অক্টোবর সৌরভ তাঁর সর্বশেষ প্রথম-সারির ক্রিকেট ম্যাচটি খেলেন। ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার পর তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।

এরপরে ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০-এ আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেন এবং ২০০৮ ও ২০১০-এ এই দলকে নেতৃত্ব দেন। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আইপিএলের চতুর্থ সিজনে নিলামে তিনি অবিক্রীত থেকে গেলেও শেষ পর্যন্ত পুনে ওয়্যারিআর্সের দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭২ অনূর্দ্ধ ১৫ বাংলার হয়ে ওড়িশার বিরুদ্ধে শতরান, ১৯৯১ সালে পূর্বাঞ্চলের হয়ে দলীপ ট্রফিতে ১২১ রান তাঁকে ভারতীয় দলে যায়গা করে দিয়েছিল।

ভাষাবিদ আবু ইউসুফ ইয়াকুব বিন ইসহাক ঃ ২৪৪ (হিজরি) সালের এইদিনে - বিখ্যাত মুসলিম মনীষী ও ভাষাবিদ আবু ইউসুফ ইয়াকুব বিন ইসহাক বা 'ইবনে সাকিত' আব্বাসীয় শাসক মুতাওয়াক্কিলের হাতে শাহাদাত বরণ করেন। তিনি দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানের খুযিস্তানে জন্মগ্রহন করেন এবং পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের সাথে ইরাকের বাগদাদে গিয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। নিজের মেধার গুণে তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বিজ্ঞ মহলে পরিচিতি লাভ করেন এবং এ কারণে আব্বাসীয় শাসক মুতাওয়াক্কিল নিজের সন্তানদের শিক্ষক হিসেবে ইয়াকুব বিন ইসহাককে নিয়োগ দেন। কিন্তু বিশ্বনবী (সাঃ) এর আহলে বাইতের প্রতি তার গভীর অনুরাগের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ার কারণে মুতাওয়াক্কিল তাকে হত্যা করেন। ইবনে সাকিত ২০টিরও বেশী বই রচনা করেছেন।

কোরআন বিশেষজ্ঞ আবু আলী আব্দুল্লাহ ইবনে বানা ঃ ৪৭১ (হিজরি) সালের এইদিনে বিশিষ্ট মুসলিম ফকীহ, মোহাদ্দেস ও কোরআন বিশেষজ্ঞ আবু আলী আব্দুল্লাহ ইবনে বানা ৮৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। ইতিহাস, নৈতিকতা, হাদিস ও কোরআনের ওপর তিনি ব্যাপক গবেষণা করেন এবং ঐ গবেষণালব্ধ ফলাফল তিনি বই আকারে লিখে রেখে যান। ইবনে বানার বইয়ের সংখ্যা দেড়শ'রও বেশী বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে তার হাতের লেখা তিনটি বই সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কেন্দ্রীয় পাঠাগারে সংরক্ষিত আছে। এছাড়া ইবনে বানা প্রতিদিন যে ডাইরি লিখতেন, তা থেকে হিজরি পঞ্চম শতকের মুসলিম ইতিহাস, বিশেষ করে বাগদাদের শাসকদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়।

