আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা

বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী

সকল মহান ভাষা শহীদগণের প্রতি,
এবং ভাষা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত

সকল ভাষা সৈনিক
ও বীর বাঙ্গালীদের জানাই অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী,
সেইসাথে সকলকে জানাই

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।

বিষয় সূচী

সাহিত্য (60) অন্যান্য কবিতা (53) ভালোবাসার পদবিন্যাস ( প্রেম সম্পর্কিত রচনা বিশেষ ) (53) আমার লেখা প্রবন্ধ-নিবন্ধ (37) কবিতা (35) দেশ নিয়ে ভাবনা (33) ফিচার (33) বাংলাদেশ (29) সমসাময়িক (28) খন্ড কাব্য (26) হারানো প্রেম (22) সংবাদ (18) কাল্পনিক প্রেম (16) ইতিহাস (15) প্রতিবাদ (15) সুপ্রভাত প্রবাসী বাংলাদেশ (15) Online Money Making Links (14) দেশাত্মবোধক কবিতা (13) আমার জীবনের দিনপঞ্জী (12) ধর্ম (12) প্রেমের কবিতা (11) ব্যক্তিত্ব (11) রাজনীতি (11) ধর্মীয় আন্দোলন (10) প্রবাসের কবিতা (10) খন্ড গল্প (9) জীবন গঠন (9) বর্ণমালার রুবাঈ (9) ইসলাম (8) প্রগতি (8) মানুষ ও মানবতা (8) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (8) VIDEOS (7) আমার লেখালেখির অন্তরালে (7) ইসলামী জাগরণ (7) মানব মন (7) ট্র্যাজেডি (6) শোক সংবাদ (6) সম্প্রীতি (6) নারী স্বাধীনতা (5) প্রেমের গল্প (5) বিজয় দিবসের ভাবনা (5) মৃত্যুপথ যাত্রী (5) সংবাদ মাধ্যম (5) স্মৃতিকথা (5) ঈদ শুভেচ্ছা (4) প্রবাস তথ্য (4) রমজান (4) শুভেচ্ছা (4) Computer Programer (3) আমার ছবিগুলো (3) আমার রাইটিং নেটওয়ার্ক লিংক (3) পর্দা (3) ফটিকছড়ি (3) বাংলাদেশের সংবিধান (3) বিশ্ব ভালবসা দিবস (3) শিক্ষা (3) শিক্ষার্থী (3) স্লাইড শো (3) News (2) VERIETIES POEMS OF VERIOUS POETS (2) আষাঢ় মাসের কবিতা (2) আষাঢ়ের কবিতা (2) ইসলামী রেনেসাঁ (2) ছাত্র-ছাত্রী (2) থার্টি ফাস্ট নাইট (2) নারী কল্যান (2) নারী প্রগতি (2) নির্বাচন (2) বর্ষার কবিতা (2) মহাসমাবেশ (2) শবেবরাত (2) শরৎকাল (2) শাহনগর (2) শ্রদ্ধাঞ্জলী (2) সত্য ঘটনা (2) সত্য-মিথ্যার দ্বন্ধ (2) সফলতার পথে বাংলাদেশ (2) Bannersআমার ছবিগুলো (1) DXN (1) For Life Time Income (1) For Make Money (1) Knowledge (1) Student (1) অদ্ভুত সব স্বপ্নের মাঝে আমার নিদ্রাবাস (1) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (1) আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আত(সুন্নী) (1) উপন্যাস (1) কবি কাজী নজরুল ইসলাম (1) কোরআন - হাদিসের কাহিনী (1) গল্প (1) চট্টগ্রাম (1) চিকিৎসা ও চিকিৎসক (1) জমজম (1) জাকাত (1) তরুন ও তারুণ্য (1) নারী জাগরণ (1) পরকিয়ার বিষফল (1) ফটিকছড়ি পৌরসভা (1) বন্ধুদিবস (1) বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম (1) বিবেক ও বিবেকবান (1) বিশ্ব বাবা দিবস (1) বিশ্ব মা দিবস (1) ভ্রমণ (1) মন্তব্য (1) মাহফুজ খানের লেখালেখি (1) রবি এ্যাড (1) রমজানুল মোবারক (1) রেজাল্ট (1) রোগ-পথ্য (1) লংমার্চ (1) শহীদ দিবস (1) শুভ বাংলা নববর্ষ (1) শৈশবের দিনগুলো (1) সমবায় (1) সস্তার তিন অবস্থা (1) সাভার ট্র্যাজেডি (1) সিটি নির্বাচন (1) স্বপ্ন পথের পথিক (1) স্বাধীনতা (1) হ্যালো প্রধানমন্ত্রী (1) ২১ ফেব্রোয়ারী (1)

APNAKE SHAGOTOM

ZAKARIA SHAHNAGARIS WRITING

সকলকে বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা

বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে আমরা আর বাংলা ভাষায় কথা বলতে চাইনা । নিজের মাতৃভাষাকে যখন-তখন যেখানে সেখানে অবমাননা করে তৎপরিবর্তে ইংরেজী ভাষা ব্যবহার করতে অভ্যাস্থ হয়ে যাচ্ছি বা হয়ে গেছি ।
আরও একটু এগিয়ে গেলে বলতে হয় - আমরা আজ বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালী জাতিসত্বা ভুলে গিয়ে ইংরেজী জাতিসত্বায় রক্তের ন্যায় মিশে গেছি !

অথচ একদিন আমরা বাঙ্গালী জাতি একতাবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় ভাষা উর্দুকে ত্যাগ করে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা বাংলা ভাষাকে সর্বত্র প্রচলন করতে প্রাণ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম ! ফলে বিজাতীয় ভাষা উর্দূকে অপসারন করে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলা ভাষাকে ধারন করেছিলাম । যখন আমরা বাংলার সর্বত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা শুরু করেছিলাম ,তখন কিন্তু বিশ্বায়নের যুগটা অনুপস্থিত ছিল তা নয় , বিশ্বায়নের যুগটা তখনও ছিল বিধায় আমরা ইংরেজী শিক্ষায় তখনও বাধ্য ছিলাম । অর্থাৎ যে জন্যে আজ আমরা ইংরেজী শিখছি সেইজন্যে তখনও ইংরেজী শিক্ষার প্রচলন ছিল । ছিল ইংরেজী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও । তাই বলে সে সময় বর্তমান সময়ের মত মাতৃভাষা বাংলাকে অবমাননা করা হয়নি । মানুষ সে সময় বাংলায়ই কথা বলেছিল । শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই সে সময় ইংরেজী ব্যাবহার করেছিল বাঙ্গালী জাতি

conduit-banners

Powered by Conduit

ফ্লাগ কাউন্টার

free counters

MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY

PLEASE CLICK ON MY BANNERS. VISIT MY AFFILIATE SITE "MZS.ONLINE MONEY MAKING WAY ( অনলাইনে অর্থোপার্জনের একটা মাধ্যম )" I HOPE IT WILL BE HELPFUL FOR YOU. Create your own banner at mybannermaker.com!

রবিবার, ১ জুলাই, ২০১২

ইতিহাসে ১লা জুলাই


ইতিহাসে ১লা জুলাই
মুহাম্মদ জাকারিয়া শাহনগরী
----------------------


*** আজ 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন :
১৯২১ সালের এই দিনে - তৎকালীন পূর্ব বাংলার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উহার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। তাই আজ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯১ তম জন্মদিন। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ এবং ১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ রদ পর্যন্ত বাংলায় বঙ্গভঙ্গের পক্ষে-বিপক্ষে যে আন্দোলন-সংগ্রামের সূচনা ঘটেছিল তার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পায়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ যাবত্কাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক গৌরবজনক ভূমিকা পালন করে ইতিহাসে অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। বৃটিশ ভারতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপমহাদেশের অত্যন্ত কৃতবিদ্য অধ্যাপকগণ অধ্যাপনা করেছেন। দেশভাগের পরও এই ঐতিহ্যের ধারা অব্যাহত ছিল এবং কৃতী শিক্ষকদের সাহচর্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্র-ছাত্রী পরবর্তীকালে দেশে-বিদেশে প্রভূত সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। খ্যাতি অর্জন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে।

পূর্ববঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল একটি মুসলমান মধ্যবিত্ত সমাজ সৃষ্টি করা। এই মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজই পরবর্তীতে পূর্ব বঙ্গের সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনে নেতৃত্ব দান করে। বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে পূর্ব বঙ্গে মুসলিম সমাজে যে নবজাগরণ শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তারই ফল। বাংলাদেশীদের আত্মপরিচয়, স্বকীয়তা নির্ধারণ, অত্যাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধসহ সকল ক্রান্তিলগ্নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, আশির দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন জাতির সকল চড়াই-উৎরাইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে আমাদের প্রিয় এই বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ নামে খ্যাত হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আবাসনব্যবস্থা।

১৯১২ সালের ২১ জানুয়ারি ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকা সফরে আসেন এবং ঘোষণা করেন যে, তিনি সরকারের কাছে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করবেন। ১৯১২ সনের মে মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে নাথান কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির ২৫ টি সাবকমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ভারত সরকার প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রুপরেখা স্থির করে। ভারত সচিব ১৯১৩ সালে নাথান কমিটির রিপোর্ট অনুমোদন দেন। ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে ইমপেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্ববান জানান। ১৯১৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লর্ড চেমসজ ফোর্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয প্রতিষ্টার ব্যাপারে তেরটি সুপারিশ করেছিল, এবং কিছু রদবদলসহ তা ১৯২০ সালের ভারতীয় আইন সভায় গৃহীত হয়। ভারতের তদানীন্তন গভর্ণর জেনারেল ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ তাতে সম্মতি প্রদান করেন।

স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্টার পি. জে. হার্টগ ১৯২০ সালের ১ ডিসেম্বরঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ তার ঢাকা সফর শেষে কলকাতা প্রত্যাবর্তন করলে ১৯১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ড. রাশবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল তার সাথে সাক্ষাৎ এবং ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতামূলক একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বিরোধী ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আর রাজনীতিক সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী। শেষ পর্যন্ত স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চারটি নতুন অধ্যাপক পদ সৃষ্টির বিনিময়ে তার বিরোধীতার অবসান করেছিলেন।

১৯১৯ সালের নতুন আইন অনুসারে বাংলার শিক্ষামন্ত্রী প্রভাসচন্দ্র মিত্র শিক্ষকদের বেতন কমানোর নির্দেশ দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয প্রতিষ্ঠার সময় রিজর্ভ ফান্ডে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ছিল। বাংলা সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদত্ত সরকারী ভবন বাবদ সেগুলো কেটে নেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রতিবছর মাত্র পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় পূর্ব বঙ্গের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও শিক্ষাবিদ নানাপ্রকার প্রতিকুলতা অতিক্রম করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য ঢাকার নবাব নবাব স্যার সলিমুল্লাহ। কিন্তু, হঠাৎ করে ১৯১৫ সালে নবাব সলিমুল্লাহের মৃত্যু ঘটলে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী শক্ত হাতে এই উদ্দ্যেগের হাল ধরেন। অন্যান্যদের মধ্যে আবুল কাশেম ফজলুল হক উল্লেখযোগ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য পি. জে. হার্টগ তার কার্যভার গ্রহণ করেন। প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ব্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে তাকে সাহায্য করেন মি. ডাব্লিউ হোরনেল, স্যার নীলরতন সরকার, স্যার আশুতোষ মুখপাধ্যায়, নবাব স্যার শামসুল হুদা ও নবাবজাদা খান বাহাদুর কে এম আফজাল। ১৯২১ সালে খান বাহাদুর নাজিরুদ্দীন আহমেদ প্রথম রেজিস্টার হিসেবে নিযুক্ত হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম লাইব্রেরিয়ান হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা কলেজে সাবেক অধ্যক্ষ মি এফ সি টার্নার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। ঢাকা সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শামসুল ওলামা আবু নছর ওয়াহিদ অস্থায়ীভাবে ঐ বিভাগের প্রধান হন। পরে ঐ পদে ১৯২৪ সালের ১ জুলাই ড. আবদুস সাত্তার সিদ্দিকী যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্বতন্ত্র সংস্কৃত ও বাংলা বিভাগ খোলা হয়। সংস্কৃত ও বাংলা বিভাগের প্রথম অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন প্রখ্যাত প্রাচ্যবিদ্যা বিশারদ, বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন ‘বৌদ্ধ গান ও দোহা’র আবিস্কারক কলকাতা সংস্কৃত কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী (সিআইই)। এ বিভাগের লেকচারার সাম্রাজ্যের প্রথম কমপারেটিভ ফিললজি বা তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব বিভাগের প্রথম ছাত্র ও এম এ রিসার্চ এসিসটেন্ট মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও বিশিষ্ট লিপি বিশারদ শ্রী রাধাগোবিন্দ বসাক। ইতিহাস বিভাগে যোগদান করেছিলেন ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার ও এ এফ রহমান। পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিভাগে উপমহাদেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে সত্যেন্দ্রনাথ বসু, সুরেন্দ্রনাথ ঘোষের নামউল্লেখযোগ্য। রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম প্রধান ছিলেন ড. জ্ঞানচন্দ্র। অধ্যাপক নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত প্রথম আইন বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।