দার্শনিক শাহাবুদ্দিন সোহরাওয়ার্দি ঃ ৫৪৯ (হিজরি) সালের এইদিনে - ইরানের বিখ্যাত পন্ডিত ও দার্শনিক শাহাবুদ্দিন সোহরাওয়ার্দি শহীদ হন। তিনি ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত যানজানের কাছে জন্মগ্রহন করেন। আল্লাহ প্রদত্ত মেধাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ইসলামের ওপর ব্যাপক গবেষণা করেন। বিশেষ করে তিনি দর্শন শাস্ত্রে তৎকালীন যুগের সেরা পন্ডিতে পরিণত হন। মরহুম সোহরাওয়ার্দি বিশ্বের বহু মুসলিম দেশ সফর করে নিজের জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ করেন। তিনি দর্শনশাস্ত্রে নতুন ধারার প্রবর্তন করেন। তার পূর্ববর্তী দার্শনিকদের ব্যাখ্যার বিপরীতে তিনি মনে করতেন, কোন সত্য উদঘাটনের জন্য যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি যথেষ্ট নয় বরং এর সাথে এরফান বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানকেও যুক্ত করতে হবে। সোহরাওয়ার্দির এই দর্শন, তার বিরোধী চিন্তাধারার বুদ্ধিজীবীদের ক্ষিপ্ত করে তোলে এবং তাদের প্ররোচনায় তাকে গ্রেফতার ও হত্যা করা হয়। অল্পদিনের জীবনে সোহরাওয়ার্দি ফার্সি ও আরবি ভাষায় বহু বই লিখে যান, যা আজো দর্শনশাস্ত্রের ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে মূল্যবান জ্ঞানভান্ডার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিখ্যাত তিলসিত চুক্তি স্বাক্ষরিত ঃ ১৮০৭ সালের এইদিনে ঃ রাশিয়ার তিলসিত এলাকায় বিখ্যাত তিলসিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রুশ সম্রাট প্রথম আলেক্সান্ডার ও ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়নের মধ্যে ঐ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইতিহাসখ্যাত ঐ চুক্তিতে রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্রাটগণ তাদের কোনো একটি দেশে তৃতীয় কোন শক্তি হামলা চালালে পরস্পরকে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। কিন্তু দুই দেশের এই বন্ধুত্ব মাত্র তিন বছর অর্থাৎ ১৮১০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ঐ বছর রুশ সরকার এ বিষয়টি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় যে, নেপোলিয়নের সাথে বন্ধুত্ব এবং তাকে সহযোগিতা করলে রাশিয়ার বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে রাশিয়া তার পানিসীমা ও বন্দরগুলো সব দেশের জাহাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় এবং রাশিয়ায় ফরাসী পন্যের ওপর ব্যাপক আমদানী শুল্ক ধার্য্য করে। এ পরিস্থিতিতে ফরাসী সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮১২ সালের ২৪শে জুন অকস্মাৎ রাশিয়া আক্রমণ করেন এবং এর ফলে দুই সাম্রাজ্যের মধ্যে ৫ বছরের মিত্রতার অবসান ঘটে।

কিম ইয়েল সুং এর পরলোকগমন ঃ ১৯৯৪ সালের এইদিন ঃ উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা ও সেদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব কিম ইয়েল সুং পরলোকগমন করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে উত্তর কোরিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন। কিম ইয়েল সুং ১৯৪৮ সালে কোরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বের ভার গ্রহন করেন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কোরিয়ো যুদ্ধের সময় সুং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন এবং ১৯৭২ সালে তিনি কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কোরিয়ার বিভক্তি এবং কোরিও উপদ্বীপে মার্কিন হস্তক্ষেপের স্পর্শকাতর সময়ে কিম ইয়েল সুং উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করেন। একই সাথে তিনি সে সময়কার দুটি বৃহৎ কমিউনিস্ট শাসিত দেশ রাশিয়া ও চীনের সাথে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার নীতিও গ্রহন করেন। এছাড়া দেশের পুনর্গঠন ও শিল্প উন্নয়নে কিম ইয়েল সুং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিম ইয়েল সুং এর মৃত্যুর পর তার ছেলে কিম জং ইল উত্তর কোরিয়ার নেতা নির্বাচিত হন।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুগুরি সন্দিন্তি রাজশেখর রেড্ডি ঃ ১৯৪৯ সালের এইদিনে - ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুগুরি সন্দিন্তি রাজশেখর রেড্ডি (ওয়াইএসআর ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। পুলিভেন্দুলা বিধানসভা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় ছয় বার নির্বাচিত রাজশেখর রেড্ডি কুদ্দাপা লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৯ম, ১০ম, ১১শ ও ১২শ লোকসভায় নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজশেখর রেড্ডির হেলিকপ্টার নাল্লামালা জঙ্গলের কাছে নিখোঁজ হয়ে যায়। ৩ সেপ্টেম্বর সকালে সংবাদমাধ্যম জানায় যে কুর্নুলথেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে রুদ্রকোন্ডা পাহাড়ের চূড়ায় সেই হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। সেই দিনই পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয় এবং অন্যান্য আরোহীদের সঙ্গে রাজশেখর রেড্ডির মৃত্যুর কথাও ঘোষণা করা হয়।

ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসারের সুবিখ্যাত 'ক্যান্টারবেরি টেলস' ঃ ১৯৯৮ সালের এইদিনে - খ্যাতনামা ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসারের সুবিখ্যাত 'ক্যান্টারবেরি টেলস' কাব্যগ্রন্থের একটি মূল কপি বিশ্বের সবচেয়ে দামি বইয়ের মর্যাদায় আসীন। কারণ এটি লন্ডনের 'ক্রিস্টিস' নিলাম ঘরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৬০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছিল! বইটি ছাপা হয়েছিল ১৪৭৭ সালে।

নাথুলা পাস উম্মুক্ত ঃ ২০০৬ সালের এইদিনে - দীর্ঘ ৪৪ বছর বন্ধ থাকার পর নাথুলা পাস সীমান্ত পথটি ভারত চীনের সাথে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে খুলে দেয়। নাথুলা পাস ভারত ও চীনের মধ্যে একমাত্র স্থল সীমান্ত পথ। ভারত-চীন পথটি হিমালয়ের ১৪,৪২৫ ফুট উচুতে অবস্থিত। পথটিতে ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তের সঙ্গে চীনের তিব্বতের সীমান্ত মিলেছে। ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের সময় ভারতের সাথে চীনের এই বাণিজ্য পথটি বন্ধ হয়ে যায়।

টোকিও ব্যাঙ্কের বেইজিং শাখা ঃ ১৯৯৫ সালের এইদিন - বেইজিংয়ে প্রথম বিদেশী ব্যাঙ্ক খোলা হয়। টোকিও ব্যাঙ্কের বেইজিং শাখা চীনা গণ ব্যাঙ্কের সদর দপ্তরের অনুমোদন পেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত টোকিও ব্যাঙ্ক হচ্ছে জাপানের পেশাগত বিদেশী মুদ্রা ব্যাঙ্ক। টোকিও ব্যাঙ্ক চীনের সঙ্গে প্রায় ৪০ বছর ধরে আদান-প্রদান করেছে, চীনের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য ঋণ দিয়েছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চীনের অর্থনৈতিক নির্মানকাজে সমর্থন দিয়েছে।

চীনের টেলিযোগাযোগ নেট প্রতিষ্ঠিত ঃ ১৯৮৬ সালের এইদিন - চীনের অভ্যন্তরীণ উপগ্রহ টেলিযোগাযোগ নেট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। টেলিযোগাযোগ উপগ্রহ হচ্ছে বিষুবরেখার উপর ৩৬ হাজার কিলোমিটার উঁচু স্থানে বসানো সমকালীন উপগ্রহ রিলে স্টেশন হিসেবে আঞ্চলিক টেলিযোগাযোগ বাস্তবায়নের আধুনিক পদ্ধতি।

নেটোর পূর্ব-মুখী পরিকল্পণা ঃ ১৯৯৭ সালের এইদিন - নেটোর পূর্ব-মুখী সম্প্রসারণ পরিকল্পণা শুরু। নেটোর শীর্ষ সম্মেলন স্পেনের মাদ্রিদের পৌর সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। ১৬টি সদস্য দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানগণ পাঁচ ঘন্টা ধরে তুমুল বিতর্ক করার পর চেক প্রজাতন্ত্র, হাংগেরি এবং পোল্যান্ডকে নেটোতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন, অবশেষে উল্লেখিত তিনটি দেশ ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে নেটোর ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আনুষ্ঠানিকভাবে নেটোর সদস্যে পরিণত হয়। এ থেকে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, ৩ বছর ধরে পরিকল্পিত নেটোর পূর্ব-মুখী সম্প্রসারণ পরিকল্পণা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।