১৯২১ সালের ১জুলাই ২৮ জন কলা, ১৭ জন বিজ্ঞান এবং ১৫ জন আইনের শিক্ষক নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। ইংরেজী, সংস্কৃত ও বাংলা, আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ, ফার্সি ও উর্দু, ইতিহাস, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবজ্ঞান, দর্শন, অঙ্ক বা গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন আইন এবং শিক্ষা এই ১২ টি বিভাগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু করে। বিভিন্ন বিভাগের বিএ, বিএসসি ও অনার্স এবং এমএ ক্লাসে মোট ৮৭৭ জন ছাত্র নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোর্টের (বর্তমানে সিনেট) প্রথম বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয় । ১৯২১ সালের ১৭ আগস্ট অপরাহ্ন ৩.৩০ মিনিটে কোর্টহাউসে (পুরাতন গভর্ণর হাউস বা হাইকোর্ট ভবন)। প্রথম বার্ষিক অধিবেশনের মুলতবি সভা বসে ১৮ আগস্ট ১৯২১ সালে। এ সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিবেচনা করা হয়। এই আইনের খসড়া বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হবার পূর্বেই রচনা করেছিলেন টার্নার, ল্যাংলি এবং জেনকিন্সজ সাহেব। কোর্টের এক বিশেষ সভায় (১০ সেপ্টেম্বর; ১৯২১) সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য। এই সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় “এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল” (বর্তমানে সিন্ডিকেট) গঠিত হবার কথা ঘোষিত হয়। এর দুই দিন পর ১২ সেপ্টেম্বর ফিনান্স কমিটি গঠন করা হয়। ১৯২১ সালে সেপ্টেম্বরে একাডেমিক কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯২২ সালের ৭ মার্চ একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে একজন সদস্য নির্বাচনের ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব রাখা হয়। ১৯২৩ সালের ২৩ মার্চ একাডেমিক কাউন্সিল তিন বছরের অনার্স কোর্সের প্রথম চুড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে। ১৯২৩ সালের ১৭ আগস্ট একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মটো বা লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় Truth shall prevail অর্থাৎ সত্যের জয় সুনিশ্চিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শুরু থেকেই সুপরিকল্পিত ভাবে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে কেন্দ্র করে তার পূর্ব পাশে অবস্থিত ঢাকা হল (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল), লিটন হল, কার্জন হল, বিজ্ঞান ভবন সমূহ, ঢাকা হল এর পূর্ব পাশে বিরাট দীঘি, অপর পাশে ফজলুল হক মুসলিম হল। বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে প্রধান প্রবেশ পথ ছিলো ঢাকা হল (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল)- এর দিক থেকে, মাঠে ঢুকতেই ডানে জিমনেসিয়াম আর বামে একটি পুকুর ; বিশ্ববিদ্যালয় মাঠটি ত্রিকোণাকৃতি এবং তাতে দুটি ফুটবল গ্রাউন্ড ছিলো। মাঠের উত্তর দক্ষিণ পূর্ব তিন দিক দিয়েই বৃক্ষশোভিত রাজপথ প্রসারিত ; বিশ্ববিদ্যালয় মাঠের দক্ষিণদিকের রাস্তাটি ইউকেলিপটাস শোভিত, যে রাস্তাটি মুসলিম হল পর্যন্ত সম্পরসারিত এবং মুসলিম হলের সামনে শিরিষ বা রেইনট্রি জাতীয় বৃক্ষ শোভিত; পুরাতন রেললাইনের সঙ্গে সমান্তরাল সাবেক পূর্ববাংলা ও আসাম সরকারের সেক্রেটারিয়েট ভবন, সামনে ইউকেলিপটাস শোভিত প্রশস্তরাজপথ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ময়দান। ঐ সেক্রেটারিয়েট ভবনের দোতলায় প্রথমে মুসলিম হল এবং একতলায় বিজ্ঞান ছাড়া অন্যান্য বিভাগ বিশেষত কলা অনুষদের বিভাগ এবং ক্লাশরুম প্রতিষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উত্তর দিকে প্রবাহিত রাজপথের পাশে ছিলো দুটি কি তিনটি বিরাট লাল ইটের দোতলা বাংলো, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরাই বাস করতেন। এ বাংলোগুলোর পেছনে রমনা রেসকোর্সের দিকে মুখ করে বর্ধমান হাউস ও তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক নিবাস।

১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল ঢাকা হল (পরে শহীদুল্লাহ হল), জগন্নাথ হল এবং মুসলিম হল (পরে সলিমুল্লাহমুসলিম হল) নিয়ে। প্রত্যেকটি হলকে চারটি হাউসে বিভক্ত করা হয়েছিল চারশত ছাত্রের জন্য আর প্রতি পঁচাত্তরজন ছাত্রের তত্ত্ববধানের জন্য একজন করে আবাসিক শিক্ষক বা হাউস টিউটরের ব্যবস্থা ছিল। হিন্দু ছাত্রদের জন্য জগন্নাথ হল, মুসলমান ছাত্রদের জন্য সলিমুল্লাহ মুসলিম হল আর সবধর্মের ছাত্রদের জন্য ঢাকা হল স্থাপিত হয়েছিল। ঢাকা হলের প্রথম প্রভোস্ট ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এফ. সি. সি. টার্নার। শুরুতে একমাত্র ঢাকা হলেরই নিজস্ব ভবনে ছিল; কার্জন হল মিলনায়তনটি তার অধিকারভুক্ত ছিল সে কারণে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষা বহির্ভূত সমাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ঢাকা হল ছাত্র সংসদের ভূমিকা ছিল অগ্রগন্য। দেশ বিভাগের পর ঢাকা হলই ছিল প্রগতিশীল বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সূতিকাগার, ১৯৬৯ সালের গণআন্দলন মহান গণঅভ্যুত্থানে পরিনত হয়েছিল ঢাকা হলের প্রগতিশীল ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানের শাহাদাতের বিনিময়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু মুসলিম ছাত্রদের জন্য স্থাপিত প্রথম হল “সলিমুল্লাহ মুসলিম হল”। এ হলের প্রথম প্রোভস্ট নিযুক্ত হন ইতিহাস বিভাগের রিডার স্যার এ এফ রাহমান। ১৯২৯ সালের ২২ আগস্ট বাংলার গভর্ণর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর স্যার স্ট্যানলিজ্যাকসন ঢাকার প্রয়াত নবাব বাহাদুর স্যার সলিমুল্লাহ্ এর নামানুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের’ এর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনকরেন। ১৯৩১-৩২ শিক্ষাবর্ষে এর ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয় জগন্নাথ হলের নামকরণ হয় ঢাকার বলিয়াদির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর দানে তার পিতা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে। জগন্নাথরায় চৌধুরীর নামেই ঢাকার জগন্নাথ কলেজের নামকরণ করা হয়েছিল। জগন্নাথ হলের প্রথম প্রভোস্ট ছিলের আইন বিভাগের প্রথম অধ্যাপক নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত।

১৯২১ সালে লীলা নাগ ইংরেজীতে এম এ ক্লাসে ভর্তি হন এবং ১৯২৩ সালের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এম এ ডিগ্রিধারী হিসেবে বের হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ছাত্রী সুষমা সেন গুপ্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী ছিলেন গণিত বিভাগের ফজিলতুন্নেসা। ১৯২৬ সালের ২৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ নং বাংলো ‘চামেরি হাউস’-এ (বর্তমানে সিরডাপ ভবন) প্রথম উইমেনস হাউস প্রতিষ্ঠা করা হয়। উইমেনস হাউস মাত্র তিন জন ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। মিসেস পি. নাগ এই হাউসের হাউস টিউটর নিযুক্ত হন। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত উইমেনস হাউস চামেরি হাউসে ছিল পরে ১৯২৮ সালে তা ১০ নংবাংলোতে (বর্তমানে এস্থানে বিজ্ঞান গ্রন্থাগার অবস্থিত) স্থানান্তরিত হয়। ১৯৩৮ সালে মেয়েদের হোস্টেল পুনরায় চামেরি হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়।

১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা আসেন এবং কার্জন হলে ১০ ফেব্রুয়ারি দি মিনিং অফ আর্ট এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি দি বিগ এ্যান্ড দি কমপ্লেক্স বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন। ১৯৩৫-৩৬ সালে শ্রীমতী করুণা কণা গুপ্তা ইতিহাস বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হন (প্রতিষ্ঠার ১৪বছর পর)। মুসলিম হল ইউনিয়নের কক্ষে ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভপতিত্বে একসভায় ১৯২৫ সালের ১৯ জ়ানুয়ারি মুসলিম সাহিত্য সমাজ গঠিত হয়। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাহিত্য সমাজের প্রথম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ১৯২৭ সালে। ১৯৩৬ সালে কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মুসলিম সাহিত্য সমাজের দশম ও শেষ অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন।

১৯৩৭ সালে প্রথম ছাত্রী সংসদ গঠিত। ১৯৪০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১,৫৬৯ আর ছাত্রী সংখ্যা ৯৬১৯৪০। মার্চে লাহোর প্রস্তাব উত্থাপনের পর মুসলমান সমাজের ছাত্রদের মধ্যে পাকিস্তান আন্দোলন সাড়া জাগায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলমান ছাত্রগণ এই প্রথম দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে সক্রিয় ভাবে যুক্ত হয়। ১৯৪৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের এক অনুষ্ঠানে সাজসজ্জার প্রতিবাদের মুসলমান ছাত্ররা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ফলে হিন্দু ও মুসলমান ছাত্রদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘাত দেখা যায়। ১৯৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এরকম এক দাঙ্গায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন “পাক্ষিক পাকিস্তান” পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা মুসলিম লীগ ও সাহিত্য সংসদের কর্মী নজির আহমেদ। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ক্যাম্পাসের অধিকাংশ ভবন সেনাবাহিনীর হুকুম দখলে চলে যায়। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংকুচিত হয়ে পড়ে ঢাকা হল (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল), ফজলুল হক হল এবং কার্জন হল এলাকার ভবনগুলোতে।

১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে প্রগতি লেখক সংঘের কর্মকান্ড বিকশিত হয়। পাকিস্তানের গনপরিষদে বাংলা ভাষার স্থান না হওয়ায় ১৯৪৮ সালের১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ সভা, সাধারণ ধর্মঘট ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ১৯৪৮ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে এক সভায় পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম সরকার বিরোধী সংগঠন ‘পূর্ব পাকিসতান মুসলীম ছাত্রলীগ’ গঠিত হয়। ১৯৪৮ এর ২৭ নভেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে এক ছাত্র সভায় ভাষণ দেন। এই সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের তরফ থেকে বাংলা ভাষার দাবি পুনরায় উত্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিয়নের বাৎসরিক নির্বাচনে ‘গনতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট’ গঠিত হয়।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল। একাত্তরে পাকিস্তান সশস্ত্রবাহিনী বাঙালি সৈনিক, বৈমানিক ও ছাত্রছাত্রীগনকে একই পর্যায়ভুক্ত করে আক্রমণ চালিয়েছিল। এই অপারেশনের নাম ছিল “অপারেশন সার্চ লাইট”। ১৮ নং পাঞ্জাব, ২২ নং বেলুচ এবং ৩২ নং পাঞ্জাব রেজিমেন্টের বিভিন্ন ব্যাটেলিয়ন নিয়ে গঠিত বিশেষ মোবাইল বাহিনী লেফটেনেন্ট কর্ণেল তাজের নেতৃত্বে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, ট্যাংক বিধ্বংসী বিকয়েললেস রাইফেল, রকেট লাঞ্চার, মর্টার, ভারি ও হাল্কা মেশিনগানে সজ্জিত হয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘেরাও করে আক্রমন, পাইকারি হত্যা, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ এবং ধ্বংস যজ্ঞ চালায়। ঐ রাতে ছাত্র সহ প্রায় ৩০০ ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিহত হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নের “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের’ যে অবদান অপর কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের একক অবদান তার সমকক্ষ নয়। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম উপাচার্য হন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মোজাফফর আহমদ চৌধুরী। পদাধিকার বলে তিনি ছিলেন স্বাধীনতার পর ডাকসুর প্রথম সভাপতি। ১৯৭২ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সফরে আসেন। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৫ সালে জাতীয় অধ্যাপক পদ প্রচলন করে।