অভিনেত্রী ভিভিয়ান লেইগ ঃ ১৯৬৭ সালের এইদিনে – অস্কার প্রাপ্তা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ভিভিয়ান লেইগ ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের নিজ বাসস্থানে ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯১৩ সালের ৫ নভেম্বর তিনি ভারতের দার্জিলিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা-মা ব্রিটিশ নাগরিক। তাঁর প্রথম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হচ্ছে "Gone with the wind"। এই চলচ্চিত্র মুক্তি পাবার অব্যবহিত পরেই বিশ্ব চলচ্চিত্র জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। সেই বছরই তিনি অস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পুরস্কার পান।

শিল্পী আমিনুল ইসলাম ঃ ২০১১ সালের এইদিনে - শিল্পী আমিনুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন। ৭ নভেম্বর, ১৯৩১ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

ভাস্কো ডা গামা ঃ ১৪৯৭ সালের এইদিনে - নৌ অভিযাত্রি ভাস্কো ডা গামা লিসবন থেকে ভারতে যাত্রা শুরু করেন।

কলকাতা বুক সোসাইটি ঃ ১৮১৭ সালের এইদিনে - কলকাতা বুক সোসাইটি স্থাপিত হয়।

লর্ড ক্যানিং কর্তৃক ‘শান্তি’ ঘোষণা ঃ ১৮৫৮ সালের এইদিনে - সিপাহি বিদ্রোহের অবসানের পর লর্ড ক্যানিং ‘শান্তি’ ঘোষণা করেন।

ভারতের সংবিধান সংস্কার ঃ ১৯১৮ সালের এইদিনে - ভারতের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কে মন্টেগু-চেমসফোর্ড রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।

ব্রিটেনের কেনিয়া অধিগ্রহণ ঃ ১৯২০ সালের এইদিনে - ব্রিটেন কেনিয়া অধিগ্রহণ করে।

কবি পার্সি বিসি শেলি ঃ ১৮২২ সালের এইদিনে - ইংরেজ কবি পার্সি বিসি শেলির মৃত্যু।

দার্শনিক এর্নস্ট ব্লখ ঃ ১৮৭৫ সালের এইদিনে - জার্মান দার্শনিক এর্নস্ট ব্লখের জন্ম।

বিষ্ণু দে ঃ ১৯০৯ সালের এইদিনে - বিষ্ণু দের জন্ম।

ঔপন্যাসিক অ্যানথোনি হোপ ঃ ১৯৩৩ সালের এইদিনে - ইংরেজ ঔপন্যাসিক অ্যানথোনি হোপের জন্ম।

ধনকুবের ডেভিড রকফেলার ঃ ১৯৩৯ সালের এইদিনে - মার্কিন ধনকুবের ডেভিড রকফেলারের জন্ম।

অভিযাত্রী স্যার উইলিয়াম এডওয়ার্ড পিয়ারি ঃ ১৮৫৫ সালের এইদিনে - মেরু অভিযাত্রী স্যার উইলিয়াম এডওয়ার্ড পিয়ারির মৃত্যু।

কার্ক মার্শম্যান ঃ ১৮৭৭ সালের এইদিনে - বাংলা সংবাদপত্র জগতের অন্যতম পুরোধা জন কার্ক মার্শম্যানের মৃত্যু।

জার্মানি ইতালিয়া চ্যাম্পিয়ন ঃ ১৯৯০ সালের এইদিনে - আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ ইতালিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়।

ফার্স্ট লেডি বেটি ফোর্ড ঃ সালের এইদিনে - যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি বেটি ফোর্ড মৃত্যুবরণ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮তম প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের স্ত্রী।
================