সম্পূর্ণ আশির দশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল ছিল। ১৯২১ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যক্ট ১৯২০” দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। “The East Bengal Education Ordinance” এর বলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত ৫৫টি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী কলেজের মঞ্জুরি প্রদান ও তত্ত্বাবধানের কর্তৃত্ব লাভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যার ফলে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল, একাডেমক কাউন্সিল, ফ্যাকাল্টি ও কোর্ট পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করতে হয়, প্রথম শ্রেণীর কলেজ প্রিন্সিপালদের অর্ন্তভুক্ত করার জন্য। ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের সামরিক সরকারের আজ্ঞাবহ পূর্ব পাকিস্তান সরকার “ঢাকা ইউনিভার্সিটি অর্ডিন্যান্স ১৯৬১” দ্বারা “ঢাকা ইউনিভার্সিটি এ্যক্ট ১৯২০” বাতিল করে। এ সময় এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের নাম সিন্ডিকেট এবং তা পদাধিকার বলে ও চ্যান্সেলরমনোনীত সদস্যদের নিয়ে গঠিত সর্বোচ্চ নির্বাহী পরিষদ হয়ে যায়। এই সময় থেকেই উপাচার্যের নিয়োগ কোর্টের পরিবর্তে সরকার দ্বারা করবার ব্যবস্থা করা হয়।

স্বাধীনতার পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া উপস্থাপন করেন। খসড়াটি প্রায় অপরিবর্তীত অবস্থায় ‘The Dacca University Order 1973’ নামে প্রধানমন্ত্রী শেখমুজিবের পরামর্শ ক্রমে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ১৯৭৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অধ্যাদেশ জারি করেন। সেই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এই আইন দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৭৩ এর অর্ডিন্যান্স চালু হওয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ নীল, সাদা ও গোলাপী এই তিন রঙের প্যানেলে বিভক্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বীকৃত পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান, এই সমিতির কর্মকর্তারাও প্রতি বছর নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের সাথে সঙ্গতি রেখে ১৯৭৩-এর ১৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠন করা হয় এবং প্রবীণ শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ এনামুল হককে তার চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়।

১৯৪০ সালের ১ জুলাই অবিভক্ত বাংলার তদানন্তন প্রধানমন্ত্রী এ. কে. ফজলুক হকের নামানুসারে “ফজলুল হক মুসলিম হল” প্রতিষ্ঠি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভবনের (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ) যে অংশে সলিমুল্লাহ হলের বর্ধিতাংশ ছিল সেখানে ফজলুল হক যাত্রা শুরু করে। ১৯৪২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভবনে সামরিক হাসপাতাল স্থাপিত হলে ১৯৪৩ সালে ফজলুল হক হল বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয়, পূর্বে যা ছিল ঢাকা ইন্টারমেডিয়েট কলেজ হোস্টেল। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ফজলুল হক হলের প্রথম প্রভোস্ট আর প্রথম দুইজন হাউস টিউটর কাজী মোতাহার হোসেন এবং আব্দুস সামাদ। (কৃতজ্ঞতা জানাই সুডো ব্লগের Saif_Shipon কে)।

*******************

*** 
খুলনার সরকারি বি এল কলেজের সরকারী করণ :
১৯৬৭ সালের এইদিনে খুলনার সরকারি বি এল কলেজকে সরকারি কলেজে রূপান্তর করা হয়। খুলনা শহরের দৌলতপুরে ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত এ কলেজটি দেশের অন্যতম একটি প্রধান কলেজ। ১৯০২ সালের জুলাই মাসে খুলনার শিক্ষানুরাগী শ্রী ব্রজলাল চক্রবর্তী (শাস্ত্রী) কলকাতার হিন্দু কলেজের আদলে ২ একর জায়গার উপর দৌলতপুর হিন্দু একাডেমি নামে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে হাজী মহম্মদ মহসীন ট্রাস্ট তার সৈয়দপুর এস্টেটের ৪০ একর জমি এই প্রতিষ্ঠানে দান করে এবং মাসিক ৫০ টাকা অনুদান বরাদ্দ করে। দুইটি টিনশেড ঘরে ১৯০২ সালের ২৭শে জুলাই থেকে প্রতিষ্ঠানটির ক্লাশ শুরু হয়। একটি বোর্ড অব ট্রাস্টির মাধ্যমে কলেজটি পরিচালনা করা হত যার সভাপতি ছিলেন শাস্ত্রী ব্রজলাল চক্রবর্তী। প্রথমদিকে সম্পূর্ণ আবাসিক এই প্রতিষ্ঠানটি 'চতুষ্পাঠী' এবং 'একাডেমি' নামে দুইটি শাখায় বিভক্ত ছিল। চতুষ্পাঠীর ছাত্রদের খাবার, পড়া এবং আবাসন খরচ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বহন করা হত।

১৯১০-১৯১১ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে প্রথম মুসলিম হোস্টেল নির্মিত হয়। মূল ভবনের বাইরে অবস্থিত এই মুসলিম হোস্টেলে আরবি এবং ফারসি ভাষার ক্লাশ নেওয়া হত। পরে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফলজুল হকের নির্দেশে কলেজে প্রথম মুসলমান শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯০৭ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। কলেজটি পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরো পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হয় । বর্তমানে কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রয়েছে।

১৯৪৪ সালের ৮ই আগস্ট প্রতিষ্ঠাতা ব্রজলাল চক্রবর্তীর মৃত্যুর পরে কলেজের নামকরণ করা হয় ব্রজলাল হিন্দু একাডেমি। ১৯৪৬ সালে একাডেমিকে কলেজে উন্নীত করে ব্রজলাল কলেজ নাম দেয়া হয় এবং এর সংক্ষিপ্ত রূপ বি. এল. কলেজ ব্যবহার করা হয়। কলেজটিতে ১৭ টি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। এর মধ্যে ১৫টি বিষয়ে অনার্স পর্যায়ে এবং ১৫টি বিষয়ে মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদান করা হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পাঠদান বন্ধ হলেও ২০১০ আবার উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পাঠদান শুরু হয়েছে। এখানে শিক্ষাকার্যক্রমের পাশাপাশি সুনামের সাথে সহ-শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। কলেজে ১৭টি বিষয়ের কোর্স পড়ানো হয়। বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, দর্শন, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রণিবিজ্ঞান এবং গণিত বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। এছাড়া, সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। সংস্কৃত বিষয়ে ডিগ্রি(পাস) কোর্স পর্যায়ে পড়ানো হয়। বর্তমানে কলেজটিতে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে এবং প্রায় দেড়শত শিক্ষক কর্মরত আছেন। (কলেজের ওয়ব সাইট (http://blcollege.edu.bd/) থেকে সংকলিত)

*******************

০১। ১৯০৩ সালের এইদিনে – স্বনামখ্যাত লেখক ও সুপ্রসিদ্ধ ঔপন্যাসিক আবুল ফজল অবিভক্ত ভারতের তৎকালীন বাংলা প্রদেশের চট্টগ্রাম জেলাধীন সাতকানিয়া থানার অন্তর্গত কেঁওচিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মৌলভী ফজলুর রহমান এবং মায়ের নাম গুলশান আরা।তিনি মূলত একজন চিন্তাশীল ও সমাজমনস্ক প্রবন্ধকার।” তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘চৌচির’ (১৯৩৪)। তাঁর অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে প্রদীপ ও পতঙ্গ (১৯৩৪), রাঙা প্রভাত (১৯৫৭), ক্ষুধা ও আশা (১৯৬৪) উল্লেখযোগ্য। উপন্যাস ছাড়াও সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় তার অবদান আছে। আবুল ফজলের কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতার মাধ্যমে। প্রথমে মাদ্রাসার শিক্ষক, পরে হন ইংরেজি ধারার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তারপর কলেজের প্রভাষক থেকে সর্বোচ্চ অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত হয়ে অবসর গ্রহণ। ১৯৭৩ সালে তাঁকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল। উপাচার্য পদ থেকে ১৯৭৫ সালে তিনি উন্নীত হন মন্ত্রীর মর্যাদায় শিক্ষা-উপদেষ্টা পদে। ১৯৬২ সালে তিনি বাংলা একাডেমী পদক পান। এ ছাড়া ১৯৬৬ সালে পান রাষ্ট্রপতি জাতীয় সাহিত্য পুরস্কার। ১৯৭৫ সালে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ১৯৭৮ সালে তিনি পান ‘সমকাল পুরস্কার’। এই কৃতী পুরুষ ১৯৮৩ সালের ৪ মে বুধবার ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

০২। ১৯০৭ সালের এইদিনে - রাজনীতিবিদ এবং লেখক আতাউর রহমান খান ঢাকা জেলার ধামরাইয়ের বালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ গঠনের সময় তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির (১৯৪৯ - ১৯৬৪) দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্যদের ভোটে গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। সদস্য থাকাকালীন আতাউর রহমান খান বিরোধী দলের নেতা এবং উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা-১৯ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ঢাকা-২১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালের ৩০শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন। এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন ১৯৮৫ সালের ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত। তার রচিত গ্রন্থাবলীর মধ্যে ওজারতির দুই বছর, স্বৈরাচারের দশ বছর, প্রধান মন্ত্রিত্বের দশ মাস, অবরুদ্ধ নয় মাস উল্লেখযোগ্য ।

০৩। ২০০৭ সালের এইদিনে - ঢাকায় নিয়োজিত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতা পাসি একটি গোপন তারবার্তা পাঠান ওয়াশিংটনে। ৩০শে আগস্ট ২০১১ তা ফাঁস করে দেয় উইকিলিকস।

০৪। ২০০২ সালের এইদিনে - হেগে স্থায়ী International Criminal Court স্থাপন করা হয়।

০৫। ২০০২ সালের এইদিনে - বাশকিরিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি টিউপোলোভ টিইউ-১৫৪ ও ডিএইচএলের বোয়িং ৭৫৭-২৩এপিএফ কার্গো বিমানের সংঘর্ষে নিহত হন ৭১ জন।

০৬। ২০০১ সালের এইদিনে - বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮৭ কোটি ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ে তিস্তা সড়ক সেতুর ফলক উন্মোচন করেন । তিস্তা রেলসেতুর উপর সড়ক পথের চাপ কমানোর জন্য এই অঞ্চলের (রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট) মানুষের দীর্ঘদিনের দাবীর ফলশ্রুতিতে সেতুর ভাঁটিতে অনতিদূরে একটি পৃথক সড়ক সেতু নির্মাণের কাজ পূর্ববর্তী বি এন পি সরকারের আমলে ২০০৬ সালে শুরু করা হয়। ৭৫০.০০ মিটার দীর্ঘ ও ১২.১১ মিটার চওড়া এই সেতুটি নির্মাণের জন্য ৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকার পরিবর্তনের কারণে এ সেতুটি নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি।

০৭। ১৯৯৭ সালের এইদিনে - ১৫৬ বছর ব্রিটেনের উপনিবেশ থাকার পর ব্রিটিশদের কাছ থেকে পুনরায় হংকংয়ের কর্তৃত্ব বুঝে নিয়েছিল চীন।

০৮। ১৯৮৯ সালের এইদিনে - নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট ঢাকা থেকে ফরিদপুরে স্থানান্তরিত হয়। এ ইনস্টিটিউট প্রধানত বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রন, নদীর নাব্যতারক্ষা ও পাললিকীকরণ, সেচব্যবস্থা এবং নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে জরিপ পরিচালনা ও ব্যবস্থা গ্রহণের কাজে নিয়োজিত। সংক্ষেপে এই সংস্থা আর আর পি (RRP=River Research Institute) নামে পরিচিত। ফরিদপুরে অবস্থিত এ সংস্থাটি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং হাইড্রলিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি-র সাথে একীভূত হয়ে ১৯৭৭ সালে ঢাকায় নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট রূপে আত্মপ্রকাশ করে। 

০৯। ১৯৮৪ সালের এইদিনে – নাড়াইল পূণাঙ্গ জেলা হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১০। ১৯৮২ সালের এইদিনে - দেশের প্রথম গার্লস ক্যাডেট কলেজটি গড়ে তোলার দায়িত্ব দেয়া হয় অধ্যক্ষ করিম উদ্দিন আহমেদকে (কার্যকাল ১লা জুলাই, ১৯৮২-৩০শে মার্চ, ১৯৮৭)। আর এ অধ্যক্ষ্যের হাতেই 'ময়মনসিংহ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ফর গার্লস' নামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ নামে দেশের প্রথম গার্লস ক্যাডেট হিসাবে রূপান্তরিত হয়। স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে স্থাপিত ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ, মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ ও রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ এর সাফল্যের ফলশ্রুতিতে তৈরি হয় আরো ছয়টি ক্যাডেট কলেজ যার মাঝে ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ অন্যতম।

১১। ১৯৭৯ সালের এইদিনে - রংপুর ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ।

১২। ১৯৭৬ সালের এইদিনে - ওলন্দাজ ফুটবলার রুড ভ্যান নিস্টেল্‌রয়ি জন্মগ্রহণ করেন।

১৩। ১৯৭০ সালের এইদিনে - দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বেলুচিস্তান (বেলুচি) প্রতিষ্ঠিত হয়। ভৌগোলিক দিক থেকে পাকিস্তানের বৃহত্তম এই প্রদেশটির আয়তন ৩,৪৭,১৯০ বর্গকিলোমিটার। বেলুচি জাতিরলোকদের নামে অঞ্চলটির নামকরণ করা হয়েছে। এর পশ্চিমে ইরান (ইরানি বেলুচিস্তান), উত্তরে আফগানিস্তানও পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল, পূর্বে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ওসিন্ধ প্রদেশ এবং দক্ষিণে আরব সাগর। সম্প্রতি বেলুচিস্তানের চাগাই জেলার রেকো-দিকশহরের কাছে বিশ্বের বৃহত্তম সোনা ও তামার মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। বেলুচিস্তানের উত্তর-পূর্ব কোণায় অবস্থিত কুয়েতা শহর প্রদেশটির রাজধানী; এটি বেলুচিস্তানের বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনবহুল শহর। বেলুচিস্তানে প্রায় ১ কোটি লোকের বাস। এখানকার প্রধান ভাষাসমূহ হচ্ছে - উর্দু (জাতীয়), বেলুচি (প্রাদেশিক),পশতু । প্রদেশের বেশির ভাগলোক ইসলাম ধর্মাবলম্বী। ১৮৫৪ ও ১৮৭৬ সালে চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের সাথে বেলুচিস্তানের বন্ধন সুদৃঢ় হয়। ১৮৭৭ সালে পাঁচটি জেলা নিয়ে ব্রিটিশ ভারতের বেলুচিস্তান প্রদেশ গঠন করা হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হতে সম্মত হয়। ১৯৭০ সালে পশ্চিম পাকিস্তানকে নতুন করে চারটি প্রদেশে ভাগ করা হয়, এবং তখন থেকে বেলুচিস্তান পাকিস্তানের একটি প্রদেশ।

১৪। ১৯৬১ সালের এইদিনে - মার্কিন ক্রীড়াবিদ কার্ল লুইস জন্মগ্রহণ করেন।

১৫। ১৯৬১ সালের এইদিনে - যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন যুবরাজ্ঞী প্রিন্সেস ডায়ানা জন্মগ্রহণ করেন।

১৬। ১৯৬০ সালের এইদিনে - বৃটিশ নিয়ন্ত্রিত সোমালিয়া ও ইতালি নিয়ন্ত্রিত সোমালিয়ার একীভূত হওয়ার মধ্য দিয়ে আফ্রিকার ঐ দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে।

১৭। ১৯৫৩ সালের এই দিনে – রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ।

১৮। ১৯৪৭ সালের এইদিনে - স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন ব্রাক্ষণবাড়িয়া শহরের মৌড়াইল গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ৪৭ বছর বয়সে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস জনিত জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয়ে লিভার সিরোসিসে ১০ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪ ইং আমেরিকার ফ্লোরিডায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ১৮ইং ফেব্রুয়ারি ৯৪ ইং তাঁর লাশ ঢাকা বিমান বন্দরে পৌঁছলে তাঁর নিজ বাড়ি ব্রহ্মণবাড়িয়া শহরে হেলিকপ্টারযোগে আনা হয়। ১৫ই ফেব্রুয়ারি মিরপুর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা গোরস্থানে রাষ্ট্রীয় সম্মানে তাঁকে দাফন করা হয়।

১৯। ১৯৪৭ সালের এইদিনে - নিউ মেক্সিকোর শহর রজওয়েলের এক বিমান ঘাটির রাডারে রাত্রিতে একটি প্রচন্ড ঝড়ে এবং বজ্রপাতের সময় একটি অদ্ভুত ঘটনা ধরা পড়েছিল।

২০। ১৯৪৭ সালের এইদিনে - আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা ভান্ডারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৪৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর এ আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা ভান্ডার গঠন করা হয় । আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ৮৮০ কোটি ডলার নিয়ে কাজ শুরু করে।

২১। ১৯৪১ সালের এইদিনে – যশোরের সরকারী মাইকেল মধুসূদন কলেজে প্রথম ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি শুরু হয় ।

২২। ১৯৩৭ সালের এইদিনে - জার্মান চিন্তাবিদ ইউবট ক্যাপ্তান মার্টিন নায়মোলার ১ম বিশ্বযুদ্ধের নাজি শাষনের বিরুদ্ধে কথা বলার কারনে গ্রেপ্তার হন, কিন্তু আদালত তাকে হাল্কা সাজা দিয়ে ছেড়ে দিলে হিটলারের ব্যাক্তিগত আদেশে তাকে বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয় ২য় বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত।

২৩। ১৯২৯ সালের এই দিনে – নিখিলবঙ্গ প্রজা সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয় ।

২৪। ১৯১৮ সংগ্রামী ইসলামী যোদ্ধা শেখ আহমেদ হোসাইন দীদাত (১লা জুলাই, ১৯১৮ – ৮ই আগষ্ট ২০০৫) এর জন্ম ভারতের গুজরাট প্রদেশের সুরাট জেলায়। ১৯৪২ সালে দীদাত তার প্রথম লেকচারটি দেন মাত্র পনরজন দর্শকের সামনে ডারবান মুভি থিয়েটার (আভালন সিনেমা হল) হলে যার বিষয় ছিলো “Muhammad(PBUH): Messenger of Peace”। তিনি তার সাথে বিতর্ক করার জন্য খোদ Pope John Paul-2 কে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করেন। কিন্তু মাননীয় পোপ মহোদয় একটি রুদ্ধদার বিতর্কের বাইরে অন্য কোন বিতর্কে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান। ১৯৫৮ সালে একজন মুসলিম দাতার অর্থ সাহায্যে As-Salaam Educational Institute নামের আরেকটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এখান থেকে শেখ আহমেদ দীদাতের লেখা ২০ টি বইয়ের লক্ষ লক্ষ কপি সারা পৃথিবীতে বিনামূল্যে বিতরন করা হয়। তার বইগুলো আরবী, উর্দু, বাংলা, রাশিয়ান, চীনা, জাপানীজ, ফ্রেঞ্চ, মালয়, জুলুসহ আরো অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হয়। ইসলামের দাওয়াতের কাজে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৮৬ সালে বিখ্যাত কিং ফয়সাল এওয়ার্ডে ভূষিত হোন। তিনি সৌদী আরব, মিশর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ অসংখ্য দেশ ভ্রমণ করে বক্তৃতা প্রদান করেন এবং বিভিন্ন খ্রীষ্টান পন্ডিতদের সাথে সরাসরি দর্শকদের উপস্থিতিতে বিতর্কে অংশ নেন। ২০০৫ সালের ৮ই আগষ্ট শেখ দীদাত তার নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। তাকে ভেরুলাম গোরস্থানে দাফন করা হয়।

২৫। ১৯০৭ সালের এইদিনে - মেহেরপুরের শিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব সাফদার আলী বিশ্বাস তৎকালীন অবিভক্ত নদীয়া জেলার মেহেরপুর মহাকুমার তেহট্ট থানার গরীবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এ জেলার শিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে ১৯৪০ সালের পরবর্তী তিন দশক পর্যন্ত এক স্বর্ণ সিঁড়ি প্রোথিত করে গেছেন সাফদার আলী বিশ্বাস। তাঁর চেয়েও অনেক শিক্ষাবিদ উচ্চ শিক্ষায় জ্ঞান অর্জন করে আজ পৃথিবীর বহু স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সাফদার আলী জীবনে নিজেই শিক্ষাবিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করনেনি- প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন শিক্ষা অর্জনের জন্য অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৩ সালের ৩০শে অক্টবর মেহেরপুরের শিক্ষা বিস্তারের এ ব্যক্তিত্ব ইন্তেকাল করেন।

২৬। ১৮৮৩ সালের এইদিনে – কোটচাঁদপুর পৌরসভা স্থাপিত হয় ।

২৭। ১৮৮২ সালের এইদিনে - পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের রূপকার ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় বর্তমানে বিহার রাজ্যের অন্তর্গত পাটনার বাঁকিপুরে জন্মগ্রহণ করেন। এবং ১৯৬২ সালের এইদিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর জন্ম ও মৃত্যু একই দিন (১লা জুলাই) হওয়ায় ভারতে এ দিনটিকে "চিকিৎসক দিবস" হিসাবে পালন করা হয়। মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানে কলকাতার উপনগরী সল্টলেকের নামকরণ করা হয় বিধাননগর। ১৯৪৮ সালের ১৪ই জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের আইন সভার সদস্যগণ একবাক্যে তাঁকে দলনেতা নির্বাচন করলে সমস্যাকন্টকিত ভূমিখন্ডকে নবরূপ রূপায়ণকল্পে দায়িত্বপূর্ণ মুখ্যমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করেন(পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী)। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের প্রতিনিধিত্বে তাঁর ঐকান্তিক ইচ্ছায় গড়ে উঠল রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, পুরুলিয়া , রহড়া, নরেন্দ্রপুরে প্রাচীন ভারতীয় আদর্শে আশ্রমিক পরিবেশে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয় । মৃত্যুকাল অবধি ১৪ বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

২৮। ১৮৬৭ সালের এইদিনে - মৈত্রিতার মধ্য দিয়ে চারটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ নিয়ে দেশ হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র কানাডা গঠন করা হয়। ১৯৮২ সালে জারীকৃত কানাডা অ্যাক্ট অনুসারে, দশটি প্রদেশ এবং তিনটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত কানাডা সংসদীয় গণতন্ত্র এবং আইনগত রাজ্যতন্ত্র উভয়ই মেনে চলে। রাষ্ট্রের প্রধানরাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। কানাডা দ্বিভাষিক (ইংরেজি ও ফরাসি ভাষা দুটোই সরকারী ভাষা) এবং বহুকৃষ্টির দেশ। "কানাডা" নামটি সম্ভবত এসেছে সেন্ট লরেন্স ইরোকোয়াইয়ান (St. Lawrence Iroquoian) শব্দ "কানাটা" (kanata) থেকে, যার অর্থ "জেলেদের ক্ষুদ্র গ্রাম", "গ্রাম", অথবা "বসতি"। ১৫৩৫ সালের দিকে, বর্তমান ক্যুবেক শহরের বসবাসকারীরা অভিযাত্রী জ্যাক কার্তিয়ারকে (Jacques Cartier) স্টেইডাকোনা (Stadacona) গ্রামের দিকে পথনির্দশনের সুবিধার্থে শব্দটি ব্যবহার করেছিল । কার্তিয়ার 'কানাডা' শব্দটি ব্যবহার করেছিল শুধুমাত্র গ্রামটি চিহ্নিত করতেই নয়, বরং গ্রাম্য-প্রধান ডোন্নাকোনা (Donnacona) সম্পর্কিত সব কিছু নির্দেশ করতে। ১৫৪৫ সাল নাগাদ, ইউরোপের বই এবং মানচিত্রে এই অঞ্চলকে "কানাডা" হিসেবে নির্দেশিত করা শুরু হয়। কানাডা অ্যাক্ট ১৯৮২ অনুসারে, "কানাডা"ই একমাত্র আইনগত এবং দ্বিভাষিক নাম। ১৯৮২ সালের সরকারী ছুটি 'ডোমিনিয়ান ডে' কে পরিবর্তন করে 'কানাডা ডে' করা হয়। সেই থেকেই অদ্যোবধি আজকের দিনটিকে 'কানাডা ডে' হিসাবে পালন করে আসছে কানাডাবাসীরা ।

২৯। ১৮৬২ সালের এইদিনে - কলিকাতা হাইকোর্টের প্রতিষ্ঠিত হয় ।

৩০। ১৬৪৬ সালের এইদিনে - জার্মান দার্শনিক এবং গণিতবিদ গট্‌ফ্রিড লিবনিত্স জন্মগ্রহণ করেন।
==============